বর্তমান সরকারের অধীনে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব নয়
১৫ জুলাই ২০২৩, ১১:৪৯ পিএম | আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম
বর্তমান সরকারের অধীনে অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন সম্ভব নয় বলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ‘ইলেকশন এক্সপ্লোরেটরি মিশন’ বা ‘অনুসন্ধানী অগ্রগামী দল’কে জানিয়েছে বিএনপি।
গতকাল শনিবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ইইউ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সোয়া এক ঘন্টার বৈঠকের পর দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসুরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের কাছে এই কথা জানান। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ছয় সদস্যের ‘ইলেকশন এক্সপ্লোরেটরি মিশন’ বা ‘অনুসন্ধানী অগ্রগামী দল’র নেতৃত্ব দেন রিকার্ডো শেলেরি। বৈঠকে বিএনপির পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রতিনিধি দলে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন যে প্রশ্নবিদ্ধ, নির্বাচন যে গ্রহনযোগ্য না, এটাই তো ভিত্তি। এই ভিত্তির ওপরে তো আজকে সারা বিশ্ব বাংলাদেশের ওপর নজর দিয়েছে, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে তাদের কনসার্ন প্রকাশ করছে। এখানে এজন্য তারা (ইউরোপীয় ইউনিয়ন) আসছেন, তারা জানতে চাচ্ছেন বাংলাদেশের নির্বাচন আদৌও আগামী দিনে জনগণের ভোটের মাধ্যমে এটা সম্ভব হবে কি হবে না।
আমীর খসরু বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে যেটা আমরা সবসময় বলে এসেছি, আমরা শুধু বলছি না, দেশের জনগণ যেটা বলছে, বিশ্ব বিবেক যেটা বলছে যে, এই রেজিমের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার কোনো প্রশ্নই উঠে না, সম্ভব না।
কয়েকটা কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, কারণগুলো আপনারাও (গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা) জানেন, বিশ্ববাসীও জানেন। যেকারণে আজকে এখানে তারা (ইইউ দল) আসছেন, কারণ হচ্ছে এদের অধীনে নির্বাচন হবে না। নির্বাচন তো দূরে, নির্বাচনের ভোটচুরি তো এখনই চলছে। এই যে ডিসিদের পোস্টিং হচ্ছে, এসপিদের, টিএনওদের পোস্টিং হচ্ছে, বিএনপি নেতাদের গ্রেফতার চলছে। এই দুইতিন দিনের মধ্যে আমাদের কর্মসূচিতে আক্রমণ হয়েছে, নেতাকর্মীদের হাত কেটে ফেলছে, বিএনপির জনসভায় আসতে বাধা দেয়া হচ্ছে। শুক্রবারও দলের পদযাত্রায় আসা নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণ করে বাধা দেয়া হয়েছে। এটা তো অব্যাহতভাবে চলছে। বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলার বিচারকে তরান্বিত করে তাদের শাস্তি দিয়ে তারা যাতে নির্বাচন করতে না পারে, এসব কাজগুলো চলছে। অর্থ্যাৎ ভোট চুরি বাংলাদেশে প্রত্যেকদিন চলছে। তারা (সরকার) আগেও এরকম কাজ করেছে, এখনো চলছে। আগামীদিনেও জনগণকে বাইরে রেখে এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচনকে নিয়ন্ত্রণ করে ক্ষমতায় যাবে। এই বিষয়গুলো স্বাভাবিকভাবে আলোচনা হয়েছে। আমরা এগুলো তাদেরকে (ইইউ) বলেছি। শেষ কথা হচ্ছে এই রেজিমের অধীনে কোনো নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ তাদের ভোট প্রয়োগ করতে পারবে না, তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারবে না, সংসদ নির্বাচন করতে পারবে না, তাদের সরকার নির্বাচন করতে পারবে না। এটা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার।
গত দুইটি নির্বাচনে ইইউ কোনো পর্যবেক্ষক পাঠায়নি এবার তারা পাঠাবে কিনা জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, সেটা তো তাদের (ইইউ) সিদ্ধান্ত। পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি পাঠাবে না সেটা তাদের বিষয়। এটা তো আমি উত্তর দিতে পারবো না। আগে তো বাংলাদেশে নির্বাচন হতে হবে। পর্যবেক্ষকের প্রশ্ন তখনই আসে যখন সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। বাংলাদেশে তো নির্বাচনের সম্ভাবনা এই মুহুর্ত পর্যন্ত বাংলাদেশের জনগণ, গণতান্ত্রিক বিশ্ব তারা কেউ বিশ্বাস করে না। দেশে বিগত নির্বাচনগুলোতে যেভাবে সরকার গঠন করেছে, আগামীতে করারও কোনো কারণ নেই। সুতরাং এই প্রেক্ষাপটে যে সিদ্ধান্ত সেটা তারা দেবে সেটা তাদের ব্যাপার। তবে তারা এখানে আসার উদ্দেশ্যটা হচ্ছে যে, বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হয় না।
তিনি বলেন, তারা তো নেপাল, ভুটান, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা কোথাও কিন্তু যাচ্ছেন না। কেনো তারা বাংলাদেশে আসছে। বিষয়টা তো দিনের আলোর মতো পরিষ্কার যে, বাংলাদেশে নির্বাচন হয় না। আগামী নির্বাচন যে হবে না এটার লক্ষণ তো প্রত্যেকদিনই আমরা দেখছি। আক্রমণ, জেল, মিথ্যা মামলা, ডিসি-এসপি-টিএনও পোস্টিং, কর্মীদের কবজি ছিন্ন করে ফেলা, বিভিন্ন জায়গায় আক্রমণ করা, দুর্নীতি দমন কমিশনকে ব্যবহার করা, বিচার বিভাগকে ব্যবহার করা, এসব তো প্রতিনিয়ত চলছে।
নির্বাচনে লেভেল প্ল্যায়িং ফিন্ডে আপনাদের নিরাপত্তাহীনর বিষয়ে কিছু বলেছেন কিনা প্রশ্ন করা হলে বিএনপির এই নেতা বলেন, লেভেল প্ল্যায়িং ফিল্ড নেই। যেখানে ডিমোক্রেটিক অর্ডার নেই সেখানে সমান সুযোগ থাকতেই পারে না। যেটা নেই সেটা বলার তো প্রশ্ন আসে না। এটা সর্বজনবিদিত ব্যাপার।
সংলাপের পরিবেশ যদি থাকে সেখানে বিএনপি যাবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেখানে কোনো ডেমোক্রেটিক অর্ডার নেই। মানবাধিকার প্রশ্নবিদ্ধ, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ, আইনের শাসন প্রশ্নবিদ্ধ, জীবনের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ যেখানে ডেমোক্রেটিক অর্ডারই অনুপস্থিত সেখানে সংলাপ কিভাবে? সংলাপের জন্য একটা ডেমোক্রেটিক অর্ডার লাগে, সংলাপ তো ডেমোক্রেটিক অর্ডারের অংশ। বাংলাদেশে লেভেল প্ল্যায়িং ফিল্ড নেই, যেখানে গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক, রাজনৈতিক অধিকারহীন হয়ে বাংলাদেশ এখন আছে। সেই পরিবেশ তো আগে ক্রিয়েট করতে হবে তারপরও তো সংলাপের প্রশ্ন আসবে।###
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ইসরায়েলি বর্বরতা চলছেই, গাজায় নিহত বেড়ে প্রায় সাড়ে ৪৫ হাজার
সচিবালয়ের সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ, নিরাপত্তা জোরদার
সচিবালয়ে আগুনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
৪২ ঘণ্টা পর কর্ণফুলী নদীতে মিলল নিখোঁজ ২ পর্যটকের মরদেহ
পশ্চিম তীরে ইসরাইলের ড্রোন হামলা, নারীসহ ৮ ফিলিস্তিনির মৃত্যু
সরকারকে ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্রে জড়িতদের বিন্দু পরিমাণ ছাড় নয়: আসিফ মাহমুদ
ভারতে শঙ্করাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ করে হস্তক্ষেপ চাইলেন একদল বাংলাদেশি হিন্দু
অবশেষে সচিবালয়ে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে
হাসিনাকে ভারত কি ফেরত পাঠাবে, আলজাজিরার প্রতিবেদন কি বলছে
সচিবালয়ে সেনাবাহিনী-বিজিবি মোতায়েন
কানু দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছে, দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি
বাংলাদেশ থেকে নথি না আসাতেই জামিন পিকে হালদারের?
সময় টিভির সাংবাদিক বরখাস্ত: এএফপির প্রতিবেদন নিয়ে যা বললেন হাসনাত
আগুনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আট ও নয়তলা
লক্ষ্মীপুরে পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনিয়ে নিলো স্থানীয়রা
গাজীপুরে ছাত্রলীগ নেতা মাসুদ গ্রেফতার
সচিবালয়ের আগুন এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি, কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস
ফ্যাসিবাদের সময় উত্তরবঙ্গে বৈষম্য করা হয়েছে: নীলফামারীতে উপদেষ্টা আসিফ
সচিবালয়ে আগুন নেভাতে গিয়ে ট্রাকচাপায় নিহত ফায়ার ফাইটার সোহানুর
সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২০ ইউনিট