ঢাকা   শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৬ আশ্বিন ১৪৩১
আওয়ামী লীগ সুষ্ঠু নির্বাচনে ভয় পায় : তারুণ্যের সমাবেশে মির্জা ফখরুল লোকে-লোকারণ্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান-রমনা পার্কসহ আশপাশ এলাকা

২৭ জুলাই ঢাকায় মহাসমাবেশ

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

২২ জুলাই ২০২৩, ১১:৪৪ পিএম | আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম

আওয়ামী লীগ সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনে ভয় পায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জানে যে, এ দেশে যদি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হয়, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয় তাহলে তারা জয়ী হতে পারবে না। তারা ১০টি আসনও পাবে না। এজন্য তারা সুষ্ঠু নির্বাচনে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ভয় পায়। কারণ এই সরকার ভীরু, কাপুরুষ। বিএনপি ও বিরোধী দলগুলো যাতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে এজন্য তারা ২০১৮ সালের মতো আবারো নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে। এখনো আমাদের নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। দুদিন আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একজন নেতা কবির আহমেদকে তুলে নেওয়ার ১৬ ঘন্টা পর বাসার সামনে পাওয়া গেছে। র‌্যাবের ওপর স্যাংশনের পরও তারা এসব কাজ করছে। তারা নির্বাচনে ভোট কাটতে নিজেদের মতো প্রশাসন সাজাচ্ছে। ভয় পেয়ে এসব করছে। গত মঙ্গলবার ও বুধবার শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচিতে লক্ষ্মীপুর, দিনাজপুর, নোয়াখালীসহ বিভিন্ন স্থানে কাপুরুষোচিত হামলা ও আক্রমণ করেছে। এতো মামলা কেন? বিএনপিকে ভয় পান?
গতকাল শনিবার রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল আয়োজিত তারুণ্যের সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। এই সমাবেশ থেকে বিএনপি মহাসচিব এক দফা দাবি আদায়ে আগামী ২৭ জুলাই ঢাকায় শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশের ঘোষণা দেন।

নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ, শিক্ষা উপকরণের মূল্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা, মেধার ভিত্তিতে চাকরি প্রদান, স্বাধীন মত প্রকাশের অন্তরায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইুন বাতিল, গুম-খুনের বিচার, শেয়ারবাজার, ব্যাংক লুটেরা, অর্থ আত্মসাতকারী, টাকা পাচারকারী, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ দলীয়করণ ও ধ্বংসকারীদের বিচার, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সিন্ডিকেটের বিচার এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি এবং নতুন ভোটারদের জাগ্রত করতে সারাদেশে তারুণ্যের সমাবেশের ঘোষণা দেয় যুবদল, স্বেচ্ছাসবক ও ছাত্রদল। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ১৪ জুন চট্টগ্রাম, ১৯ জুন বগুড়া, ২৪ জুন বরিশাল, ৯ জুলাই সিলেট ও ১৭ জুলাই খুলনায় তারুণ্যের সমাবেশ করেছে। গতকাল ঢাকায় ছিল সর্বশেষ তারুণ্যের সমাবেশ।

সরজমিনে দেখা যায়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও শুক্রবার রাত থেকে ঢাকার আশপাশের জেলার নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে আসেন। গতকাল ভোর থেকেই বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করেন। সকাল থেকেই ঢাকা ও আশাপাশের জেলাগুলো থেকে আসা যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের খ- খ- মিছিলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে কেন্দ্র করে আশপাশের এলাকা মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়। দলে দলে নেতাকর্মীরা সরকারবিরোধী নানা শ্লোগান দিতে দিতে ছুটতে থাকেন সোহরাওয়ার্দীর দিকে। সকাল ১০টার পর পরই সমাবেশের জন্য নির্ধারিত উদ্যানের এলাকা ছাপিয়ে তারুণ্যের সমাবেশ লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে। দুপুর ১২টার দিকে নেতাকর্মীদের ভিড় উদ্যান ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়ে একদিকে শাহবাগ, অন্যদিকে মৎস্যভবন, হাইকোর্ট মোড়, সেগুনবাগিচা এলাকায়। সূর্যের প্রচ- তাপ ও গরমের কারণে বিপুল সংখ্যক মানুষ অবস্থান নেন রমনা পার্কের গাছের ছায়ায়ও। সমাবেশ শুরুর আগেই জনসমুদ্রে পরিণত হয় গোটা এলাকা। বেলা ২টার পরও দেখা যায়, আশপাশের জেলাগুলো থেকে তখনো খ- খ- মিছিল নিয়ে ছুটছিলেন সমাবেশ অভিমুখে। ঢাকার পাশাপাশি সমাবেশে মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী, মাদারীপুর, ফরিদপুর, শরীয়তপুর, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, টাঙ্গাইল, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, কুমিল্লা, চাঁদপুর জেলা থেকে অসংখ্য নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেছিলেন।

সমাবেশ শুরুর আগেই জাসাসের শিল্পীবৃন্দ মঞ্চে গান পরিবেশনের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করে তোলেন।

বেলা আড়াইটার পর কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে তারুণ্যের সমাবেশ শুরু হয়। যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের পরিচালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বক্তব্য রাখেন- স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক মো. আবদুস সালাম, ময়মনসিংহ বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, ফরিদপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, কলাম লেখার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত প্রফেসর ড. মোর্শেদ হাসান খান, বিগত আন্দোলনে গুম খুনের শিকার নেতাদের পরিবারের সদস্য, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দীর্ঘদিন জেল খাটা ফটো সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, কোনোভাবেই এবার নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া দেশে নির্বাচন হবে না। সব রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। অতএব বার বার ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান। এবার সেটি হবে না। কারণ শুধু আমরাই বলছি না, জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন, কমিউনিস্ট পার্টি সবাই বলেছে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। সুতরাং অবিলম্বে পদত্যাগ করে সংসদ বিলুপ্ত করুন। দাসানুদাস নির্বাচন কমিশন বাতিল করে নতুন কমিশন গঠন করুন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের ভোটাধিকার হরণকারী বর্তমান ফ্যাসিবাদী, কর্তৃত্ববাদী সরকারের পদত্যাগ ও বিদ্যমান অবৈধ সংসদের বিলুপ্তি, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন ও নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে তার অধীনে অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীর মুক্তি, মিথ্যা-গায়েবী মামলা প্রত্যাহার, ফরমায়েশি সাজা বাতিল এবং সংবিধান ও রাষ্ট্রব্যবস্থার গণতান্ত্রিক সংস্কারের মাধ্যমে জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি, ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক দফা দাবিতে আগামী ২৭ জুলাই ঢাকায় শান্তিপূর্ণভাবে মহাসমাবেশ হবে।

তারুণ্যের সমাবেশ প্রসঙ্গে বিএনপি বলেন, আমরা একটা পরিবর্তনের জন্য তরুণদেরকে জাগ্রত করছি। আজকের আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার পর রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকাকালে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল। আজো তারা আমাদের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আমি সেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ধন্যবাদ জানাই যিনি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে আজীবন লড়াই-সংগ্রাম করে চলেছেন। আজ তিনি গৃহবন্দী। তার আপোসহীন নেতৃত্বে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পতন ঘটানো হয়েছিলো। দেশ যখনই সংকটে পড়ে তখনই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান এগিয়ে আসেন। আজকে তারেক রহমান দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের পতাকা তুলে ধরেছেন। তিনি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তারুণ্যের সমাবেশের মাধ্যমে আমাদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। একাত্তরে যেভাবে তরুণ যুবক সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। আজো তারা ঐক্যবদ্ধভাবে জেগে উঠেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকার বৈধ নয়। তারা সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতায় বসে আছে। আর বড় বড় কথা বলে যে, তারা ক্ষমতায় আসলেই নাকি উন্নয়ন হয়। এরাই তো ২০১৪ সালে বিনাভোটে ১৫৪ জনকে এমপি ঘোষণা করেছে। তাহলে তারা কী বৈধ? এই আওয়ামী লীগ বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন বব্যবস্থা বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছে। কারণ তারা জানে নিরপেক্ষ নির্বাচনে জয়ী হতে পারবেনা। ১০ টি আসনও পাবেনা।

তিনি বলেন, এই সরকার অলিখিত একদলীয় শাসন বাকশাল চালু করেছে। তারা দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রবিরোধী। তারা মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। মাথায় হিজাব বেঁধে আর হাতে তসবিহ নিয়ে বলেছিল ১০ টাকা সের চাল খাওয়াবেন, ঘরে ঘরে চাকরি দিবেন এবং কৃষকদের বিনামূল্যে সার দিবেন। আজকে ঘরে ঘরে চাকরি নেই। টাকা ছাড়া চাকরি হয় না। বিসিএস পাস করলেও ভিন্নমতের কারণে চাকরি হয় না।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার কুত্তা মার্কা নির্বাচন করে। সর্বশেষ ঢাকা-১৭ আসনে নতুন মডেলের নির্বাচন দেখলাম। হিরো আলম একটা বাচ্চা ছেলে, বড় আশা নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। তাকেও যেভাবে পিটিয়েছে দেখে কষ্ট পেয়েছি। আওয়ামী লীগ কাউকে সহ্য করতে পারে না। ওরা দেশকে নিজেদের বাপের তালুকদারী মনে করে।

বিদ্যুতখাতে লুটপাট চলছে উল্লেখ করে বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, এই সরকার বিদ্যুতখাতে ১৪ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে। অন্যান্য খাতেও একই অবস্থা। তারা শুধু লুটপাট আর টাকা পাচারে ব্যস্ত। এদিকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। কিন্তু মশা মারার কোন উদ্যোগ নেই। অতএব আর সময় নেই। এখন আমাদের অধিকার আদায় করার সময়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা নির্বাচন চাই তবে সেটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। তোমাদের অধীনে নয়। কিন্তু বিএনপি যাতে নির্বাচনে যেতে না পারে তারা মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২৪ টি, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ৮৬ টি মামলা। অনেকের বিরুদ্ধে সাড়ে তিনশো পর্যন্ত মামলা আছে। এখন আবারো গায়েবি মামলা দিচ্ছে। সাত মাসে ৫০ টি গায়েবি মামলা দিয়েছে। এগুলো কিসের আলামত? ওদিকে বিদেশীদের বলছে তারা সুষ্ঠু নির্বাচন করবেন। অথচ সিনিয়র নেতারা যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে তাদের মামলাগুলো দ্রুত শেষ করতে যাচ্ছে। এটাকে তারা নতুন কৌশল অবলম্বন করছে। এই সরকারের অধীনে আর কোন নির্বাচন নয়।

এসময় বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, রফিকুল আলম মজনু, সাইফুল ইসলাম নিরব, শেখ রবিউল আলম রবি, আব্দুল মোনায়েম মুন্না, ইউসুফ বিন জলিল কালু, এসএম জাহাঙ্গীর, মিয়া নূরুদ্দিন অপু, গোলাম মাওলা শাহীন, জয়নাল হোসেনসহ কারাবন্দী সকল নেতাকর্মীর মুক্তি দাবি করেন মির্জা ফখরুল।

আমানউল্লাহ আমান বলেন, অনির্বাচিত ও ভোট চোর খুনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। এবার ভোট চোরের ক্ষমা নেই। তরুণরা তাদেরকে টেনে হিচড়ে ক্ষমতা থেকে নামাবে। ইতোমধ্যেই হাসিনরা পতনের আন্দোলন শুরু হয়েছে। এবার ফয়সালা হবে রাজপথে।

আবদুস সালাম বলেন, এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়। দেশনায়ক তারেক রহমানের আরেকটা যুদ্ধ দরকার। আমি একাত্তরের যুদ্ধে শহীদ হতে পারিনি। এবার শহীদ হতে চাই। আসুন তরুণ প্রজন্মের বন্ধুরা ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ি।

পত্রিকায় কলাম লিখে ঢাবি থেকে চাকরিচ্যুত প্রফেসর ড. মোর্শেদ হাসান খান নিজের বঞ্চনার কথা তুলে ধরে বলেন, আমার ওপর কি মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে তা অনেকেই জানেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে কলাম লেখার কারণে কাউকে চাকরিচ্যুত করা হয়নি, শুধু আমাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। আমি শুধু লিখেছিলাম শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এই কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাকে চাকরিচ্যুত করেছে। আমার স্ত্রী ব্রেইন ক্যান্সারে অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও আমাকে একদিনের নোটিশে বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। অথচ আমার মামলা চলমান। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আমাকে বাসা থেকে বের করে দিতে পারে না। তবুও আমি আল্লাহর রহমতে এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাহসে বেঁচে আছি। আরো সাহস যুগিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অনেকেই। সবকিছুর পরও আমি সবার সঙ্গে রাজপথে আছি। শেষ পর্যন্ত থাকবো ইনশাআল্লাহ।

সভাপতির বক্তব্যে যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, আমরা পাঁচটি সমাবেশ করে ঢাকায় শেষ সমাবেশ করলাম। এই সরকারের আমলে চার কোটি ৭০ লাখ তরুণ ভোটার ভোট দিতে পারেনি। তারা আজকে জেগে উঠেছে। এই আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তারা কুত্তা মার্কা নির্বাচন করে। তারা ঢাকা-১৭ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী হিরো আলমকেও পিটিয়েছে। তিনি বলেন, এই সরকারের আমলে কেউ ভোট দিতে পারেনি। শেখ হাসিনা ভোট চোর। আমরা ক্ষমতার জন্য নয় ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তরুণদেরকে উদ্বুদ্ধ ও লড়াই করছি। সমাবেশে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তন না হওয়া ও সরকারের পতন না হওয়া এবং ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত কেউ ঘরে ফিরবো না মর্মে উপস্থিত সব নেতাকর্মীকে শপথবাক্য পাঠ করিয়ে টুকু বলেন, আমরা অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরে যাবোনা। এসময় বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল কারাবন্দী নেতাকর্মীর মুক্তি দাবি করেন তিনি।##


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

রাজনৈতিক বৈষম্যের শিকার কবি আল মাহমুদ মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেওয়ার দাবি

রাজনৈতিক বৈষম্যের শিকার কবি আল মাহমুদ মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেওয়ার দাবি

সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী আন্দোলন নেতারা যা বললেন

সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী আন্দোলন নেতারা যা বললেন

অপসাংবাদিকদের তথ্য পেতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে খোলা হচ্ছে অভিযোগ বাক্স

অপসাংবাদিকদের তথ্য পেতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে খোলা হচ্ছে অভিযোগ বাক্স

দুর্গাপুজার আগে দু’টি মন্দিরের জায়গা উদ্ধারের অনুরোধ

দুর্গাপুজার আগে দু’টি মন্দিরের জায়গা উদ্ধারের অনুরোধ

শপথ নিলেন অতিশী, মমতার পর দ্বিতীয় মহিলা মুখ্যমন্ত্রী পেল ভারত

শপথ নিলেন অতিশী, মমতার পর দ্বিতীয় মহিলা মুখ্যমন্ত্রী পেল ভারত

মালয়েশিয়ায় নাইট ক্লাবে স্ফূর্তি করতে গিয়ে আটক ৫ বাংলাদেশি

মালয়েশিয়ায় নাইট ক্লাবে স্ফূর্তি করতে গিয়ে আটক ৫ বাংলাদেশি

নতুন রেকর্ড সোনার দামে, ভরি ১৩৩০৫১ টাকা

নতুন রেকর্ড সোনার দামে, ভরি ১৩৩০৫১ টাকা

সিলেটে একদিনে বজ্রপাতে ৪ জনের মৃত্যু

সিলেটে একদিনে বজ্রপাতে ৪ জনের মৃত্যু

কৌশলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন মসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জহুরুল হক

কৌশলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন মসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জহুরুল হক

শেখ হাসিনা সকল দপ্তরের টাকা লুট করে আমানত খেয়ানত করেছে : নোয়াখালীতে শিবির সভাপতি

শেখ হাসিনা সকল দপ্তরের টাকা লুট করে আমানত খেয়ানত করেছে : নোয়াখালীতে শিবির সভাপতি

ইসলামী ছাত্র মজলিসের নির্বাচন সম্পন্ন--রায়হান সভাপতি ও ইমরান সেক্রেটারি নির্বাচিত

ইসলামী ছাত্র মজলিসের নির্বাচন সম্পন্ন--রায়হান সভাপতি ও ইমরান সেক্রেটারি নির্বাচিত

হাজীগঞ্জে বিএনপি'র দুই গ্রুপের সংঘর্ষে চিকিৎসাধীন কিশোরের মৃত্যু

হাজীগঞ্জে বিএনপি'র দুই গ্রুপের সংঘর্ষে চিকিৎসাধীন কিশোরের মৃত্যু

উম্মাহর কল্যাণে মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই-ধর্ম উপদেষ্টা

উম্মাহর কল্যাণে মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই-ধর্ম উপদেষ্টা

নয়ন মিয়ার আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না : যুবদল সভাপতি মুন্না

নয়ন মিয়ার আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না : যুবদল সভাপতি মুন্না

আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অভিযোগে আওয়ামীলীগের পাঁচ নেতা গ্রেপ্তার

আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অভিযোগে আওয়ামীলীগের পাঁচ নেতা গ্রেপ্তার

একই কর্মস্থলে অর্ধ যুগ কাটিয়েছেন পিআইও রেজা, করেছেন প্রকল্পের টাকা হরিলুট

একই কর্মস্থলে অর্ধ যুগ কাটিয়েছেন পিআইও রেজা, করেছেন প্রকল্পের টাকা হরিলুট

আওয়ামীলীগ শাসনামলে যশোরে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে প্রদর্শিত অস্ত্রের কোনো হদিস নেই

আওয়ামীলীগ শাসনামলে যশোরে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে প্রদর্শিত অস্ত্রের কোনো হদিস নেই

যে আইন বাংলাদেশে চলে, সেই আইনে পার্বত্য অঞ্চলেও চলবে -কুমিল্লার সমাবেশে ফয়জুল করিম চরমোনাই

যে আইন বাংলাদেশে চলে, সেই আইনে পার্বত্য অঞ্চলেও চলবে -কুমিল্লার সমাবেশে ফয়জুল করিম চরমোনাই

সীতাকু-ের বিতর্কিত সাবেক সহকারী কমিশনার চট্টগামের এডিসি হলেন

সীতাকু-ের বিতর্কিত সাবেক সহকারী কমিশনার চট্টগামের এডিসি হলেন

ফরাজীকান্দি নেদায়ে ইসলাম ওয়েসীয়ান ছাত্রদের উদ্যোগে  ঈদে মিলাদুন্নাবী (সা.) উপলক্ষে আনন্দ র‌্যালি

ফরাজীকান্দি নেদায়ে ইসলাম ওয়েসীয়ান ছাত্রদের উদ্যোগে ঈদে মিলাদুন্নাবী (সা.) উপলক্ষে আনন্দ র‌্যালি