ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে খুলছে ২ সেপ্টেম্বর
১৪ আগস্ট ২০২৩, ১১:১৩ পিএম | আপডেট: ১৫ আগস্ট ২০২৩, ১২:০৭ এএম
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশ আগামী ২ সেপ্টেম্বর খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এছাড়া ২৮ অক্টোবর চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেলের উদ্বোধন করা হবে বলে জানান তিনি। গতকাল সোমবার রাজধানীর সেতু ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য দেন সেতুমন্ত্রী। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পিপিপি প্রকল্প হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রান্ত থেকে ফার্মগেট প্রান্ত পর্যন্ত অংশের উদ্বোধন উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অনুমতিক্রমে আগামী ২ সেপ্টেম্বর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের এয়ারপোর্ট থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশের উদ্বোধন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর উদ্বোধন করবেন। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ওপর পথচারী ও বাইসাইকেল চলবে না। আপাতত মোটরসাইকেলও চলাচল করবে না।
তিনি জানান, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মোট ব্যয় আট হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৬৫ শতাংশ। প্রকল্পটি আগামী বছরের ২ জুন শেষ হবে। এয়ারপোর্ট থেকে ফার্মগেট মেইন লাইনের দৈর্ঘ্য ১১ দমমিক ৫ কিলোমিটার। এতে মোট ১৫টি র্যাম্প রয়েছে। এর মধ্যে ১৩টি র্যাম্প উন্মুক্ত। গাড়ির গতিসীমা ৬০ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত আসতে সময় লাগবে ১০ মিনিট। ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আগামী ২৮ অক্টোবর চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে বঙ্গবন্ধু ট্যানেল উদ্বোধন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম এই টানেলের উদ্বোধন করবেন। এছাড়া অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে মেট্রোরেলের মতিঝিল পর্যন্ত অংশের উদ্বোধন করা হবে বলে জানান তিনি।
এছাড়াও অক্টোবরের মধ্যেই ৯টি মেগাপ্রকল্প খুলে দেয়া হবে বলে জানা গেছে। প্রকল্পগুলো হলো- ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প, মেট্রোরেল প্রকল্প, পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে, খুলনা-মংলা রেল প্রকল্প, পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্প, কক্সবাজার রেল সংযোগ প্রকল্প, আখাউড়া-আগরতলা আন্তঃদেশীয় রেল সংযোগ প্রকল্প, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ট্যানেল, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তৃতীয় টার্মিনাল।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে : বিমানবন্দর থেকে তেজগাঁও হয়ে ফার্মগেট-কোথাও নেই সিগন্যাল, নেই যানজট। যানজটের নগরী ঢাকায় এটা এক কষ্টকল্পনা কিন্তু মাত্র ১২ মিনিটে ১২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়ার স্বপ্ন সফল হচ্ছে এবার। ২ সেপ্টেম্বরেই ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থেকে এ সুবিধা পাবে নগরবাসী। প্রথমাংশের কাজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম এস আকতার বলেন, এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ তিনটি ধাপে সম্পন্ন করা হচ্ছে। প্রথম অংশের বনানী পর্যন্ত ৯৮ শতাংশ ও বনানী থেকে মগবাজার অংশে ৫৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। সেপ্টেম্বরে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশ উদ্বোধনে প্রস্তুত।
মেট্রোরেল লাইন-৬ : দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত এরইমধ্যে মেট্রোরেল নিয়মিত চলাচল করছে। আর অক্টোবরেই উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত অংশটিও। এরইমধ্যে এ অংশে শুরু হয়েছে পরীক্ষামূলক চলাচল। উত্তরা থেকে মতিঝিল যেতে আর অপেক্ষা করতে হবে না দেড় থেকে দুই ঘণ্টা। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে ঢাকাবাসী এ পথ মেট্রোরেলে পাড়ি দিবে মাত্র ৩৮ মিনিটে।
পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে : বাংলাদেশের যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের উন্মোচন করতে যাচ্ছে পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে। রাজধানীর বুকে এই ১২ দশমিক ৩ শূন্য কিলোমিটার দীর্ঘ ১২ লেনের এই এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমে নতুন শহর পূর্বাচলের সাথে যুক্ত হবে নগরীর বাকি অংশ। একইসাথে যানজট কমিয়ে ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ দেশের পূর্বাঞ্চলের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্র তৈরি করবে। এ প্রকল্পের কাজ শেষ, অপেক্ষা কেবলমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক উদ্বোধনের জন্যে। দৃষ্টিনন্দন এই এক্সপ্রেসওয়ের সাথে উভয় পাশে, কুড়িল থেকে বালু নদী পর্যন্ত ১০০ ফুট চওড়া খাল খননও করা হচ্ছে। ফলে শুধু যানজট নয় বসুন্ধরা, খিলক্ষেত এলাকার পানিবদ্ধতাও নিরসন করবে। সরকারি অর্থায়নে নির্মিত এ প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১০ হাজার ৩২৯ কোটি টাকা। ২০১৫ সালের ২২ সেপ্টেম্বর একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদনের ৮ বছর পরে প্রকল্পটি শেষ হচ্ছে।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প : দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে ট্রেন চলার অপেক্ষার প্রহর গুনছে। এক মাস পরে সেপ্টেম্বরেই প্রকল্পের উদ্বোধনের জন্য ইতোমধ্যে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রকল্প সূত্র মতে, মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের অগ্রগতি হয়েছে ৯৬ শতাংশ। আর ঢাকা-মাওয়া অংশের অগ্রগতি হয়েছে ৭৯ ভাগ। ভাঙ্গা-যশোর পর্যন্ত অংশের অগ্রগতি ৭৯ শতাংশ, এই অংশের উদ্বোধন হবে ২০২৪ সালের জুনে। পদ্মা সেতু রেল সংযোগের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা।
কক্সবাজার রেল সংযোগ প্রকল্প : ঢাকা থেকে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সরাসরি রেল যোগাযোগ নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে। এ লক্ষ্যে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ৮৮ কিলোমিটার রেললাইন বসানো হয়ে গেছে। বাকি আছে ১২ কিলোমিটার। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৮৭ শতাংশ। রেলওয়ে মন্ত্রণালয় আগে সেপ্টেম্বরের কথা বললেও কালুরঘাট সেতু সংস্কার ও বান্দরবানের পাহাড়ি ঢলে রেলপথ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এই প্রকল্পের উদ্বোধন পিছিয়ে যাচ্ছে।
আখাউড়া-আগরতলা রেল সংযোগ প্রকল্প : অবশেষে আলোর মুখ দেখছে আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন। ভারতীয় ঋণে বাস্তবায়িত হচ্ছে এ প্রকল্প সেপ্টেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় নরেন্দ্র মোদি সাথে যৌথভাবে এ রেললাইন উদ্বোধন করতে পারেন। প্রকল্প কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আখাউড়া-আগরতলা প্রকল্পের কাজ ৯০ ভাগের বেশি হয়েছে। রেললাইন বসানোর কাজ পুরো শেষ। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। এরপর ২০১৬ সালে শুরু হওয়া এ প্রকল্প চতুর্থবারের মতো মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত করা হচ্ছে। অর্থাৎ ১৩ বছর ধরে চলা এ প্রকল্প অবশেষে আলোর মুখ দেখছে। এ প্রকল্পের মোট ব্যয় হচ্ছে ৪৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এরমধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৫৭ কোটি ৫ লাখ টাকা এবং ভারতীয় ঋণ ৪২০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
খুলনা-মোংলা রেললাইন : দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর হলেও মোংলা বন্দর এতোদিন ছিলো রেল সংযোগের বাইরে। এজন্য খুলনা থেকে মংলায় রেলপথ স¤প্রসারণের উদ্যোগ নেয়া হয়। নানা জটিলতায় কয়েক দফা মেয়াদ বেড়ে অবশেষে এবার নির্মাণকাজ শেষের পথে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, আগস্ট মাসে এ প্রকল্পের ৯৯ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। শেষ মুহ‚র্তের ফিনিশিং কিছু কাজ বাকি আছে স্টেশনগুলোর। এ প্রকল্পটি ২০১০ সালে একনেক সভায় অনুমোদন হওয়ার ১৩ বছর পরে এসে আলোর মুখ দেখছে।
কর্ণফুলী টানেল : চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু টানেলের মূল কাজ শেষ। এ প্রকল্পের উদ্বোধন হতে যাচ্ছে ২৮ অক্টোবরে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে টানেলের যুগে প্রবেশ করবে বাংলাদেশ।
বিমানবন্দর থার্ড টার্মিনাল : ৭ অক্টোবরে চালু হতে যাচ্ছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল। দৃষ্টিনন্দন টার্মিনাল ভবনও এখন দৃশ্যমান। চলছে অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জার কাজ। আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন টার্মিনালটি পুরোপুরি চালু হলে বাড়বে উড়োজাহাজ চলাচল ও যাত্রীসেবার মান। এ টার্মিনাল পুরোদমে চালু হলে এর মাধ্যমে উন্নয়নশীল বাংলাদেশের সংকেত বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে যাবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
ঘণকুয়াশার কারণে ৭ ঘন্টা পর আরিচা-কাজিরহাট এবং পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি সার্ভিস চালু
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ৫০
আওয়ামী পন্থী মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যুক্তরাজ্য শাখা বিএনপি নেতার মতবিনিময়
পরিসংখ্যান ব্যুরোর ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক শরিফুলের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ
আ.লীগের দোসর সালাম আলী এখন বিএনপির সভাপতি প্রার্থী!
ঘুস নেওয়ার অভিযোগ, টিউলিপ সিদ্দিককে যুক্তরাজ্যে জিজ্ঞাসাবাদ
তালাক নিয়ে যুক্তরাজ্যে যেতে চান বাশার আল-আসাদের স্ত্রী
গভীর রাতে মেসে ছাত্রীদের বিক্ষোভ, মালিকের দুই ছেলেকে পুলিশে সোপর্দ
প্রোটিয়াদের হোয়াইট ওয়াশ করে পাকিস্তানের ইতিহাস
৯ গোলের উৎসবে লিভারপুলের বড় জয়
বড়দিনের ছুটির আগে রিয়ালের বড় জয়
ঘরের মাঠেই বিধ্বস্ত ইউনাইটেড
গোলশূন্য ড্রয়ে থামল চেলসির জয়রথ
এনার্জিপ্যাকের বার্ষিক সাধারণ সভায় ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ
আমার খাবার কি ফর্টিফায়েড?
হাসিনা পরিবারের নামে ১৩ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসি তাকিয়ে আছে সরকারের দিকে
ব্র্যাক ব্যাংকের রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন
দিনাজপুর জেলা শিক্ষা অফিসারের বিদায়ী সংবর্ধনা
নরসিংদীর শিবপুরে প্লাস্টিক কারখানা আগুনে পুড়ে ছাই
ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স শূন্য যে ১০ ব্যাংকে