ঢাকা   রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৭ আশ্বিন ১৪৩১
নির্বিচারে বৃক্ষনিধন উজাড় হচ্ছে বন

অস্তিত্ব সঙ্কটে জাতীয় পাখি দোয়েলসহ নানান পাখ-পাখালি

Daily Inqilab এস. কে. সাত্তার, ঝিনাইগাতী (শেরপুর) থেকে

১৫ জুলাই ২০২৩, ১১:২৮ পিএম | আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম

এক সময় গারো পাহাড় অঞ্চলের মাঠে-ঘাটে, বন-জঙ্গলে, গাছে গাছে জাতীয় পাখি দোয়েলসহ বিভিন্ন ধরনের পাখ-পাখালি দেখা যেত। কালের বিবর্তন ও নির্বিচারে বৃক্ষনিধনের ফলে এখন আর চিরচেনা সেই পাখ-পাখালির দেখা মেলে না। পাখির কলরবে মুখর গারো পাহাড় ও আশপাশের গ্রামাঞ্চল এখন প্রায় পাখিশূন্য। কালক্রমে বনে-জঙ্গলের চিরচেনা সেই পাখ-পাখালির অপরূপ দৃশ্যপট দিন দিন পাল্টে যাচ্ছে। পরিবেশ দূষণ, নির্বিচারে গারো পাহাড়ের বৃক্ষনিধন, আবাদি জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার, পাখির বিচরণ ক্ষেত্র ধ্বংস, পাখির খাদ্য সঙ্কট ও জলবায়ুর পরিবর্তণের প্রভাবে বিলুপ্তির পথে জাতীয় পাখি দোয়েলসহ দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন পাখ-পাখালি। শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার প্রবীণ ডা. আব্দুল বারী, আলহাজ শরীফ উদ্দিন সরকার ও আলহাজ সেরোয়ার্দী দুদু দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ক’বছর আগেও মানুষের ঘুম ভাঙতো পাখ-পাখির কিচিরমিচির শব্দে। পাখির কলকাকলি বলে দিত এখন সকাল হয়েছে। ফজর নামাজ শেষে শুরু হতো দৈনন্দিন কর্মব্যস্ততা। কিন্তু এখন সেই পাখির ডাক হারিয়ে গেছে। ওই গাছ-গাছালিতে পাখির কিচিরমিচির ডাক আর নেই। দেশের ঐতিহ্য ও শিল্পচর্চার সাথে পাক-পাখালির যে যোগ, তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।
বিভিন্ন গ্রামের প্রবীণদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পাখির কিচিরমিচির শব্দে শিহরণ জাগানো সেই সুর এখন আর শোনা যায় না। সকাল, দুপুর ও সন্ধ্যায় বাঁশের ঝাড়, আম, জাম, কাঁঠাল গাছে ও বাড়ির ছাদে যেসব পাখি সব সময় দেখা যেত, ওইসব পাখ-পাখালি এখন আর চোখে পড়ে না। তবে কম সংখ্যক ঘুঘু, কাক, সাড়স, চড়াই ইত্যাদি পাখি গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় দেখা গেলেও জাতীয় পাখি দোয়েল এখন আর চোখেই পড়ে না। পাখি প্রিয় কিছু সৌখিন মানুষের বাড়ির খাঁচায় বন্দি করে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি পালন করতে দেখা যায়।
পরিবেশবান্ধব পাখিপ্রেমীগণ বলেন, দোয়েলসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি বিলুপ্তির পথে। নতুন প্রজন্ম পাখি দেখতে পায় না। তাছাড়া শিকারিদের দৌরাত্মে পাখিশূন্য হয়ে যাচ্ছে বনাঞ্চল। তাই বাধ্য হয়ে পাখি প্রেমীরা বাড়িতে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি পালন করেছেন। যাতে নতুন প্রজন্ম পাখি সম্পর্কে জানতে পারে। পাখির আবাসস্থল গাছ কাটার প্রভাব, ফসলি জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগ, বনাঞ্চল উজাড়, পাখি শিকার, ইত্যাদি কারণে অনেক পাখি এখন বিলুপ্তির পথে বলে মনে করছেন সমাজের সুস্থ বিবেক সম্পন্ন চিন্তাশিল মানুষ।’
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফারুক আল মাসুদ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, বিভিন্ন মৌসুমে পাখি শিকার এবং পরিবেশের ব্যাপক পরিবর্তনের কারণে অনেক পাখিই চলে যাচ্ছে অন্যত্র। পাখি শিকার বন্ধে ও পরিবেশ রক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

স্কুলছাত্র মারুফ হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল পৌরসভার কাউন্সিলর গ্রেপ্তার, একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর

স্কুলছাত্র মারুফ হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল পৌরসভার কাউন্সিলর গ্রেপ্তার, একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর

জনগণের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করছে সরকার : সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

জনগণের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করছে সরকার : সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

দোকান বরাদ্দের বিষয় খতিয়ে দেখতে কমিটি

দোকান বরাদ্দের বিষয় খতিয়ে দেখতে কমিটি

শুটিং ফেডারেশন চলছে অপুর নির্দেশেই!

শুটিং ফেডারেশন চলছে অপুর নির্দেশেই!

বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে পোশাক কারখানায় ৪৩২ কোটি টাকার বিদেশি বিনিয়োগ

বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে পোশাক কারখানায় ৪৩২ কোটি টাকার বিদেশি বিনিয়োগ

আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের সভাপতি তাজওয়ার আউয়াল

আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের সভাপতি তাজওয়ার আউয়াল

সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছে বিএফআইইউ

সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছে বিএফআইইউ

রংপুর রেঞ্জের নতুন ডিআইজি আমিনুল ইসলাম

রংপুর রেঞ্জের নতুন ডিআইজি আমিনুল ইসলাম

গণঅধিকার পরিষদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার ৯৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি

গণঅধিকার পরিষদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার ৯৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি

বগুড়ায় সহযোগী সহ শীর্ষ সন্ত্রাসী সাগরকে নৃশংস কায়দায় হত্যা

বগুড়ায় সহযোগী সহ শীর্ষ সন্ত্রাসী সাগরকে নৃশংস কায়দায় হত্যা

শৈলকুপায় অস্ত্র ও গুলিসহ ২ জন আটক

শৈলকুপায় অস্ত্র ও গুলিসহ ২ জন আটক

পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে : বাংলাদেশ ন্যাপ

পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে : বাংলাদেশ ন্যাপ

পাহাড়ে অশান্তির বীজ উপরে ফেলতে হবে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে যে কোন চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে

পাহাড়ে অশান্তির বীজ উপরে ফেলতে হবে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে যে কোন চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে

ওরা পার্বত্য অঞ্চলকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানাতে চায়

ওরা পার্বত্য অঞ্চলকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানাতে চায়

ঈশ্বরদীতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তুহিনসহ যুবদল নেতাদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ

ঈশ্বরদীতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তুহিনসহ যুবদল নেতাদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ

এখনো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বরদের রেখেছেন কেন? - রিজভী

এখনো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বরদের রেখেছেন কেন? - রিজভী

কোর্ট ম্যারেজ করা প্রসঙ্গে?

কোর্ট ম্যারেজ করা প্রসঙ্গে?

গুজবে কান দেবেন না : জনপ্রশাসন সচিব

গুজবে কান দেবেন না : জনপ্রশাসন সচিব

কোয়াড সম্মেলনে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা

কোয়াড সম্মেলনে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা

এনজিও,নাস্তিকদের প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে সংগ্রাম চলবে- চরমোনাই

এনজিও,নাস্তিকদের প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে সংগ্রাম চলবে- চরমোনাই