ঢাকা   শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৬ আশ্বিন ১৪৩১

টাঙ্গাইলের হাট কাঁপাতে প্রস্তুত বস ব্লাক টাইগার লাল বাদশা

Daily Inqilab টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা

২৪ জুন ২০২৩, ১০:৫৯ পিএম | আপডেট: ২৫ জুন ২০২৩, ১২:০১ এএম

বস, কোনো সিনেমার নাম নয়। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে গরুটি লালন-পালন করছেন টাঙ্গাইলের কালিহাতীর হাতেম আলী তালুকদার। বসের মতো ভূঞাপুরের ব্লাক টাইগার ও লাল বাদশাও কাঁপাবে এবার কুরবানির হাট। দেশীয় খাবার খাইয়ে বড় করে তোলা হচ্ছে তাদের। ইতোমধ্যে বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন আসছেন গরুগুলো কেনার জন্য। দাম হাঁকা হচ্ছে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত।
সরেজমিনে জানা যায়, প্রায় ২৮ মন ওজনের ব্রাহমা জাতের দানব আকৃতির গরুটির নাম টাঙ্গাইলের বস। ২ বছর আগে ছোট বাছুর কিনেছিলেন টাঙ্গাইলের কালিহাতীর সল্লা ইউনিউনের দেউপুর গ্রামের হাতেম আলী তালুকদার। এরপর থেকেই নিজ খামারে অনান্য গরুর সাথে দেশিও দানাদার খাদ্য খাইয়ে লালন-পালন করা হচ্ছে গরুটিকে। দাম হাঁকা হচ্ছে ১০ লাখ টাকা।

হাতেম আলী তালুকদার জানান, ৮-১০ বছর আগে প্রাবাস থেকে ফিরে গাভীর খামার করেন। পরে সেখানে শখের বসে একটি করে ষাঁড় লালন-পালন করেন তিনি। তার খামারের এই বড় গরুকে প্রতিদিন ২৫কেজি ঘাস, ভুট্টার সাইলেস ২০ কেজি, খড়, ভূষি ও সোলা খাওয়ানো হয় ১০ কেজি। গরুর জন্য তিনি করেছেন টিনসেট ভবন। এর পাশেই বড় গরুর জন্য দেয়াল করে একটি মাঠ তৈরি করেছেন। বড় গরু বাইরে বের না করে মাঠেই ছেড়ে রাখেন। খামারের ভেতরে বিশাল আকৃতির গরুটির জন্য লাগানো রয়েছে ৩টি ফ্যান। কোনো কারণ বসত একদিন বিদ্যুত না থাকলে সেদিন গরুকে একাধিক গোসল করানো হয়। গতবছর কোরবানিতে বিশাল আকৃতির গরু বিক্রি করে বেশ লাভবান হওয়ায় এবছরও বড় গরু বানানো হয়েছে।

তিনি আরো জানান, ২ বছর আগে ব্রাহমা জাতের ছোট বাছুর কিনেছিলেন। এরপর থেকে নিজ খামারে অন্যান্য গরুর সাথে দেশিও ঘাস দানাদার খাদ্য খাইয়ে লালন করা হচ্ছে গরুটিকে। গতবছরও বিশাল আকৃতির একটি গরু বানিয়েছিলেন তিনি। পরে কোরবানির সময় প্রায় সাড়ে ৬ লাখ টাকায় বিক্রি করেছিলেন। তখন বেশ লাভ হওয়ায় এবছর আবারো এই গরু বানিয়েছেন তিনি। এবছর দাম ভালো পেলে সামনের বার একসাথে একাধিক বড় গরু বানানোর কথা বলছেন তিনি।

এদিকে বসের মতো টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার সারপলশিয়া গ্রামের আল-মোত্তাকিন এগ্রো ফার্মে লালন-পালন করা হচ্ছে ব্লাক টাইগার ও লাল বাদশা। ব্লাক টাইগারের ওজন ১৮ মন ও লাল বাদশার ওজন ১৬ মন। এছাড়াও খামারটিতে রয়েছে আরো ৩০টি গরু। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে তাদের লালন-পালন করা হচ্ছে।

আল-মোত্তাকিন এগ্রো ফার্মের মালিক মো. ওহাব আলী জানান, তার খামারে ব্লাক টাইগার ও লাল বাদশাসহ ৩০ টি গরু রয়েছে। গরুগুলো প্রাকৃতিক খাবার খৈল, গমের ভূষি, ভাত, চালের গুড়া খাইয়ে বড় করা হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের দাম বেশি হওয়ায় কাঙ্খিত দাম না পেলে লোকসান গুনতে হবে।

জেলার সবচেয়ে বড় গরুর খামার ভূঞাপুরের গোবিন্দাসীর চকদার গরুর খামার। খামারটিতে বিভিন্ন জাতের ১৫০টি গরু লালন-পালন করা হয়। ইতোমধ্যে ৫০টি গরু বিক্রি করা হয়েছে। এখানে সর্বনিম্ন ৩ লাখ টাকা থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত গরু রয়েছে।
চকদার গরুর খামারের স্বত্বাধিকারী রাফি চকদার জানান, খামারের সব গরু প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে বড় করা হয়েছে। ৫০টি গরু বিক্রি করা হয়েছে। খামার থেকে বাকি গরু বিক্রি করতে না পারলে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইলের ১২ টি উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ৬ শতাধিক খামার রয়েছে। খামারগুলোতে কোরবানিপশু রয়েছে প্রায় ১ লাখ ৮০হাজার আর চাহিদা রয়েছে দেড় লাখ। জেলার চাহিদা মিটিয়ে ৩০ হাজার পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। সবুজ ঘাস, খড়, ভূষি, ভাত, খৈল আর ভিটামিন খাইয়ে এসব পশু লালন-পালন করা হচ্ছে।

গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি স্বীকার করে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রানা মিয়া বলেন, জেলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে কোরবানির পশু রয়েছে। ভারত থেকে যাতে চোরাই পথে গরু আসতে না পারে সে ব্যাপারে কঠোর নজরদারি রয়েছে।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

টেলর সুইফটের পর কমলাকে বিখ্যাত বিজ্ঞান ম্যাগাজিনের সমর্থন নিয়ে বিতর্ক

টেলর সুইফটের পর কমলাকে বিখ্যাত বিজ্ঞান ম্যাগাজিনের সমর্থন নিয়ে বিতর্ক

ফিরেই গোলের দেখা পেলেন রোনালদো,নাসেরের সহজ জয়

ফিরেই গোলের দেখা পেলেন রোনালদো,নাসেরের সহজ জয়

কোহলি রিভিউ না নেওয়ার যে কারণ জানালেন সঞ্জয় মাঞ্জরেকার

কোহলি রিভিউ না নেওয়ার যে কারণ জানালেন সঞ্জয় মাঞ্জরেকার

মাঠের বাইরে নতুন পরিচয়ে মেসি

মাঠের বাইরে নতুন পরিচয়ে মেসি

দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার আহ্বান উপদেষ্টা নাহিদের

দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার আহ্বান উপদেষ্টা নাহিদের

মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক হালাল শোকেসের ২০তম আসরে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ

মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক হালাল শোকেসের ২০তম আসরে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত দেশকে অস্থিতিশীল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে পরাজিত শক্তি

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত দেশকে অস্থিতিশীল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে পরাজিত শক্তি

শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কাল

শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কাল

‘মব জাস্টিস’ বন্ধের আহ্বান বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরামের

‘মব জাস্টিস’ বন্ধের আহ্বান বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরামের

সাত দফা দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ

সাত দফা দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ

গৌরনদীর দই, একবার খাইলেও আর একবার খাই

গৌরনদীর দই, একবার খাইলেও আর একবার খাই

নোয়াখালীতে জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধের দাবি

নোয়াখালীতে জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধের দাবি

স্বর্ণের দাম বেড়ে রেকর্ড ২,৬০৯ ডলার ছাড়িয়েছে

স্বর্ণের দাম বেড়ে রেকর্ড ২,৬০৯ ডলার ছাড়িয়েছে

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ ও বিচার দাবিতে খুলনায় মানববন্ধন

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ ও বিচার দাবিতে খুলনায় মানববন্ধন

গাজায় অব্যাহত ইসরাইলি গণহত্যা ওআইসির নেতারা চেয়ে চেয়ে দেখছেন

গাজায় অব্যাহত ইসরাইলি গণহত্যা ওআইসির নেতারা চেয়ে চেয়ে দেখছেন

চাঁদপুর শহরে সড়ক সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ

চাঁদপুর শহরে সড়ক সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ

সেনা কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়া প্রসঙ্গে

সেনা কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়া প্রসঙ্গে

নোয়াখালীতে ৪৪ দিন পর লাশ উত্তোলন

নোয়াখালীতে ৪৪ দিন পর লাশ উত্তোলন

ভারতের দোসর ও হাসিনামিডিয়ার প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা

ভারতের দোসর ও হাসিনামিডিয়ার প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা

আশাশুনিতে হাজরাখালির নেটপাটায় পানিবন্দি ২শ’ পরিবার

আশাশুনিতে হাজরাখালির নেটপাটায় পানিবন্দি ২শ’ পরিবার