এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দ্বার খুলল
০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৪ এএম
রাজধানীবাসীর বহুল কাক্সিক্ষত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (কাওলা) থেকে ফার্মগেট অংশের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল শনিবার রাজধানীর কাওলা অংশে ফলক উন্মোচন করে এক্সপ্রেসওয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সরকারপ্রধান। পরে দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন তিনি।
উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন তার ছোট বোন শেখ রেহানা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামসহ সরকার দলীয় নেতা এবং সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। এক্সপ্রেসওয়েতে প্রথম যাত্রী হিসেবে টোল দেন সরকারপ্রধান। বহরের ২৫টি গাড়ির জন্য দুই হাজার টাকা টোল দেন প্রধানমন্ত্রী। টোল দেওয়ার পর এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে আগারগাঁও বাণিজ্য মেলার মাঠের উদ্দেশে রওনা হন। বিকেল চারটার দিকে এক্সপ্রেসওয়ে পার হন বঙ্গবন্ধুকন্যা। এরপর বাণিজ্য মেলার মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সুধী সমাবেশে যোগ দেন। সেখানে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি প্রথম চুক্তি সইয়ের এক যুগ পরে নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে আলোর মুখ দেখলো এ প্রকল্প। আজ ৩ সেপ্টেম্বর ভোর থেকে এটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। ৬০ কিলোমিটার গতির একটি গাড়ি মাত্র ১০ মিনিটে কাওলা থেকে ফার্মগেট পৌঁছাতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রতিদিন প্রায় ৮০ হাজার যানবাহন ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে যেতে পারবে। এক্সপ্রেসওয়েটি রাজধানীর যানজট এবং যাতায়াতের খরচ অনেকাংশে কমিয়ে দেবে। এটি সম্পূর্ণভাবে নির্মাণ হলে রাজধানীর কাওলা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালীতে যাওয়া যাবে অল্প সময়ে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশ যান চলাচলে জন্য প্রস্তুত হয়েছে এ প্রকল্পের। এ অংশে ওঠা নামার জন্য মোট ১৫টি র্যাম্প থাকবে। এর মধ্যে এয়ারপোর্টে দুটি , কুড়িলে তিনটি, বনানীতে চারটি, মহাখালীতে তিনটি, বিজয় সরণিতে দুটি ও ফার্মগেটে একটি। এর মধ্যে ১৩ টি র্যাম্প যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। উত্তর হতে দক্ষিণ অভিমুখী যানবাহন উঠবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা; প্রগতি সরণি ও বিমানবন্দর সড়কের আর্মি গলফ ক্লাব হতে। নামবে বনানী কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ; মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে; ফার্মগেট প্রান্তে ইন্দিরা রোডের পাশে।
দক্ষিণ হতে উত্তর অভিমুখী যানবাহন উঠবে বিজয় সরণি ওভারপাসের উত্তর এবং দক্ষিণ লেন; বনানী রেল স্টেশনের সামনে থেকে। নামবে মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে; বনানী কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ের সামনে বিমানবন্দর সড়ক, কুড়িল বিশ্বরোড ও বিমানবন্দর ৩য় টার্মিনালের সামনে। তবে মহাখলীতে একটি ওঠার র্যাম্প ও বনানীতে সড়ক ভবনের পাশের ওঠার র্যাম্প আপাতত বন্ধ থাকছে।
নতুন এ উড়াল সড়কে চার চাকার গাড়ি চললেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে দুই ও তিন চাকার বাহন। এ কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজধানীর মোটরসাইকেল চলকরা। রাজধানীতে মোটরসাইকেল চালকদের সঙ্গে কথা বলে এ ক্ষোভের কথা জানা যায়। তারা বলছেন, অন্তত মোটরসাইকেল চালকদের জন্য আলাদা একটি লেন করে দিলে ভালো হয়। এতে নিয়ম মেনে তারা বাইক চালাতে পারবেন। যানজটে দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকতে হবে না।
উত্তরার বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, মোটরসাইকেলে উত্তরা থেকে ফার্মগেট বা কারওয়ান বাজারের দিকে যেতে অন্তত দেড় ঘণ্টা সময় লাগে। নতুন এ উড়াল সড়ক ঢাকাবাসীর জন্য আশীর্বাদ। মোটরসাইকেল চলতে দেওয়া উচিত ছিল, বাইকারদের জন্য আলাদা লেন করা উচিত ছিল। সেতু কর্তৃপক্ষের কোনো নির্দেশনা থাকলেও সেটি মোটরসাইকেল চালকরা অবশ্যই মানবেন।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবী এক ব্যক্তি বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হওয়ায় আশা করি আর জ্যামে পড়তে হবে না। টোল নির্ধারণ করলে তো বাসের ভাড়া বাড়ে। সেটাও সরকারের মনিটরিং করা উচিত। আবার এটাও ঠিক টোল দিয়ে এই এক্সপ্রেসওয়ে যানজট ছাড়া চলাচল করতে পারলে সেখানে আপত্তি থাকে না। তাই টোলের সঙ্গে সঙ্গে সেবাটাও যেন নিশ্চিত করা হয়।
পরিবহন বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক শামসুল হক বলেন, এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল গেলে ইনডিসিপ্লিন বিহেভিয়ার (বিশৃঙ্খল আচরণ) করার সুযোগ থাকে। এতে অন্য গাড়িগুলো বিপদের সম্মুখীন হতে পারে। যদি একটা দুর্ঘটনা ঘটে এবং রাস্তা চার ঘণ্টা বন্ধ থাকে তাহলে কিন্তু প্রাইভেট ইনভেস্ট যে করেছে, তার ক্ষতি হবে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের জন্য যে টোলহার নির্ধারণ করা হয়েছে সেটি নিয়ে তেমন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। যদি সার্ভিস ঠিক থাকে তাহলে এটা খুব বেশি সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে করা হয়েছে মুক্তভাবে যাতায়াতের জন্য, কিন্তু দেখা যায় সেখানে যানজটমুক্ত নয়। সমস্যা যেটি থাকে সেটি থেকেই যায়। যাত্রীরা সেবা পায় না, ফলে মূল সমস্যাগুলোর সমাধান হয় না। অনেকসময় টোলের অজুহাতে বাসভাড়া বাড়িয়ে দেওয়া হয়, এ বিষয় মনিটরিং করতে হবে। তাহলে যাত্রীরা এর সুবিধা পাবে। ###
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
প্রোটিয়াদের হোয়াইট ওয়াশ করে পাকিস্তানের ইতিহাস
৯ গোলের উৎসবে লিভারপুলের বড় জয়
বড়দিনের ছুটির আগে রিয়ালের বড় জয়
ঘরের মাঠেই বিধ্বস্ত ইউনাইটেড
গোলশূন্য ড্রয়ে থামল চেলসির জয়রথ
এনার্জিপ্যাকের বার্ষিক সাধারণ সভায় ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ
আমার খাবার কি ফর্টিফায়েড?
হাসিনা পরিবারের নামে ১৩ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসি তাকিয়ে আছে সরকারের দিকে
ব্র্যাক ব্যাংকের রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন
দিনাজপুর জেলা শিক্ষা অফিসারের বিদায়ী সংবর্ধনা
নরসিংদীর শিবপুরে প্লাস্টিক কারখানা আগুনে পুড়ে ছাই
ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স শূন্য যে ১০ ব্যাংকে
বিএনপি নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় আসতে চায় না: আব্দুস সালাম
সরকারের আশ্বাসে শাহবাগ থেকে সরে গেলেন বিএসএমএমইউ ট্রেইনি চিকিৎসকরা
সাকাকে হারিয়ে চিন্তিত আর্সেনাল কোচ
৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাব জমা হবে : বদিউল আলম মজুমদার
সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বদলী
মানিকগঞ্জের ঘিওরে ছাত্রদল নেতা লাভলু হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন
বঙ্গবাজার পুড়ে যাওয়া মামলায় একজন গ্রেফতার
জনগণের প্রত্যাশা পূরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ধীর গতিতে চলছে: আমিনুল হক