বাবর-ইফতিখারে দাপুটে শুরু পাকিস্তানের
৩০ আগস্ট ২০২৩, ১১:৫০ পিএম | আপডেট: ৩১ আগস্ট ২০২৩, ১২:০১ এএম
অপেক্ষায় পালা শেষ। অবশেষে জোড়া রেকর্ডে পর্দা উঠল এশিয়ান ক্রিকেটের সর্বোচ্চ টুর্নামেন্ট এশিয়া কাপের। বিশ্বকাপের পর এশিয়ার সবচেয়ে বড় মর্যাদার আসর এই টুর্নামেন্ট। হাইব্রিড মডেলে এবারের এশিয়া কাপের যৌথ আয়োজক পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। তবে প্রথম চারটি ম্যাচ ছাড়া বাকি সবগুলোই অনুষ্ঠিত হবে শ্রীলঙ্কায়। গতকাল বিকাল ৩টায় মুলতান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১৫বছর পর পাকিস্তানে ফেরা এশিয়া কাপের ৩০ মিনিটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পারফর্ম করেন উপমহাদেশের অস্কারজয়ী বিখ্যাত সংগীত শিল্পী ও সুরকার এ আর রহমান ও পাকিস্তানের খ্যাতিমান শিল্পী আতিফ আসলাম। এছাড়াও ট্রেডিশনাল এশিয়ান মিউজিক ও নৃত্য পরিবেশনা ছিল অনুষ্ঠানে। যেখানে পাকিস্তানের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শেষে ছিল আতশবাজির ঝলকানি ও ড্রোন শো। এরপরই শুরু হয় স্বাগতিক পাকিস্তান ও নেপালের মধ্যকার উদ্বোধনী ম্যাচ। যে ম্যাচে অধিনায়ক বাবর আজম ও মিডল অর্ডার ব্যাটার ইফতিখার আহমেদের রেকর্ডে নেপালকে ২৩৮ রানে হারিয়ে দাপুটে শুরু করে পাকিস্তান। ফর্ম ধরে রেখে বাবর আজম পান এবারের আসরের প্রথম সেঞ্চুরি। আর অন্যপ্রান্তে ইফতিখার আহমেদ করেন বিধ্বংসী সেঞ্চুরি। তাদের কল্যাণেই দুই রেকর্ডগড়া বিশাল জয় তুলে নেয় স্বাগতিকরা।
উদ্বোধনী ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম। ব্যাটিংয়ে নেমে বাবর ও ইফতেখারের শতকের উপর ভর করে নির্ধারিত ৫০ওভারে ৬ উইকেটে ৩৪২ রান তুলে পাকিস্তান। উইকেট কিছুটা শুষ্ক ও চকচকে হওয়ায় ২৫ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারায় পাকিস্তান। এরপর প্রথমে তৃতীয় উইকেটে মোহাম্মাদ রিজওয়ানকে নিয়ে ১০৬ বলে ৮৬ রানের জুটি গড়েন বাবর। রিজওয়ান ৪৯ বলে ৪৪ রান করে রান আউটের শিকার হওয়ার পর দ্রুত ফেরেন আগা সালমানও (১৪ বলে ৫)। তবে সেঞ্চুরির পথে বাবর ও ইফতিখার কচুকাটা করেন তুলনামূলক দুর্বল নেপালী বোলারদের। তিনে ব্যাট করতে নেমে বাবর ১৫১ রানের ইনিংস খেলেন ১৩১ বল মোকাবিলায়। শেষ ওভারে ক্যাচ দিয়ে আউট হওয়ার আগে নিজের ইনিংসে তিনি মারেন ১৪টি চার ও চারটি ছক্কা। এশিয়া কাপে পাকিস্তানের কোনো ব্যাটারের এটিই সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের রেকর্ড। আগের কীর্তিটি ছিল ইউনিস খানের দখলে। ২০০৪ সালে কলম্বোতে হংকংয়ের বিপক্ষে ১২২ বলে ১৪৪ রান করেছিলেন ইউনিস। ক্যারিয়ারে এটি বাবরের ১৯তম সেঞ্চুরি। তিনি ১০৪ ওয়ানডের ১০২ ইনিংসে এই কীর্তি করেন। পাকিস্তানের পক্ষে ওয়ানডেতে বাবরের চেয়ে বেশি সেঞ্চুরি আছে কেবল একজনের। সাবেক ওপেনার সাঈদ আনোয়ার ২৪৭ ম্যাচে ২০টি সেঞ্চুরি নিয়ে আছেন শীর্ষে। ৭২ বলে হাফসেঞ্চুরি করা বাবর তিন অঙ্কে পৌঁছান ১০৯ বলে। এরপর আগ্রাসী রূপ ধারণ করেন তিনি। পরের ফিফটি ছুঁয়ে ফেলতে তার খরচ হয় মাত্র ২০ বল। তবে ইনিংসের শেষ পর্যন্ত টিকতে পারেননি এই ব্যাটার। বাবরের পর এই ম্যাচে বিস্ফোরক কায়দায় ব্যাট করে ইফতিখার পান ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ। ছয়ে নেমে ৭১ বলে ১০৯ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। মাত্র ৬৭ বলে শতরান পূর্ণ করেন ইফতিখার। তার ইনিংসে ছিল ১১টি চার ও চারটি ছয়ের মার।
ম্যাচে ১২৪ রানে ৪ উইকেট পড়ার পর বাবর ও ইফতিখার জুটি বাঁধেন। ইনিংসের শেষভাগে তরতর করে রান বাড়াতে থাকেন এ দুইজন। তাদের মারমুখী ব্যাটিংয়ে শেষ ৮ ওভারে স্কোরবোর্ডে ১১৪ রান যোগ করে পাকিস্তান। বাবরের বিদায়ে ভাঙে ইফতিখারের সঙ্গে তার ২১৪ রানের জুটি। মাত্র ১৩১ বলে এই রান করেন তারা। এশিয়া কাপে এটি সব মিলিয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ ও পঞ্চম উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। পঞ্চম উইকেটে আগের রেকর্ড জুটি ছিল পাকিস্তানেরই উমর আকমল ও শহিদ আফ্রিদির দখলে। ২০১০ সালে ডাম্বুলায় বাংলাদেশের বিপক্ষে তারা করেছিলেন ১৩৭ রান।
নেপালের হয়ে সোম্পাল কামি ৮৫ রান খরচায় নেন ২ উইকেট। সোম্পালের বলেই শেষ ওভারে লং অফে ক্যাচ দিয়ে আউট হন বাবর। কারান কেসি ৫৪ রানে ও সন্দীপ লামিছনে ৬৯ রানে পান একটি করে উইকেট।
জবাবে জয়ের জন্য বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নেপাল ২৩.৪ ওভারে ১০৪ রানে অলআউট হয়ে যায়। ৩৪৩ রান, মাথার ওপর এমন পাহাড়সমান লক্ষ্য নিয়ে শুরুতেই পাকিস্তানি বোলারদের তোপের মুখে পড়েন নেপালী ব্যাটাররা। মাত্র ১৪ রান তুলতেই তারা হারিয়ে বসে ৩ উইকেট। জোড়া বাউন্ডারি খেয়ে শুরু করা শাহিন শাহ আফ্রিদি নিজের প্রথম ওভারের শেষ দুই বলে নেন উইকেট। নেপালের কুশাল ভুরটেল (৮) লেগ সাইডে বেরিয়ে যাওয়া বলে ব্যাট ছুঁইয়ে উইকেটরক্ষকের ক্যাচে পরিণত হন। পরের বলে এলবিডব্লিউ হন রোহিত পাওদেল (০)। পরের ওভারে নাসিম শাহকে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে আউটসাইডেজ হয়ে প্রথম স্লিপে ক্যাচ দেন আসিফ শেখ (৫)। এরপর প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন সোম্পাল কামি ও আরিফ শেখ। ৭৮ বল খেলে দলীয় সংগ্রহে তারা যোগ করেন ৫৯ রান। কিন্তু নিজের টানা দুই ওভারে হারিস রউফ এই দুই সেট ব্যাটারকেই ফিরিয়ে দিলে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে নেপালের ইনিংস। আরিফ ২৬ ও সোম্পাল ২৮ রান করে আউট হন। ফলে ২৩.৪ ওভারেই শেষ হয় নেপালী ইনিংস। পাকিস্তানের শাদাব খান ২৭ রানে নেন ৪টি উইকেট। শাহিন আফ্রিদি ২৭ ও হারিস রউফ ১৬ রানে পান দুইটি করে উইকেট। ম্যাচসেরার পুরস্কার পান পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
১৩ বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ
সাতক্ষীরা কালিগঞ্জে পটল চাষে বাম্পার ফলন
গফরগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় ছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু
শাহরাস্তিতে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু
পাকিস্তানে অবশেষে সরকার ও বিরোধী দলের আলোচনা শুরু
ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার ফোন
রানার অটোমোবাইলস পিএলসির এজিএম সম্পন্ন
আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ কাজের আহ্বান: এমরান আহমদ চৌধুরী
নকল পণ্য প্রতিরোধে আমদানির উপর শুল্ক কমানোর দাবি বাজারের ২০ শতাংশ খাদ্য মানহীন
লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে জনসম্মুখে যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, নাকে খত
বাঘায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ৪ ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ
বিশ্বে বছরজুড়ে আলোচনায় যুদ্ধ, নির্বাচন ও মূল্যস্ফীতি
যুক্তরাষ্ট্র আগুন নিয়ে খেলছে : চীন
আওয়ামী দুঃশাসনের বিচার না হলে জুলাই আগষ্টের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী হবে: ডা. জাহিদ হোসেন
মেক্সিকোতে প্লেন বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ৭
মাথাপিছু ১৪০০ ডলারের চেক পাচ্ছেন ১০ লাখ মার্কিনি
৯১ শিশু খেলোয়াড়সহ ৬৪৪ ক্রীড়াবিদকে হত্যা করেছে ইসরাইল
মোজাম্বিকে ঘূর্ণিঝড় চিডোরে নিহত ৯৪
মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে সম্মানহানী
রাফালের আগমনে ভারত সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি