কেরানীগঞ্জে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ খাগড়াছড়িতে নোমানের ওপর হামলা
২৬ মে ২০২৩, ১১:২৬ পিএম | আপডেট: ২৭ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম
১০ দফা দাবি আদায়ে ঢাকা জেলা বিএনপির জনসমাবেশকে কেন্দ্র করে কেরাণীগঞ্জের জিনজিরায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঢাকা জেলার সাধারণ সম্পাদক এড. নিপুণ রায় চৌধুরীসহ অর্ধশতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে নিপুণ রায়ের অবস্থা গুরুতর। আহতদের অনেককেই বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়, গতকাল শুক্রবার কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে কেরাণীগঞ্জের জিনজিরা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে জনসমাবেশ কর্মসূচির ঘোষণা করে ঢাকা জেলা বিএনপি। এই কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার জন্য জেলার বিভিন্ন থানা থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলের দিকে আসতে থাকেন। এর মধ্যে যুবদলের একটি মিছিল বেলা পৌনে ১১টার দিকে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা মিছিলে হামলা চালায়। এতে বিএনপি নেতাকর্মীরাও পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলে। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া দেয় এবং ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। উভয়পক্ষের মধ্যে প্রায় আধা ঘন্টা সংঘর্ষ চলে। এসময় ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরীসহ বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন।
এর মধ্যে বিএনপির নেতা–কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ম ই মামুন অভিযোগ করে বলেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায়ের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে।
ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশাক বলেন, জিনজিরা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করছিলাম। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালান ও ইটপাটকেল ছোড়েন। এতে নিপুণ রায়সহ আমাদের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। মামলা-হামলা দিয়ে আমাদের আন্দোলন দমিয়ে রাখতে পারবে না। আগামী নির্বাচনে জনগণ এর জবাব দেবে।
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম বলেন, বিএনপির অতি উৎসাহী কিছু কর্মী আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা করেন। এর আগে সংঘর্ষে ও ইটের আঘাতে দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে বেলা সোয়া ১১টার দিকে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে সাড়ে ১১টার দিকে পূর্বনির্ধারিত স্থানেই বিএনপি সমাবেশ শুরু করে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আজ কেরানীগঞ্জের শান্তি সমাবেশকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন দলের নেতা–কর্মীরা তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমাদের দলের নেতাকর্মীর ওপর হামলা করেছে। এতে জেলা সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায়সহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা প্রকাশ করছি। মামলা-হামলা দিয়ে আমাদের আন্দোলনকে দাবিয়ে রাখতে পারবে না। সারা দেশেই আওয়ামী লীগ তাদের পেটোবাহিনী দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে, মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল-হাজতে পাঠানো হচ্ছে। এভাবে চলতে দেওয়া যাবে যাবে না। এদের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন করা আর শেয়ালের কাছে মুরগি বর্গা দেয়া একই কথা। আপনাদের অধীনে কখনোই বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনি কাতারে বসে বলেছেন আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। কিন্তু আপনার অধীনে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। আপনার অধীনে দিনের ভোট রাতেই হবে। এজন্য কোন বিরোধী দল আপানার অধীনে নির্বাচনে যাবে না।
রিজভী বলেন, আপনি সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলেন পদ্মা সেতু থেকৈ খালেদা জিয়াকে নদীতে ফেলে দিতে হবে। সংসদে বসে মন্ত্রীরা বলে বিএনপিকে হত্যা করতে হবে। ঘরে ঘরে যেয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা করতে হবে। আপনাদের মুখে কোন শান্তির ভাষা নেই। তাই বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না। দেশের জনগণকে সাথে নিয়ে এই সরকারের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন করেই হাসিনা সরকারকে পতন ঘটিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে।
এসময় জনসভায় আরো উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক, সাভারের সাবেক এমপি ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হাজী নাজিমউদ্দিন, কেরাণীগঞ্জ মডেল থানার সভাপতি মো. মনির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মোজাদ্দেদ আলীবাবুসহ ঢঅকা জেলার ৭টি থানার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
আব্দুল্লাহ আল নোমানের ওপর হামলা: খাগড়াছড়িতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমানের ওপর হামলা চালিয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। শুক্রবার দুপুরের দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে আব্দুল্লাহ আল নোমানের গাড়ি।
জানা গেছে, খাগড়াছড়ির কলাবাগান এলাকায় জেলা বিএনপির পূর্ব নির্ধারিত সমাবেশে যোগ দিতে যাচ্ছিল আব্দুল্লাহ আল নোমান। এসময় তার গাড়ি নারিকেল বাগান এলাকায় অবস্থিত জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় পার হলে দলটির নেতাকর্মীরা অতর্কিত হামলা চালায়। এতে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। জেলা বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক নিপু আহমেদ বলেন, আমাদের পূর্ব নির্ধারিত জনসভায় যোগ দিতে আসার সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমানের ওপর হামলা করে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার দাবি করছি।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
উত্তরা ক্লাবের নতুন সভাপতি ফয়সল তাহের
গজারিয়ায় বিএনপি নেতার শীত বস্ত্র বিতরণ
টাঙ্গাইলে মহাসড়কে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার
ভোটার তালিকা হালনাগাদে ইসির প্রস্তুতি
গফরগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু নিহত
দোয়ারাবাজারে স্ত্রীর যৌতুক মামলায় যুবক গ্রেপ্তার
সচিবালয়ে আগুন পরিকল্পিত: প্রকৌশলী ইকরামুল খান
সেন্ট মার্টিন থেকে ফেরার পথে আটকা পড়েছেন ৭১ পর্যটক
জকিগঞ্জে মোটরসাইকেল দূর্ঘটনায় এক যুবকের মৃত্যু
বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের চামড়া শিল্পের অগ্রগতির লক্ষে ইসিফোরজে’র প্রি-ওয়ার্কশপ
উচ্চ পর্যায়ের নতুন কমিটি গঠন, ৩ কর্মদিবসে প্রাথমিক প্রতিবেদন
ব্রাহ্মণপাড়ায় ছুরিকাঘাতে এক যুবককে হত্যা
কালীগঞ্জে পুকুর থেকে ২ শিশুর লাশ উদ্ধার
নিবন্ধন চূড়ান্ত: হজযাত্রী ৮৩ হাজার ২৪২ জন
হল্যান্ডের পেনাল্টি মিস,বিবর্ণ সিটি ফের হারাল পয়েন্ট
শরীফ থেকে শরীফার গল্প বাতিল করতে হবে: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
বিসিএ নির্বাচন সম্পন্ন: মিজান সভাপতি, মতিন সম্পাদক
ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৫৩
বিএনপি মুক্ত সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী: শাহজাহান চৌধুরী
সচিবালয়ে আগুন: গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ব্যর্থতাকে দায়ী করলো এবি পার্টি