ভয়ে গুরুগ্রাম-নুহ ছেড়েছে মুসলমানরা

‘আমাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে’

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

১৫ আগস্ট ২০২৩, ১১:১১ পিএম | আপডেট: ১৬ আগস্ট ২০২৩, ১২:০১ এএম

‘আমার পরিবার টাকা চায় না। তারা শুধু চায় আমি গ্রামে ফিরে যেতে’ বললেন বিহারের অভিবাসী শ্রমিক ইমরান আলী। গত ৩১ জুলাই সহিংসতার সময় ভয়ে গুরুগ্রাম থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। আলী (২৫) সহিংসতার দুই সপ্তাহ পরে গুরুগ্রামে ফিরে আসেন শুধুমাত্র তার জিনিসপত্র সংগ্রহ করতে।
আলী আইএএনএসকে বলেছেন, ‘আমার পরিবার আমাকে কঠোরভাবে গুরুগ্রামে কাজ না করতে এবং অবিলম্বে ফিরে যেতে বলেছে। এমনকি অনেক বোঝানোর পরও তারা রাজি হয়নি এবং আমাকে অবিলম্বে ফিরে যেতে বলেছে’। ৩১ জুলাই নুহতে ধর্মীয় দাঙ্গা শুরু হয় যাতে ৬ জন নিহত এবং ৮৮ জন গুরুতর আহত হয়। নুহ জেলায় ভিএইচপি আয়োজিত একটি ধর্মীয় মিছিলে পাথর নিক্ষেপের পর ধর্মীয় দাঙ্গা শুরু হয়।
নুহ-এর একজন মুসলিম বাসিন্দা, যার বাড়ি কর্তৃপক্ষ ‘অবৈধ নির্মাণ’ এর কারণে ধ্বংস অভিযানের সময় ভেঙে দিয়েছিল, আইএএনএসকে বলেছেন যে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে আশা করেছিলেন যে, বিজেপির ধর্মীয় বক্তব্য তাদের এলাকায় দাঙ্গা সৃষ্টি করবে যা মুসলমানদের লক্ষ্য করবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘অধিকাংশ হিন্দু বিশ্বাস করে যে, নূহের লোকেরা দাঙ্গায় জড়িত ছিল, যা সত্য নয়। হিন্দুদের মতো আমরা মুসলমানও সমানভাবে ভারতীয়’।
তিনি স্মরণ করেন কিভাবে যাত্রার সময় হিন্দুরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে অশালীন ভাষা ব্যবহার করেছিল। নুহ সহিংসতা গুরুগ্রামে ছড়িয়ে পড়েছিল, যখন জনতা রাস্তার মধ্য দিয়ে তাÐব চালিয়েছিল, হিন্দু জাতীয়তাবাদী সেøাগান দিয়েছিল এবং মুসলিম বসতি ও ব্যবসাকে টার্গেট করেছিল। গুরুগ্রাম পুলিশ দাঙ্গা থামাতে ব্যর্থ হয়। এখনও পর্যন্ত ধর্মীয় দাঙ্গার অভিযোগে নুহ পুলিশ ২৩০ জনকে এবং গুরুগ্রাম পুলিশ ৭৯ জনকে গ্রেফতার করেছে।
আহমেদ খান শহর ছেড়ে যাওয়ার সময় বলছিলেন, ‘হিন্দু দল প্রকাশ্যে আমাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়াচ্ছে। শত শত লোকের মধ্যে, হিন্দু দলগুলো মুসলমানদের বয়কট করার ঘোষণা দিচ্ছে, আমাদের দোকান থেকে কিছু কিনছে না, বাড়ি ভাড়া দিচ্ছে না ইত্যাদি, তারা আমাদের ব্যবসা ধ্বংস করে দিয়েছে এবং শত শত মুসলমান গুরুগ্রাম ছেড়ে চলে গেছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর তাদের মধ্যে কয়েকজন ফিরে আসবে। পুলিশ এবং প্রশাসন তাদের নিজের দেশে মুসলমানদের রক্ষা করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে’।
‘হিন্দুরা মনে করে এ দেশের সবকিছুই তাদের: পুলিশ, প্রশাসন, এমনকি এখন রাস্তাও। এটা যেন আমাদের মুসলমানদের এই দেশে কোনো অধিকার নেই’ খান বলেন। দাঙ্গা শুরু হওয়ার পর গুরুগ্রামে ঝোপঝাড় ও মুসলমানদের স্ক্র্যাপের দোকানে আগুন দেওয়া হয়।
গুরুগ্রামের সেক্টর-৫৭-এ, একদল জনতা একটি নির্মাণাধীন মসজিদকেও লক্ষ্যবস্তু করে এবং পাঁচ জনকে আক্রমণ করে যাতে একজন ইমাম নিহত এবং অন্যরা আহত হয়। সূত্র : আইএএনএস।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

পান্থকুঞ্জ ও আনোয়ারা পার্ক নিয়ে নতুন করে ভাবা হচ্ছে: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
স্ত্রী-কন্যাসহ সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
উপদেষ্টা হাসান আরিফকে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন
রাওয়ার নেতৃত্বে আবদুল হক ও ইরশাদ সাঈদ
কুমিল্লায় মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ৩ কিশোর নিহত
আরও

আরও পড়ুন

পাবনা-৩ এলাকায় অ্যাডভোকেট রবিউলের গণসংযোগ ও কম্বল বিতরণ

পাবনা-৩ এলাকায় অ্যাডভোকেট রবিউলের গণসংযোগ ও কম্বল বিতরণ

পান্থকুঞ্জ ও আনোয়ারা পার্ক নিয়ে নতুন করে ভাবা হচ্ছে: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

পান্থকুঞ্জ ও আনোয়ারা পার্ক নিয়ে নতুন করে ভাবা হচ্ছে: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

নারী পুলিশের দিকে তাকিয়ে আসামির হাসি, নেটদুনিয়ায় তোলপাড়

নারী পুলিশের দিকে তাকিয়ে আসামির হাসি, নেটদুনিয়ায় তোলপাড়

জার্মানির ক্রিসমাস মার্কেটে হামলায় ৯ বছরের শিশুর মৃত্যুতে শোকের ছায়া

জার্মানির ক্রিসমাস মার্কেটে হামলায় ৯ বছরের শিশুর মৃত্যুতে শোকের ছায়া

স্ত্রী-কন্যাসহ সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

স্ত্রী-কন্যাসহ সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

গ্রেপ্তারের ভয়ে পোল্যান্ড সফর বাতিল করলেন নেতানিয়াহু

গ্রেপ্তারের ভয়ে পোল্যান্ড সফর বাতিল করলেন নেতানিয়াহু

নাটোরে ৬ ট্রাকের সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২, আহত ৭

নাটোরে ৬ ট্রাকের সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২, আহত ৭

রাখাইনের অস্থিরতায় টেকনাফ স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি কমেছে ৯০ ভাগ

রাখাইনের অস্থিরতায় টেকনাফ স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি কমেছে ৯০ ভাগ

ক্রিসমাস মার্কেট হামলা, জার্মান কর্তৃপক্ষের কাছে গত বছরেই এসেছিল সতর্কবার্তা

ক্রিসমাস মার্কেট হামলা, জার্মান কর্তৃপক্ষের কাছে গত বছরেই এসেছিল সতর্কবার্তা

উপদেষ্টা হাসান আরিফকে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন

উপদেষ্টা হাসান আরিফকে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন

ডলার বাজারে অস্থিরতা, দাম বেড়ে ১২৯ টাকা

ডলার বাজারে অস্থিরতা, দাম বেড়ে ১২৯ টাকা

উত্তরার বিপ্লবী জনতাকে যে কঠিন মূল্য দিতে হয়েছিল

উত্তরার বিপ্লবী জনতাকে যে কঠিন মূল্য দিতে হয়েছিল

পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার হুমকি ট্রাম্পের

পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার হুমকি ট্রাম্পের

বাংলাদেশ থেকে আরও দক্ষকর্মী নিতে আগ্রহী লিবিয়া

বাংলাদেশ থেকে আরও দক্ষকর্মী নিতে আগ্রহী লিবিয়া

৯১ শিশু খেলোয়াড়সহ ৬৪৪ ক্রীড়াবিদকে হত্যা করেছে ইসরায়েল

৯১ শিশু খেলোয়াড়সহ ৬৪৪ ক্রীড়াবিদকে হত্যা করেছে ইসরায়েল

ইইউভুক্ত দেশে গ্যাস সরবরাহ বন্ধের হুমকি কাতারের

ইইউভুক্ত দেশে গ্যাস সরবরাহ বন্ধের হুমকি কাতারের

দক্ষিণ কোরিয়ার সৌন্দর্যের পেছনে ছুটে বিপদের ফাঁদে পর্যটকরা

দক্ষিণ কোরিয়ার সৌন্দর্যের পেছনে ছুটে বিপদের ফাঁদে পর্যটকরা

ঢাকার বাতাস আজ ‘ঝুঁকিপূর্ণ’

ঢাকার বাতাস আজ ‘ঝুঁকিপূর্ণ’

২৮ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদ

২৮ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদ

হিরো নয় কারিনার ছেলের চরিত্রে অভিনয় করতে পারি

হিরো নয় কারিনার ছেলের চরিত্রে অভিনয় করতে পারি