মানবপাচারে আন্তর্জাতিক সিন্ডিকেট
১০ জুন ২০২৩, ১১:০১ পিএম | আপডেট: ১১ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
বাংলাদেশকে ঘিরে মানবপাচারের দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। মানবপাচার প্রতিরোধের প্রধান কাজ হিসেবে বেকারত্ব হ্রাসের প্রতি গুরুত্ব দেয়া জরুরি। যেসব দেশে মানবপাচারের হার বেশি, সেসব দেশের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে মানবপাচার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। সম্প্রতি একটি গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রতিবেদনে এসব কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়। দেশে বিচারাধীন মানবপাচারের মামলার সংখ্যা দুই হাজার ৭২৯। তদন্তাধীন রয়েছে ৫১৭টি মামলা। সব মিলিয়ে মামলা পেন্ডিং রয়েছে তিন হাজার ২৪৬টি। এসব মামলায় মোট আসামি করা হয়েছে ৩১ হাজার ৫২৩ জনকে। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে ১৪ হাজার ৫৪১ জনকে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মানবপাচারের অভিযোগে ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে ৬২টি, ফেব্রুয়ারি মাসে ৬১টি এবং মার্চ মাসে ৭৭টি মামলা দায়ের হয় দেশের বিভিন্ন থানায়। এর মধ্যে জানুয়ারি মাসে ৪৪টি মামলা, ফেব্রুয়ারি মাসে ৩৪টি এবং মার্চ মাসে ৩৯টি মামলার নিষ্পত্তি হয়। জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত তিন মাসে ৩৯টি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। অভিযোগপত্র দেওয়া হয় ৭৮টি মামলার।
ইউএনওডিসির মানবপাচার নিয়ে এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন জেলার ৫১ শতাংশ মানুষ জীবিকার তাগিদে পাচারকারীদের ফাঁদে পা দেয়। এর মধ্যে মানিকগঞ্জ, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, ঝিনাইদহ, নড়াইল, সিলেট, নওগাঁ, মাগুরা, যশোর, খুলনা, নরসিংদী, মাদারীপুর, কক্সবাজার, ঢাকা, নেত্রকোনায় মানবপাচারকারী চক্রের তৎপরতা বেশি। চক্রের খপ্পরে পড়ে বিদেশ গিয়ে শেষে সর্বস্বান্ত হয়ে কেউ ফিরে আসে, কেউ নির্যাতন ভোগ করতে থাকে। বাংলাদেশ থেকে পূর্ব আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বেশি মানবপাচার হয় বলে জানানো হয় প্রতিবেদনে।
মানবপাচার মামলা তদন্ত করছেন এমন কর্মকর্তারা বলছেন, জনশক্তি রফতানির কোনও লাইসেন্স না থাকার পরও লোকজনকে কথার ফাঁদে ফেলে মানবপাচারে সক্রিয় রয়েছে চক্রগুলো। উচ্চ বেতনে চাকরি, বছরে বোনাস, ভালোভাবে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা এসবের প্রলোভন দেখিয়ে বেকার যুবকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এসব চক্র। তাদের ফাঁদে পড়ে যারা বিভিন্ন দেশে যাচ্ছেন, সেখানে গিয়ে শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।
একপর্যায়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে দেশে থাকা পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করে নিচ্ছে। এসব চক্রের সদস্যরা এতটাই শক্তিশালী যে তাদের বিষয়ে ভুক্তভোগীরাও কোনও অভিযোগ করতে চান না। এতে মানবপাচারের মামলার তদন্ত করতে গিয়ে তদন্তকারী সংস্থাকে বেশ ঝামেলায় পড়তে হয়। যারা বিদেশ থেকে ফিরে আসেন, তাদের ভয়ভীতি দেখানো হয়। এ জন্য তারাও মুখ খুলতে চান না।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আন্তমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করে পুলিশ সদর দফতরে স্থাপন করা মনিটরিং সেল আরও কার্যকর রাখতে হবে। স্থল ও বিমানবন্দরগুলোয় বিশেষ তল্লাশির ব্যবস্থা রাখতে হবে। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নজরদারি বাড়ালে অনেক ক্ষেত্রেই মানবপাচারের মতো ঘটনা কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। এ ধরনের মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত চক্রের সদস্যদের আইনের আওতায় আনার পর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এতে অনেকেই এ ধরনের অপরাধ থেকে দূরে থাকবে। মানবপাচার রোধে শুধু বক্তৃতা, বিবৃতি ও গবেষণা যথেষ্ট নয় বলে জানান তারা।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
আনচেলত্তির মাইলফলক ম্যাচ জয়ে রাঙাল রিয়াল
৩০ পেরোনোর আগেই ফুটবলকে বিদায় বলে দিলেন জিদানপুত্র
ব্রুকের সেঞ্চুরিতে অজিদের জয়রথ থামিয়ে টিকে থাকল ইংল্যান্ড
বাংলাদেশকে পূর্ণ সমর্থন বাইডেনের
পাবর্ত্য চট্টগ্রামে দুর্গম পাহাড়ি সেনা ক্যাম্প পরিদর্শন সেনা প্রধানের
নিউইয়র্কে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সাথে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক
আম্মু তোমাকেও আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে
দেশের মাজার রক্ষা করতে হাইকোর্টের নির্দেশ
বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য চীন খুবই গুরুত্বপূর্ণ: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
ক্ষোভ বাড়ছে ভারতে
ভারতীয় সাংবাদিকদের এড়িয়ে গেলেন ড. ইউনূস
সোনারগাঁওয়ে তিতাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলা, আহত ৮
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য চায় পবিপ্রবির গ্রাজুয়েটবৃন্দ
হামজাকে পাওয়ার আরও কাছে বাংলাদেশ
বান্দরবানে জামাতুল আনসারের ৩১ সদস্য কে ৪ মামলায় জামিন
সাগরে লঘুচাপ, চার সমুদ্রবন্দরে বন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত
সকল অপকর্মে জড়িতদের বিরুদ্ধে যার যার অবস্থান থেকে সামাজিক আন্দোলন জোরদার করতে হবে -চকরিয়ায় নারী সমাবেশে বক্তারা
সেনা কর্মকর্তা হত্যাকারীদের অবিলম্বে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে
অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টি পঞ্চগড়ে
আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে: ডিএমপি কমিশনার