মিশন প্রত্যাশীরা উৎকণ্ঠায়
১৩ জুন ২০২৩, ১১:৪৭ পিএম | আপডেট: ১৩ জুন ২০২৩, ১১:৪৭ পিএম
অভিন্ন লক্ষ্য। একই রকম ভাষা। প্রতিদিনই কোনো না কোনোভাবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনায় উঠছে বাংলাদেশ। এশিয়ার ‘ইমার্জিং টাইগার’ হিসেবে এক সময় বাংলাদেশের সুনাম বিচ্ছুরিত হতো আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে। দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ছিল উন্নয়ন-সমৃদ্ধির বারতা। হালে সেই দেশ চিত্রিত হতে শুরু করেছে ‘গণতন্ত্রহীনতার দেশ’, ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’র দেশ হিসেবে। মার্কিন ভিসানীতি ঘোষণার পর উন্নয়ন অংশীদার পশ্চিমা দেশ ও সংস্থাগুলোর পক্ষ হতে একযোগে উচ্চারিত হচ্ছে বিশেষণগুলো। একের পর এক আসছে আঘাত। বাংলাদেশের বৈদেশিক রফতানি, শ্রমবাজার, ফরেন রেমিট্যান্স, শান্তিরক্ষী মিশন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা প্রসঙ্গ এসবের উপজীব্য। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সব দেশ ও সংস্থা যেন একট্টা। সরকারের তরফ থেকে একেকটি ঘটনাকে কখনও উপেক্ষা কিংবা অস্বীকার করা হচ্ছে। কখনওবা অভিহিত করা হচ্ছে ‘দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র’ বলে। কিন্তু পরক্ষণেই সরকারের মধ্যে দায়িত্বশীল পদে থাকা ব্যক্তিবর্গের অস্থিরতা, দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ ও কথাবার্তা সাধারণ মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস সঞ্চারের পরিবর্তে ছড়াচ্ছে সন্দেহ ও উদ্বেগ। দ্রব্যমূল্যের রকেট ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুৎ সঙ্কট, জ্বালানি সঙ্কটে একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়া, ডলার সঙ্কট-সাধারণ মানুষের আত্মবিশ্বাসকে সংকোচিত করছে। সবার মনে প্রশ্নÑ কী হতে চলেছে? কি হচ্ছে দেশে? কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে পরিস্থিতি? দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সময়-ক্ষণ যতই ঘনিয়েছে আসছে, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাও ঘনীভূত হচ্ছে তত। কারও কাছেই প্রশ্নের সদুত্তর নেই।
ঘটনা পরম্পরা বিশ্লেষণে দেখা যায়, বছর দেড়েক আগে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে এলিটফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান-র্যাবের ওপর স্যাংশন দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। চলতি বছর ২৯ ও ৩০ মার্চ অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ পায়নি বাংলাদেশ। এর আগের বছরও বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। গত ২৪ মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য ঘোষণা করে নতুন ভিসানীতি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ঘোষণা করা হয় এই নীতি। এতে বলা হয়, আগামী নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কোনো রকম অনিয়ম, হস্তক্ষেপ ও বাধাদান করা হলে এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি ও তার পরিবারকে ভিসা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র। সে অনুসারে ভুয়া ভোট প্রদান, ভোটার ও নির্বাচনী এজেন্টদের বাধাদান, নির্বাচনী সমাবেশে হামলা, গায়েবি মামলা প্রদান, নির্যাতন-নিপীড়ন, মতপ্রকাশে বাধাদান ইত্যাদি কাজ নির্বাচনে অনিয়ম ও হস্তক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। এসব কাজে জড়িত থাকলে সরকারের সব পর্যায়ের ব্যক্তিরা ( যেমন: মন্ত্রী, আমলা, পুলিশ বা নিরাপত্তা বাহিনী) এবং বিরোধী দলেরও যে কেউ এই ভিসানীতির তোপে পড়তে পারেন। মার্কিন ভিসা নীতির ঢেউ আছড়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বদলে যায় সরকারের আচরণ। সরকারের ভেতরে এবং বাইরে থাকা রাজনীতিকদের আচরণেও লক্ষ্যণীয় হয়ে ওঠে পরিবর্তন। মানুষের রাজনৈতিক অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়ে উদার গণতান্ত্রিক ও দায়িত্বশীলতার প্রমাণ দিতে থাকেন ক্ষমতাসীনরা। মার্কিন ভিসানীতিকে সরকারের তরফ থেকে আপাতত স্বাগত জানানো হয়। তবে এটিকে জাতির জন্য ‘চরম অবমাননাকর’ বলে উল্লেখ করেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা। বলাবাহুল্য, মার্কিনযুক্ত রাষ্ট্রের যেকোনো সিদ্ধান্ত ও নীতিকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনুকরণ করে অন্যান্য পশ্চিমা দেশ। যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতির ভয়াবহতা অনুধাবন করে শুধু দেশের নীতিনির্ধারকরাই ভেতর থেকে কুঁচকে যাননি। বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুুষ নিপতিত হয়েছেন সীমাহীন উদ্বেগ-অনিশ্চয়তার মধ্যে। হিম-শীতল ভিসানীতির ভয়াবহতা স্পর্শ করেছে নির্বাহী বিভাগের প্রতিটি স্তরকে। পুলিশসহ সকল আইনশ্ঙ্খৃলা বাহিনী, বিচার বিভাগ, ব্যবসায়ী, শিল্প-বিনিয়োগ খাত, অর্থনীতি, বৈদেশিক শ্রমবাজার, রফতানি খাত-প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ প্রভাব থেকে বাদ যায়নি কোনোটি।
মার্কিন ভিসানীতি নিয়ে যখন সরকার এবং বিরোধী পক্ষের মধ্যে লাভ-ক্ষতির বিতর্ক ও চর্চা চলছে তখনই আন্তর্জাতিক মহল থেকে একের পর এক আসছে বহুমাত্রিক চাপ। বাংলাদেশের সরকার কর্তৃক ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’র ঘটনা বন্ধে এবং ‹বাংলাদেশের জনগণকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নেয়ার সর্বোত্তম সুযোগ করে দিতে› জরুরি উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে চিঠি দিয়েছেন মার্কিন কংগ্রেসের ৬ সদস্য। গত ১৭ মে লেখা এই চিঠিকে প্রথম ‘ভুয়া’ আখ্যা দিয়ে বিতর্ক তোলা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে চিঠিটির যথার্থতা প্রমাণিত হয়। জো বাইডেনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ফ্রিডম হাউস ও জাতিসংঘের প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। তাতে তারা বাংলাদেশে ‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ক্রমাগত প্রত্যাখ্যান করে আসা’, বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-, সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন, বাকস্বাধীনতার জায়গা সংকুচিত হয়ে আসা এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিক্ষোভ প্রদর্শনকারীদের ওপর হামলার মতো বিষয়গুলোর কথা উল্লেখ করেন। রিপাবলিকান পার্টি থেকে নির্বাচিত এই কংগ্রেস সদস্যরা হলেন, স্কট পেরী, ব্যারি মুর, ওয়ারেন ডেভিডসন, বব গুড, টিম বার্চেট এবং কিথ সেলফ।
ছয় কংগ্রেসম্যানের এই চিঠির এক মাস পূর্ণ না হতেই গত ১২ জুন জাতিসংঘের অধীন শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশিদের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’ (এইচআরডব্লিউ)। শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশিদের যোগদান স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ করারও আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। অতীতে র্যাবের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কথা উল্লেখ করে সংস্থাটি বলেছে, জাতিসংঘের উচিত বাংলাদেশি অফিসারদের র্যাবে দায়িত্ব পালনের রেকর্ড থাকলে তা প্রকাশের শর্ত দেয়া এবং যারাই র্যাবে সংশ্লিষ্ট ছিল তাদের শান্তিরক্ষী বাহিনীতে যোগদান স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ করা। কেবল উঁচুস্তরের কমান্ডার নয়, সব বাংলাদেশি ট্রুপের যথাযথ যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পর্যাপ্ত রিসোর্সেস জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বিভাগকে নিশ্চিত করতে হবে।
১২ জুন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের চিফ অ্যাডভোকেসি অফিসার ব্রুনো স্ট্যাগনো উগার্তের ডিসপ্যাচে সংস্থাটি বলেছে, জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের প্রধান জঁ পিয়েরে লাখোয়ার উচিত বাংলাদেশে আসন্ন সফরকালে সে দেশের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর দ্বারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে প্রকাশ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করা। জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জঁ পিয়েরে লাখোয়া সফরে আসছেন এমন সময় যখন দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী রাজনৈতিক বিরোধী পক্ষের ওপর দমন-পীড়ন, অ্যাক্টিভিস্টদের ও গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারকে টার্গেট করছে এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের হয়রানি করছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটির মতে, লাখোয়ার উচিত এ মর্মে জোর দেয়া যে, শান্তিরক্ষী বাহিনীতে শীর্ষ কন্ট্রিবিউটর হিসেবে অবস্থান ধরে রাখতে চাইলে বাংলাদেশকে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া যথাযথভাবে প্রয়োগ করতে হবে, যেখানে জাতিসংঘের পাশাপাশি সরকারের এটা নিশ্চিত করার দায়বদ্ধতা রয়েছে যে, জাতিসংঘের অধীনে চাকরিরত সে দেশের নাগরিকরা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেননি।
সংস্থাটি বলেছে, বাংলাদেশে যাচাই-বাছাই নীতির দুর্বল প্রয়োগ এই বার্তাই জোরালো করে যে, গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন একজন ব্যক্তিকে জাতিসংঘের পতাকাতলে চাকরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত করবে না, যা জাতিসংঘের জন্য নৈতিক ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। এইচআরডব্লিউ’র এ আহ্বানে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাধারণ সদস্যদের মধ্যে। বিশেষত জীবনে অন্তত একবার যারা শান্তিরক্ষী বাহিনীতে যোগ দিয়ে পারিবারিক আর্থিক সচ্ছলতা আনয়নের স্বপ্নে বিভোরÑ তাদের ফেলেছে গভীর হতাশা আর উৎকণ্ঠায়। কারণ, তারা লক্ষ করছেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর বার বার নির্দেশ করছে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণকেই। আর সেটি বাস্তবায়িত হলে দেশের বিভিন্ন বাহিনীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত সাধারণ সদস্যদের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন ধূলিস্যাৎ হয়ে যাবে। বড় কথা, দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অপমানিত হবে। শান্তিরক্ষা মিশনে যাওয়ার স্বপ্ন দেখা প্রতিটি সদস্য ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাদের পরিবার-পরিজন, ব্যক্তিগত জীবন, ভবিষ্যৎ-ভাবনা অনেক কিছুকেই প্রভাবিত করবে।
এদিকে এইচআরডব্লিউ’র এ আহ্বানের দিনই আরেক চিঠি দিয়েছেন বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার ও রফতানি বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)ভুক্ত ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ৬ সদস্য। ইউরোপীয় কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট জোসেপ বোরেলকে এই চিঠি দিয়েছেন তারা। চিঠিতে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন পুনরুদ্ধারে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বর্তমান সরকার ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছে। এই সময়ে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য গণতান্ত্রিক স্থান সংকুচিত হয়েছে এবং এই সরকার মানুষের মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। ক্ষমতা সুসংহত করার জন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যা, অপহরণ, নির্যাতন ও মিথ্যা মামলার আশ্রয় নিচ্ছে সরকার। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, বিশেষ করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের পর থেকে সংবাদপত্রের স্বাধীনতাসহ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ক্ষুণœ হচ্ছে।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যরা দাবি করেন, বাংলাদেশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) হেফাজতে নির্যাতন এবং অন্যান্য দুর্ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। নির্যাতন শুধু সরকারের রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপরই হয় না, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু খ্রিষ্টান জনসংখ্যাসহ জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। বাংলাদেশে গত এক দশকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- এবং জোরপূর্বক গুমের উচ্চহার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
ওই চিঠিতে আরো বলা হয়, আমরা বাংলাদেশের আসন্ন ১২তম সাধারণ নির্বাচনের ওপর ফোকাস রাখার বিষয়ে জোর দিতে চাই। ২০২৩ সালের শেষের দিকে বা ২০২৪ সালের শুরুতে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। চিঠিতে দাবি করা হয়, কারচুপি, কারসাজি এবং ভোটারদের অনুপস্থিতির কারণে বাংলাদেশের দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দশম সাধারণ নির্বাচন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)সহ প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো বর্জন করেছিল। অপরদিকে ১১তম ‘মধ্যরাতের নির্বাচন’ হিসেবে পরিচিত।
চিঠিতে জোসেপ বোরেলের প্রতি আবেদন জানিয়ে বলা হয়, আমরা আপনাকে বাংলাদেশে একটি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সাধারণ নির্বাচন নিশ্চিত করতে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অবসান ঘটাতে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি। এছাড়া চিঠিতে বিরোধী নেতা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির কথাও বলা হয়।
ওই ছয় ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য বলেন আমরা বিশ্বাস করি যে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়ানোর শক্তিশালী যুক্তি রয়েছে। কারণ বাংলাদেশ বাণিজ্য ও উন্নয়ন সহযোগিতায় আমাদের দীর্ঘ সময়ের অংশীদার।
চিঠিতে স্বাক্ষর করা ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্যরা হচ্ছেনÑ ইভান স্টেফানেক (ইপিপি, স্লোভাকিয়া), মাইকেলা সোজড্রো (ইপিপি, চেক প্রজাতন্ত্র), আন্দ্রে কোভাতচেভ (ইপিপি, বুলগেরিয়া), কারেন মেলচিওর (রিনিউ, ডেনমার্ক), জাভিয়ের নার্ট (রিনিউ, স্পেন) এবং হেইডি হাউটালা (গ্রিনস/ইএফএ, ফিনল্যান্ড)।
এদিকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশিদের যোগদান স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ করতে ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’র আহ্বান এবং ৬ ইউরোপিয়ান কংগ্রেসম্যানের চিঠিতে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা নেমে এসেছে পুলিশ বাহিনীসহ অন্যান্য সংস্থায়। বিভিন্ন পদে দায়িত্বে থাকা পদস্থ কর্মকর্তাদের চেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাধারণ সদস্যরা। পরস্পর আলাপচারিতায় উদ্বেগের বিষয়টি একে অন্যের কাছে প্রকাশ করছেন। নিজেদের মধ্যে গোপন বৈঠকও করেছেন অনেকে।
তবে ভিন্নকথা বলছেন পুলিশের আইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন। গতকাল মঙ্গলবার তিনি ইনকিলাবকে বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর কার্যক্রম নিয়ে কে কি বলল সেটি আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। এ নিয়ে পুলিশ বাহিনী মোটেও উদ্বিগ্ন নয়। আমরা আইন ও বিধি অনুযায়ী দেশ-জনগণের জানমাল রক্ষায় দায়িত্ব পালন করছি। দায়িত্ব পালনে কেউ ব্যর্থ হলে বা অন্যায়ের আশ্রয় নিলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। কখনো কখনো অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা বা সদস্যের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাও নেয়া হয়।
তিনি বলেন, দেশ ও দেশের সাধারণ মানুষের কাছে আমরা দ্বায়বদ্ধ। বর্তমান সময়ের পুলিশ বাহিনী সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলা করে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছে। পুলিশ বাহিনী সব ধরনের পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালনে সক্ষম বলে চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন মন্তব্য করেন।
এছাড়া পুলিশের সাবেক আইজি হাসান মাহমুদ খন্দকার ইনকিলাবকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ অন্যান্য সংস্থার বিরুদ্ধে সমাজে অপতৎপরতা থাকবেই। পুলিশ বাহিনীসহ অন্যান্য সংস্থার কর্মকর্তা ও সদস্যরা তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে যারা দ্বিমত পোষণ করবেন তাদের জবাব দেবে। দেশপ্রেম ও পেশাদারিত্বের মাধ্যমে দায়িত্ব পালন করলে অশুভ তৎপরতায় কোনো প্রভাব পড়বে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
বাংলাদেশের গুমের ঘটনায় ভারতের সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে কমিশন
২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচনের পক্ষে মত বিএনপির যুগপৎ সঙ্গীদের
ঢাকায় ‘হযরত ফাতিমা জাহরা (সা.আ.) বিশ্বের নারীদের আদর্শ’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
চার ভাগে ফিরবেন ক্রিকেটাররা
চাঁদাবাজদের ক্ষমতায় আসতে দেবেন না: হাসনাত
এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের বরাদ্দ পেল বাফুফে
ইজতেমা মাঠকে যারা খুনের মাঠে পরিণত করেছে তারা সন্ত্রাসী
আসছে ভিভোর এক্স সিরিজের নতুন ফ্ল্যাগশিপ
বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ২ ভারতীয় নাগরিককে স্বদেশে ফেরত
মুন্সীগঞ্জে বিএনপি’র দু পক্ষে সংঘর্ষ,৩ জন গুলিবিদ্ব সহ আহত ১০
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সাকিব-তামিমকে পাওয়া যাবে: ফারুক
ইজতেমা মাঠে হত্যাযজ্ঞে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করুন
কলাপাড়ায় অটোরিকশা উল্টে শিশুর মৃত্যু
আগামীকাল পঞ্চগড়ে বিএনপির জনসমাবেশ
ব্যাক্তিস্বার্থ পরিহার করে, দেশ ও দলের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে: ইলিয়াস পাটোয়ারী
সখিপুরে বিদ্যুৎষ্পৃষ্টে ডিস ব্যবসায়ীর মৃত্যু
যারাই সুযোগ পেয়েছে তারাই দেশের সাথে বেঈমানী করেছে: ডা. মু. তাহের
পঞ্চমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো মৌমাছি ও মধু সম্মেলন
শীতের দিনে ঝিরঝিরে বৃষ্টি স্থবির খুলনা শহুরে জীবন
টেকসই উন্নয়নের কথা মাথায় রেখেই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য নীতি করার তাগিদ