আওয়ামীলীগ নেতাসহ আসামি ৩৫
১৯ মে ২০২৩, ১১:১৮ পিএম | আপডেট: ২০ মে ২০২৩, ১২:০৫ এএম
রাজধানীর শাহজাহানপুরে আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফনান ওরফে প্রীতি হত্যা মামলায় চার্জশিট (অভিযোগপত্র) প্রস্তুত করা হয়েছে। ডিএমপির ডিবির কর্মকর্তারা শিগগিরই এটি আদালতে জমা দেবে। এতে মোট ৩৫ জনকে আসামি করা হচ্ছে। আসামির তালিকায় মহানগর আওয়ামী লীগের একজন নেতাসহ ওয়ার্ড কাউন্সিলরও রয়েছেন। এর মধ্যে সরাসরি হত্যাকা-ে যারা অংশ নিয়েছিলেন, তাদের পাশাপাশি বিভিন্ন পর্যায়ে যারা এই হত্যাকা-ে ভূমিকা রেখেছিলেন, তাদের নামও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানান, টিপুকে হত্যার আগে দুই দফায় বায়তুল মোকাররম ও বেইলী রোড এলাকায় দুটি পৃথক বৈঠক হয়। ওই দুই বৈঠকেই বিদেশ থেকে ভিডিওকলের মাধ্যমে জিসান ও মানিক যুক্ত ছিলেন। মূলত ঠিকাদারি ব্যবসা, ডিশ বাণিজ্য, আইডিয়াল স্কুলে ভর্তি বাণিজ্য, এজিবি কলোনি এবং ফুটপাত নিয়ন্ত্রণ নেয়ার জন্য জাহিদুল ইসলাম টিপুকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ জন্য পাঁচজনকে টাকা সংগ্রহের নির্দেশ দেয়া হয়। কিলিং মিশনে খরচের জন্য কাকে কত দেয়া হবে তা ঠিক হয় ওই বৈঠকেই।
ডিবির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন উর রশীদ ইনকিলাবকে বলেন, আলোচিত এই মামলার তদন্ত শেষ। আমরা খুব শিগগিরই এই মামলার চার্জশিট আদালতে জমা দেব।
তদন্তের সাথে সম্পৃক্ত ডিবির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ইনকিলাবকে বলেন, মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপুকে গত বছরের ২৪ মার্চ রাতে গুলি করে হত্যা করা হয়। সে সময় দুর্বৃত্তদের গুলিতে ঘটনাস্থলে রিকশার আরোহী কলেজছাত্রী সামিয়া আফনান ওরফে প্রীতি নামের এক তরুণীও প্রাণ হারান। আলোচিত এই হত্যাকা-ের পর টিপুর স্ত্রী ফারহানা ইসলাম ডলি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে শাহজাহানপুর থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের খিলগাঁও জোনাল টিমের কাছে। ওই টিমের সদস্যরা তদন্ত শেষ করেছেন। এরই মধ্যে ৩৫জনকে চার্জশীটে আসামি করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই আদালতে চার্জশীট দাখিল করা হবে বলেও ওই কর্মকর্তা মন্তব্য করেন।
মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বায়তুল মোকাররম মসজিদের বিপরীতে একটি রুফটপ রেস্তোরাঁ এবং বেইলি রোডের ফখরুদ্দীন বিরিয়ানি রেস্তোরাঁয় অনুষ্ঠিত দুটি বৈঠকে জাহিদুল ইসলাম টিপুকে খুনের সিদ্ধান্ত হয়। ওই দুই বৈঠকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন দুবাইয়ে পালিয়ে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান এবং কানাডা থেকে জাফর আহমেদ মানিক। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হত্যাকা-ে সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন নিখুঁতভাবে গুলি চালাতে পারদর্শী (শুটার) সুমন শিকদার ওরফে মুসা। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগে এ পর্যন্ত ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন টিপু হত্যাকা-ে গ্রেফতার নাসির উদ্দীন মানিক, সুমন শিকদার ওরফে মুসা ও শুটার মাসুম আহমেদ ওরফে আকাশ। সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন সোহেল হাওলাদার নামের এক যুবক।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আলোচিত এই ঘটনার তিন দিনের মাথায় বগুড়া থেকে শুটার মাসুম ওরফে আকাশে গ্রেফতার করা হয়। এরপর গত বছরের ৯ জুন ওমানে গ্রেফতার হওয়া হত্যাকা-ের মূল সমন্বয়কারী মুসাকে ফিরিয়ে আনা হয়। মাসুম ও মুসা দুজনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে মামলার চার্জশিট প্রস্তুতির ক্ষেত্রে কারাবন্দি মুসার জবানবন্দিকেই বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। মুসা তার জবানবন্দিতে পুরো ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছিলেন।
তদন্তসংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, মুসার জবানবন্দিকে কেন্দ্র করে এর স্বপক্ষে তথ্য-উপাত্ত জোগাড় করা হয়েছে। তদন্তে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের নাম চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, চার্জশিটে শুটার মাসুম ওরফে আকাশ, মোল্লা শামীম, সুমন শিকদার ওরফে মুসা, নাসির উদ্দীন মানিক, আরফান উল্লাহ ওরফে দামাল, মশিউর রহমান একরাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) একজন কাউন্সিলর, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আশরাফ তালুকদার, শান্তিনগরের হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সোহেল শাহরিয়ার, ছাত্রলীগ নেতা মারুফ রেজা সাগর, মাহবুবুর রহমান টিটু, মারুফ খান, ইশতিয়াক আহম্মেদ জিতু, ইয়াসির আরাফাত সৈকত, রাকিবুর রহমান, শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান, জাফর আহমেদ মানিক, আরিফুর রহমান সোহেল ওরফে ‘ঘাতক’ সোহেল, বিডি বাবু, রিফাত হোসেন, ওমর ফারুক ওরফে কালা ফারুক, কাইল্যা পলাশ, মুসার ভাই সালেহ ওরফে শুটার সালে, কাইল্যা নাসির, আমিনুল ইসলাম, খায়রুল, ভাতিজা আকাশ, রানা মোল্লা প্রমুখের নাম রয়েছে।
আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে মুসা বলেছেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী খুনের ১২ দিন আগে তিনি দেশ ত্যাগ করেন। সেখান থেকেই খুনের সমন্বয় করেন। তিনি হত্যাকারী খোঁজার জন্য মোল্লা শামীমকে দায়িত্ব দেন এবং শামীমই টিপু হত্যার জন্য শুটার আকাশকে ঠিক করেন। কিলিং মিশনে ব্যবহৃত অস্ত্রটি সরবরাহ করেন মগবাজারের জিতু। হত্যাকা-ের আগে তারা কমলাপুরের রূপালী যুব উন্নয়ন সংঘ ক্লাবে সমন্বয় বৈঠকও করেন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
তেজগাঁও থানার হত্যা মামলা ইনু-মেনন-পলক-দীপু মনি, মামুন-রুপা-শাকিল গ্রেপ্তার
নিজ বাড়িতে কোয়াড নেতাদের আমন্ত্রণ জানালেন বাইডেন
ফিরলেন লিটনও, সঙ্গী পাচ্ছেন না শান্ত
থিতু হয়ে ফিরলেন সাকিব
হঠাৎ কেন ভারত সফরে যাচ্ছেন চীন ঘনিষ্ঠ মুইজ্জু
সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন ফের ৫ দিনের রিমান্ডে
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি অধীর চৌধুরীর পদত্যাগ
হেলিকপ্টারের তেল শেষ! ভোটপ্রচারে যেয়ে বিপাকে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী
নির্বাচনের পর শ্রীলঙ্কায় কারফিউ জারি
রামাল্লায় ভারী অস্ত্র নিয়ে আল জাজিরা অফিসে ইসরাইলি সেনাদের হানা
শান্ত-সাকিবের সাবধানী শুরু
ট্রাম্পের সঙ্গে আবারো মুখোমুখি হতে চ্যালেঞ্জ কমলার
পরিচারককে অপমান! মেয়েকে ‘শিক্ষা’ দিতে গিয়ে বিপাকে রণবীরের বোন
হার্ট অ্যাটাক করেছেন মাহমুদুর রহমান মান্না, হাসপাতালে ভর্তি
দ্বিতীয় দিনের মতো সড়ক অবরোধে অচল তিন পার্বত্য জেলা
যুক্তরাষ্ট্র পৌঁছে প্রথম দিনেই বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকে যে আলোচনা হলো মোদির
পাগড়ি বিতর্কে সাফাই দিয়ে বিজেপিকে তোপ রাহুলের
বিপুল সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগাবে বাংলাদেশ : আশা ৪ মার্কিন সিনেটের
পাকিস্তান সফরে যাচ্ছেন ড. জাকির নায়েক
খালেদা জিয়া মানসিকভাবে অনেক শক্ত : মুশফিকুল আনসারী