ঢাকা   রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৭ আশ্বিন ১৪৩১

আইভিএফ : নিঃসন্তানদের জন্য আশার আলো

Daily Inqilab দ্য ইকোনোমিস্ট

২২ জুলাই ২০২৩, ১০:৪৭ পিএম | আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম

১৯৭৮ সালের জুলাইতে ম্যানচেস্টারে লুইস ব্রাউনের জন্মের পর সবাই অবাক হয়ে দেখেছিল যে, দুটি চোখ, দশটি হাতের আঙুল, দশটি পায়ের আঙুল নিয়ে কৃত্রিমভাবে জন্মানো বিশ্বের প্রথম ‘টেস্ট-টিউব শিশু’টি অন্য শিশুদের মতাই স্বাভাবিক ছিল। এমন একটি বিশ্বে যেখানে প্রতি ৬ জনের একজন বন্ধ্যাত্বের শিকার, সেখানে ‘ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন’ (আইভিএফ) সারা বিশ্বে বন্ধ্যাত্বের প্রধান চিকিৎসা হয়ে উঠেছে। সেই থেকে এ পর্যন্ত টেস্ট টিউব বা কাঁচের পাত্রে অন্তত ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ জন্মেছে। আইভিএফ শিশুরা অন্যান্য শিশুদের মতোই সুস্থ এবং স্বাভাবিক। কিন্তু তাদের মা-বাবার কাছে, যাদের অধিকাংশই সুদীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ্যাত্বের সাথে লড়াই করে, তাদের কাছে তারা অলৌকিকের থেকে কিছু কম নয়। যদিও আইভিএফ চিকিৎসা বেশিরভাগ সময়ই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়, তবে বিজ্ঞান উন্নতির সাথে এই চিকিৎসা পদ্ধতিটির আরো উন্নতি ঘটছে এবং নিঃসন্তানদের জন্য আশার আলো ছড়াচ্ছে।

প্রডুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথে আইভিএফ মহিলাদের জন্য আরো ভাল এবং নিরাপদ হয়ে উঠছে, একই সাথে একাধিক শিশু প্রসবের হার হ্রাস পাচ্ছে, ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভধারণের সংখ্যা কমে গেছে। হরমোন চিকিৎসা এবং ডিম্বাণু ও শুক্রাণু হিমায়িত করে টেস্ট টিউবে এবং সারোগেসি বা বিকল্প জঠরে প্রবেশ করানোর মতো মিশ্র পদ্ধতির মাধ্যমে আইভিএফ অনেককে সন্তান জন্মের পথ করে দিয়েছে। তবুও মহিলাদের জন্য শারীরিকভাবে যন্ত্রণাদায়ক এবং দম্পতিদের জন্য মানসিকভাবে পীড়াদায়ক। এটি এখনও প্রক্রিয়াটি কঠিন ও ব্যয়বহুল রয়ে গেছে। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রে এক পর্বের আইভিএফ চিকিৎসার জন্য ২০ হাজার পর্যন্ত ডলার খরচ হতে পারে। দেশটিতে ২০১৮ সালে জন্ম নেওয়া ৭ লাখ ৭০ হাজার শিশুর জন্য ৩টি করে পর্ব বা সাইকেল প্রয়োজন হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনে এই চিকিৎসা নেয়াদের প্রায় অর্ধেক তাদের কোলে একটি শিশু নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারে, এমনকি টানা কয়েক বছর এবং আট পর্বের চিকিৎসার পরেও।

দ্য ইকোনোমিস্টের প্রযুক্তি ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন অনুসারে, সম্প্রতি জাপান এবং যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা মানব দেহের স্টেম সেলগুলো বা মজ্জা নিয়েও কাজ করছেন, যা শরীরের অনেক বিশেষ কোষে পরিণত হওয়ার ক্ষমতা রাখে, তারা ত্বক এবং রক্তকোষ থেকে ডিম্বকোষ তৈরি করার গবেষণা করছেন, একটি বিশেষ প্রক্রিয়া যাকে বলা হচ্ছে ভিট্রো গেমটোজেনেসিস (আইভিজি)। কিছু দল এসব কৌশ মানুষের ওপর প্রয়োগ করার জন্য কাজ করছে। এটি সফল হলে দান করা ডিম্বাণু, শুক্রাণু এবং ভ্রুণের ওপর তাদের গবেষণার জন্য আর নির্ভর করতে হবে না, যা প্রায়ই রোগীরা উদারভাবে প্রদান করে থাকে। অন্যান্য দল সরাসরি ভ্রুণ তৈরির জন্য স্টেম সেল ব্যবহার করার কাজ করছে। যেখানে ১৯৬০ এবং ৭০-এর দশকের লিঙ্গ বিপ্লব নারীদের ইচ্ছা না থাকলে সন্তান না নেওয়ার ক্ষমতা দিয়েছিল, সেখানে উদীয়মান প্রযুক্তিগুলো আরো একটি নতুন বিপ্লবের সূচনা করতে পারে, যা নারী ও পুরুষকে তাদের ইচ্ছামতো সময় ও সঙ্গীর সাথে সন্তান ধারণ করতে ক্ষমতা দিতে পারে।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

প্লটবঞ্চিত পূর্বাচলের আদিবাসিন্দাদের ৩শ’ ফুট সড়কে অবস্থান : বিক্ষোভ অব্যাহত

প্লটবঞ্চিত পূর্বাচলের আদিবাসিন্দাদের ৩শ’ ফুট সড়কে অবস্থান : বিক্ষোভ অব্যাহত

দেশে সংস্কার  ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার আহ্বান

দেশে সংস্কার ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার আহ্বান

ছাত্রলীগের হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের মামলা করতে বললেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

ছাত্রলীগের হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের মামলা করতে বললেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

উম্মাহর কল্যাণে মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই

উম্মাহর কল্যাণে মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই

বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডারসহ নিহত ১৪

বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডারসহ নিহত ১৪

পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধে ব্যবহারের আশঙ্কা

পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধে ব্যবহারের আশঙ্কা

মস্কোয় হামলার উপযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র কিয়েভে পাঠাবে না জার্মানি

মস্কোয় হামলার উপযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র কিয়েভে পাঠাবে না জার্মানি

জিয়ার ভূমিকাকে অবহেলা করায় পাহাড়ে সমস্যা হচ্ছে : জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী

জিয়ার ভূমিকাকে অবহেলা করায় পাহাড়ে সমস্যা হচ্ছে : জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী

মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই: তারেক রহমান

মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই: তারেক রহমান

বিচার বিভাগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা প্রধান বিচারপতির

বিচার বিভাগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা প্রধান বিচারপতির

একদিনে ৮৪৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১

একদিনে ৮৪৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১

কুষ্টিয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে সুগার মিলের নিরাপত্তা প্রহরীর মৃত্যু

কুষ্টিয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে সুগার মিলের নিরাপত্তা প্রহরীর মৃত্যু

সাজেক ভ্রমণে আটকা পড়েছেন ৮০০ পর্যটক

সাজেক ভ্রমণে আটকা পড়েছেন ৮০০ পর্যটক

‘শুধু সংস্কারে থেমে থাকলেই চলবে না, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে হবে’ : তারেক রহমান

‘শুধু সংস্কারে থেমে থাকলেই চলবে না, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে হবে’ : তারেক রহমান

যে কোনো ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত: বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ

যে কোনো ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত: বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ

ভোলায় ঝড়ের কবলে পড়ে ১০ ট্রলারডুবি, নিখোঁজ ১

ভোলায় ঝড়ের কবলে পড়ে ১০ ট্রলারডুবি, নিখোঁজ ১

ছাত্ররাজনীতিতে গুণগত সংস্কার প্রয়োজন : শিবির সেক্রেটারী

ছাত্ররাজনীতিতে গুণগত সংস্কার প্রয়োজন : শিবির সেক্রেটারী

মতলবে ছেলের ইটের আঘাতে মায়ের মৃত্যু : আটক ছেলে

মতলবে ছেলের ইটের আঘাতে মায়ের মৃত্যু : আটক ছেলে

মব জাস্টিসের প্রতিবাদে চবিতে মানববন্ধন

মব জাস্টিসের প্রতিবাদে চবিতে মানববন্ধন

গুলিবিদ্ধ ইলহামের জন্য তারেক রহমানের অনন্য উদ্যোগ

গুলিবিদ্ধ ইলহামের জন্য তারেক রহমানের অনন্য উদ্যোগ