ব্যক্তি পর্যায়ে অনীহা
১২ জুলাই ২০২৩, ১১:১৯ পিএম | আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম
সারা দেশে দিন দিন বেড়েই চলেছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। মৃত্যুর হারও কম নয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি), ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নানা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কোনো কার্যক্রমই যেন দমাতে পারছে না ডেঙ্গুর ভয়াবহতা। তবে রাজধানী ঢাকার সাধারণ নাগরিক পর্যায়ে তেমন কোনো সারা নেই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে। সাধারণ নাগরিকরা ডেঙ্গুর ভয়াবহ অবস্থায়ও কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। নিজেদের বাড়িঘর পরিস্কার রাখা, এডিস মশা জন্মাতে পারে এমন উৎস স্থান পরিস্কার রাখাসহ ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন না। অন্যদিকে ঢাকার অধিকাংশ বাড়িতে ছাদ বাগান করা হয় অথবা গাছ লাগানো হয়ে। এসব গাছও নিয়মিত পরির্চযা করা হয় না। ছাদে নিয়মিত পানি জমা থাকলেও পরিস্কার করা হচ্ছে না। এসব নানা কারণে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য বিশেষ কন্ট্রেল রুমের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। ডিএসসিসির ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে ও এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে মাঠ পর্যায়ের সব কার্যক্রম নগর ভবন থেকে লাইভ মনিটরিং করা হবে। বিগত বছরের মতো এবারও ডিএসসিসির মেয়র নিজে কন্ট্রোল রুমে উপস্থিত থেকে বিভিন্ন ওয়ার্ড, অঞ্চলের মাঠ পর্যায়ে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম লাইভ মনিটরিং করবেন।
এদিকে, রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালকে ডেঙ্গু ডেডিকেটেড করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে এই হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ তথ্য জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার (সিডিসি) উপপরিচালক শফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতালকে ডেঙ্গু ডেডিকেটেড করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মৌখিকভাবে এ ঘোষণা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। রাজধানীর পাশাপাশি জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে যাচ্ছেন। তবে অনেক এলাকায় রোগী ব্যবস্থাপনার কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় রোগীরা বিপাকে পড়ছেন। মশা নিধন কার্যক্রম ঢিলেঢালা হওয়ায় ক্রমেই পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, জনগণ সচেতন হলে ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে। একটি উৎস থেকেই কিন্তু পুরো এলাকার সবার জন্য জনস্বাস্থ্যের হুমকি তৈরি করতে পারে। একটি পাত্রে জমে থাকা পানির ভেতর প্রচুর পরিমাণে লার্ভা এবং মশা হওয়া সম্ভব। সুতরাং প্রথমত আমাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। পানি জমে লার্ভা বিস্তারের সুযোগ তৈরি হয়, এ রকম কোথাও কোনো পরিত্যক্ত পাত্র বা সামগ্রী রাখা যাবে না। নিজেদের আঙিনা, নিজেদের স্থান, নিজেদের স্থাপনা আমরা যদি পরিষ্কার রাখতে পারি, তাহলে আমরা অবশ্যই এই এডিস মশা এবং ডেঙ্গুকে প্রতিরোধ করতে পারব। শতভাগ নির্মূল করতে পারব- এটা আমরা বলি না। কিন্তু জনগণ সচেতন হলে আমরা এটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারব।
ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, যে বিষয়টি আমাদের এখন সবচেয়ে বেশি ভোগাচ্ছে, সেটি হলো এডিস মশার বিস্তার। সে বিস্তারকে রোধ করার জন্য এই মৌসুমে আমাদের যে চলমান অভিযান, সেই অভিযানের কার্যক্রম আজ আমি নিজেই সশরীরে তদারকি করছি। যেখানেই লার্ভা হওয়ার শঙ্কা রয়েছে, পানি জমে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে সেসব জায়গা আমরা ধ্বংস করছি, নির্মূল করছি। লার্ভিসাইডিং করছি এবং বিকেলে আবার ফগিং করা হচ্ছে। যেন উন্মুক্ত মশাগুলো নিধন করা যেতে পারে। এভাবেই ডিএসসিসি এলাকার ৭৫টি ওয়ার্ডে অভিযান পরিচালনা হচ্ছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক, অত্যন্ত হতাশার। আমাদের মন্ত্রণালয়ে মিটিং হয়। আন্তঃমন্ত্রণালয় মিটিং হয়। একাধিকবার মিটিং হয়েছে। আমরা সবাই কিন্তু বলেছি নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখবো। দায়িত্ব পালন করবো। সবাই মুখে বলে কিন্তু বাস্তবে কেউ দায়িত্ব পালন করছে না। বাস্তবে যদি সরকারি প্রতিষ্ঠানের সবাই দায়িত্ব পালন করতো তাহলে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যেতো না।
তিনি বলেন, আমি মনে করি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বটা সবাইকে নিতে হবে। দায়িত্ব কিন্তু একা সিটি করপোরেশনের না। এই শহর আমাদের সবার। এই শহরটাকে সবাইকেই ভালোবাসতে হবে। আমরা এডিস মশা বিরোধী সচেতনতা বাড়ানোর জন্য মসজিদের ইমাম, খতিব, ক্যাডেট কোর, শিক্ষামন্ত্রীর মাধ্যমে স্কুল কলেজসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আমরা মেসেজ দিচ্ছি যার যার প্রতিষ্ঠান অঙ্গন যেন আমরা পরিষ্কার রাখি। সবাই যার যার প্রতিষ্ঠান, ভবন পরিষ্কার রাখলে আমরা এডিস মশা থেকে অনেকখানি রক্ষা পেতে পারি। এতে করে শহরবাসীও রক্ষা পাবেন। সরকারি, বেসরকারি, আধা সরকারি, মাদরাসা, স্কুল-কলেজ, মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, বাসা-বাড়ি, আমরা নিজ নিজ অঙ্গন পরিষ্কার রাখি। আমরা কিছুদিন ধরে দেখছি কী ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।###
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
ফারাক্কা বাঁধের কারনে সুন্দরবনের প্রতিবেশ ব্যবস্থার ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে
তথ্য মন্ত্রণালয়ের সার্চ কমিটির সদস্য হলেন ডুজার সাবেক সভাপতি তুষার
নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে জামায়াত দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে -কক্সবাজারে সমাবেশে নেতৃবৃন্দ
আইবিটিআরএ-তে ‘সার্টিফিকেশন কোর্স অন ট্রেজারি ডিলিংস’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু
শাহজালাল বিমানবন্দর এলাকায় হর্ন বাজানোয় নতুন নির্দেশনা
খুলনা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের জরুরী মতবিনিময় সভা
উন্মুক্ত অনলাইন রিটার্ন সিস্টেম, দাখিল ২০ হাজার
চার হত্যা মামলায় ফের ৮ দিনের রিমান্ডে গোলাম দস্তুগীর গাজী
‘দ্রুত’ নিষ্পত্তির নির্দেশ প্রবাসীদের নতুন এনআইডির আবেদন
নির্বাচনী ব্যবস্থা ও পুলিশ সংস্কারে সহায়তা করতে চায় জাতিসংঘ
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে না.গঞ্জের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে ২ গ্রুপের সংঘর্ষ আহত ১০
২১ দিনে ১ মাসের চেয়েও বেশি রেমিট্যান্সএলো
সোনারগাঁওয়ে নারীর লাশ উদ্ধার।
হঠাৎ অশান্ত ক্রীড়া পরিদপ্তর, ক্রীড়া অফিসারদের ধর্মঘটের ডাক
আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ মনসুরুল হকের পদত্যাগের দাবীতে শ্রীমঙ্গলে ছাত্র জনতার সড়ক অবরোধ
চবিতে একদিনেই ডিন, প্রভোস্ট ও প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ পেলেন ২৩ জন
মাদারীপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত
না.গঞ্জে চাঞ্চল্যকর মা ও অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে হত্যা মামলায় একজনের ফাঁসি
কালিয়াকৈরে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ, মহাসড়ক অবরোধ
ইসরাইলের রাফায়েল প্রতিরক্ষা কোম্পানিতে হামলা হিজবুল্লাহর