‘সঙ্কুলানমুখী’ মুদ্রানীতি ঘোষণা রিজার্ভের হিসাব ‘দুই পদ্ধতিতেই’ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক : গভর্নর :: রেপো হার ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট বাড়ানো হয়েছে :: ব্যাংকঋণের সুদহার হবে সর্বোচ্চ ১০.১২ শতাংশ :: আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণের সুদহার হবে সর্বোচ্চ ১২.১২ শতাংশ :: চালু হচ্ছে টাকার পে-কার্ড, ভারতে কেনাকাটার সুযোগ থাকবে

রিজার্ভ নামবে ২৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরে

Daily Inqilab ইনকিলাব

১৮ জুন ২০২৩, ১১:৩০ পিএম | আপডেট: ১৯ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে জনমনে বেশ কৌতূহল। বাস্তবে আমাদের রিজার্ভ কত, এ প্রশ্নই আগে আসছে। এর হিসাবায়ন পদ্ধতি নিয়েও রয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। বাংলাদেশ ব্যাংক এতদিন মোট রিজার্ভের যে হিসাব প্রকাশ করে আসছিল তা নিয়ে খোদ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) প্রশ্ন তুলেছে। কারণ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবের মধ্যে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগকে অন্তর্ভুক্ত দেখানো হয়। তবে আইএমএফের ৪ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার ঋণের অন্যতম শর্ত ছিল, নিট রিজার্ভের হিসাব প্রকাশ করা। এক্ষেত্রে মানতে হবে ব্যালেন্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন (বিপিএম-৬) বা বিপিএম৬ ফর্মুলা। এটি পুরোপুরি মানতে গেলে নিট রিজার্ভ নেমে যাবে ২০ বিলিয়নের ঘরে। কারণ, দেশের প্রকাশ করা রিজার্ভ থেকে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ ও রফতানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) ছাড়াও এক বছরের বৈদেশিক ঋণের কিস্তি পরিশোধের সমপরিমাণ অর্থ বাদ দিলে পাওয়া যাবে নিট রিজার্ভ। বর্তমানে রিজার্ভ থেকে ৬ বিলিয়ন ডলার রয়েছে ইডিএফ ও বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ। এগুলোসহ মোট রিজার্ভ এখন ২৯ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার। বিনিয়োগ করা ৬ বিলিয়ন ডলার বাদ দিলে নিট রিজার্ভ দাঁড়াবে ২৩ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া নীতি সুদহার আরও এক দফা বাড়িয়ে এবং ব্যাংক ঋণের সুদহারের সীমা তুলে দিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের জন্য ‘সঙ্কুলানমুখী’ মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংক ঋণের সুদহারে ৯ শতাংশের সীমা তুলে দিয়ে ‘রেফারেন্স রেট’ অনুযায়ী সুদ হার নির্ধারণের নতুন নিয়ম চালু হচ্ছে। একই সঙ্গে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সুদহারের সীমাও তুলে দেয়া হয়েছে। নতুন নিয়মে ব্যাংকঋণের সুদহার হবে সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ১২ শতাংশ। আর আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণের সুদহার হবে সর্বোচ্চ ১২ দশমিক ১২ শতাংশ। এসএমই ও ভোক্তাঋণের তদারকি খরচের জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আরও ১ শতাংশ বেশি সুদ আরোপ করতে পারবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, সুদহার সীমার বদলে প্রতিযোগিতামূলক ও বাজারভিত্তিক সুদহার কার্যকর হবে, যদিও তার মার্জিন থাকবে। এর মধ্য দিয়ে সমাজে অতিরিক্ত মুদ্রার সরবরাহে রাশ টানা হবে। মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় এই সিদ্ধান্তও কাজে আসবে বলে তারা মনে করছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রনের লক্ষ্যে মুদ্রানীতিতে বিদ্যমান অর্থনৈতিক চাহিদা, আমদানি কার্যক্রমে নজরদারি অব্যাহত রাখা এবং স্থিতিশীল বাণিজ্য পরিবেশ নিশ্চিতকরণ প্রভৃতি বিষয়গুলোর উপর প্রাধান্য দেয়া হয়েছে বলে মনে করেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)-এর সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার।

গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতি মূল বিষয়বস্তু তুলে ধরেন বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ মো. হাবিবুর রহমান। এরপর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল, কাজী ছাইদুর রহমান, আবু ফরাহ মো. নাছের, এ কে এম সাজেদুর রহমান খান, বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাস, নির্বাহী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র আবুল বশরসহ গবেষণা বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

হাবিবুর রহমান জানান, ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের গড় হারের সঙ্গে ব্যাংকগুলো ৩ শতাংশ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ৫ শতাংশ সুদ যুক্ত করতে পারবে। এটাই হবে সুদের সর্বোচ্চ হার। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ছয় মাসে ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলে গড় সুদ ছিল ৭ দশমিক ১২ শতাংশ। এতে বলা হয়, এসএমএআরটি (স্মার্ট-সিক্স মান্থ মুভিং এভারেজ) নামের এ পদ্ধতিতে ছয় মাসের ট্রেজারি বিলের গড় হার ধরে ঠিক হবে রেফারেন্স। এরসঙ্গে ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ যোগ করে এবং ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ৫ শতাংশ সুদ যোগ করে ঋণ দিতে পারবে। কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাত ও ভোক্তা ঋণের ক্ষেত্রে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো খরচ সামাল দিতে আরো ১ শতাংশ যোগ করতে পারবে সুদ হারে। আর এক দিন মেয়াদী রেপোর (পুনঃক্রয় চুক্তি) সুদ হার ৬ শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। রিভার্স রেপো হার (জুলাই থেকে এসডিএফ নামে পরিচিতি হবে) আগের ৪ দশমিক ২৫ থেকে বাড়িয়ে ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। রেপো ও রিভার্স রেপোর এই নতুন হার ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে। এর আগে গত জানুয়ারির মুদ্রানীতিতে রেপোর সুদ হার ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৬ শতাংশ করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। আর রিভার্স রেপো হার আগের ৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ করা হয়েছিল। মুদ্রানীতি ঘোষণার অনুষ্ঠানে গভর্নর বলেন, এবার মুদ্রানীতিতে চারটা বিষয় এনেছি। আগের মুদ্রানীতিগুলোর তুলনায় চারটি মৌলিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। দেশের অর্থনীতিতে সংস্কার করার জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল যেসব পরামর্শ দিয়েছে, তার অনেক ছাপ উঠে এসেছে এবারের মুদ্রানীতিতে।

জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের জন্য ঘোষিত মুদ্রানীতিতে সরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৪৩ শতাংশ, গত মুদ্রানীতিতে যা ছিল ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ। আর বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১০ দশমিক ৯ শতাংশ, গতবার ধরা হয়েছিল ১৪ দশমিক ১ শতাংশ। সব মিলিয়ে মোট অভ্যন্তরীণ ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ, গতবার যা ধরা হয়েছিল ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ, মুদ্রানীতির যে প্রক্ষেপণ চলতি জুন মাস শেষে অভ্যন্তরীণভাবে ধরেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক, তার কতটা অর্জন হয়েছে, সে তথ্যও জানানো হয় মুদ্রানীতির অনুষ্ঠানে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ ধরা হলেও মে মাস শেষে অর্জন হয়েছে ৪৩ দশমিক ৩ শতাংশ। আর বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছিল ১৪ দশমিক ১ শতাংশ, হয়েছে ১১ দশমিক ১ শতাংশ। সব মিলিয়ে মোট অভ্যন্তরীণ ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছিল ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ, আর গত মে পর্যন্ত হয়েছে ১৬ দশমিক ৭ শতাংশ।

জাতীয় বাজেটে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এবং মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশে ধরে রাখার পরিকল্পনা নির্ধারণ করছে সরকার। এ বিষয়ে বেরসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি কমানো নিয়ে রবিবার সন্ধ্যায় কথা হয় অর্থনীতিবিদ এবং সাবেক তত্ত্বাবধারক সরকারের উপদেষ্টা ড. মিজ্জা আজিজুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, গত ছয় মাসে বেসরকারি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা পুরোপুরি অর্জিত হয়নি। এ কারণেই হয়তো প্রবৃদ্ধি কমানো হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটু বেশি কমিয়েছে এবার। কেননা আমাদের দেশের বিনিয়োগ হয় ব্যাংক খাতের মাধ্যমে। নতুন বিনিয়োগ মানেই কর্মসংস্থান সৃষ্টি। লক্ষ্যমাত্রা কমানোর ফলে এটি বিঘিœত হতে পারে। বিনিয়োগের অগ্রগতি স্তিমিত হতে পারে, নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে কর্মসংস্থানে। এছাড়া সরকার ব্যাংক খাত থেকে ঋণ বেশি নেয়ার কারণে হয়তো কমানো হয়েছে। একই সঙ্গে তারল্য সংকট মোকাবিলায় এটি করা হয়েছে, যদিও এতে তারল্য কমবে না। এটি গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

রিজার্ভের হিসাব ‘দুই পদ্ধতিতেই’ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংক এখন থেকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের হিসাব ‘দুই পদ্ধতিতেই’ করবে। অর্থাৎ, আগে যে পদ্ধতিতে করা হত, সেভাবেও করা হবে, আবার বিপিএম৬ পদ্ধতিতেও করা হবে। অনুষ্ঠানে গভর্নর বলেন, তবে আমরা বিপিএম৬ পদ্ধতি অনুযায়ী, প্রকৃত রিজার্ভের তথ্য হিসাব করলেও তা প্রকাশ করব না। পৃথিবীর কোনো দেশ তা প্রকাশ করে না। আইএমএফ’র এ বিষয়ে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই প্রকাশে। তিনি বলেন, আমরা রিজার্ভ থেকে যেসব বিনিয়োগ করেছি সেগুলো ঝুঁকিমুক্ত। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আমাদের সব ঋণের গ্যারান্টার রয়েছে। সব টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক ফেরত পাবে। শ্রীলংকার লোনও আমরা ফেরত পেতে পারি তাদের স্থানীয় মুদ্রায় সমন্বয়ের মাধ্যমে। গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, দেশের অর্থনীতির প্রতিটি সূচকে আমরা এখন ফাইট করছি। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক ঋণমান যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান মুডি’স প্রসঙ্গে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, এই রেটিং কমানোর বিষয়ে আমাদের বিশেষ কিছু আসে যায় না। এটা করার পেছনে ভূরাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে। তিনি বলেন, এর আগে মুডি’স যে রেটিং দিয়েছিল, সেটা ২০১২ সালের দিকে। সে সময় আমাদের অর্থনীতি যেমন ছিল, তার চেয়ে এখন অনেক ভালো অবস্থানে আছে। ইতিমধ্যে আমাদের ডলারের রিজার্ভ বা মজুত ৪৮ বিলিয়নেও উঠেছিল। মাথাপিছু আয়ও গত কয়েক বছরে বেড়েছে। কিন্তু তখন তারা আমাদের রেটিং বাড়ায়নি।

আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, যেসব কারণে এখন রেটিং কমানো হয়েছে, তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না। যেটা করা হয়েছে সেটাকে পিওর ইকোনমিক রিপোর্টিং বলা যাবে না। এটা ভূরাজনৈতিক কারণে হয়েছে। আমাদের রেটিং কমানোর মতো কিছু হয়নি। এখন দেশের অর্থনীতিতে ডলারের সংকট ও রিজার্ভের সমস্যা ছাড়া বড় কোনো সমস্যা নেই। এ ছাড়া অর্থনীতির অন্য সূচকগুলো ভালো আছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে ভূরাজনৈতিক উদ্দেশ্যের বিষয়ে আরও ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য বলা হলেও তিনি ‘এই ব্যাপারে আর বিস্তারিত না বলাই ভালো’ বলে উল্লেখ করেন।

চালু হচ্ছে টাকার পে-কার্ড, ভারতে কেনাকাটার সুযোগ থাকবে
দেশে চালু হবে টাকার পে কার্ড। এ কার্ড দিয়ে দেশের ভিতরে কেনাকাটাসহ বিভিন্ন বিল পরিশোধ করা যাবে। আবার একই কার্ড দিয়ে ভারত ভ্রমণের সময় রুপিতে খরচ করার সুযোগ পাবেন বাংলাদেশি গ্রাহকরা। ডলার সাশ্রয়ে এ উদ্যোগ নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গভর্নর বলেন, আমরা টাকার একটি পে-কার্ড চালু করছি। এটাকে ভারতের রুপির সঙ্গে সংযুক্ত করে দেবো। এ কার্ড থাকলে গ্রাহকরা বাংলাদেশে ডেবিট কার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। যে কোনো কেনাকাটা করতে পারবেন। আবার যখন ভারতে যাবেন তখন ও কার্ড দিয়েই ভ্রমণ কোটায় ১২ হাজার ডলার খরচ করতে পারবেন। ফলে দুইবার মানি চেঞ্জে যে লস (লোকসান) হচ্ছে, তা আর হবে না। অর্থাৎ ভ্রমণে যেতে হলে প্রথমে টাকা থেকে ডলারে কনভার্ট করতে হয়, পরে ভারতে গিয়ে ডলার রুপিতে কনভার্ট করতে হয়। টাকার পে-কার্ড নিলে দুইবার মানি চেঞ্জ করতে হবে না। এতে করে কমপক্ষে ৬ শতাংশের মতো খরচ কমবে। ভারতে প্রতি বছর অনেক বাংলাদেশি পর্যটক ঘুরতে যান। এতে আমাদের অনেক ডলার বেঁচে যাবে। তিনি জানান, এটা কারেন্সি সোয়াপ হবে না। কারণ কারেন্সি সোয়াপ হলো এক দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক অন্য দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে যে ডলার ধার করে। এখানে গ্রাহক লেনদেন করবে।

ঘোষিত মুদ্রানীতি সংকোচনমূলক বলছে ডিসিসিআই
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বর) জন্য ঘোষিত মুদ্রানীতিকে সংকোচনমূলক নীতি বলে মনে করছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। গতকাল তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এক বিবৃতিতে সংগঠনটির সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার বলেন, ঘোষিত মুদ্রানীতিতে ঋণের সুদের হারের সীমা ৯ শতাংশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ব্যবস্থার ফলে ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণের সুদের হার ডাবল ডিজিটে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যেটি বর্তমান বৈশ্বিক অস্থির অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা পরিচালনায় বেশ প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে। পাশাপাশি এ ধরনের উদ্যোগ বিশেষ করে কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ব্যবসা পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি করবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে মুদ্রানীতিতে বিদ্যমান অর্থনৈতিক চাহিদা, আমদানি কার্যক্রমে নজরদারি অব্যাহত রাখা এবং স্থিতিশীল বাণিজ্য পরিবেশ নিশ্চিতকরণ প্রভৃতি বিষয়গুলোর ওপর প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি মনে করেন, সরকারি খাতে অধিক মাত্রায় ঋণ গ্রহণ বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহকে সংকুচিত করবে। তিনি বলেন, ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণের প্রবণতা কমিয়ে আনতে কর আহরণের মাত্রা বাড়ানো ওপর আরও বেশি হারে জোরারোপ করা উচিত, এতে করে ব্যাংক খাতের ওপর সরকারের নির্ভরতা অনেকাংশে হ্রাস পাবে।##


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দেবে না: দ্য ইকোনমিস্টকে ড. ইউনূস
কুমারখালীতে রাতের আঁধারে সড়কের অর্ধশতাধিক গাছ কর্তন
বাংলাদেশের গুমের ঘটনায় ভারতের সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে কমিশন
ধামরাইয়ে ২টি ড্রেজার মেশিন জব্দ
ছিনতাইকারীর হাতে খুন হন হাফেজ কামরুল
আরও

আরও পড়ুন

ব্রাজিলে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৩২

ব্রাজিলে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৩২

নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়োগ সিরিয়ায়

নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়োগ সিরিয়ায়

ঘনকুয়াশায় ৩ ঘন্টা পর আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ফেরি সার্ভিস চালু

ঘনকুয়াশায় ৩ ঘন্টা পর আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ফেরি সার্ভিস চালু

গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে

গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে

কনসার্ট মঞ্চে স্বৈরাচার হাসিনার বিচার দাবি

কনসার্ট মঞ্চে স্বৈরাচার হাসিনার বিচার দাবি

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও   ১৪ ফিলিস্তিনি

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ১৪ ফিলিস্তিনি

ঘনকুয়াশায় আরিচা-কাজিরহাট, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ

ঘনকুয়াশায় আরিচা-কাজিরহাট, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ

আওয়ামী লীগ যা করেছে, বিএনপি তার বিপরীত কাজ করে সুন্দর সমাজ গড়বে: ইয়াকুব চৌধুরী

আওয়ামী লীগ যা করেছে, বিএনপি তার বিপরীত কাজ করে সুন্দর সমাজ গড়বে: ইয়াকুব চৌধুরী

রোমাঞ্চকর ম্যাচে বার্সাকে হারিয়ে শীর্ষে আতলেটিকো

রোমাঞ্চকর ম্যাচে বার্সাকে হারিয়ে শীর্ষে আতলেটিকো

জেসুসের জোড়া গোলের রাতে আর্সেনালের বড় জয়

জেসুসের জোড়া গোলের রাতে আর্সেনালের বড় জয়

বিলুপ্তির পথে মাটির ঘর

বিলুপ্তির পথে মাটির ঘর

চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

প্রতিবন্ধী স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ

প্রতিবন্ধী স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ

কেরু চিনিকলে আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন

কেরু চিনিকলে আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন

বিহারিরা কেমন আছে

বিহারিরা কেমন আছে

লক্ষ্মীপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি

লক্ষ্মীপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি

আসাদ সরকারের পতন : নতুন সিরিয়ায় ইসরাইলি আগ্রাসন

আসাদ সরকারের পতন : নতুন সিরিয়ায় ইসরাইলি আগ্রাসন

মেটলাইফ বাংলাদেশের গ্রাহকরা ডিসকাউন্ট পাবেন ওশান প্যারাডাইস হোটেলস ও রিসোর্টে

মেটলাইফ বাংলাদেশের গ্রাহকরা ডিসকাউন্ট পাবেন ওশান প্যারাডাইস হোটেলস ও রিসোর্টে

১৫ নারী ও শিশুকে হস্তান্তর

১৫ নারী ও শিশুকে হস্তান্তর

আবাসন ও গার্মেন্ট খাতের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে

আবাসন ও গার্মেন্ট খাতের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে