আমাজনের গরু পিরারুকু মাছ
১১ জুন ২০২৩, ১১:২৪ পিএম | আপডেট: ১২ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
পিরারুকু মাছ। দেখতে দানবের মত। থেকে থেকে তিমির মত ভেসে ওঠে আমজনে গভীর নদীতে। লেজের বাড়িতে আছড়ে পড়ে পাড় ভাঙা ঢেউ। আকার-আকৃতিতে মানুষের চেয়েও বড়। অন্তত দেড় গুণ। দাদী-নানীদের মুখে এই মাছের গল্প শুনেই বড় হয় আমাজনের গহীন জঙ্গলের আদিবাসী শিশুরা। প্রচলিত একটি রূপকথাও আছে মাছটির জন্মরহস্য ঘিরে। আমাজনের ব্রাজিলীয় অংশের পশ্চিমা অঞ্চলের কানামারি উপজাতিরা বলেন ,‘হাজার হাজার বছর আগে একদিন গাছের একটি পাতা টুপ করে পড়ে যায় আমাজন নদীর পানিতে। আর মুহূর্তেই তা পুরো নদী তোলপাড় করে হয়ে ওঠে মাছ।’ পিরারুকু সম্পর্কে এএফপিকে এ কথাই বলেন উপজাতি প্রধান মাউরো দা সিলভা। বৈজ্ঞানিক নাম ‘আরাপাইমা গিগাস’। একটি পূর্ণাঙ্গ পিরারুক ৯.৪ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা ও ২০০ কিলোগ্রাম ওজনের হয়। এই বিশালদেহীর কারণেই মাছটিকে ‘আমাজনের গরু’ বলেও ডাকেন স্থানীয়রা। পিরারুকু পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মিঠা পানির মাছ। গোলাপী লেজ, চ্যাপ্টা মাথা ও গোলাকার চোখ বিশিষ্ঠ একটি সর্বভুক প্রাণি। লম্বাদেহী এ মাছ দেখতে অদ্ভুত হলেও খেতে ভীষণ মজাদার। সুস্বাদু হওয়ায় শিকারীদের কাছেও ভীষণ প্রিয় এ মাছ। রিও, লিমা ও বোগোটার রেস্তরার মেনুতেও এর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। মাছটির শ্বাস-প্রশ্বাসে কিছুটা ভিন্নতা থাকায় দৈত্যকার হওয়া সত্ত্বেও জাল ও হারপুন দিয়ে এটিকে মেরে ফেলা অনেক সহজ। পিরারুকু খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি এর ব্যবহারও রয়েছে বহুমুখী। এর চামড়ার দিয়ে জুতা, ব্যাগ, মানিব্যাগ তৈরি করা যায়। মাছ ধরার বিধিনিষেধ না থাকায় নব্বই-এর দশকে পিরারুকু অদৃশ্য হয়ে যায়। পরবর্তীতে সিটিআই নামের একটি আদিবাসী এনজিওর সহায়তায় জাভারি উপত্যকায় একটি প্রকল্প শুরু করা হয়। প্রকল্পটি কানামারি নিজেরাই পরিচালনা করে। যারা স্বেচ্ছায় পাঁচ বছরের জন্য পিরারুকু বিক্রি না করতে সম্মত হয়েছে। প্রকল্পটি শুরু হয় ২০১৭ সালে। এ প্রকল্পের ফলে অবৈধ মাছ ধরার ঝুঁকি কমে যেতে পারে। অন্য মাছের চেয়ে পিরারুকু স্বাদ ও পুষ্টির দিক থেকেও অনেক উৎকৃষ্ট। আমাজনের ২ হাজার ৩০০ প্রজাতির মাছের মধ্যে পিরারুকু নামের বিশাল এই মাছ সবচেয়ে বড় আকৃতির। এই বিশালাকার মাছে এখন ব্রাজিলের বাজার সয়লাব। রাজধানী রিও ডি জেনেরিওর প্রায় সব বড় রেস্তোরাঁয় পাওয়া যায় পিরারুকু।ব্রাজিলের ঐতিহ্যবাহী ‘মোকা’ ডিশ তৈরি করতে পিরারুকু ব্যবহার করেন শেফ মার্সেলো বার্সেলোস। মোকা হচ্ছে মাছের তৈরি এক বিশেষ ধরনের স্যুপ। পাম তেলে ডুবিয়ে রান্না করে ধনিয়া পাতা দিয়ে পরিবেশন করা হয় এই ডিশ, সঙ্গে মনিয়াক ময়দা ও বাদাম। ডিশটি খেতে যেমন সুস্বাদু, দেখতেও তেমন চোখ জুড়ানো। নোনাপানির পোলক বা কড মাছের মতোই সুস্বাদু বলে পিরারুকুকে আমাজনের কড বলেও ডাকা হয়। সুস্বাদু মাছটির চামড়াও ফেলনা নয়। জুতো,স্যান্ডেল, বেল্ট থেকে শুরু করে প্যান্ট-জ্যাকেটও তৈরি হয় এর চামড়ায়। রয়টার্স।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
রানার অটোমোবাইলস পিএলসির এজিএম সম্পন্ন
আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ কাজের আহ্বান: এমরান আহমদ চৌধুরী
নকল পণ্য প্রতিরোধে আমদানির উপর শুল্ক কমানোর দাবি বাজারের ২০ শতাংশ খাদ্য মানহীন
লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে জনসম্মুখে যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, নাকে খত
বাঘায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ৪ ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ
বিশ্বে বছরজুড়ে আলোচনায় যুদ্ধ, নির্বাচন ও মূল্যস্ফীতি
যুক্তরাষ্ট্র আগুন নিয়ে খেলছে : চীন
আওয়ামী দুঃশাসনের বিচার না হলে জুলাই আগষ্টের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী হবে: ডা. জাহিদ হোসেন
মেক্সিকোতে প্লেন বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ৭
মাথাপিছু ১৪০০ ডলারের চেক পাচ্ছেন ১০ লাখ মার্কিনি
৯১ শিশু খেলোয়াড়সহ ৬৪৪ ক্রীড়াবিদকে হত্যা করেছে ইসরাইল
মোজাম্বিকে ঘূর্ণিঝড় চিডোরে নিহত ৯৪
মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে সম্মানহানী
রাফালের আগমনে ভারত সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি
উত্তর প্রদেশে নিহত ৩ খলিস্তানি নেতা
ভারতে বাল্যবিবাহবিরোধী অভিযানে আটক ৫০০০
মুজিবল্যান্ড বানিয়ে হিন্দুস্তানে থাকুক আ.লীগ : রাশেদ প্রধান
গ্রেফতার ভয়ে পোল্যান্ড সফর বাতিল করলেন নেতানিয়াহু
পানামা খাল দখলের হুমকিকে ভর্ৎসনা পানামা প্রেসিডেন্টের
স্বৈরাচারের দোসর শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী-সন্তানসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা