রাজনীতির ঢেউ চারদিকে
০২ আগস্ট ২০২৩, ১১:২৬ পিএম | আপডেট: ০৩ আগস্ট ২০২৩, ১২:০১ এএম
রাজনীতি। রাজার নীতি। দেশের রাজনীতির গতি-প্রকৃতি কোনদিকে মোড় নিচ্ছে এ নিয়ে সবখানে আলোচনা-পর্যালোচনা, হিসাব-নিকাশের তোড়জোড় বাড়ছে। বাড়ছে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে কৌতূহল। বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামবাসী এবং প্রত্যন্ত এলাকার জনসাধারণের চোখ এ মুহূর্তে রাজধানী ঢাকায় নিবদ্ধ। সবার জিজ্ঞাসা কী হচ্ছে- পর্দার আড়ালে অথবা প্রকাশ্যে। বিশেষত ঢাকায় রাজনীতির মাঠ ক্রমেই চাঙ্গা হওয়ার সাথে সাথে এর ঢেউ আছড়ে পড়ছে চট্টগ্রামসহ দেশের চারদিকে।
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এবং মাঠের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি, এছাড়া সমমনা কিংবা ভিন্ন ভিন্ন মত-পথের রাজনৈতিক দল, ছোট ছোট জোট ও সংগঠনসমূহের রাজপথে আন্দোলনের গরম হাওয়ায় উত্তাপ বাড়ছে।
সেই সাথে মানুষের কৌতূহলী জল্পনা-কল্পনাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে নেতাদের হার্ডলাইনে বক্তব্য-মন্তব্য, পাল্টাপাল্টি কাদা ছোড়াছুড়িতে মফস্বল এলাকার জনসাধারণ অনেকটা হতাশ। তাছাড়া আগামীতে নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরির বিষয়টি নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের প্রকাশ্যে ও আবডালে নানামুখী তৎপরতা এবং দাতা দেশ ও সংস্থাসমূহের চাপ কিংবা প্রভাব শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় এ নিয়ে জোরালো আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে রাজনীতি সচেতন চাটগাঁবাসীর মাঝে।
মানুষের হিসাব-নিকাশ ও কৌতূহল আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে। সবার প্রত্যাশা একটি সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ, গ্রহণযোগ্য এবং জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে সঠিক অর্থে একটি ‘ভোটের নির্বাচন’। এ প্রত্যাশা কতদূর পূরণ হবে এ নিয়ে জনগণের কথাবার্তায় আশা-নিরাশা সমানতালে ঘোরপাক খাচ্ছে।
সম্প্রতি চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও সংলগ্ন এলাকা নিয়ে দুটি আসনে সংসদ নির্বাচন কার্যত জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়াই এবং খালি মাঠে গোল দেয়ার মতোই নিস্তরঙ্গভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ভোটকেন্দ্রগুলো এবং ব্যালট বাক্স ছিল ফাঁকা। বিজয়ী আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী ছাড়া আর কারও পোস্টার-ব্যানার কোথাও চোখে পড়েনি। আবার তাও ছিল নেহাৎ কম। এহেন জনবিচ্ছিন্ন নির্বাচন নিয়ে বলতে গেলে কোনো আগ্রহই চোখে পড়েনি চট্টগ্রামবাসীর।
এ অবস্থায় আগামী জাতীয় নির্বাচন জনগণের ‘ব্যাপক’ অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হবে কি না বা এর উপায় কিভাবে বের হবে অর্থাৎ জাতীয় রাজনীতিবিদরা প্রকৃত অর্থে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছাতে পারবেন কি না এসব প্রশ্ন উচ্চারিত হচ্ছে হাট-বাজারে, আলাপে-আড্ডায়। সাধারণ মানুষের বক্তব্যে আগামীতে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয়-সন্দেহের কথাগুলো যেমন বেরিয়ে আসছে, তেমনি অনেকেরই বক্তব্যে আশাবাদও ফুটে উঠছে। কেননা মাঠের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো ক্রমেই জোরালো তৎপর হয়ে ওঠায় সরকার একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে যাবে এবং সুবুদ্ধির পরিচয় দিবে এমনটি অনেকে আশা করছেন। অর্থাৎ পরিস্থিতি ও পরিবেশ দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আবহ তৈরি করবে এটা অনেকেরই ধারণা।
জাতিসংঘ ও বিদেশি প্রভাবশালী ফোরাম থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে চাপ কিংবা অনুরোধ ক্রমাগত জোরদার হচ্ছে। সরকার তা দৃশ্যত উপেক্ষা করতে পারছে না। আবার তাতে মাঠের বিরোধী দলের রাজনীতির পালে হাওয়া প্রবল থেকে প্রবলতর হতে পারে বলে অনেকেরই ধারণা। তেমনটি হোক সরকারও চাইছে না। ক্ষমতাসীন দল বুদ্ধি-কৌশল ও তাদের শক্তির সর্বোচ্চটুকু কাজে লাগিয়ে রাজনীতির মাঠ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়। আবার বিএনপি ও সমমনারা চাইছে রাজপথে ক্রমাগত তাদের শক্তি ও শোডাউন বজায় রাখতে। সরকারি দল এবং মাঠের বিরোধী দল উভয় পক্ষই রাজনীতি নির্বাচনমুখী করতে সচেষ্ট।
এ নিয়ে বৃহত্তর চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত জেলা-উপজেলায় তৃণমূল পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, সমর্থকদের মাঝেও ইতিবাচক আলোচনা পর্যালোচনা হচ্ছে। তৃণমূলের রাজনৈতিক কার্যালয়গুলো এখন আগের চেয়ে জমজমাট। কর্মীরা চাঙ্গা হচ্ছেন। সেইসাথে আগামী ভোট রাজনীতির হিসাব-নিকাশ সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা মাঠে সক্রিয় হচ্ছেন।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী, সেবাপণ্য থেকে শুরু করে জীবনরক্ষাকারী ওষুধ পর্যন্ত সব জিনিসপত্রের মূল্য প্রতিদিনের কিংবা সপ্তাহের রেকর্ড ভেঙে চলেছে। দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ও জীবনধারণ দিশেহারা অবস্থায়। বাজারের উপর কার্যত প্রশাসনের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, যে যা পারছে ভোক্তাদের কাছ থেকে অর্থ লুটে নেওয়ার যথেচ্ছ প্রবণতা চলছে। মজুতদারি, মুনাফাখোরী, ভেজাল কারবারিসহ অসাধু সিন্ডিকেটের কারসাজি বেড়েই চলেছে।
সেই সাথে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানিসহ যাবতীয় সরকারি সেবাখাতে মূল্যবৃদ্ধি, বিদ্যুতের ঘাটতি ও অব্যাহত লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ সর্বস্তরের মানুষ। বাজারের আগুনে বিশেষত সীমিত আয়ের মধ্যবিত্ত, নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও নিম্নআয়ের মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে পড়েছে। দিনে এনে দিনে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের দুবেলা আহার জোটানোর কষ্ট ও দুর্ভোগ সীমাহীন। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে নীরব হাহাকার চলছে বেশিরভাগ পরিবারে। এ অবস্থায় ক্ষমতাসীন মহল থেকে শুরু করে বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষের নেতাদের জনস্বার্থে কোনো বক্তব্য বলতে গেলে অনুপস্থিত। এতে করে মানুষ হতাশ, ক্ষুব্ধ। জনসাধারণ আশা করেন নেতাদের জনস্বার্থমূলক জোরালো অবস্থান।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ইত্তিহাদেই সিটিকে রুখে দিল ইন্টার
রোনালদোদের নতুন কোচ পিওলি
দক্ষিণ আফ্রিকাকে গুড়িয়ে আফগানদের ঐতিহাসিক জয়
যেই গৌরব কেবল শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের
রিট করে ‘খেলাপি ঋণ স্থগিত’ বন্ধ চান ব্যাংক-মালিকরা
বিদেশি ঋণ ফের ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে
টাকা উদ্ধারের নামে ‘ঘুষ’ চাওয়ার অভিযোগ জিএম শাহজাহান চৌধুরীর’র বিরুদ্ধে
জাতীয় ঐক্য বিনষ্টকারী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে হবে
৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার কিনবে সরকার, ব্যয় ২৩৬ কোটি টাকা
আইকনিক লিডার তারেক রহমান ও বাংলাদেশের রাজনীতি
পতিত স্বৈরাচার ও ভারতের চক্রান্ত চলছেই
তারেক রহমানের রাষ্ট্রনায়কোচিত বক্তব্য ও দিকনির্দেশনা
ইসরাইলের দখলদারিত্ব বন্ধের প্রস্তাব বিবেচনা জাতিসংঘের
উত্তপ্ত মণিপুরে অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে নতুন করে গোলাগুলি
২৭ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়্যান্ট
২০০ হাতি নিধনের সিদ্ধান্ত জিম্বাবুয়ের
কলেরাসহ মারাত্মক রোগের ঝুঁকিতে সুদানের ৩৪ লাখ শিশু
১১ হাজার ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর প্রাণ গেছে
বেলারুশে হামলা হলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে : লুকাশেঙ্কো
তাইওয়ান প্রণালীতে চীনের যুদ্ধবিমান