আওয়ামী লীগ সংঘাত সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে মির্জা ফখরুল
২৪ জুলাই ২০২৩, ১১:৪২ পিএম | আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৩, ১২:০৮ এএম
ঢাকায় বিএনপির সমাবেশের দিন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর কর্মসূচি দেওয়াকে সংঘাত সৃষ্টির পাঁয়তারা মনে করছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সরকারের বিশেষ বিশেষ ব্যক্তিগণ তারা উস্কানিমূলক কথা বলছেন এবং একই সঙ্গে উস্কানিমূলক কাজও করছেন। যেমন যুবলীগ, তাদের প্রোগ্রাম ছিল ২৪ জুলাই। আমাদের কর্মসূচি ঘোষণা করার পরে তারা সেটা ২৭ জুলাই পরিবর্তন করেছেন। এটা পরিষ্কার, একটা সংঘাতমূলক অবস্থা সৃষ্টি করার লক্ষ্যেই তারা এটা করছেন। এটা কোনো মতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। আমি পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, যদি কোনোরকম অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে তার সমস্ত দায়-দায়িত্ব কিন্তু সরকারকে বহন করতে হবে। তিনি আওয়ামী লীগকে একইদিন কর্মসূচি প্রদানে বিরত থাকারও আহ্বান জানান।
বৃহস্পতিবারের মহাসমাবেশ উপলক্ষে গতকাল সোমবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যৌথ সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বিরোধীদের উপর দমন-পীড়ন, হয়রানির চিত্র তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা অত্যন্ত সংযত অবস্থায়, শান্তিপূর্ণভাবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা আশা করব, এই ভয়াবহ সংঘাতমূলক পরিস্থিতি পরিহার করবে আওয়ামী লীগ, তার যুবলীগ এবং সরকারও সেটা নিশ্চিত করবে।
বিএনপির সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতেই ক্ষমতাসীনদের এমন কর্মসূচি- এই মন্তব্য করে তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন যে এত কিছুর পরেও কোনো সমাবেশকে তারা আটকাতে পারেনি। মানুষ নৌকায় পার হয়ে, ভেলায় পার হয়ে, হেঁটে এসেছে। মানুষের আগ্রহ এত বেশি পরিবর্তনের জন্য যে তারা যেভাবে হোক এই মহাসমাবেশে উপস্থিত হবেন।
কর্মসূচির স্থানের বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, মহাসমাবেশের জন্য আমরা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে জানিয়েছি। আমরা আশা করছি যে, এব্যাপারে তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন। আমরা আজ-কালের মধ্যে তা জানিয়ে দিতে সক্ষম হব। আমরা আশা করব, কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা করবেন এই শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক মহাসমাবেশ সফল করতে।
পদত্যাগের দাবি এখন সবার
সমাবেশে জনগণের জন্য কী বার্তা থাকবে- সাংবাদিকদের প্রশ্নে ফখরুল বলেন, মহাসমাবেশের বার্তা একটাই, পদত্যাগ। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারের পদত্যাগ নিশ্চিত করা। আন্দোলনে সফল হওয়ার আশা রেখে তিনি বলেন, এখানে তো জনগণ নেমে পড়েছে, এটা জনগণের আন্দোলন। এই আন্দোলন অবশ্যই সফল হবে। আওয়ামী লীগ তো হরতাল ভাঙার দলে পড়ে গেছে। তারা জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। জনগণের বেশিরভাগ আমরা বলব ৯৯ পার্সেন্ট এই পরিবর্তন চায়।
ডান-বাম-মধ্য সব রাজনৈতিক দলই এখন একই দাবি তুলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকে কমিউনিস্ট পার্টির মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম সাহেবের বক্তব্য পত্রিকায় দেখলাম, তিনি পরিষ্কার করে বলছেন যে, সরকারের অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিৎ। চরমোনাইয়ের পীর সাহেবের ইসলামী আন্দোলন পরিষ্কার করে বলছেন, এই সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। জাতীয় পার্টি, তারাও পরিষ্কার করে বলেছেন যে, এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হয় না, এই সরকারের অধীনে সিলেকশন হয়। সুতরাং এদেশে আর কোনো রাজনৈতিক দল অবশিষ্ট নেই, যারা মনে করেন যে এই সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে।
সংবিধানে নির্দলীয় সরকার এখন নেই বলে যুক্তি আওয়ামী লীগ নেতারা দেখাচ্ছেন, তার জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বার বার তারা (সরকার) সংবিধানের কথা বলেন। ওই সংবিধান যে সংশোধন করেছেন, পঞ্চদশ সংশোধনী, এটা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিকভাবে সংশোধন করা হয়েছে, যেটা অবৈধ। সেই কারণে এই সরকারও অবৈধ।
আওয়ামী লীগের পদত্যাগ দাবির এই আন্দোলনে জনগণকে নেমে পড়ার আহ্বান রেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে সময় এসেছে বাংলাদেশের মানুষের তাদের নিজেদের অধিকারের ফিরে পাবার আন্দোলনে নেমে পড়ার জন্য।
সরকারি কর্মচারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই আন্দোলনে আপনাদের একাত্মতা ঘোষণা করা উচিৎ এজন্য যে এই আন্দোলন জনগণের আন্দোলন। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের সংবিধানকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চাই, আমাদের মানুষের অধিকারগুলোকে ফিরিয়ে আনতে চাই, আমাদের হারানো অধিকার ফিরে পেতে চাই, ভোট দিয়ে সংসদ তৈরি করতে চাই। যারা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন, তাদের প্রতি বলতে চাই, আমরা কখনও প্রতিহিংসার রাজনীতি করি না, বিশ্বাস করি না। আমরা বিশ্বাস করি যে, জনগণের যে দাবি সেই দাবির প্রতি সকলের সমর্থন থাকবে .... এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর্যবেক্ষণ নিয়ে এক প্রশ্নে ফখরুল বলেন, “ইউরোপীয় ইউনিয়ন পর্ববেক্ষক পাঠাবেন কি পাঠাবেন না, এটা তাদের ব্যাপার। কিন্তু আমরা মনে করি, এখানে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না হলে সেখানে পর্যবেক্ষক পাঠানো অর্থহীন। এখানে যদি আমরা অংশগ্রহণ না করি, বিরোধী দল যদি অংশ না নেয়, তাহলে তো সেই নির্বাচন তো নির্বাচন হবে না। সুতরাং সেখানে পর্যবেক্ষক পাঠানো অর্থহীন হবে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে যৌথ সভায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, মোস্তাক মিয়া, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মীর সরাফত আলী সপু, মাহবুবুল হক নান্নু, তাইফুল ইসলাম টিপু, বেনজীর আহমেদ টিটো, এম এ খালেক, হারুুনুর রশীদ, মানিকগঞ্জ জেলার নেতা আফরোজা খানম রীতা, ঢাকা জেলার নেতা খন্দকার আবু আশফাক ও নিপুণ রায় চৌধুরী, গাজীপুর জেলার নেতা ফজলুল হক মিলন, নরসিংদী জেলার নেতা খায়রুল কবির খোকন অংশ নেন।
সহযোগী সংসগঠনের নেতাদের মধ্যে ছিলেন মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানি, রাজীব আহসান, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, শহিদুল ইসলাম বাবুল, উলামা দলের শাহ নেছারুল হক, ছাত্রদলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
রোমাঞ্চকর ম্যাচে বার্সাকে হারিয়ে শীর্ষে আতলেটিকো
জেসুসের জোড়া গোলের রাতে আর্সেনালের বড় জয়
বিলুপ্তির পথে মাটির ঘর
চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
প্রতিবন্ধী স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ
কেরু চিনিকলে আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন
বিহারিরা কেমন আছে
লক্ষ্মীপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি
আসাদ সরকারের পতন : নতুন সিরিয়ায় ইসরাইলি আগ্রাসন
মেটলাইফ বাংলাদেশের গ্রাহকরা ডিসকাউন্ট পাবেন ওশান প্যারাডাইস হোটেলস ও রিসোর্টে
১৫ নারী ও শিশুকে হস্তান্তর
আবাসন ও গার্মেন্ট খাতের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে
মেহেরপুরে বেড়েছে গরম কাপড় বিক্রি
কাশিয়ানীর হাট-বাজার নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব
অ্যানুয়াল বিজনেস কন্টিনিউয়িটি প্ল্যান ড্রিল ২০২৪ আয়োজন করলো ব্র্যাক ব্যাংক
সমস্যায় জর্জরিত আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
সবুজ গালিচায় হলুদের সমারোহ
আখাউড়ায় ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মেধা বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
নিউ ইয়র্কের আদালতে অভিযুক্ত লুইজি
কিউবায় সমাবেশ