ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৪ আশ্বিন ১৪৩১
ভয়ে গুরুগ্রাম-নুহ ছেড়েছে মুসলমানরা

‘আমাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে’

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

১৫ আগস্ট ২০২৩, ১১:১১ পিএম | আপডেট: ১৬ আগস্ট ২০২৩, ১২:০১ এএম

‘আমার পরিবার টাকা চায় না। তারা শুধু চায় আমি গ্রামে ফিরে যেতে’ বললেন বিহারের অভিবাসী শ্রমিক ইমরান আলী। গত ৩১ জুলাই সহিংসতার সময় ভয়ে গুরুগ্রাম থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। আলী (২৫) সহিংসতার দুই সপ্তাহ পরে গুরুগ্রামে ফিরে আসেন শুধুমাত্র তার জিনিসপত্র সংগ্রহ করতে।
আলী আইএএনএসকে বলেছেন, ‘আমার পরিবার আমাকে কঠোরভাবে গুরুগ্রামে কাজ না করতে এবং অবিলম্বে ফিরে যেতে বলেছে। এমনকি অনেক বোঝানোর পরও তারা রাজি হয়নি এবং আমাকে অবিলম্বে ফিরে যেতে বলেছে’। ৩১ জুলাই নুহতে ধর্মীয় দাঙ্গা শুরু হয় যাতে ৬ জন নিহত এবং ৮৮ জন গুরুতর আহত হয়। নুহ জেলায় ভিএইচপি আয়োজিত একটি ধর্মীয় মিছিলে পাথর নিক্ষেপের পর ধর্মীয় দাঙ্গা শুরু হয়।
নুহ-এর একজন মুসলিম বাসিন্দা, যার বাড়ি কর্তৃপক্ষ ‘অবৈধ নির্মাণ’ এর কারণে ধ্বংস অভিযানের সময় ভেঙে দিয়েছিল, আইএএনএসকে বলেছেন যে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে আশা করেছিলেন যে, বিজেপির ধর্মীয় বক্তব্য তাদের এলাকায় দাঙ্গা সৃষ্টি করবে যা মুসলমানদের লক্ষ্য করবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘অধিকাংশ হিন্দু বিশ্বাস করে যে, নূহের লোকেরা দাঙ্গায় জড়িত ছিল, যা সত্য নয়। হিন্দুদের মতো আমরা মুসলমানও সমানভাবে ভারতীয়’।
তিনি স্মরণ করেন কিভাবে যাত্রার সময় হিন্দুরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে অশালীন ভাষা ব্যবহার করেছিল। নুহ সহিংসতা গুরুগ্রামে ছড়িয়ে পড়েছিল, যখন জনতা রাস্তার মধ্য দিয়ে তাÐব চালিয়েছিল, হিন্দু জাতীয়তাবাদী সেøাগান দিয়েছিল এবং মুসলিম বসতি ও ব্যবসাকে টার্গেট করেছিল। গুরুগ্রাম পুলিশ দাঙ্গা থামাতে ব্যর্থ হয়। এখনও পর্যন্ত ধর্মীয় দাঙ্গার অভিযোগে নুহ পুলিশ ২৩০ জনকে এবং গুরুগ্রাম পুলিশ ৭৯ জনকে গ্রেফতার করেছে।
আহমেদ খান শহর ছেড়ে যাওয়ার সময় বলছিলেন, ‘হিন্দু দল প্রকাশ্যে আমাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়াচ্ছে। শত শত লোকের মধ্যে, হিন্দু দলগুলো মুসলমানদের বয়কট করার ঘোষণা দিচ্ছে, আমাদের দোকান থেকে কিছু কিনছে না, বাড়ি ভাড়া দিচ্ছে না ইত্যাদি, তারা আমাদের ব্যবসা ধ্বংস করে দিয়েছে এবং শত শত মুসলমান গুরুগ্রাম ছেড়ে চলে গেছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর তাদের মধ্যে কয়েকজন ফিরে আসবে। পুলিশ এবং প্রশাসন তাদের নিজের দেশে মুসলমানদের রক্ষা করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে’।
‘হিন্দুরা মনে করে এ দেশের সবকিছুই তাদের: পুলিশ, প্রশাসন, এমনকি এখন রাস্তাও। এটা যেন আমাদের মুসলমানদের এই দেশে কোনো অধিকার নেই’ খান বলেন। দাঙ্গা শুরু হওয়ার পর গুরুগ্রামে ঝোপঝাড় ও মুসলমানদের স্ক্র্যাপের দোকানে আগুন দেওয়া হয়।
গুরুগ্রামের সেক্টর-৫৭-এ, একদল জনতা একটি নির্মাণাধীন মসজিদকেও লক্ষ্যবস্তু করে এবং পাঁচ জনকে আক্রমণ করে যাতে একজন ইমাম নিহত এবং অন্যরা আহত হয়। সূত্র : আইএএনএস।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

দুইবার এগিয়ে গিয়েও জেতা হলো না মায়ামির

দুইবার এগিয়ে গিয়েও জেতা হলো না মায়ামির

ইত্তিহাদেই সিটিকে রুখে দিল ইন্টার

ইত্তিহাদেই সিটিকে রুখে দিল ইন্টার

রোনালদোদের নতুন কোচ পিওলি

রোনালদোদের নতুন কোচ পিওলি

দক্ষিণ আফ্রিকাকে গুড়িয়ে আফগানদের ঐতিহাসিক জয়

দক্ষিণ আফ্রিকাকে গুড়িয়ে আফগানদের ঐতিহাসিক জয়

যেই গৌরব কেবল শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের

যেই গৌরব কেবল শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের

রিট করে ‘খেলাপি ঋণ স্থগিত’ বন্ধ চান ব্যাংক-মালিকরা

রিট করে ‘খেলাপি ঋণ স্থগিত’ বন্ধ চান ব্যাংক-মালিকরা

বিদেশি ঋণ ফের ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে

বিদেশি ঋণ ফের ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে

টাকা উদ্ধারের নামে ‘ঘুষ’ চাওয়ার অভিযোগ জিএম শাহজাহান চৌধুরীর’র বিরুদ্ধে

টাকা উদ্ধারের নামে ‘ঘুষ’ চাওয়ার অভিযোগ জিএম শাহজাহান চৌধুরীর’র বিরুদ্ধে

জাতীয় ঐক্য বিনষ্টকারী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে হবে

জাতীয় ঐক্য বিনষ্টকারী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে হবে

৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার কিনবে সরকার, ব্যয় ২৩৬ কোটি টাকা

৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার কিনবে সরকার, ব্যয় ২৩৬ কোটি টাকা

আইকনিক লিডার তারেক রহমান ও বাংলাদেশের রাজনীতি

আইকনিক লিডার তারেক রহমান ও বাংলাদেশের রাজনীতি

পতিত স্বৈরাচার ও ভারতের চক্রান্ত চলছেই

পতিত স্বৈরাচার ও ভারতের চক্রান্ত চলছেই

তারেক রহমানের রাষ্ট্রনায়কোচিত বক্তব্য ও দিকনির্দেশনা

তারেক রহমানের রাষ্ট্রনায়কোচিত বক্তব্য ও দিকনির্দেশনা

ইসরাইলের দখলদারিত্ব বন্ধের প্রস্তাব বিবেচনা জাতিসংঘের

ইসরাইলের দখলদারিত্ব বন্ধের প্রস্তাব বিবেচনা জাতিসংঘের

উত্তপ্ত মণিপুরে অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে নতুন করে গোলাগুলি

উত্তপ্ত মণিপুরে অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে নতুন করে গোলাগুলি

২৭ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়্যান্ট

২৭ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়্যান্ট

২০০ হাতি নিধনের সিদ্ধান্ত জিম্বাবুয়ের

২০০ হাতি নিধনের সিদ্ধান্ত জিম্বাবুয়ের

কলেরাসহ মারাত্মক রোগের ঝুঁকিতে সুদানের ৩৪ লাখ শিশু

কলেরাসহ মারাত্মক রোগের ঝুঁকিতে সুদানের ৩৪ লাখ শিশু

১১ হাজার ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর প্রাণ গেছে

১১ হাজার ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর প্রাণ গেছে

বেলারুশে হামলা হলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে : লুকাশেঙ্কো

বেলারুশে হামলা হলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে : লুকাশেঙ্কো