ঢাকা   রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৭ আশ্বিন ১৪৩১
ব্যবসায়ীদের সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী # শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী দেখতে চান ব্যবসায়ীরা

আওয়ামী লীগ ব্যবসাবান্ধব সরকার

Daily Inqilab অর্থনৈতিক রিপোর্টার

১৫ জুলাই ২০২৩, ১১:৫৬ পিএম | আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ব্যবসা বাণিজ্য বেসরকারি খাতে উন্মুক্ত করেছে আওয়ামী লীগ। একই সঙ্গে দেশের উন্নয়নে সবসময়ই বেসরকারি খাতকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছে। গত ১৪ বছর আগে যে বাংলাদেশ ছিল, এখন সেই বাংলাদেশ নেই। আজ আমরা বদলে যাওয়া বাংলাদেশে বসবাস করছি। আমাদের লক্ষ্য এখন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া। আর এতে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন দেশের ব্যবসায়ীরা। হাওয়া ভবনের মতো খাওয়া ভবন নেই, স্বাধীনভাবে ব্যবসার সুযোগ করে দিয়েছে সরকার। আওয়ামী লীগ হলো- ব্যবসা বান্ধব সরকার। আপনার সেটা এখন বুঝতে পেরেছেন।
গতকাল রাতে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ব্যবসায়ী সম্মেলনে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিসহ সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী এবং ব্যবসায়ী নেতারা।
এফবিসিসিআইয়ের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে গত মার্চে তিন দিনব্যাপী বাংলাদেশ ব্যবসা সম্মেলন আয়োজন করে এফবিসিসিআই। ওই সম্মেলনে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগসহ বিভিন্ন বিষয়ে ১৬টি অধিবেশনে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা উঠে আসে। সেগুলো একত্র করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর হাতে সেই প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করে এফবিসিসিআই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে নতুন নতুন বাজার খুঁজে রেব করতে হবে। এজন্য বেসরকারি খাতকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা করছে সরকার। তিনি বলেন, বাংলাদেশ পিছিয়ে যাবে না। এখন শুধু সামনে এগিয়ে যাবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা এখন এমন হয়েছে যে, গ্রামের পণ্য দিনে দিনে শহরে চলে আসছে। এই উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে সরকারের ধারাবাহিকতা থাকার জন্য। সবশেষে অকুণ্ঠ সমর্থন দেয়ার জন্য সব ব্যবসায়ীদের কৃতজ্ঞতা জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইনকিউবেটর সেন্টার তৈরি করে কম্পিউটার ট্রেনিং দেয়া শুরু করেছি। তাছাড়া স্কুল লেভেল থেকে কম্পিউটার ল্যাব করে দিচ্ছি, সেখানে ট্রেনিং দিচ্ছি। পাশাপাশি ন্যানো টেকনোলজির জন্য একটি আইনও করে দিয়েছি। ন্যানো টেকনোলজির ইনস্টিটিউট গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিয়েছি। আইন ইতিমধ্যে কেবিনেট অনুমোদন দিয়েছি। দ্রুতই আইন পার্লামেন্টে পাস করে দেব। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযুক্ত স্মার্ট জনগোষ্ঠী গড়ে ওঠে সে জন্য এসব পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিমউদ্দিন বলেছেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভবিষ্যতে আবারও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই। সম্মেলনের শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে মো. জসিমউদ্দিন বলেন, আপনি (প্রধানমন্ত্রী) যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে আসছেন ও আমাদের (ব্যবসায়ীদের) যে অবস্থান সৃষ্টি হয়েছে, সেটিকে ধরে রাখার জন্য আপনাকে (প্রধানমন্ত্রীকে) প্রয়োজন। ব্যবসায়ীদের বিদ্যমান সমস্যাগুলো আপনার (প্রধানমন্ত্রীর) মাধ্যমে আমরা সমাধান করতে চাই। এ জন্য সব ব্যবসায়ী ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। তারা সবাই আগামীতে আপনার নেতৃত্বে বিদ্যমান সমস্যাগুলোকে সমাধান করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে মো. জসিমউদ্দিন বলেন, সুতরাং আমরা মনে করি আপনাকে আমাদের প্রয়োজন। আপনাকে আবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকতে হবে। আমাদের জন্য, ব্যবসায়ীদের জন্য প্রধানমন্ত্রী থাকতে হবে।
এফবিসিসিআই’র সব উন্নয়ন কর্মকা-ে সরকারকে সঙ্গে পাওয়া গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যখনই এফবিসিসিআই থেকে আহ্বান করা হয়েছে তখনই আপনি সাড়া দিয়েছেন। এ জন্য আমরা গর্বিত ও কৃতজ্ঞ। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে এফবিসিসিআই নিরলসভাবে কাজ করবে। এতে এফবিসিসিআই’র সেøাগান হবে ‘স্মার্ট এফবিসিসিআই ফর স্মার্ট অর্থনীতি’।
এ সময় বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও ডলার সংকটে বিপর্যস্ত বন্ধ শিল্পকারখাগুলো চালু করতে জরুরিভিত্তিতে বিশেষ তহবিল গঠনের আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের ছায়াসঙ্গী হয়ে ব্যবসায়ীরা দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ন্যায্য বাজার ব্যবস্থা, উৎপাদনের বিভিন্ন উপকরণের অবাধ প্রবাহ, প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি করার জন্য সবাইকে নিবেদিত হয়ে কাজ করতে হবে।
ব্যবসা-বাণিজ্যকে স্মার্টলি পরিচালনার জন্য জাপানের জেট্রো, কোরিয়ার কুট্রা, চীনের সিসিপিআইটি এবং সম্প্রতি ভিয়েতনামের ট্রেড সেন্টারের মতো বাংলাদেশে একক পেশাজীবীভিত্তিক বিনিয়োগ-ব্যবসাবান্ধব সংস্থা স্থাপনের দাবি জানান তিনি।
বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক দেশগুলোতে ফোকাল পারসন হিসেবে একজন করে ব্যবসায়ী নিয়োগ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পর বাংলাদেশের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ আসবে। উন্নত দেশগুলো থেকে দেয়া প্রায় সব বাণিজ্য সুবিধা প্রত্যাহার হবে। তখন রফতানি বাজারে টিকে থাকতে হলে পণ্য উৎপাদন খরচ কমানো জরুরি হয়ে পড়বে। সেজন্য ডব্লিউটিওর কমপ্লায়েন্সের সঙ্গে সমন্বয় করে ভ্যাট-ট্যাক্স এবং ইউটিলিটির চার্জ সমন্বয় করা, কারিগরি ও অভ্যন্তরীণ নীতি সহায়তা জরুরি।
অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আমদানি নির্ভরতা কমাতে হবে। অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে গ্যাস ও কয়লা উত্তোলন এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে হবে। এসএমই খাতে সর্বনিম্ন সুদহার রাখতে হবে। বিদেশি প্রকল্পে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে ডলারের সাশ্রয় করা যেতে পারে। বন্দর ও লজিস্টিসক সহায়তার উন্নতি করতে হবে।
মো. জসিম উদ্দিন বলেন, করের বোঝা কমানোর জন্য করজাল বাড়ানো দরকার। ব্যবসাবান্ধব কর ব্যবস্থা বাস্তবায়নে এনবিআরের অতিরিক্ত ক্ষমতা কমানো দরকার, তবে তাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। এনবিআরের কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। এতে ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে স্মার্টভাবে কর আদায় অনেক বেশি কার্যকর হবে।
অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, দেশীয় শিল্পের বিকাশ, বাণিজ্য সম্প্রসারণ, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ অবকাঠামো উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। ফলে পরিবর্তনশীল বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে আধুনিকতার উৎকর্ষে বদলে যাবে বাংলাদেশ। আমি মনে করি সরকার ও বেসরকারি খাতের সমন্বিত প্রচেষ্টায় একটি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সক্ষম হব। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দিতে পারব সমৃদ্ধ সুন্দর বাংলাদেশ। বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে নিজেদের অবস্থান করব আরও উন্নত। সে জন্য শেখ হাসিনার সরকার, বারবার দরকার। বিকিএমইএ সভাপতি ও সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান প্রধানমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানিয়ে বলেন, কাস্টমস থেকে অমাদের রক্ষা করুণ। আমরা চোর-বাটপার নই।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি সামীর সাত্তার বলেছেন, উন্নয়নের জন্য সবার আগে দরকার স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব। গত দেড় দশক ধরে দেশে স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ রয়েছে এবং সরকারের ধারাবাহিকতা রয়েছে, যেকারণে বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিকভাবে অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছে। সামীর সাত্তার বলেন, বাংলাদেশে স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ আছে বলেই অর্থনীতি এগোচ্ছে। মাথাপিছু আয় বেড়েছে। রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। রফতানি আয় বেড়েছে।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, এলডিসি থেকে বের হওয়ার পর বাংলাদেশের সামনে কিছু চ্যালেঞ্জ আছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় গবেষণা ও উদ্ভাবনে জোর দিতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশের অন্যতম অঙ্গ- স্মার্ট এডুকেশন। বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে হলে টেকনিক্যাল ও ভোকেশনাল এডুকেশনে জোর দিতে হবে। বেসরকারি খাত সরকারের সাথে একজোট হয়ে কাজ করতে আগ্রহী। সরকার সেই সুযোগ করে দেবে বলে তিনি আশাপ্রকাশ করেন।
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিকল্প শুধু শেখ হাসিনাই। তিনি বলেন, দীর্ঘ সময়ের অভিজ্ঞতার আলোকে দেশ পরিচালনায় শেখ হাসিনা যে কৃতিত্ব দেখিয়েছেন; সে বিবেচনায় আগামী দিনে তাকেই প্রয়োজন। ব্যবসায়ীরা শেখ হাসিনার সঙ্গে রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের ম্যান্ডেট পেয়ে গেছেন বলে মন্তব্যও করেন বসুন্ধরা চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, এখানে যে কজন ব্যবসায়ী আছেন- তারা এ দেশের মেরুদ--চাবিকাঠি বলেন তারা এ দেশ পরিচালনা করেন। এখন তো আপনার ম্যান্ডেট সম্পর্কে আমার মনে হয় না কারও কোনো সংশয় আছে। এ সময় দেশের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কী কী করেছেন তা সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরেন। এ সময় বলেন, উনার সম্পর্কে বলতে গেলে আগামী সাত দিনেও শেষ হবে না। উনি প্রথমেই কাজ করেছেন আমাদের গ্রামীণ অর্থনীতি নিয়ে। সবাই বলেছে শেখ হাসিনা বার বার। আমি বলবো, আমরা যেমন বঙ্গবন্ধুর কোনো বিকল্প পাইনি। এখন শেখ হাসিনার বিকল্পও শুধু শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, হামিম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য মোরশেদ আলম, বিজেএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, সংসদ সদস্য সেলিমা আহমেদ, ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফআইসিসিআই) সভাপতি নাসের এজাজ বিজয়, এইচএসবিসি বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুব উর রহমান, মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এসোসিয়েশন (বিটিএমএ) সভাপতি মোহমা¥দ আলী, ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান আব্দুল মোক্তাদির, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সাবেক প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার নিহাদ কবির, প্রাণ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইলিয়াস মৃধা, বাংলাদেশ চেম্বারের সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ, আকিজ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বশির উদ্দিন, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।
এফবিসিসিআইয়ের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে গত মার্চে তিন দিনব্যাপী বাংলাদেশ ব্যবসা সম্মেলন আয়োজন করেছিল এফবিসিসিআই। ওই সম্মেলনে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগসহ বিভিন্ন বিষয়ে ১৬টি অধিবেশনে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা উঠে আসে। সেগুলো একত্র করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর হাতে সেই প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করে এফবিসিসিআই।##

 

শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস আজ
১০ টাকার টিকিট কেটে চক্ষু পরীক্ষা করালেন প্রধানমন্ত্রী
স্টাফ রিপোর্টার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০ টাকার টিকিট কেটে চক্ষু পরীক্ষা করিয়েছেন। গতকাল শনিবার সকালে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ১০ টাকার টিকিট কেটে চক্ষু পরীক্ষা করান তিনি। ফেরার পথে হাসপাতালে আগত রোগী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তাদের সঙ্গে ছবিও তোলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে উপস্থিত সবাই উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন। নিয়মিত চেকআপের অংশ হিসেবে আগেও এখানে একাধিকবার ১০ টাকার টিকিট কেটে চিকিৎসা নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এদিকে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ক্যানটিনে কাজ করা শিশু রাব্বির (১১) দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চোখের চিকিৎসা শেষে প্রধানমন্ত্রী হাসপাতালের রোগী ও তাদের স্বজন, চিকিৎসক, নার্স এবং কর্মচারীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এ সময় রাব্বির দিকে নজর পড়ে তার। পরে রাব্বির সঙ্গে কথা বলেন তিনি এবং তার সব সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে সাধারণ রোগীর মতো ১০ টাকার টিকিট কেটে চোখের চিকিৎসা নেন। চিকিৎসা শেষে তিনি হাসপাতাল ত্যাগ করার সময় রোগী ও তাদের স্বজন, চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারীসহ উপস্থিত সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন ও ছবি তোলেন। এ সময় ভিড়ের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা শিশু রাব্বির দিকে দৃষ্টি পড়ে প্রধানমন্ত্রীর। তিনি রাব্বির কাছে এগিয়ে যান। পরম মমতায় তাকে আদর করেন। প্রধানমন্ত্রী শিশু রাব্বির কাছে জানতে চান সে কী করে, কার সঙ্গে হাসপাতালে এসেছে, কোন ক্লাসে পড়ে। উত্তরে ১১ বছর বয়সী রাব্বি জানায়, সে চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালের ক্যানটিনে কাজ করে। সেখানেই থাকে। তার বাবা মারা গেছেন। মা রাবেয়া বেগম সুতার কারখানায় কাজ করতেন। এখন তার সৎবাবা দিনমজুর জাহাঙ্গীর আলমকে নিয়ে চাঁদপুর জেলায় সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে বসবাস করেন। ক্যানটিনে কাজ নেওয়ার আগে সে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছে। সে প্রধানমন্ত্রীকে জানায় চাঁদপুরে মায়ের কাছে যেতে চায়। আবার পড়াশোনা করতে চায়। এ সময় প্রধানমন্ত্রী রাব্বির কথা শুনে আবেগাপ্লুত হন। তিনি রাব্বিকে সান্ত¡না দেন এবং তার পড়াশোনাসহ আনুষঙ্গিক দায়িত্ব নেন। এ সময় এক আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ ও যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন তিনি।

এদিকে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কারাবন্দী দিবস আজ রোববার। ১/১১-এর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বিভিন্ন মিথ্যা-বানোয়াট, হয়রানি ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই বঙ্গবন্ধু কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ওই সময় শেখ হাসিনার মুক্তির দাবিতে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ২৫ লাখ গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে জমা দেয়। এসব দাবির প্রেক্ষিতে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। শেখ হাসিনার মুক্তির মধ্য দিয়ে এদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরায় ফিরে আসে। যুগপৎভাবে বিকাশ ঘটে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের। সেদিন ভোরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় দুই সহ¯্রাধিক সদস্য সম্পূর্ণ বে-আইনীভাবে শেখ হাসিনার ধানমন্ডিস্থ বাসভবন সুধা সদন ঘেরাও করে। সেই সময় শেখ হাসিনা ফজরের নামাজ আদায় করছিলেন। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে যৌথবাহিনীর সদস্যরা শেখ হাসিনাকে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে সুধা সদন থেকে বের করে নিয়ে আসে এবং যৌথবাহিনীর সদস্যরা বন্দি অবস্থায় তাঁকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

স্কুলছাত্র মারুফ হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল পৌরসভার কাউন্সিলর গ্রেপ্তার, একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর

স্কুলছাত্র মারুফ হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল পৌরসভার কাউন্সিলর গ্রেপ্তার, একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর

জনগণের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করছে সরকার : সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

জনগণের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করছে সরকার : সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

দোকান বরাদ্দের বিষয় খতিয়ে দেখতে কমিটি

দোকান বরাদ্দের বিষয় খতিয়ে দেখতে কমিটি

শুটিং ফেডারেশন চলছে অপুর নির্দেশেই!

শুটিং ফেডারেশন চলছে অপুর নির্দেশেই!

বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে পোশাক কারখানায় ৪৩২ কোটি টাকার বিদেশি বিনিয়োগ

বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে পোশাক কারখানায় ৪৩২ কোটি টাকার বিদেশি বিনিয়োগ

আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের সভাপতি তাজওয়ার আউয়াল

আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের সভাপতি তাজওয়ার আউয়াল

সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছে বিএফআইইউ

সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছে বিএফআইইউ

রংপুর রেঞ্জের নতুন ডিআইজি আমিনুল ইসলাম

রংপুর রেঞ্জের নতুন ডিআইজি আমিনুল ইসলাম

গণঅধিকার পরিষদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার ৯৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি

গণঅধিকার পরিষদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার ৯৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি

বগুড়ায় সহযোগী সহ শীর্ষ সন্ত্রাসী সাগরকে নৃশংস কায়দায় হত্যা

বগুড়ায় সহযোগী সহ শীর্ষ সন্ত্রাসী সাগরকে নৃশংস কায়দায় হত্যা

শৈলকুপায় অস্ত্র ও গুলিসহ ২ জন আটক

শৈলকুপায় অস্ত্র ও গুলিসহ ২ জন আটক

পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে : বাংলাদেশ ন্যাপ

পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে : বাংলাদেশ ন্যাপ

পাহাড়ে অশান্তির বীজ উপরে ফেলতে হবে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে যে কোন চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে

পাহাড়ে অশান্তির বীজ উপরে ফেলতে হবে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে যে কোন চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে

ওরা পার্বত্য অঞ্চলকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানাতে চায়

ওরা পার্বত্য অঞ্চলকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানাতে চায়

ঈশ্বরদীতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তুহিনসহ যুবদল নেতাদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ

ঈশ্বরদীতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তুহিনসহ যুবদল নেতাদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ

এখনো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বরদের রেখেছেন কেন? - রিজভী

এখনো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বরদের রেখেছেন কেন? - রিজভী

কোর্ট ম্যারেজ করা প্রসঙ্গে?

কোর্ট ম্যারেজ করা প্রসঙ্গে?

গুজবে কান দেবেন না : জনপ্রশাসন সচিব

গুজবে কান দেবেন না : জনপ্রশাসন সচিব

কোয়াড সম্মেলনে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা

কোয়াড সম্মেলনে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা

এনজিও,নাস্তিকদের প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে সংগ্রাম চলবে- চরমোনাই

এনজিও,নাস্তিকদের প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে সংগ্রাম চলবে- চরমোনাই