‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ খোলস বদলে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ উজরা জেয়াকে সংশোধনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আইনমন্ত্রী

চলবে পুরনো মামলা

Daily Inqilab সাঈদ আহমেদ

০৭ আগস্ট ২০২৩, ১১:২৭ পিএম | আপডেট: ০৮ আগস্ট ২০২৩, ১২:০১ এএম

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রতিস্থাপিত হচ্ছে। আপাতত বাতিল হচ্ছে বহুল বিতর্কিত এ কালো আইন। খোলস বদলে নতুন নাম ধারণ করছে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’। এতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের শাস্তির কিছু বিধান সংশোধন হচ্ছে। সংবাদকর্মীদের ক্ষেত্রে কারাদ-ের পরিবর্তে রাখা হচ্ছে অর্থদ-। কিন্তু বিদ্যমান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ‘বাতিল’ করা হচ্ছে বলা হলেও বাতিল হচ্ছে না কোনো মামলা। বিচার চলবে যথারীতি। শাস্তি হবে ডিএসএ’র ধারায়। সংবাদকর্মীদেরও পুরনো মামলায় হাজিরা দিতে হবে আগের মতোই। ফলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল, প্রতিস্থাপন কিংবা নাম পরিবর্তনে সংবাদকর্মীদের জন্য তেমন কোনো সুফলই বয়ে আনবে না। এমনটি মনে করছেন আইনজ্ঞরা। তবে সরকারি আইন কর্মকর্তারা বলছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত ইতিবাচক। এতে আইনটির অপপ্রয়োগ বন্ধ হবে।

গতকাল সোমবার সরকার ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল’-এর সিদ্ধান্ত জানানোর পর এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন আইনজ্ঞরা। তবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের স্থলে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ প্রতিস্থাপন পূর্বতন ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’রই জটিল সংস্করণ বলে মনে করছেন আইনটির ভুক্তভোগীরা। প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইন বরং আরো বেশি ভয়াবহ। আরো বেশি অপপ্রয়োগযোগ্য। এটি আইন বাতিলের নামে প্রতারণা। শুভঙ্করের ফাঁকি। ভুক্তভোগী ও বিশ্লেষকদের বিপুল সমালোচনা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগ, মুক্ত মত প্রকাশে কন্ঠরোধের অভিযোগ, সরকারের ওপর উন্নয়ন অংশীদার ও দাতা সংস্থাগুলোর নিরবচ্ছিন্ন চাপের প্রেক্ষিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ‘বাতিল’র ঘোষণা নীতিনির্ধারক মহলের নতুন চাতুর্য বলেও মনে করছেন ভুক্তভোগীরা।

কারাদ-ের স্থলে ২৫ লাখ অর্থদ- : এর আগে গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ) বাতিল প্রস্তাবনার নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়। ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’র পরিবর্তে সরকার এখন ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩’ করবে মর্মে সিদ্ধান্ত হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৯ ধারায় মানহানির বিচার করা হয়। এই ধারায় বলা হয়েছে ‘যদি কোনো ব্যক্তি ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে দ-বিধির ৪৯৯ ধারায় বর্ণিত মানহানিকর তথ্য প্রকাশ ও প্রচার করেন, তার জন্য তিনি অনধিক তিন বছর পর্যন্ত কারাদ- বা অনধিক ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত কারাদ- বা উভয় দ-ে দ-িত হবেন। নতুন আইনে কারাদ- বাদ দিয়ে জরিমানার সীমা ৫ লাখ থেকে বাড়িয়ে ২৫ লাখ টাকা করা হয়েছে। আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক মন্ত্রিসভা বৈঠকের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তন করা হচ্ছে। এ আইনের বহু ধারা সাইবার নিরাপত্তা আইনে যুক্ত করা হবে। কিছু ধারায় বড় সংশোধনী আনা হবে।

তিনি বলেন, ‘২৯ ধারায় সাজা ছিল কারাদ-। সেটিকে সম্পূর্ণভাবে বিলুপ্ত করা হচ্ছে। এখানে শুধু শাস্তি হবে জরিমানা। অনাদায়ে হয় ৩ মাস না হয় ৬ মাসের কারাদ- থাকবে। মন্ত্রী জানান, জরিমানা হবে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা। এই অর্র্থ সংবাদকর্মী কিংবা সাধারণ মানুষের পক্ষে পরিশোধ করা সম্ভব? তাহলে তো আইন আগের মতোই থেকে গেল। এ প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, আগে কারাদ- ছিল এ ধারায়। কারাদ- তুলে নেয়া হয়েছে। শুধু ‘সাজা’ রাখা হয়েছে। দেওয়ানি আইনে যদি মানুষ ক্ষতিপূরণ চায় তাহলে আমাদের যে আইন রয়েছে তাতে ক্ষতিপূরণের লিমিট নেই। আমি প্রশ্নের জবাবটা দিয়ে দিচ্ছি। ১০০ কোটি টাকাও ক্ষতিপূরণ চাইতে পারে। সেসব ক্যালকুলেশন করে অনধিক ২৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। এক্ষেত্রে ১ টাকাও জরিমানা হতে পারে, ২৫ লাখ টাকাও হতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে এখন খসড়া আইনে কোনো কারাদ- নেই। আপনাদের (সাংবাদিকদের) অ্যারেস্ট করবে কেন? অ্যারেস্ট তো করার আর কোনো সম্ভাবনাই থাকল না। ‘তাহলে মানহানির মামলার ক্ষেত্রে সরাসরি অ্যারেস্ট করা যাবে না?’ এ প্রশ্নে আনিসুল হক বলেন, অবশ্যই, এটা তো আর কারাদ-ই না।’ এ ধারায় জরিমানা আগে ছিল ৫ লাখ, এখন কেন ২৫ লাখ করা হচ্ছে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এখানে অনধিক ২৫ লাখ টাকা করা হয়েছে। এটা বিজ্ঞ আদালতের ডিসক্রিশনের (আদালতের নিজের বিচক্ষণতা) ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ডিসক্রিশনটা কীভাবে ব্যবহার করা হবে, আমি আইনজীবী হিসেবে যতটুকু জানি, অপরাধের পরিধি এবং তাতে যে ব্যক্তি মামলা করেছেন তার যে ক্ষতি হয়েছে তার পরিধি বিবেচনায় তিনি জরিমানাটা করতে পারবেন।

তবে ডিএসএ’র প্রতিস্থাপন ভুক্তভোগীদের ভোগান্তির কোনো কিনারা করবে না। এ আইনে দায়ের হওয়া মামলাগুলোও বাতিল হবে না। চলতি বছর জুন মাস পর্যন্ত সরকারি হিসাব মতেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়েরকৃত মামলার সংখ্যা ৭ হাজার ১টি। এসব মামলার কার্যক্রম চলবে যথারীতি। হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)-এর প্রেসিডেন্ট ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ ইনকিলাবকে বলেন, প্রতিটি নতুন বা সংশোধিত আইনে সেভিং ক্লজ থাকে। সেখানে বলা থাকে, আগের আইনে হওয়া মামলাগুলো কীভাবে পরিচালিত হবে। এমনকি পূর্বের আইনে চলমান মামলাগুলো যেভাবে যে পর্যায়ে ছিল সেসবের বিচার কীভাবে হবে, তাও সেভিং ক্লজে লেখা থাকবে। ফলে চলমান মামলা বাতিল হবে না।

অভিন্ন মত প্রকাশ করে উল্টো বরং আরো বেশি হয়রানির আশঙ্কা করেন আলোচিত একাধিক ডিজিটাল মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার। ইনকিলাবকে তিনি বলেন, আইন প্রতিস্থাপিত হলেও ভোগান্তির আশঙ্কা রয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে ইতোমধ্যে যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বা তদন্তাধীন রয়েছে, সেগুলো নিষ্পত্তি হওয়া জরুরি। এজন্য আইনটি দ্রুতই সংশোধন করে এর ক্লজে মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির বিষয়টি উল্লেখ থাকা প্রয়োজন। অন্যথায় মধ্যবর্তী সময়ের বিচারপ্রার্থীরা ভয়াবহ ভোগান্তিতে পড়বেন।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানের মতে, ডিএসএ সংশোধন করে কিংবা একেবারে ঢেলে সাজালেও আইনটিতে জনস্বার্থের কোনো প্রতিফলন ঘটবে না। জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। টিআইবি ধারাবাহিকভাবে বলে এসেছে। আইনটি বাতিলের দাবি জানিয়ে এসেছে। তবে শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিসভা আইনটি সংশোধনের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এটিকে আমরা স্বাগত জানাই। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, ডিএসএ যেভাবে নিবর্তনমূলক এবং কণ্ঠরোধ ও ভিন্নমত দমনের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছিল তা সরকার অনুধাবন করেই আইনটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ডিএসএ’র পরিবর্তে নতুন যে সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে, তা যেন কোনোভাবেই স্বাধীন মত প্রকাশে বাধা ও গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধের হাতিয়ারে পরিণত না হয়। একই সঙ্গে নতুন আইনটি প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও বিশেষজ্ঞদের নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন।

একটি নিন্দিত আইনের পরম্পরা : তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারে নিরাপত্তার কথা বলে ২০০৬ সালে তৎকালীন সরকার প্রণয়ন করে ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন-২০০৬’। আইনটি প্রণয়নের পর থেকেই চলে ৫৭ ধারার নির্বিচার অপব্যবহার। এই ধারায় দায়ের হতে থাকে শত শত মামলা। আর এসব মামলার অধিকাংশই সংবাদকর্মী, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক, আইনজীবী, বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, মৎস্যজীবী ও শ্রমিক বিরুদ্ধে দায়েরকৃত হয়রানিমূলক। একশ্রেণির মানুষ ব্যক্তিগত ক্ষোভ কিংবা বিভিন্ন ধরনের সুযোগ গ্রহণের লক্ষ্যে দায়ের করেন এসব মামলা। আইসিটি অ্যাক্ট-২০০৬ এর ৫৭ ধারায় অপরাধ আমলযোগ্য হওয়ায় আসামিকে গ্রেফতারে পুলিশকে আদালতের ইস্যুকৃত গ্রেফতারি পরোয়ানা দেখাতে হতো না। এছাড়া এ আইনে সর্বনি¤œ কারাদ-ের কোনো সময়সীমা নির্দিষ্ট ছিল না। কারও বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হলে তাকে কমপক্ষে ৭ বছর কারাদ- দেয়া হতো। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর আইসিটি অ্যাক্টের অপব্যবহার চরম আকার ধারণ করে। বিশেষত স্বার্থান্বেষী মহল দ্বারা গণমাধ্যম কর্মী ও সংবাদপত্রের কন্ঠরোধে আইনটির নিকৃষ্টতম ব্যবহার শুরু হয়। আইসিটি অ্যাক্টের ভয়াল নখর থাবা বসানো হয় শুধুই দেশ ও জনগণের পক্ষে কথা বলা দৈনিক ইনকিলাবের শরীরেও। প্রকাশিত একটি সংবাদের ‘ছুতো’ ধরে ২০১৪ সালের ১৬ জানুয়ারি রাজধানী ওয়ারী থানায় ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীনসহ কয়েকজন সংবাদিকের বিরুদ্ধে আইসিটি অ্যাক্টে দায়ের হয় একটি মামলা। মামলার পরপরই ওই রাতে ‘তদন্ত’র নামে অভিযান চালিয়ে কয়েক দফা ল-ভ- করা হয় ইনকিলাব ভবন। গ্রেফতার করা হয় বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মীকে। এভাবে বিশেষত সংবাদকর্মীদের কাছে ‘আইসিটি অ্যাক্ট’ হয়ে যায় এক বিভীষিকার নাম। গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণে এ আইনের যথেচ্ছ ব্যবহারে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে সরকার। সুশীলসমাজসহ বিভিন্ন মহল থেকে দাবি ওঠে আইনটি বাতিলের। উন্নয়ন অংশীদাররাও ৫৭ ধারা বাতিলসহ আইন সংশোধনের জন্য চাপ দেয়। এ প্রেক্ষাপটে সরকার আইনটি বাতিল কিংবা সংশোধনের লক্ষ্যে সাংবাদিকসহ পেশাজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে। দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার পর ২০১৮ সালে আইসিটি অ্যাক্ট’র গর্ভ থেকে জন্ম নেয় ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট-২০১৮’। পরে দেখা যায়, আইসিটি আইনের বহুল বিতর্কিত ৫৭ ধারা বাতিল করা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু নতুন আইনে যেটি সংযোজন করা হয়েছে সেটি ৫৭ ধারার চেয়ে ভয়াবহ। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে আইনটি পাস হয়। কার্যকর হয় একই বছর ৮ অক্টোবর। কার্যকরের ৩ দিনের মাথায় ১১ অক্টোবর দায়ের হয় ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের প্রথম মামলা। নতুন আইন পাস হওয়ার ২ বছরের মাথায় আবারও দুর্নীতিবাজ, স্বার্থান্বেষী মহলের শিকার হয় দৈনিক ইনকিলাব। ২০২০ সালের ২৭ জুন ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীনের বিরুদ্ধে জনৈক সৌমিত্র সরদার বাদী হয়ে গুলশান থানায় দায়ের করেন মামলা। গণমাধ্যম হিসেবে দৈনিক ইনকিলাব ছিল এ আইনের প্রথম শিকার। আইনটি পাস হওয়ার পর বিরোধী মত দমন এবং এর সুদূরপ্রসারী উদ্দেশ্য উপলব্ধি করে দৈনিক ইনকিলাব ছিল সবচেয়ে প্রতিবাদী ও সোচ্চার। প্রতিবাদ জানানোর প্রশ্নে তখন অনেক সুশীলই ছিলেন কুণ্ঠিত। কিন্তু পরবর্তীতে যখন একের পর এক অন্যান্য সংবাদ মাধ্যমও ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের শিকার হতে থাকেÑ তখন সম্বিৎ ফিরে পান সুশীলরা। সংবাদকর্মীদের বিরুদ্ধে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে ডিএসএ। শুরু হয় আইনটির যথেচ্ছ গণব্যবহার, হয়রানি ও নির্যাতন। ভুক্তভোগীসহ বিভিন্ন মহল থেকে আওয়াজ ওঠে আইনটি বাতিলের। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ৭ হাজারের বেশি মামলা হয়েছে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে। এসব মামলা বিশ্লেষণে দেখা যায়, যে প্রতিশ্রুতি থেকে সরকার আইনটি করেছিল সেটি তিরোহিত। আইনটি মুখ্যত ব্যবহৃত হচ্ছে ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমনে। সর্বমহলে দাবি ওঠে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিলের। একই সঙ্গে জাতিসংঘ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নয়ন অংশীদার দেশ, দাতা সংস্থা ও বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে সরকারের ওপর চাপ আসে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিলে। এ প্রক্রিয়ায় সর্বশেষ গত ১৩ জুলাই মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া-বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু’র সঙ্গে বৈঠকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এই মর্মে প্রতিশ্রুতি দেন যে, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে ডিএসএ সংশোধন হবে। এর আগে চলতি বছর ২১ মে আনিসুল হক জানান যে, জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের সুপারিশ পর্যালোচনা শেষে সরকার বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেবে। ডিজিটাল আইন প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বিভিন্ন দাতা সংস্থা এবং উন্নয়ন অংশীদারদের অব্যাহত চাপেরই ফল।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দেবে না: দ্য ইকোনমিস্টকে ড. ইউনূস
কুমারখালীতে রাতের আঁধারে সড়কের অর্ধশতাধিক গাছ কর্তন
বাংলাদেশের গুমের ঘটনায় ভারতের সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে কমিশন
ধামরাইয়ে ২টি ড্রেজার মেশিন জব্দ
ছিনতাইকারীর হাতে খুন হন হাফেজ কামরুল
আরও

আরও পড়ুন

রোমাঞ্চকর ম্যাচে বার্সাকে হারিয়ে শীর্ষে আতলেটিকো

রোমাঞ্চকর ম্যাচে বার্সাকে হারিয়ে শীর্ষে আতলেটিকো

জেসুসের জোড়া গোলের রাতে আর্সেনালের বড় জয়

জেসুসের জোড়া গোলের রাতে আর্সেনালের বড় জয়

বিলুপ্তির পথে মাটির ঘর

বিলুপ্তির পথে মাটির ঘর

চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

প্রতিবন্ধী স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ

প্রতিবন্ধী স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ

কেরু চিনিকলে আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন

কেরু চিনিকলে আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন

বিহারিরা কেমন আছে

বিহারিরা কেমন আছে

লক্ষ্মীপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি

লক্ষ্মীপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি

আসাদ সরকারের পতন : নতুন সিরিয়ায় ইসরাইলি আগ্রাসন

আসাদ সরকারের পতন : নতুন সিরিয়ায় ইসরাইলি আগ্রাসন

মেটলাইফ বাংলাদেশের গ্রাহকরা ডিসকাউন্ট পাবেন ওশান প্যারাডাইস হোটেলস ও রিসোর্টে

মেটলাইফ বাংলাদেশের গ্রাহকরা ডিসকাউন্ট পাবেন ওশান প্যারাডাইস হোটেলস ও রিসোর্টে

১৫ নারী ও শিশুকে হস্তান্তর

১৫ নারী ও শিশুকে হস্তান্তর

আবাসন ও গার্মেন্ট খাতের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে

আবাসন ও গার্মেন্ট খাতের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে

মেহেরপুরে বেড়েছে গরম কাপড় বিক্রি

মেহেরপুরে বেড়েছে গরম কাপড় বিক্রি

কাশিয়ানীর হাট-বাজার নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব

কাশিয়ানীর হাট-বাজার নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব

অ্যানুয়াল বিজনেস কন্টিনিউয়িটি প্ল্যান ড্রিল ২০২৪ আয়োজন করলো ব্র্যাক ব্যাংক

অ্যানুয়াল বিজনেস কন্টিনিউয়িটি প্ল্যান ড্রিল ২০২৪ আয়োজন করলো ব্র্যাক ব্যাংক

সমস্যায় জর্জরিত আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

সমস্যায় জর্জরিত আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

সবুজ গালিচায় হলুদের সমারোহ

সবুজ গালিচায় হলুদের সমারোহ

আখাউড়ায় ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মেধা বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত

আখাউড়ায় ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মেধা বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত

নিউ ইয়র্কের আদালতে অভিযুক্ত লুইজি

নিউ ইয়র্কের আদালতে অভিযুক্ত লুইজি

কিউবায় সমাবেশ

কিউবায় সমাবেশ