‘শুধু পশ্চিমারা নয়, বন্ধু বন্ধুরাষ্ট্রও আমাদের ব্যাপারে নাক গলায়’
২৭ জুলাই ২০২৩, ১১:৩৩ পিএম | আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৩, ১২:০১ এএম
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ১৩ বিদেশি মিশনের প্রধানকে ‘তলব’ করে সতর্ক করার ঘটনা হিতে বিপরীত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেন ও সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির। গত বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ১৩ রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের ডেকে বিবৃতি দেয়ার জন্য সতর্ক করে দেয়া হয়। তাদের বিবৃতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করার ঘটনা ওই দেশগুলো ভালভাবে নাও নিতে পারে বলে মনে করেন দুই কূটনীতিক। ঝানু দুই কূটনীতিক এ ব্যাপারে সরকারকে আরো সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। একটি ইংরেজি গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে তারা এই প্রতিক্রিয়া দেন। তারা বলেছেন, শুধু পশ্চিমারা নয়, আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র ভারতও বাংলাদেশের ব্যাপারে নাক গলায়।
সাবেক পররাষ্ট্রসচিব মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, আসলে এর ফলাফল কী হবে, তা এই মুহূর্তে বলা কঠিন। তবে এরপরে আমাদের সরকার কী করবে, তার ওপরই অনেকটা নির্ভর করবে। আমি মনে করি না যে, এই তলবের বিষয়ে তারা (রাষ্ট্রদূতরা) অপ্রস্তুত ছিলেন। তারা নিশ্চয়ই তাদের সরকারি নীতির পরিপ্রেক্ষিতে যা বলার বলেছেন। এটা জেনেভা কনভেনশনের ব্যতয় হতেও পারে, কেন অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তারা বলবেন? তবে এখন অভ্যন্তরীণ বিষয় আর আন্তর্জাতিক বিষয়ের মধ্যে একটা ‘ফাইন লাইন’ (সূক্ষ্ম রেখা) সৃষ্টি হয়ে গেছে। মানবাধিকার ইস্যু যদি অভ্যন্তরীণ বিষয় হয়, তখন কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্পদ্রায় সেটা নিয়ে কনসার্ন হতে পারে, যা হচ্ছেও বিশ্বব্যাপী। তিনি বলেন যেমন সেনজেন অ্যারেঞ্জমেন্ট এবং ন্যাটোতে প্রবেশের ক্ষেত্রে কিন্তু ইইউ’র দেশগুলোর ক্ষেত্রেও গণতন্ত্র, মানবাধিকার আছে কিনা- তা পর্যালোচনা করা হয়। পৃথিবীতে এখন গণতন্ত্র, মানবাধিকার অনেকটাই একটা আন্তর্জাতিক চরিত্র পেয়ে গেছে। এই (পশ্চিমা) দেশগুলোর পলিসিতে আছে যে তারা মানবাধিকার, গণতন্ত্রকে প্রমোট করবে। তার প্রেক্ষিতে তারা তাদের অবস্থান নেয়, বা নিয়েছে। তবে একযোগে ১৩ দেশের নিজ নিজ অবস্থান ব্যক্ত করাটা একটু ব্যতিক্রম।
তৌহিদ হোসেন আরো বলেন, অবশ্যই তাদের (১৩ দেশ) পলিসি অনুযায়ীই এটা করেছে, তারা স্বতন্ত্রভাবে কিছু করেছে বলে আমি মনে করি না। অর্থাৎ, ১৩ জন রাষ্ট্রদূত নিজেরা আলাদাভাবে এমনটা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন- বলে আমার মনে হয় না। কিছু বিষয় পরিষ্কার থাকা ভাল। পশ্চিমা দেশগুলো অবশ্যই আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে আগ্রহী এবং সেদিকে নজর রাখছে। তারা (পশ্চিমারা) যেহেতু বাংলাদেশে ভাল নির্বাচন হয় সেটা চায়- তাই উদ্বেগ ব্যক্ত করেছে। এটা উচিত কি অনুচিত, সে যুক্তিতে গিয়ে লাভ নেই। তারা তাদের সরকারের পলিসি অনুযায়ী এটা করেছে। সেখানে তারা এ ইস্যুটা গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করেছে। এখন আমরা যদি স্ট্রিক্টলি ধরি যে এটা অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো তাহলে আমরা দেখব এমন ঘটনা গত ৫০ বছর ধরেই অবিরাম চলছে। আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র (ভারত) যাদেরকে বলি, তারাও তো আমাদের ব্যাপারে নাক গলায়।
সাবেক রাষ্ট্রদূত এম. হুমায়ুন কবির বলেছেন, ১৩ দেশের সঙ্গে কোনো সংকটজনক পরিস্থিতিতে না যাওয়াই বাঞ্ছনীয়। দুটি কারণে বাংলাদেশকে কিছুটা সতর্ক থাকা ও ধৈর্য বজায় রাখার পরামর্শ দিয়ে এম. হুমায়ুন কবির বলেন, গত কিছুদিন আগে প্রায় একই ধরনের ঘটনায় জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধিকে তলব করা হয়েছিল। জাতিসংঘের যিনি মুখপাত্র, তিনি কিন্তু ঢাকায় আবাসিক প্রতিনিধির অবস্থানকে সমর্থন করেছেন। তার অর্থ, আমরা যে কথাটা বলতে চাচ্ছি তার বিপরীতে তাদের অবস্থানটা শক্তিশালী। সেক্ষেত্রে তা যদি একটি দৃষ্টান্ত হয়, তাহলে বলা যায় যে বিষয়টি কেবল যেসব মিশন কর্মকর্তাদের ডাকা হয়েছে, তাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে বলে মনে করার কারণ নেই। এটি তাদের রাজধানী পর্যন্ত যাবে।
এ ধরনের বিষয়ে বাংলাদেশ সংকটজনক জায়গায় যেতে চায় কি না তা নিয়ে চিন্তার অবকাশ রয়েছে উল্লেখ করে সাবেক এ রাষ্ট্রদূত বলেন, কোনো সংকটজনক পরিস্থিতিতে না যাওয়াই বাঞ্ছনীয় হবে বলে আমি মনে করি। দুটি কারণে বাংলাদেশকে কিছুটা সতর্ক থাকা ও ধৈর্য বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন এম. হুমায়ুন কবির বলেন, প্রথমত বৈশ্বিক প্রেক্ষিতে আমাদের অর্থনৈতিক অসুবিধা আছে। আর সামনে একটা নির্বাচনও রয়েছে। তারা (বিদেশি রাষ্ট্রগুলো) আমাদের অংশীদার এবং আগামী দিনেও তা-ই থাকবে।এর সুবিধা ও দায়বদ্ধতা দুটিই আছে। আমরা শুধু সুবিধা নেব, দায়বদ্ধতা গ্রহণ করব না, তা হয় না। আমরা যদি মনি করি যে, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক প্লাস-মাইনাস হলে কোনো অসুবিধা হবে না, তখন আমরা সিদ্ধান্ত আমাদের মতো নিতে পারি। আর যদি আমরা তাদের কথাগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করি, তাহলে সেই আলোকে আমাদের চিন্তাভাবনা করতে হবে। ##
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
কেবল সেবন নয় মাদক ব্যবসায়ও জড়িত তারকারা, ডিসেম্বরের পরে দেখে নেবে কে?
গাবতলীতে আরাফাত রহমান কোকো ফুটবল টুর্নামেন্ট ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সাবেক এমপি লালু
যমুনার ভাঙনের মুখে আলোকদিয়াবাসীর বসতবাড়ি ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা
নোবিপ্রবির সঙ্গে নেদারল্যান্ডের ইউট্রিচ বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তি স্বাক্ষর
৯ দফা দাবীতে নওগাঁয় পুলিশ সুপারের কার্যালরে সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান
এলজিইডির এক প্রকল্পে ৪০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক
আবাসিক হোটেলের নামে মাদকের আড্ডা
নোয়াখালীতে মসজিদের ইমাম ও খতিবকে বিদায়ী সংবর্ধনা
খুলনাকে বিদায় করে ফাইনালে মেট্রো
কালিয়াকৈরে চাঁদাবাজের হামলায় চাঁদাবাজ কালামের মৃত্যু
বিরল উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত- ১
কামালপুর সড়কের ব্রিজ ভেঙ্গে মরণফাঁদ চরম দুর্ভোগে পথচারীরা
মেয়েদের ক্রিকেটে যুক্ত হলো যেসব সুযোগ-সুবিধা
বাড়ছে শীতের প্রকোপ, সাধারণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয়
জকিগঞ্জে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে হামলার অভিযোগে যুবলীগ নেতা গ্রেফতার
খালিশপুরে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন
যুব এশিয়া কাপজয়ীরা পাচ্ছেন আর্থিক পুরস্কার
আদমদিঘীতে বিএনপি কার্যালয় উদ্বোধন
রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ে যা জানালেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা