বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদন দিলে ডেঙ্গুর টিকা আনা হবে
০৭ আগস্ট ২০২৩, ১০:৫৪ পিএম | আপডেট: ০৮ আগস্ট ২০২৩, ১২:০২ এএম
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, নারীদের ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর অন্যতম কারণ জরায়ুমুখ ক্যান্সার। এতে আক্রান্তের হার বিশ্বে চতুর্থ সর্বোচ্চ এবং দেশে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। জরায়ু ক্যান্সার বিশ্বে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ নারী মারা যান যার মধ্যে ৯০ ভাগই ঘটে উন্নয়নশীল দেশে। বাংলাদেশে প্রতি লাখ নারীর মধ্যে ১৬ জন জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং ৬ হাজার ৫৮২ জন নারী বছরে মারা যান। জরায়ুমুখ ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী শেষ পর্যায়ে শনাক্ত হন বলে মৃত্যুসংখ্যা বেশি হয়। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ন্যাশনাল ইমুনাইজেশন টেকনিক্যাল এ্যাডভাইসরি গ্রুপ াব এক্সপার্টদের সিদ্ধান্ত অনুসারে ১ডোজ হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকা প্রদান করলে এই ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। এজন্য আমরা দেশের ১০-১৪ বছর বয়সী মেয়েদের এই এইচপিভি টিকা দেয়া শুরু করবো। আগামী সেপ্টেম্বর থেকেই এই কার্যক্রম শুরু হবে। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের হাতে সাড়ে ২৩ লাখ ভ্যাক্সিন আছে। এগুলো স্কুল পর্যায়ে থেকে দেয়া হবে। প্রথম পর্যায়ে ঢাকায়, ২য় পর্যায়ে চট্টগ্রাম, বরিশালে দেয়া হবে। এরপর সারাদেশে দেয়া হবে। আগামী নভেম্বর মাসে আরও ২০ লাখ ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে এবং ২০২৪ সালে আরও ৪২ লাখ ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে।
গতকাল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সম্মেলনে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. মো. টিটো মিঞা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে কলেরা টিকা প্রদান প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, কলেরা রোগের ভ্যাকসিন প্রথম পর্যায়ে ১২ লাখ ডোজ, পরবর্তী পর্যায়ে ২৪ লাখ লোককে ২ ডোজ করে ৪৮ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) অনুমোদন দিলে ডেঙ্গুর টিকা আনার চেষ্টা করা হবে। মন্ত্রী বলেন, এ টিকা এখনো ডেভেলপ হয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদন দিলে এ টিকা আনার চেষ্টা করবো। তিনি বলেন, আমরা দেখলাম জুলাই মাসে রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি হয়েছিল, প্রায় ৪৫ হাজার রোগী আমরা পেয়েছি। ২০২২ সালে ছিল মাত্র দেড় হাজার। এবার আগস্ট মাসে ১৫ হাজার রোগী পেয়েছি। এরই মধ্যে সব মিলিয়ে ৬৬ হাজার ৭০০ রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন, ৩১৩ জন মারা গেছেন। রোগীর সংখ্যার অনুপাতে মৃত্যুহার সেভাবে বাড়েনি। রোগীর সংখ্যা বাড়ায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে হলে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যেখানে এ মশার জন্ম হয় সেখানে স্প্রে করে লার্ভা ধংস করতে হবে। সিটি করপোরেশন, পৌরসভা আছে, তাদের আমরা পরামর্শ দিয়েছি আপনারা এ প্রোগ্রাম সারাবছর চালাবেন। যেসময় ডেঙ্গু রোগী দেখা দেবে সেসময় শুধু না করে বছরব্যাপী পরিকল্পিত ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। সিটি করপোরেশনের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করেছি।
জাহিদ মালেক বলেন, আমরা তো চিকিৎসা দেই, চিকিৎসা দেয়ার জন্য যা যা ব্যবস্থা নেয়ার দরকার তা নিয়েছি। রোগীর অবস্থা হঠাৎ করে খারাপ হয়ে যায়, মৃত্যুবরণ করেন। এজন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের দরকার আছে। চিকিৎসক ও নার্সদের সেই প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। জনগণকে অবহিত করছি কীভাবে প্রতিরোধ করা যায়। এটা একটা মাল্টিসেক্টরাল অ্যাপ্রোচ, সবাই মিলে কাজ করতে হবে। ‘প্রতিটি জেলা থেকে ডেঙ্গু রোগী পাচ্ছি অর্থাৎ প্রতিটি জেলায় এডিস মশা বিস্তার লাভ করেছে। কাজেই সারা দেশে এ কার্যক্রম হওয়া প্রয়োজন। শুধু ঢাকা সিটি কেন্দ্রিক নয়, সারা দেশে এডিস মশা নিধান করার ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন এবং সারা বছরই এ কার্যক্রম চলমান থাকা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
ঢাকায় ডেঙ্গুর জন্য তিন হাজার বেড রয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, এখন রোগী ২ হাজার ১০০ জন ভর্তি আছেন। বাকি বেড খালি আছে। ঢাকার বাইরেও রোগী আছে। ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ৫ হাজার বেড প্রস্তুত আছে। সারা দেশে ৯ হাজারের বেশি ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন। একই সঙ্গে স্যালাইনের প্রয়োজন আগের তুলনায় ১০ গুণ হয়ে গেছে। হাসপাতালে ভর্তি থাকা একজন রোগীর ৪/৫ ব্যাগ করে স্যালাইন লাগে। ফলে প্রতিদিন ৪০ হাজার ব্যাগ স্যালাইন লাগছে। হাসপাতালগুলো স্যালাইন জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছে কিন্তু জোগাড় হয়ে যাচ্ছে। যারা স্যালাইন তৈরি করে তাদের উৎপাদন বাড়াতে বলা হয়েছে। আশা করি স্যালাইনের জন্য চিকিৎসার ব্যাঘাত হবে না।
‘মশা নিধনে স্প্রে করা দরকার। পৌরসভাকে আরও অ্যাকটিভ হওয়া দরকার। সিটি করপোরেশনগুলো স্প্রে করছে, এটি আরও ভালোভাবে হওয়া দরকার। কারণ মশার কামড় তো কমেনি। মশা কমানোর জন্য স্প্রে করতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গু আমাদের ম্যানেজ করতেই হবে। করোনায় এর থেকে বেশি আক্রান্ত হয়েছিল, তখনো ম্যানেজ করেছি। ডেঙ্গু যদি বাড়ে, ম্যানেজ করতে পারবো। আশা করি কমে আসবে। স্প্রে হচ্ছে, সবাই সজাগ, পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন আমরা ম্যানেজ করতে পারবো।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
রোমাঞ্চকর ম্যাচে বার্সাকে হারিয়ে শীর্ষে আতলেটিকো
জেসুসের জোড়া গোলের রাতে আর্সেনালের বড় জয়
বিলুপ্তির পথে মাটির ঘর
চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
প্রতিবন্ধী স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ
কেরু চিনিকলে আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন
বিহারিরা কেমন আছে
লক্ষ্মীপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি
আসাদ সরকারের পতন : নতুন সিরিয়ায় ইসরাইলি আগ্রাসন
মেটলাইফ বাংলাদেশের গ্রাহকরা ডিসকাউন্ট পাবেন ওশান প্যারাডাইস হোটেলস ও রিসোর্টে
১৫ নারী ও শিশুকে হস্তান্তর
আবাসন ও গার্মেন্ট খাতের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে
মেহেরপুরে বেড়েছে গরম কাপড় বিক্রি
কাশিয়ানীর হাট-বাজার নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব
অ্যানুয়াল বিজনেস কন্টিনিউয়িটি প্ল্যান ড্রিল ২০২৪ আয়োজন করলো ব্র্যাক ব্যাংক
সমস্যায় জর্জরিত আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
সবুজ গালিচায় হলুদের সমারোহ
আখাউড়ায় ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মেধা বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
নিউ ইয়র্কের আদালতে অভিযুক্ত লুইজি
কিউবায় সমাবেশ