ভাঙা নৌকায় মানুষ আর উঠবে না
০৩ জুলাই ২০২৩, ১১:৩৫ পিএম | আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রধানমন্ত্রী অনেক আগে থেকেই নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, উনি (প্রধানমন্ত্রী) ভাট চাচ্ছেন, নৌকায় ভোট দেন। কিন্তু জনগণ উনার কথা শুনে বলছে আগে জানলে তোর ভাঙা নৌকায় উঠতাম না। ভাঙা নৌকায় দেশের মানুষ আর উঠবে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ অবশ্যই নির্বাচন চায়। তবে সেই নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। কারণ এই হাসিনা সরকার, অবৈধ সরকার ক্ষমতায় থাকলে নির্বাচন কখনো সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য হবে না।
গতকাল সোমবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল প্রশ্ন রেখে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন কি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে পারে? সবাই সমস্বরে বলেন, না। বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকারের অধীনে মানুষ ভোটই দিতে যেতে পারে না, নির্বাচন হবে কিভাবে? ২০১৪ সালে ১৫৩টি আসনে বিনাভোটে এমপি হয়েছে। আর ভোটের দিনে ভোট কেন্দ্রে ভোটার ছিল না কুত্তা বসে ছিল। শফিউল আলম প্রধান সেই নির্বাচনকে বলেছিলেন কুত্তা মার্কা নির্বাচন।
সরকারের দুর্নীতির কারণে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, মরিচের অনেক দাম বেড়েছে, এক হাজার টাকা কেজি। এক মন ধান বিক্রি করে এক কেজি মরিচ কিনতে হচ্ছে। আজকে চাল-ডাল, তেল, লবণ, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানিসহ প্রত্যেকটা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চাই, আজকে আসুন, দেখুন সাধারণ মানুষরা, রিক্সা চালক, শ্রমিক-কৃষক ভাইয়েরা কি বলে? সবকিছুর দাম আপনারা বাড়িয়ে গেছেন, কারণ একটাই আপনাদের দুর্নীতি। আপনারা জনগণের পকেট খালি করেছেন। বাজেট ঘোষণা করেছেন যেখানে শুধু বড় লোকদের আরো বড়লোক করার ব্যবস্থা করেছেন। শ্রমিক-দিনমজুর, কৃষক ভাইদের জন্য কোন ব্যবস্থা রাখেননি।
বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবেই বলছি, আপনাকে এখন আর প্রয়োজন নেই। বিগত ১৪-১৫ বছর ধরে আপনার দল নিয়ে এই দেশকে যেভাবে শোষণ করেছেন, দেশের মানুষের সম্পদ লুট করে বিদেশে পাঠিয়েছেন, যেভাবে রাজনৈতিক কর্মীদের হত্যা করেছেন, যেভাবে মিথ্যা মামলায় দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আটকে রেখেছেন, তরুণ নেতা, যার দিকে বাংলাদেশের মানুষের তাকিয়ে আছে তাকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে নির্বাসিত করে রেখেছেন, আমাদের প্রায় ৪০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন, ৬’শ মানুষকে গুম করেছেন, সহ¯্রাধিক মানুষকে হত্যা করেছেন তাতে কি আন্দোলন বন্ধ করতে পেরেছেন।
তিনি বলেন, আজকে আমাদের এই আন্দোলন শুধুমাত্র বিএনপিকে ক্ষমতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য নয়, একটা দলকে পরিবর্তন করে আরেকটা দলকে নিয়ে আসার জন্য নয়। আজকে এদেশের মানুষ তাদের অধিকার ফিরে পেতে চায়। ভোটের অধিকার, বাঁচার অধিকার, কথা বলার অধিকার, সংগঠন করার অধিকার আর ১ হাজার টাকা কেজি মরিচ না খেয়ে ১০০ টাকায় মরিচ খাওয়ার অধিকার চায়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমানে যে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আছে সেটি সম্পূর্ণরূপে অবৈধ। সাংবিধানিকভাবে অবৈধ। যে ষোড়শ সংশোধনীর কথা তারা বলে সেই সংশোধনীতেই বলেছিল দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে হবে। কিন্তু তারা দেখেছে যে মানুষ তাদের ভোট দেবে না এজন্য তারা তাদের নিজেদের অধীনে নির্বাচন করেছে। এবারও তারা ভয় পেয়েছে। এজন্য বেসামাল কথাবার্তা বলছে। এমন এমন কথা বলে যে দেশের সার্বভৌমত্ব থাকে না। আমেরিকা থেকে ফিরে এসে উনি (প্রধানমন্ত্রী) বলল আমেরিকা চাইলে ক্ষমতা থেকে সরাতে পারে। পরে আরো ভয়াবক কথা বলল যে, সেন্ট মার্টিন দিয়ে দিলে নাকি ক্ষমতায় থাকতে পারবে। এটা কারো বাবার দেশ, কারো বাবার সম্পত্তি। সেন্ট মার্টিন এই দেশের মাটি। এই দেশের মানুষ ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করে লড়াই করে, রক্ত দিয়ে এই দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে। এটা কারো পক্ষে বিক্রি করে দেয়া এতো সহজ নয়।
তিনি বলেন, কতটা দায়িত্বজ্ঞানহীন হলে এ ধরণের উক্তি করতে পারে, যাতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ক্ষুণœ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যদিও পরের দিনই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জবাব দিয়েছে স্টেটমেন্ট দিয়ে। তারা বলেছে, তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী, এদেশের একবিন্দু মাটিও তারা চায়নি।
নেতাকর্মীদের প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের বয়স হয়েছে। বৃদ্ধ বয়সে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দী থেকেও লড়াই করছেন। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিদেশ থেকে নির্দেশনা দিচ্ছেন। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছে। এরই মধ্যে গত এক মাসে আমাদের ৩৮৬ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। তারা কি করতে যাচ্ছে বুঝতে পারছেন? তাই প্রতিরোধ ছাড়া কোন বিকল্প নেই। প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
সরকার পালাবার পথ খুঁজে পাবে না সতর্ক করে দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সুস্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, অবিলম্বে পদত্যাগ করেন, কারণ যতদিন যাবে এদেশের, দেশের মানুষের ক্ষতি হবে, গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সংসদ বিলুপ্ত করেন। তত্ত্বাবধায়ক নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা দেন। তারা নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচন দেবে। এটাই একমাত্র পথ, এছাড়া অন্য কোন পথ নেই। তা নাহলে পালাবার পথটাও খুঁজে পাবেন না। সময় আর থাকবে না সময় শেষ হয়ে যাবে।
সমাবেশ শেষে বিকাল সোয়া ৫টায় নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শান্তিনগর হয়ে আবারও দলের অফিসের সামনে এসে শেষ হয়।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ইউএনও কাবেরী, উপজেলা প্রকৌশলীর দুর্নীতির ৮ প্রকল্পের ৭৫ লাখ টাকা আত্মসাতের সত্যতা পেয়েছে দুদক
বাংলাদেশ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মিঠুন চক্রবর্তী
খালিশপুরে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
বগুড়ায় পুলিশের উদাসীনতায় রাতের আঁধারে জমি দখল করে ছাদ ঢালাই
গুচ্ছ নয়, সঠিক সময়েই হবে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা - জবি শিক্ষক সমিতি
২৯ ডিসেম্বর চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া
সোমবার বিপিএলের মিউজিক ফেস্ট, গাইবেন রাহাত ফাতেহ আলী খান
নকলায় শহীদ জিয়াউর রহমান স্মৃতি সংঘের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত
রাবিতে অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ২৫ লাখ টাকার হিসাব না দেওয়ার অভিযোগ, সাময়িক অব্যাহতি
রাজশাহীতে তেলের ট্রাকে বিস্ফোরণ: ৪শ’ ব্যারেল তেল ও ৮ দোকান ভস্মীভূত
স্ত্রী পর্দা করতে না চাইলে করণীয় প্রসঙ্গে।
কক্সবাজার প্রেসক্লাবের নির্বাচন সম্পন্ন
১০০ টাকা ঘুষ খেলেও চাকরি থাকবে না: নৌপরিবহন উপদেষ্টা
সংস্কার কমিশনের কাছে নিজের সম্পদের হিসাব দিলেন দুদক চেয়ারম্যান
মানিকগঞ্জে প্রথম নারী পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করলেন ইয়াছমিন খাতুন
ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের পিতৃবিয়োগ বিভিন্ন মহলের শোক জ্ঞাপন
মির্জাপুরে নিখোঁজের পাঁচ মাস পরও খোঁজ মিলেনি
মোরেলগঞ্জে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতির ১৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
ব্রাহ্মণপাড়ায় ধর্ষণের শিকার হতদরিদ্র প্রতিবন্ধী যুবতীর সন্তান প্রসব! আতংকে ভুক্তভোগী পরিবার
সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ