ঢাকা   রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
বুড়িগঙ্গা-তুরাগ-বালু-শীতলক্ষ্যার পাড় দখলের পর ভমিদস্যুরা এখন মুন্সীগঞ্জে

ক্ষতবিক্ষত আড়িয়াল বিল

Daily Inqilab এমএ কাইয়ুম (পদ্মা উত্তর সংবাদদাতা)

১৮ আগস্ট ২০২৩, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ১৮ আগস্ট ২০২৩, ১২:০৫ এএম

বেশি টাকার লোভ দেখিয়ে ফসলি জমি কিনছে হাউজিং কোম্পানিগুলো : লোভ সামলাতে না পেরে কৃষিজমি এমনকি ঘরবাড়ি বিক্রি করছে স্থানীয়রা :: প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা বিলে আবাসনের নামে বালু ও মাটি ভরাট, স্থাপনা নির্মাণ করায় ধ্বংসের পথে জীববৈচিত্র্য
ভ‚মিদস্যু নামের শকুনের নখে ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে আড়িয়াল বিল। পদ্মা সেতু নির্মাণের শুরুতেই ভ‚মিদস্যুদের শকুনি দৃষ্টি পড়ে আড়িয়াল বিলের দিকে। হাউজিংয়ের নামের ভ‚মিদস্যুরা আড়িয়াল বিল ভরাট করছে। এর আগে রাজধানী ঢাকার চারপাশের বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু ও শীতলক্ষ্যা নদীর দুই পাড় দখল করেছে। ফাল্গুন-চৈত্র মাসে বালু নদী দেখলে মনে হয় ‘ওই খানে এক নদী ছিল/জানলো না তো কেউ’ অবস্থা। গত ১৫ বছরে এই চার নদী তীরের অন্তত ৪৪ দশমিক ৩৭ কিলোমিটার এলাকার জমি দখল হয়েছে। কোথাও বালি ফেলে ভরাট করেছে প্রভাবশালী দখলদার ও ভ‚মিদস্যুরা; কোথাও বা কলকারখানার রাসায়নিক বর্জ্যে নষ্ট করছে নদীর পানিসহ আশেপাশের পরিবেশ। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ভ‚মিদস্যুরা ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় জেলখানা থেকে শুরু করে পদ্মা সেতু পর্যন্ত রাস্তার দুইধার এবং আশপাশে বিল-নদী দখল করে ভরাট শুরু করে। অতঃপর শ্রীনগরের আড়িয়াল বিল ভরাটে নেমে পড়েছে। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ভ‚মিদস্যু সিন্ডিকেট সদস্যরা অবৈধ ড্রেজার ও ড্রাম ট্রাক দিয়ে বালু ভরাট ও আড়িয়াল বিলের উর্বর মাটি শত শত বড় ট্রলার দিয়ে বিভিন্ন ইট ভাটায় বিক্রির মাধ্যমে গিলে খাচ্ছে। ভ‚মিদস্যুদের ঠেকাতে আড়িয়াল বিলে আবাসনের নামে বালি ও মাটি ভরাট, স্থাপনা নির্মাণ এবং দখল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। গত ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট এ নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালকের (এনফোর্সমেন্ট) প্রতি এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ২০১০-২২ সাল পর্যন্ত সময়ের আড়িয়াল বিলের স্যাটেলাইট এরিয়াল ম্যাপসহ তিন মাসের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

মুন্সিগঞ্জের আড়িয়াল বিল দখলের মহোৎসব চলছে। ১৩৬ বর্গকিলোমিটার আয়োতনের এ বিল ভ‚মিদস্যুরা দখলে ড্রেজার ও ড্রাম ট্রাক দিয়ে কৃষি ও সরকারি খাসজমিসহ খাল, জলাশয়, পুকুর ভরাট করছে। পদ্মানদীর সংযোগখালসহ চারদিক থেকে বহু খালের মুখ বন্ধ করে দিয়েছে। চারদিকের খাল দিয়ে আড়িয়াল বিলের পানি আসতে না পারায় বিলের মৎস্য ও শস্যভাÐার পুরোপুরি হুমকিতে পড়েছে। ছোট বড় খাল, জলাশয়, পুকুর, ডাঙা, ভরাটে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার কৃষকসহ স্থানীয় মানুষ। কৃষি জমি ভরাট করে ভ‚মিদুস্যুরা গড়ে তুলেছে আবাসনের নামে চটকদার অবৈধ হাউজিং প্রকল্প। এর ফলে দেশের কৃষি উৎপাদনের বিরাট একটি অংশ দেশের কৃষি খাদ্য উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে।

বহুল আলোচিত আড়িয়াল বিল প্রমত্তা পদ্মা নদী ও ধলেশ্বরী নদীর মাঝখানে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর, সিরাজদিখান, ঢাকার দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলার অন্তর্গত অবস্থিত বৃহৎ একটি ভ‚মি। এটি দেশের মধ্যাঞ্চলের সবচেয়ে বড় ও প্রাচীন বিল। আড়িয়াল বিলের বেশিরভাগ এলাকাই শুষ্ক ঋতুতে আর্দ্র থাকে ও বিলে যথেষ্ট পরিমাণ পানি থাকতো। বর্ষায় পানিতে টইটুম্বুর থাকলেও শীতকালে এটি বিস্তীর্ণ শস্য ক্ষেতে পরিণত হয়। এখানে শীতকালে নানা ধরনের সবজির চাষ করা হয়, এ বিলের বিশেষ আকর্ষণ হচ্ছে, বর্ষাকালে পানি থৈ থৈ পালতোলা নৌকা চলাচল, শীতকালে মাঠে মাঠে সরিষা ফুলের অবাক সৌন্দর্য ও বিশাল আকৃতির মিষ্টিকুমড়া। এখানে ২৮ হাজার হেক্টর জমির মধ্যে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিই খাস ও ভেস্টেড প্রপার্টি। এতে যে প্রচুর পরিমাণ কৃষি খাদ্য উৎপাদন হত তাতে পুরো দেশের সাড়ে ১৭ কোটি মানুষের প্রায় আড়াই থেকে তিন দিনের খাদ্য চাহিদার যোগান দিত। কিন্তু আড়িয়াল বিল পাড়ের চারদিকে যে হারে অবৈধ ড্রেজার ও ড্রাম ট্রাক দিয় কৃষি ও খাস জমি ভরাট হচ্ছে, তাতে অল্প সময়ে এ বিশাল জলাভ‚মির কেন্দ্রস্থল ‘কংক্রিটের জঙ্গল’-এ পরিণত হবে।

জানতে চাইলে, পরিবেশ অধিদফতর, মুন্সীগঞ্জ উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, আড়িয়াল বিলে এ পর্যন্ত কোনো আবাসন প্রকল্পের অনুমতি আমরা দেইনি। অন্যগুলোর বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জানা যায়, ২০১১ সালে সরকার আড়িয়াল বিলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর তৈরীর পরিকল্পনা গ্রহণ করে। বিমানবন্দর নির্মাণের লক্ষ্যে ভ‚মি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু আড়িয়াল বিলের মানুষ তাদের পৈতৃক জমিতে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের সরকারের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন শুরু করে। বিল রক্ষায় তারা গঠন করেন আড়িয়াল বিল রক্ষা কমিটি। ২০১১ সালের ৩১ জানুয়ারি হাজার হাজার কৃষকসহ নারী-পুরুষ আড়িয়াল বিল রক্ষায় হাতে লাঠি হাতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ঢাকা মাওয়া মহাসড়কের নিমতলা থেকে শ্রীনগর ছনবাড়ী চৌরাস্তা পর্যন্ত প্রায় ৮ কি. মি. মহাসড়ক অবরোধ করে যানবাহন ভাঙচুর করে। সেই বিক্ষোভের ফলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাথে সংঘর্ষ হয়, যার ফলে একজন পুলিশ সদস্য প্রাণ হারান এবং শত শত আহত হয়। কিন্তু সমস্ত প্রতিক‚লতার বিপরীতে, তাদের আপোষহীন সংকল্প প্রতিফলিত হয় এবং সরকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্প পরিত্যাগ করতে বাধ্য হয়।

ওই সময় কৃষকরা প্রচÐভাবে তাদের কয়েক প্রজন্মের পৈত্রিক আড়িয়াল বিলের জমি আঁকড়ে ধরেছিল, তারাই এখন ভ‚মিদস্যুদের আবাসন কোম্পানির আর্থিক সুবিধার প্রস্তাবে প্রলুব্ধ হচ্ছেন। উচ্চমূল্যের প্রতিশ্রুতিতে প্রলুব্ধ হয়ে তারা এখন টাকার লোভে তাদের পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে নিচ্ছেন। এতে তাদের অজান্তেই বিলের পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে। গোটা আড়িয়াল বিল ভ‚মিদস্যুদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে। অবশ্য যারা জমি বিক্রি করতে চাচ্ছেন না তাদের নানাভাবে ভয় ভীতি দেখিয়ে এবং আশপাশের জমি ক্রয় করে তাদের জমি বিক্রিতে বাধ্য করছেন। স্থানীয় কৃষকরা জানান, যেভাবে আড়িয়াল বিলে উর্বর মাটি কেটে বিক্রি হচ্ছে অপর দিকে ড্রেজার দিয়ে ভরাট হচ্ছে ফলে বেশীরভাগ অংশের কৃষি জমিই আর থাকবে না।

সরেজমিন ঘুরে অনুসন্ধান করে দেখা যায়, ঢাকা টু মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে, স্বপ্নের পদ্মাসেতু ও রেলওয়ে নির্মাণে এই অঞ্চলের জমির মুল্য কয়েকগুন বেড়ে গেছে। ভ‚মিদস্যুরা বেশি দামে জমি ক্রয় করে গড়ে তুলেছেন ছোট বড় শতাধিক হাউজিং কোম্পানির অপরিকল্পিত নগরায়ন। আড়িয়াল বিলে গড়ে তুলেছে রয়েল প্রপারটিস, রয়েল, ধরিত্রী এবং এক্সপ্রেসওয়ের পূর্ব পাশে ঠিকানা, প্রিমিয়াম ভ্যালি,কৃষ্ণচূড়া নামে পরিবেশের ছাড়পত্রহীন নামে-বেনামে অর্ধশতাধিক হাউজিং কোম্পানি। অথচ এখানকার তিন-চতুর্থাংশ মানুষ সরাসরি কৃষিকাজের সাথে জড়িত। বর্তমানে কৃষি জমি ভরাট করে অপরিকল্পিত আবাসন প্রকল্প ও নগরায়নের ফলে ক্রমশ কমছে উপজেলার এসব আবাদি জমির পরিমাণ।

অনেকেই বলে থাকেন- কৃষি জমির পরিমাণ কমে যাওয়ার পেছনে জনসংখ্যা বৃদ্ধি দায়ী। কিন্তু বাস্তব প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অপরিকল্পিত শিল্পায়ন ও নগরায়নের জন্য আবাদি জমি অকৃষিতে পরিণত হচ্ছে। এভাবে কৃষি জমি কমতে থাকলে ৬৮ শতাংশ মানুষের জীবন-জীবিকা চরম হুমকির মুখে পড়বে। এলাকার লোকজন মনে করেন, এভাবে যদি আবাদি জমি অকৃষি খাতে চলে যেতে থাকে এবং কৃষি জমি অনাবাদি হয়, তবে বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে-যা আমলে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। বিভিন্ন কোম্পানি প্রায় সারা দেশেই শত শত বিঘা জমি কিনছে। এতে কৃষকরা ভ‚মিচ্যুত হচ্ছে। কোম্পানিগুলো প্রথম দিকে কৃষি কাজের নাম করে কেনা জমিতে গাছপালা রোপণ বা বপন করে। পরে জমিটিতে মাটি ভরাট করে অন্য কাজে লাগায়। এভাবে চলতে থাকলে আড়িয়াল বিল তার প্রকৃত চরিত্র হারিয়ে কংক্রিটের আবাসভ‚মি হয়ে যাবে।

সরেজমিনে আড়িয়াল বিল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শুষ্ক মৌসুমে ভ‚মিদস্যুরা স্থানীয় কৃষকদের লোভ দেখিয়ে তাদের কৃষি জমি থেকে মাটি কেটে বিশালাকৃতির স্তুপ রেখে বর্ষা মৌসুমে শত শত বড় ট্রলার যোগে দেশের বিভিন্ন ইট ভাটা ও ভাড়াবাড়ীতে নিয়ে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছি এসব সিন্ডিকেটের সদস্যরা। বাঘড়া ইউনিয়নের রুদ্রপাড়া ছত্রভোগ, কাঠালবাড়ী, বাড়ৈখালী ইউনিয়নের মদনখালী, বাড়ৈখালী, শ্রীধরপুর, হাসাড়া ইউনিয়নের আলমপুর, লস্করপুর, শ্যামসিদ্ধি ইউনিয়নের গাদিঘাট, শ্যামসিদ্ধি, ষোলঘর ইউনিয়নের সমসাবাদ, কেয়টখালী, উমপাড়া বিলের অংশে মাটি ব্যবসায়ীরা শুষ্ক মৌসুমে ভেকু দিয়ে কৃষি জমির উর্বর মাটি কেটে বিশালাকার স্তুপ করে রাখে বর্ষা মৌসুমে প্রতিদিন শত শত বড় ট্রলার যোগে বিক্রি করে থাকে। রাঢ়ীখাল ইউনিয়নের উত্তর বালাশুর বাঘাডাঙ্গা, শ্যামসিদ্ধির গাদিঘাট, ষোলঘরের সমসাবাদ, কেয়টখালী উমপাড়া, পুটিমারা, হাসাড়ার আলমপুর, লস্করপুর, আলমপুর আড়িয়াল বিলের ড্রেজার দিয়ে কৃষিজমি ভরাট করছে সেন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা। আড়িয়াল বিল পাড়ের কৃষক মো. মোসলেম ঢালী জানান, আড়িয়াল বিলে আমরা মাছসহ প্রচুর ফসল উৎপাদন করি। আমরা বিলের কৃষি জমিতে ফসল আবাদ করে জীবন জীবিকা চালাই। যেভাবে আমাদের এই অঞ্চলে কৃষি জমি ভরাটের হিড়িক পড়েছে তাতে কয়েক বছরের মধ্যেই আড়িয়াল বিলটাকে আমরা হারাবো। চুর্দিকে ভরাটের কারনে এখনিতো বিলে পানি আসতে পারে না। এখন বর্ষা মৌসুম বিলে আগের মত পানি নেই।

বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. ইকবাল হোসেন মাস্টার বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন ১ ইঞ্চি কৃষিজমিও ভরাট করা যাবে না। এমন কি ফসলি জমিতে অনুমতি বাড়ীঘর নির্মাণ করা যাবে না। অথচ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আড়িয়াল বিলে থোরাইকেয়ার করছে ভ‚মিদস্যুরা। তারা ধানি জমি ক্রয় করে হাউজিংয়ে মেতে উঠেছে।

আড়িয়াল বিল দেশের বিশাল একটি সম্পদ। এখানে বিপুল পরিমান মাছ, শস্য ও ধান আবাদ হয়। এটাকে কোন ভাবে নষ্ট করা উচিত নয়। এই বিলকে আমাদের সকলের রক্ষণাবেক্ষন করা উচিৎ। তানাহলে আমাদের ভবিষৎ প্রজন্ম হুমকির মুখে পড়বে। জানতে চাইলে, শ্রীনগর উপজেলা নির্বহী অফিসার মোহাম্মদ হোসেন পাটওয়ারী বলেন, ইতিমধ্যে আমরা অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ ড্রেজার গুলোর সংযোগ বিছিন্ন করেছি এবং কিছু কিছু ড্রেজার মালিকদের ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করছি। বাকী গুলোর খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

এদিকে আড়িয়ল বিলে আবাসনের নামে বালি ও মাটি ভরাট, স্থাপনা নির্মাণ এবং অবিলম্বে দখল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালকের (এনফোর্সমেন্ট) প্রতি এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত ১৪ আগস্ট মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের বেঞ্চ গতকাল এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান।

শুনানি শেষে রুলে আড়িয়ল বিল সংরক্ষণে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না এবং আড়িয়ল বিলে অবৈধ দখল, ভরাট, স্থাপনা অপসারণ ও বিলটি সংরক্ষণের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। পরিবেশ সচিব, গণপূর্ত সচিব, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) চেয়ারম্যান, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট), মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, শ্রীনগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর ও সিরাজদিখান উপজেলার অন্তর্গত আড়িয়ল বিলের বিভিন্ন পয়েন্টে রয়েছে সহস্রাধিক মাটির স্ত‚প। শুষ্ক মৌসুমে ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে এসব স্ত‚প তৈরি করা হয়েছে। পরে এ মাটি বিভিন্ন ইটভাটায় লাখ লাখ টাকায় বিক্রি করে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। অন্যদিকে ভ‚মিদস্যুরা রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নামে বিলের কিছু অংশ অধিগ্রহণ করেছে। আইন লংঘন করে সে ফসলি জমিতে বালি দিয়ে ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করছে। কিন্তু প্রশাসন সব জেনেও এ ধরনের বেআইনি কর্মকাÐের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ##


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

গোল উৎসবে নেশন্স কাপে উড়ন্ত সূচনা জার্মানির

গোল উৎসবে নেশন্স কাপে উড়ন্ত সূচনা জার্মানির

জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু

জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু

পোপের ১৫৪ রানের পরেও ইংল্যান্ডের ৩২৫,কামিন্দু-সিলভায় লংকানদের লড়াই

পোপের ১৫৪ রানের পরেও ইংল্যান্ডের ৩২৫,কামিন্দু-সিলভায় লংকানদের লড়াই

স্কটল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

স্কটল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

মানিকগঞ্জে ইছামতী নদীতে থেকে মরদেহ উদ্ধার

মানিকগঞ্জে ইছামতী নদীতে থেকে মরদেহ উদ্ধার

‌'শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কঠাগড়ায় দাঁড় করাতে হবে'

‌'শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কঠাগড়ায় দাঁড় করাতে হবে'

শেষ ম্যাচও জিততে চায় বাংলাদেশ

শেষ ম্যাচও জিততে চায় বাংলাদেশ

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে

আইওসির কোচিং কোর্সে বাংলাদেশের মাহফিজুল

আইওসির কোচিং কোর্সে বাংলাদেশের মাহফিজুল

নাটোরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ শুরু

নাটোরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ শুরু

পটিয়ায় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদ্ন্নুবী অনুষ্ঠিত

পটিয়ায় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদ্ন্নুবী অনুষ্ঠিত

মীরসরাইয়ে কমছে পানি তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন

মীরসরাইয়ে কমছে পানি তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না

নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব

নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব

নেমে গেছে বানের পানি স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন

নেমে গেছে বানের পানি স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন

সভাপতি শওকত সম্পাদক মানিক

সভাপতি শওকত সম্পাদক মানিক

সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৬ গ্রামবাসী

সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৬ গ্রামবাসী

বাড়িভিটা হারিয়ে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

বাড়িভিটা হারিয়ে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

ভয়াবহ বন্যায় কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সর্বনাশ

ভয়াবহ বন্যায় কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সর্বনাশ

মাদরাসা শিক্ষার সংস্কার : একটি পর্যালোচনা

মাদরাসা শিক্ষার সংস্কার : একটি পর্যালোচনা