ঢাকা   রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৭ আশ্বিন ১৪৩১

পাকিস্তান এখন গণতন্ত্রের সম্পূর্ণ ধ্বংস প্রত্যক্ষ করছে ইমরান খান

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক :

০৪ জুলাই ২০২৩, ১১:৩২ পিএম | আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম

পাকিস্তানে গণতন্ত্রের বর্তমান অবস্থা এবং মানবাধিকারের স্বাধীনতা সম্পর্কে পিটিআই চেয়ারম্যান ও পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন যে, পাকিস্তান একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার দিকে এগোচ্ছিল, কিন্তু এখন এটি গণতন্ত্রের সম্পূর্ণ ধ্বংস প্রত্যক্ষ করছে। সোমবার এমএসএনবিসিকে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমরা অন্ধকারের প্রান্তে দাড়িয়ে আছি।’ খান বলেছেন যে, সামরিক বাহিনী ৭০ বছর ধরে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পাকিস্তান শাসন করেছে। তাই যারা রাজনীতি করবে, সামরিক বাহিনীর সাথেই কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আইনের শাসন, গণতন্ত্র এবং সমৃদ্ধি একসাথে চলে। যখন আইনের শাসন থাকে না, যা এখন ঘটছে, পাকিস্তানে অঘোষিত সামরিক আইন চলছে, তখন সামনে থাকে অন্ধকার। পিটিআই চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি যখন ২০১৮ সালে ক্ষমতায় আসি, তখন এমন ছিল না যে, সেনাবাহিনী আমাকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল; তারা আমার বিরোধিতা করেনি। বড় পার্থক্য।’ তিনি আরও বলেছেন, এখন যা ঘটছে, এর সাথে তার শাসনামলের তুলনা করা যায় না। সেসময় পাকিস্তান সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের শেষ প্রান্তে ছিল এবং প্রতিষ্ঠান (সামরিক) সাংবাদিকদের যেকোনও সমালোচনা সম্পর্কে সতর্ক ছিল। খান বলেন, ‹তাই কয়েকজন লোককে তুলে নেওয়ার জন্য তারা দায়ী।› তিনি দাবি করেছেন যে, দেশের শীর্ষস্থানীয় চার সাংবাদিক দেশ ছেড়েছিলেন এবং পঞ্চম জন শরীফ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে একটি চিঠি লিখেছিলেন। তার জীবন বিপদাপন্ন ছিল। তিনি পালিয়ে যান (কিন্তু) কেনিয়ায় তাকে হত্যা করা হয়।’

ইমরান খান বলেছেন যে, শঙ্কর ব্যবস্থার বেসামরিক এবং সামরিক নেতৃত্বের মধ্যে একটি নিরবচ্ছিন্ন ক্ষমতা ভাগাভাগি প্রক্রিয়া পাকিস্তানে কাজ করতে পারে না এবং এটির ব্যর্থতা সুনিশ্চিত। তিনি বলেন, ‘আপনি নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হলে সংস্কার বাস্তবায়নের ক্ষমতা আপনার থাকতে হবে। এটি কাজ করতে পারবে না যখন আপনার (প্রধানমন্ত্রী) দায়িত্ব থাকে কারণ আপনি নির্বাচিত, কিন্তু কর্তৃত্বতে ভাগ বসানো হবে এবং সেনাপ্রধানের ভেটো ক্ষমতা থাকবে।’ সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়াকে দোষারোপ করে তিনি দাবি করেন, ‹আমি মাফিয়াদের আইনের আওতায় আনতে চেয়েছিলাম কিন্তু সাবেক সেনাপ্রধানের কাছে ভেটো ক্ষমতা ছিল যা দুর্নীতিবাজদের ওপর হাত দিতে বাধা দিয়েছে।›

তিনি বলেছেন যে, তার সরকার পদ থেকে সরে না গেলে এর পরিণতি সম্পর্কে একটি সতর্কবাণী পেয়েছিল এবং তার পরেই অনাস্থা ভোট হয়েছিল। খান জানিয়েছেন, তিনি চান যে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানে বসবাসরত ২৫ কোটি মানুষের বিষয়ে উদ্বিগ্ন হোক, যেখানে একটি অঘোষিত সামরিক আইন রয়েছে এবং যার বিরুদ্ধে কথা বলা উচিত। এই বছরের অক্টোবরে সময়মতো নির্বাচন হলে, ইমরান খানের অবরুদ্ধ দলেল এখনও জয়লাভের সম্ভবনা রয়েছে কি না এবং তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন কি না, এই প্রশ্নের জবাবে তিনি মন্তব্য করেছেন যে, তার ক্ষমতাচ্যুতির পর ৩৭টি উপনির্বাচনের মধ্যে ৩০টিতে বিশাল ব্যবধানে জয়লাভের মধ্য দিয়ে তার দল সেনাবাহিনী সমর্থিত ১২-দলীয় জোটকে পরাজয়ে ভাসিয়ে দিয়েছিল।

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খান তার এবং তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে তীব্র নিপিড়নের কথাও বলেছেন। ইমরান খান দাবি করেছেন যে, অগ্নিসংযোগের ঘটনার অজুহাতে এপর্যন্ত প্রায় ১০হাজার পিটিআই নেতা ও কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেছেন যে, তারা পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দলকে দূরে রাখতে চায় এবং ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করতে চায় কারণ তারা পিটিআই-এর ক্ষমতায় ফিরে আসার ভয় পায়। খান বলেন, ‘আমার সাথে যা ঘটছে, তার তুলনা আপনি করতে পারবেন না। আমি দোষী সাব্যস্ত নই কিন্তু গণমাধ্যম আমার উচ্চারণ করতে পারে না।’ সূত্র:এমএসএনবিসি।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

প্লটবঞ্চিত পূর্বাচলের আদিবাসিন্দাদের ৩শ’ ফুট সড়কে অবস্থান : বিক্ষোভ অব্যাহত

প্লটবঞ্চিত পূর্বাচলের আদিবাসিন্দাদের ৩শ’ ফুট সড়কে অবস্থান : বিক্ষোভ অব্যাহত

দেশে সংস্কার  ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার আহ্বান

দেশে সংস্কার ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার আহ্বান

ছাত্রলীগের হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের মামলা করতে বললেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

ছাত্রলীগের হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের মামলা করতে বললেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

উম্মাহর কল্যাণে মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই

উম্মাহর কল্যাণে মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই

বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডারসহ নিহত ১৪

বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডারসহ নিহত ১৪

পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধে ব্যবহারের আশঙ্কা

পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধে ব্যবহারের আশঙ্কা

মস্কোয় হামলার উপযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র কিয়েভে পাঠাবে না জার্মানি

মস্কোয় হামলার উপযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র কিয়েভে পাঠাবে না জার্মানি

জিয়ার ভূমিকাকে অবহেলা করায় পাহাড়ে সমস্যা হচ্ছে : জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী

জিয়ার ভূমিকাকে অবহেলা করায় পাহাড়ে সমস্যা হচ্ছে : জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী

মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই: তারেক রহমান

মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই: তারেক রহমান

বিচার বিভাগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা প্রধান বিচারপতির

বিচার বিভাগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা প্রধান বিচারপতির

একদিনে ৮৪৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১

একদিনে ৮৪৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১

কুষ্টিয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে সুগার মিলের নিরাপত্তা প্রহরীর মৃত্যু

কুষ্টিয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে সুগার মিলের নিরাপত্তা প্রহরীর মৃত্যু

সাজেক ভ্রমণে আটকা পড়েছেন ৮০০ পর্যটক

সাজেক ভ্রমণে আটকা পড়েছেন ৮০০ পর্যটক

‘শুধু সংস্কারে থেমে থাকলেই চলবে না, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে হবে’ : তারেক রহমান

‘শুধু সংস্কারে থেমে থাকলেই চলবে না, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে হবে’ : তারেক রহমান

যে কোনো ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত: বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ

যে কোনো ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত: বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ

ভোলায় ঝড়ের কবলে পড়ে ১০ ট্রলারডুবি, নিখোঁজ ১

ভোলায় ঝড়ের কবলে পড়ে ১০ ট্রলারডুবি, নিখোঁজ ১

ছাত্ররাজনীতিতে গুণগত সংস্কার প্রয়োজন : শিবির সেক্রেটারী

ছাত্ররাজনীতিতে গুণগত সংস্কার প্রয়োজন : শিবির সেক্রেটারী

মতলবে ছেলের ইটের আঘাতে মায়ের মৃত্যু : আটক ছেলে

মতলবে ছেলের ইটের আঘাতে মায়ের মৃত্যু : আটক ছেলে

মব জাস্টিসের প্রতিবাদে চবিতে মানববন্ধন

মব জাস্টিসের প্রতিবাদে চবিতে মানববন্ধন

গুলিবিদ্ধ ইলহামের জন্য তারেক রহমানের অনন্য উদ্যোগ

গুলিবিদ্ধ ইলহামের জন্য তারেক রহমানের অনন্য উদ্যোগ