বিদ্যুৎ-জ¦ালানি অব্যবস্থাপনা নিয়ে সংসদে ক্ষোভ
০৬ জুন ২০২৩, ১১:১৮ পিএম | আপডেট: ০৭ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
বিদ্যুৎ ও জ¦ালানী খাতের অব্যবস্থাপনা নিয়ে সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা। তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, বিদ্যুতের সমস্যার কারণে মানুষ সীমাহীন সংকটে আছে।
সরকারের আন্তরিকতা সত্ত্বেও অব্যবস্থাপনার কারণে এই সংকট দেখা দিয়েছে। কি হচ্ছে, সেটা নিয়েও অন্ধকারে আছে। জবাবে বিদ্যুৎ, জ¦ালানী ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ চলতি মাসেই সংকট কেটে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় সংসদে সম্পুরক বাজেট পাসের প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এরআগে বিদ্যুৎ, জ¦ালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ খাতে ৩২ কোটি ৪৬ লাখ ৪ হাজার টাকা সম্পূরক বাজেট বরাদ্দের প্রস্তাব করেন প্রতিমন্ত্রী। ওই প্রস্তাবের বিরোধীতা করে আনা ছাটাই প্রস্তারে ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্যরা বর্তমান বিদ্যুতের নাজুক ব্যবস্থাপনার জন্য প্রতিমন্ত্রীর তীব্র সমালোচনা করেন।
এই আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম কবিতারা লাইন উল্লেখ করে বলেন, ‘যে জন দিবসে মনের হরষে জ¦ালায় মোমের বাতি, আশুগৃহে তার দেখিবে না আর নিশিথে প্রদীপ ভাতি’। অসময়ে আমরা ২৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে ফেলেছি, অথচ আমাদের লাগে ১৪ হাজার মেগাওয়াড, বাকিটা নষ্ট হয়েছে। আজকে উৎপাদন হচ্ছে, মাত্র ৭ হাজার মেগাওয়াট। ফলে সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, বিদ্যুৎ না থাকলে শিল্পায়ন কমে যাবে, কৃষি উৎপাদনে ধ্বস নামবে। এক সময়র বিদ্যুৎ ছিল, দেশের প্রত্যেকটা গ্রামেগঞ্জে বিদ্যুৎ ছিল। কিন্তু এই গরমে হঠাৎ করে কেন বিদ্যুৎ চলে গেল। এ জন্য আগে থেকেই কয়লা ও ডিজেল আমদানী করা উচিৎ ছিল। তিনি বলেন, আমি মনে করি বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের নিজেদের মধ্যে সমম্বয় নেই। যার ফলে এই অবস্থা। অতিদ্রুত আমাদের কয়লা আমদানী করতে হতে হবে। যাতে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো দ্রুত চালু করা যায়।
সরকারি কর্মকর্তাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, সচিবালয়ে দেখা গেছে সচিবদের বার্থরুমের মধ্যেও এসি আছে। সেখানে সেন্ট্রাল এসি চালিয়ে রেখেছেন। তাদের এসি হাই ভোল্টেজে চলে।া একবার চললে বন্ধ হয় না। অথচ গ্রামের মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে না। শহরের কিছু ধনীক শ্রেনীর মানুষের জন্য কেন গ্রামের মানুষকে বিদ্যুৎ দিতে পারবেন না, তা মানা যায় না। তিনি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের প্রতিবাদ জানান।
ডা. রুস্তম আলী ফরাজী প্রতিমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আপনি কেন বলেন না, কোন সময় বিদ্যুৎ থাকবে না, কোন সময় থাকবে। বিদ্যুৎ সম্পর্কে কেউ কিছুই জানে না। একেবারে নো ম্যানস ল্যা-ের মত অবস্থা তো চলে না। কেন বিদ্যুৎ নেই, কখন থাকবে না তা জনগণকে জানান। এখানে কিন্তু অনেক ঘষেটি বেগম থাকতে পারে, তারা কিন্তু আপনাদের সুনাম নষ্ট করতে পারে, এটা থেকে সাবধান।
শামীম হায়দার পাটোয়ারি বলেন, বিএনপির আমলে বিদ্যুত ছিলো না, খাম্বা ছিলো। এখন বিদ্যুত আছে খাম্বা নেই। ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হচ্ছে। টাকা সর্টেজ। মানুষ গরমে কষ্ট পাচ্ছে। মোগল আমলে মানুষ যে কষ্টে ছিলো এখন তার থেকে বেশি কষ্টে আছে। তিনি বলেন, ১৫৩ টি কেন্দ্রের সবগুলোতে কম উৎপাদন হচ্ছে। সরকারের ধারাবাহিক সাফল্যের একটি জায়গা ছিলো বিদ্যুত। সেটি একেবারেই নষ্ট হয়ে গেল। এর থেকে তো আমি মনে করি জনরোষের সৃষ্টি হবে।
রওশন আরা মান্নান বলেন, ডলারের সঙ্কটে এলসি খোলা যাচ্ছে না, ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লা, তেল আনা যাচ্ছে না। অথচ গত সোমবার এই সংসদে বল হয়েছে, ভোলায় নাকি গ্যাসকুপের ছড়াছড়ি। একেবারে হাবুডুবু খাওয়ার মত অবস্থা। তাহলে সরকার কেন গ্যাস অনুসন্ধান চালাচ্ছে না, তাহলে তো এ সঙ্কট অনেক খানি কেটে যেত। যেভাবে বিদ্যুৎ সঙ্কট দেখা দিয়েছে, তাতে দ্রুতই ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হবে।
জবাবে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, বেশীদিন আগের কথা না, মাত্র ১৪ বছর আগেও প্রায় ৬০ শতাংশ বাংলাদেশ অন্ধকারে ছিল। আগে ১৭-১৮ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকতো না। সেখানে আমরা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা শতভাগ বিদ্যুতায়ন করেছি। আমরা সঞ্চালয় লাইন করেছি। এক হাজার বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে ১২ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়। যখন আমরা ২৫ হাজার মেগাওয়ার্ট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বলি, তখন প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার খরচের বিষয় ছিল। তার ওপর সঞ্চালন লাইন, ডিস্টিবিউশন লাইন ও জ¦ালানী খরচও দিতে হয়। আমাদের প্রস্তুতি আছে ২০ থেকে ২২ হাজার মেগাওয়াটের। যেকোন মুহুর্তে উৎপাদন করতে পারি। কিন্তু কোভিড পরবর্তিতে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের মত চ্যালেঞ্জ এসেছে, সারা বিশে^ জ¦ালানীসহ সব জিনিষপত্রের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। গ্যাস ও তেলের দামও অস্বাভাবিক। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে অর্থনৈতিক অবস্থা ও বৈশি^ক অবস্থার কারণে আমরা সময়মত কয়লা আনতে পারেনি। তবে ১৫-১৬ দিনের মধ্যে আসবে কয়লা এসে যাবে। আবার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হবে। সকল সংকট কেটে যাবে।
###
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
রংপুরসহ পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত
ব্যালন ডি’অর: রোনালদোর প্রশ্ন তোলা নিয়ে যা বললেন রদ্রি
বায়ুদূষণে আজ ঢাকার অবস্থান সপ্তমে, শীর্ষে হ্যানয়
ঢাকা-সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত
সিরাজদিখানে কাভার্ড ভ্যানকে বাসের ধাক্কা, নিহত ২
ছাগলনাইয়ায় ইউএনও রিগ্যান চাকমার শীতবস্ত্র বিতরণ
ক্যালিফোর্নিয়ায় বাণিজ্যিক ভবনে বিমান আছড়ে পড়ে ২ জনের মৃত্যু, আহত ১৮
মোরেলগঞ্জে বেড়েছে শীতের তীব্রতা, জুবুথুবু পানগুছি নদীর দুপাশের জনজীবন
ফরিদপুরে ১৩ বছরের কিশোরকে হত্যা করে রিকশা ছিনতাই
জাবি শিবিরের নতুন সভাপতি মুহিব, সেক্রেটারি মুস্তাফিজুর রহমান
নিউ অর্লিন্স হামলার শিকার পরিবারে শোকের ছায়া
মানিকগঞ্জে অটোবাইকের চাপায় এক বৃদ্ধ'র মৃত্যু
পাকিস্তানের শাহবাজ শরিফ কেন মনমোহন সিংকে শ্রদ্ধা জানালেন না ?
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪
সঙ্গীকে উষ্ণ আলিঙ্গন খুব প্রয়োজন- কৃতি শ্যানন
রাজধানীসহ সারাদেশে বৃষ্টির মতো ঘন কুয়াশা, শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন
যশোরে নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে জামায়াত
জেজু এয়ারলাইনসের প্রধান নির্বাহীকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
চাকরি ফেরত চান দুদকের আলোচিত কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন
বেনাপোলে বিজিবির অভিযানে ১৩ লাখ টাকার চোরাই পণ্য জব্দ