দাম কমেনি দেশি পেঁয়াজের
১৬ জুন ২০২৩, ১১:৩০ পিএম | আপডেট: ১৭ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
চলতি মাসের শুরুর দিকে খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ১০০ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এরপরই সরকার ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়। তাতে বাজারে কিছুটা সুখবর আসতে শুরু করে। গত সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজের দাম কমে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি ছিল ৮০ টাকা। যা এ সপ্তাহেও অপরিবর্তীত রয়েছে। তবে পেঁয়াজের দাম পাইকারিতে বেশ নেমে এলেও খুচরায় এখনো সেভাবে তার প্রভাব পড়েনি। আর খুচরা পর্যায়ে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০ টাকায়।
গতকাল শুক্রবার খিলগাঁও, গোড়ান, বনশ্রী এবং মালিবাগ এলাকায় বিভিন্ন মুদিদোকান ঘুরে দেখা গেছে দোকানে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০ টাকায়। যা দোকানিরা পাইকারি বাজার থেকে কিনে আনছেন ৪৫ টাকা কেজি দরে। অন্যদিকে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৮০ টাকায়। যা পাইকারি বাজার থেকে কিনতে হচ্ছে ৬৫-৭৫ টাকায়, এমনটাই জানিয়েছেন বেশির ভাগ মুদিদোকানি।
মেরাদিয়া হাটের এক পেঁয়াজ বিক্রেতা বলেন, পাইকারি বাজার থেকে দেশি পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৭২ টাকায়। আর খুচরা বাজারে এই পেঁয়াজ বিক্রি করছি ৮০ টাকায়। ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারের ঢোকার পরও দাম কমছে না। যদিও এ পেঁয়াজ বাজারে আসার আগে দেশি পেঁয়াজ পাইকারি পর্যায়ে থেকে আমরা কিনতাম ৯০-১০০ টাকায়। এখন বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ আসায় দেশি পেঁয়াজের দাম কমে পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭২ টাকায়। আমি মনেকরি দেশি পেঁয়াজের দাম ৫০ টাকার কম হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, বর্তমানে আলু বিক্রি করছি প্রতি কেজি ৪০ টাকায়। এই দাম শুনলে অনেক ক্রেতা গরম হয়ে যান। কিন্তু আমরা কী করব? পাইকারি বাজার থেকে আলু কিনেছি প্রতি কেজি ৩৫ টাকায়। তো সেখানে ৫ টাকা মিনিমাম লাভ তো আমাদের করতে হয়।
গোড়ান এলাকার এক মুদি ব্যবসায়ী বলেন, আমার দোকানে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি করছি ৫০ টাকা কেজি, আর দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকায়। তবে ভারতের পেঁয়াজ বেশিরভাগই নষ্ট পড়ছে। সামনে পেঁয়াজের দাম আরও কমবে। কারণ বাজারে এখন যথেষ্ট পরিমাণ পেঁয়াজ আছে। আর ভারতীয় রসুন বিক্রি করছি ১৫০ টাকা কেজি এবং দেশি রসুন ১৪০ টাকায়। বাজারে এখন দেশি আদা পাওয়া যাচ্ছে যার দামও অনেক বেশি। প্রতি কেজি দেশি আদা ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তবে আমদানি হওয়ার পরেও বাজারে পেঁয়াজের দামে সন্তুষ্ট নয় ক্রেতারা। খিলগাঁও বাজারে পেয়াজ কিনতে আসা এক ক্রেতা বলেন, বাজারে পেঁয়াজের দাম অনেক বেশি। যদিও পেঁয়াজ রান্নায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। তাই বাধ্য হয়েই বেশি দাম দিয়ে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত থেকে সরকার যে পেঁয়াজ আমদানি করেছে তার বেশিরভাগই নিম্নমানের। ফলে ক্রেতারা দাম বেশি হলেও ভাল মানের দেশি পেঁয়াজ কিনছেন। যে কারণে বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ আসার পরও দেশি পেঁয়াজের দাম কমেনি। আর বাজারে ভাল মানের আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ আসলে কোরবানির ঈদের আগেই সব ধরনের পেঁয়াজের দাম আরও কমবে।
এদিকে, দীর্ঘদিন পর সয়াবিন তেলের দাম কমেছে। আগের চেয়ে লিটারে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগির দামও গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে কমেছে ৩০ টাকা। যদিও বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের আগে দাম আবার বাড়তে পারে। আর কোরবানির ঈদ আসার আগে থেকেই বেড়ে চলেছে জিরার দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে জিরার দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৫০ টাকা। রাজধানীর মিরপুর-১ নম্বরের কাঁচাবাজার সরেজমিন ঘুরে জানা যায় সবজি, মাছ- গোশতের বর্তমান দাম-দর। বাজারে ইলিশ মাছের কেজি ১৬০০-২০০০, রুই ৩৭০-৪৫০, কাতল ৫০০-৬০০, কালিবাউশ ৫০০, চিংড়ি ১০০০, কাঁচকি ৫০০, টেংরা ৬৫০, পাবদা ৫০০, শিং ৫০০ টাকা। এছাড়া ব্রয়লার মুরগি ১৭৭-১৮২, কক মুরগি ২৩০-২৫০, দেশি মুরগি ৬০০, গরুর মাংস ৭৭০-৭৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি ২০৭-২১৫ টাকা, কক মুরগি ২৩০-২৫০ টাকা, দেশি মুরগি ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল।
মুরগি বিক্রেতারা বলেন, ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে। তবে ঈদের আগে আবার দাম বেড়ে যাবে। মুরগি ক্রেতারা বলেন, এদের কাজ একটাই, শুধু দাম বাড়াবে। ঈদের আগে নাকি আবার দাম বাড়বে। ঈদের কথা শুনলেই সব কিছুর দাম বেড়ে যায়। এছাড়া মুদি দোকান ঘুরে জানা যায়, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। সয়াবিন তেলের দাম কমেছে ১০ টাকা কেজিতে। আগে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের (প্যাকেট) দাম ছিল ১৯৯ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ছিল ১৭৮ টাকা। দাম কমে তা হয়েছে লিটারপ্রতি প্যাকেট সয়াবিন তেল ১৮৯ টাকা আর খোলা সয়াবিন তেল ১৭০ টাকা। সয়াবিন তেলের দাম কমলেও বেড়েছে জিরার দাম। খুচরা জিরার কেজি ৮৫০ টাকা। যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০০ টাকা।
এক বিক্রেতা বলেন, জিরার দাম বেড়েই যাচ্ছে। ঈদ আসতে আসতে আরও দাম বাড়বে। গত সপ্তাহে জিরার দাম ছিল ৭৮০ টাকা, বিক্রি করেছি ৮০০ টাকায়। আজকে আমার জিরা কেনা ৮৩০ টাকা আর বিক্রি করছি ৮৫০ টাকায়। এছাড়া অন্যান্য পণ্যের দাম রয়েছে আগের মতোই। মসুরের ডাল ১৩০ টাকা, মুগ ডাল ১২০ টাকা, খেসারি ডাল ৮০ টাকা, বুটের ডাল ৯৫ টাকা, ছোলা ৮৫ টাকা, চিনি ১৩০ টাকা, আটা ১৩০ টাকা (২ কেজির প্যাকেটে), খোলা ময়দা ৬৩ টাকা, খোলা সরিষার তেল ২৫০ টাকা লিটার।
কাঁচাবাজারে সবজির দাম গত সপ্তাহের সঙ্গে তুলনা করলে রয়েছে প্রায় অপরিবর্তিত। বেগুনের কেজি ৭০-৮০ টাকা, শসা ৭০ টাকা, করল্লা ৭০-৮০ টাকা, পেঁপে ৭০ টাকা, কাঁকরোল ৭০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, চাল কুমড়া ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, পটল ৬০-৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০-৮০ টাকা, ধুন্দল ৭০-৯০ টাকা, সজনে ১২০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১০০ টাকা, ধনেপাতা ১২০ টাকা কেজি। লাউ ৬০-৭০ টাকা পিস। এছাড়া আদা ৩০০ টাকা, দেশি রসুন ১৫০-১৬০ টাকা, ইন্ডিয়ান রসুন ১৬০-১৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।###
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
পাকিস্তানের বোলিং তোপে ১৪০ রানেই শেষ অস্ট্রেলিয়া
হাঙ্গেরিতে আমেরিকান নারীর হত্যা: আইরিশ পুরুষ গ্রেফতার
আবারও একটি তারকার পতন, না ফেরার দেশে অভিনেতা দিল্লি গণেশ
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ
জুলাই গনঅভ্যুত্থানে শিক্ষকসহ জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি ইবি ছাত্রদলের
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী মাস অক্টোবর,বললেন ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা প্রধান
'বক্স অফিস কাঁপানো সিনেমা 'সিংহাম এগেইন' এবার ওটিটিতে স্ট্রিমিং হতে যাচ্ছে'
ডেমোক্র্যাটদের 'অপরাজেয়' জোটের স্বপ্ন ধুলোয় মিশে গেছে ট্রাম্পের হাত ধরে
রাজবাড়ীতে মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর, হাতেনাতে যুবক আটক
কালিয়াকৈরে সড়ক দুর্ঘটনায় তিনবন্ধুর মৃত্যু আহত-১
হামাসের সঙ্গে চুক্তির দাবিতে বিক্ষোভে ইসরাইলিরা
সাতকানিয়ায় ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মাঠে বিজিবি
আ.লীগের নাশকতা ঠেকাতে টঙ্গীতে মহাসড়কে বিএনপির অবস্থান-বিক্ষোভ
ফ্যাসিস্ট হাসিনার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নকারী ১০ জন গ্রেপ্তার
‘ফ্যাসিস্টদের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’ স্লোগানে উত্তাল নূর হোসেন চত্বর
পেন্টাগন কীভাবে সামলাবে ট্রাম্পের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত?
ক্যান্সার আক্রান্ত অভিনেত্রী আফরোজা হোসেন আর নেই
দোয়ারাবাজারে ইউপি শ্রমিক লীগের সভাপতি জামিল খান গ্রেফতার
আ.লীগ নিষেদ্ধের বিষয়ে যা বললেন চিফ প্রসিকিউটর
আলতাফ হোসেন চৌধুরীর গাড়ীতে হামলা ঘটনায় আ.লীগের ৫৬ নেতাকর্মীর নামে মামলা