কমছে না মশার দাপট
০২ আগস্ট ২০২৩, ১১:২৯ পিএম | আপডেট: ০৩ আগস্ট ২০২৩, ১২:০১ এএম
দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে মশার প্রকোপ। এডিস মশার কামড়ে মৃত্যু হচ্ছে অনেক রোগীর। আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে যেতে হচ্ছে অনকেই। হাসপাতালগুলোতে ভিড় করছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা। এই রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। তবে এডিস মশা দমনে মাঠে নেমেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। রাজধানীতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ায় এই দুই করপোরেশনের বাজেটও বাড়ানো হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে এবার বাজেটে মশা নিয়ন্ত্রণে মোট ১১৪ কোটি ৫০ লাখ বরাদ্দ রেখেছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মশা মারতে ব্যয় নির্ধারণ করেছে ৪৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা টাকা।
২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে এবার ৮৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয় করবে। গত অর্থবছরে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে ব্যয় ছিল ৫২ কোটি ৬০ লাখ টাকা। অর্থাৎ এই অর্থ বছরে এই খাতে বাড়ানো হয়েছে ৬১ শতাংশ। মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে ২০২৩-২০২৪ বাজেটে ধরা হয়েছে ৮৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা। মশক ওষুধ বাবদ ৪৫ কোটি টাকা, আগাছা পরিষ্কার ও পরিচর্যা ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা, ফগার হুইল স্প্রে মেশিন পরিবহন ৫ কোটি টাকা, মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে বিশেষ কর্মসূচি ১ কোটি টাকা, আউটসোর্সিং-এর মাধ্যমে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম ৩০ কোটি টাকা, মশক নিয়ন্ত্রণে চিরুনি অভিযান পরিচালনার জন্য রাখা হয়েছ ২ কোটি টাকা। এছাড়া মশক নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ব্যয় করবে ৩০ কোটি টাকা। যা গত অর্থবছরে ছিল ১৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ এই অর্থবছরে এ খাতে খরচ বৃদ্ধির হার শতভাগ। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে ৮৪ কোটি ৫০ লাখ এবং মশক নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রপাতি কিনতে ব্যয় করবে ৩০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে মশার সঙ্গে যুদ্ধে এই অর্থবছরে ১১৪ কোটি টাকা খরচ করবে উত্তর সিটি করপোরেশন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মশা মারতে ব্যয় নির্ধারণ করেছে ৪৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা টাকা। এরমধ্যে মশক নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ব্যয় হবে ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা। মশক নিধন কীটনাশক ক্রয়ে ব্যয় হবে ৩৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এছাড়াও ফগার, হুইল, স্প্রে মেশিন পরিবহন বাবদ ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্য বছরের তুলনায় এই বছর ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব অনেক আগেই এসেছে। এটা এখন সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে এটা মহামারির দিকে যাচ্ছে। এখন দেশে একটা জরুরি স্বাস্থ্য পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এটা মোকাবিলায় গতানুগতিক পদক্ষেপ বাদ দিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা নেয়া দরকার। না হলে পরিস্থিতি সামাল দেয়া যাবে না। বর্তমানে ঢাকার সব কটি সরকারি হাসপাতালে ধারণক্ষমতার বেশি ডেঙ্গু রোগী রয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও এখন প্রতিদিন যত রোগী ভর্তি হচ্ছে, তাদের বেশির ভাগই ডেঙ্গু আক্রান্ত।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, এখন ডিএনসিসি ও ডিএসসিসির সংশ্লিষ্টরা অনেক তৎপর। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মশক নিধন পদ্ধতিতে ত্রুটি রয়েছে। মশার ধরন না বুঝে, জায়গা মতো ওষুধ প্রয়োগ না করলে সুফল মিলবে না। এ জন্য মশা নিয়ে গবেষণা করা দরকার। মাল্টিপারপাস ভবনের যেসব জায়গায় পানি জমে এডিস মশা জন্মায় সেখানে সিটি করপোরেশনের লোকজন ও সংশ্লিষ্টরা যায় না। ফলে বিভিন্ন স্থানে পানি জমে এডিসের লার্ভা জন্মাচ্ছে। এখন থেমে থেমে বৃষ্টিটাই আমাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগে বর্ষা মৌসুমে এডিস মশা বংশবিস্তার করতো। এখন সারাবছর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে।
ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, মশার প্রজাতি ও মশার আচরণ নির্ণয় করে সঠিক ও কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে গবেষণা করার জন্য চুক্তি করা হয়েছে। এ বছরের বাজেটেও মশা নিধনকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। সর্বস্তরের জনগণকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সম্পৃক্ত হতে হবে। সবাইকে জানাতে হবে জমে থাকা পানিতে এডিসের লার্ভা জন্মায়। তাই নিজেদের বাসা বাড়ির উঠান পরিষ্কার রাখতে হবে।
ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে জাদুকরী কোনো সমাধান নেই। সুনির্দিষ্ট একটি কাজ করলে এডিস মশা পুরোটা বিলুপ্ত হবে, এ ধরনের কোনো সমাধান নেই। আজ পর্যন্ত এ ধরনের কোনো সমাধান সারাবিশ্বে কেউ দিতে পারেনি। সুতরাং এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসের মাধ্যমে ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধের যে স্বীকৃত পদ্ধতি আমাদেরকে সেটিই অনুসরণ করতে হচ্ছে। কিন্তু উৎস নিধনে সফল এবং আরও কার্যকর ও ফলপ্রসূ করতে হলে, জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। নাগরিকেরা যদি দায়িত্বশীল না হন এবং উৎসগুলো চিহ্নিত করে না দেন, তাহলে সিটি করপোরেশন সেই জায়গায় গিয়ে এডিস মশার উৎসস্থল ধ্বংস করতে পারবে না। স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে আমাদেরকে যে তথ্য প্রেরণ করা হয় এবং আমাদের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে যারা তথ্য দেন, সে তথ্যের ভিত্তিতে আমরা নিয়মিত এডিস মশার উৎসস্থল ধ্বংস করছি।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
বাধা না থাকলেও গণহত্যাকারী ফ্যাসিবাদকে মানুষ নির্বাচনে আসতে দেবে না : আখতার হোসেন
সালথায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে চলছে ডাকাতির নাটক, বিব্রত পুলিশ!
শিল্পকলায় শুরু হয়েছে মাসব্যাপী ভাস্কর্য প্রদর্শনী
এনআইডির তথ্য বেহাত, কম্পিউটার কাউন্সিলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলো ইসি
সোনারগাঁও বুরুমদী উচ্চ বিদ্যালয়ের হীরক জয়ন্তী উদযাপন
ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভার পাওনা টাকা পরিশোধ না করলে মামলা- পৌর প্রশাসক ইকবাল হোসাইন
সাদপন্থী তাবলীগের মুখপাত্র মুয়াজের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
পূর্বাচলে বুয়েট ছাত্রের মৃত্যু : তিন আসামি ২ দিনের রিমান্ডে
লক্ষ্মীপুরে সরকারি রাস্তা কেটে যুবলীগ নেতার চাষাবাদ, প্রতিবাদে মানববন্ধন
কলাপাড়ায় গরু চুরি করে পালানোর সময় জনতার হাতে আটক চোর
এবার পানামা খাল নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার হুমকি ট্রাম্পের
মাগুরায় গ্রামবাসির সংঘর্ষে নিহত যুবদল নেতা শরিফুলের বাড়িতে বিএনপি নেতারা
সিমকার্ডের আড়ালে সীমান্তে বেড়েছে চোরাচালান
কিশোরগঞ্জের আব্দুল কাহার আকন্দ কোথায়? কেউ জানে না!
হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলকে রেড নোটিশ জারির অনুরোধ
যুক্তরাষ্ট্র ও লন্ডনে ৩শ’ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু
রাজশাহী মহানগরীতে ঘন কুয়াশা
আবারও ভানুয়াতুতে দ্বীপপুঞ্জে ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্প
হাজীগঞ্জে ভরাট মিঠানিয়া খালের মুখ, হুমকিতে ফসলি জমি
রাহাতের সুরের মুর্ছনায় বিমোহিত দর্শক, বাংলায় বললেন 'আমরা তোমাদের ভালোবাসি'