এক দফার আন্দোলনে রাজপথে নেমে আসুন
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ এএম
সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের এক দফার আন্দোলনে সকল বিরোধী রাজনৈতিক দলকে রাজপথে নেমে আসা আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আজকে বড় দল, ছোট দল, মাঝারি দল- এটা বড় কথা নয়।
বিএনপি, নাকি নাগরিক ঐক্য, নাকি গণসংহতি আন্দোলন, না গণতন্ত্র মঞ্চ- এটা বড় কথা নয়, আমাদের দেশ, আমাদের মানুষ আজকে বিপদগ্রন্থ, বিপন্ন। এদের অস্তিত্বকে রক্ষা করার আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব নিয়ে আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা আসুন গণতান্ত্রিকভাবে শান্তিপূর্ণভাবে আমরা রাজপথে নেমে পড়বো। যেখান থেকে উচ্চারিত কণ্ঠে আমরা উচ্চারণ করব আর নয়- এক দফা দাবি, তুমি যাও। ইনাফ ইজ ইনাফ। এখন দয়া করে ছেড়ে দিয়ে জনগণের একটা রাষ্ট্র, জনগণের একটা পার্লামেন্ট, জনগণের সমাজ তৈরি করার ব্যবস্থা করে দাও। অন্যথায় পালাবার পথটা খুঁজে পাবে না। আসলে পায় না কিন্তু। অতীতে দেখবেন ডিক্টেটররা কিন্তু পালাবার পথ খুঁজে পায়নি।
গতকাল মঙ্গলবার সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে গণসংহতি আন্দোলনের ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘গণতন্ত্রের সংগ্রাম ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ৩১ দফা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নেতা-কর্মীদের অভিনন্দন জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে তরুণ যুবকেরা আছেন এই সাকির (জোনায়েদ সাকি) দলে এবং অনেকে আছেন তরুণ যুবক, তারা সামনে এগিয়ে এসেছেন। আমি অন্তরের অন্তরস্থল থেকে চাই যে, তারা আরো বিস্তৃত হোক, তাদের সংগঠন আরো বড় হোক, তারা গণমানুষের মধ্যে চলে যাক। মানুষকে তারা জাগিয়ে তুলক। সত্যিকার অর্থে একটা শোষনহীন একটা সমাজ ব্যবস্থা নির্মাণ করুনৃএটা আমি আন্তরিকভাবে চাই। আমি বিশ্বাস করি যে, একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ছাড়া সেটা সম্ভব নয়। সেই গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করতে হলে আমাদেরকে এখনই সময়। আর কোনো দেরি করার একমূহুর্ত দেরি করা না।
তিনি বলেন, আজকে সেই সময় এসেছে। আমাদের জনগনকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। আমি খুব আনন্দিত হই, প্রথমবারের মতো আজকে আমরা এখানে যা আছি তার বাইরেও যারা আছেন আমরা সবাই এক হয়েছি একটি দাবি যে, সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। একটা নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে সেখানে নতুন নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসা করতে না দেয়া সরকারের প্রতিহিংসার কথাও তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই সরকারের গুনকীর্তন করার তো দরকার নেই। আপনি যেকোনো সাধারণ মানুষকে ডেকে নিয়ে বলেন, দেখেন এই সরকারকে সমর্থন করার চিন্তা, বলবে যাবে কবে সেটা বলেন। মানুষ আমাদের কাছে সেই প্রশ্ন করে না যে, সরকার এই এই কাজ খারাপ করলো কেনো। মানুষ আমাদের কাছে প্রশ্ন করে ভাই যাবে কবে?
তিনি বলেন, এখন দেশের এবং বাইরের সমস্ত শক্তি তার বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগ আমাদের সাথে রাজনৈতিক যুদ্ধে হেরে গেছে, আওয়ামী লীগ একটা ঘৃণিত দল। তারা দেশের মধ্যে দেশের বাইরে বিশ্বের কাছে ঘৃণিত। সারা পৃথিবী এখন তার পদত্যাগ চায়, খালি আমরা? সবাই পদত্যাগ চায়। আমরাও পদত্যাগের জন্য একদফা নিয়ে লড়াই করছি।
জাতীয় গণফ্রন্টের সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস বলেন, আমরা জাতীয় গণফ্রন্ট চায় এই সরকারের পদত্যাগ এবং সংসদ বাতিল। কিন্তু আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তাকে বিদায় দিতে হবে। সে হাটু গেড়ে বসবে এটা মনে করার কোনো কারণ নেই। তাকে (আওয়ামী লীগ সরকার) অভ্যুত্থানের শক্তির দ্বারা অভ্যত্থানের মধ্য দিয়ে উৎখাত করতে হবে, তাড়াতে হবে, বিদায় দিতে হবে, সরিয়ে দিতে হবে। আর কোনো বিকল্প আছে বলে মনে করি না। ওদের শুভ বুদ্ধি উদয় হবে কি হবে না জানি না। শুভবুদ্ধির জন্য আমাদের বসে থাকা ঠিক নয়। বরং পাল্টা আক্রমণ আসতে পারে তা প্রতিহত করার জন্য আমাদের ঐক্য আরও ব্যাপক বিস্তৃত ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান জোনায়েদ সাকি বলেন, লাখ লাখ মানুষের রক্তের মধ্য দিয়ে এই রাষ্ট্রটা নির্মাণ হয়েছে সেই রাষ্ট্র আজকে টিকে থাকবে কিনা সেই রকম ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে বর্তমান শাসকরা। আওয়ামী লীগ অবৈধ ক্ষমতাকে কুক্ষিগত রাখতে গিয়ে বাংলাদেশকে তার স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের দিক থেকে আজকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে, হুমকির মধ্যে ফেলেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে আমাদের রাষ্ট্রটাকে একটা দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে একটা নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে তৈরি করে এই জায়গা নিয়ে এসছে। তারা শুধু জনগণের অধিকার হরণ করেছে তাই নয়, জনগণের সম্পদ লুট করে এদেশকে দেউলিয়ার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। জনগোষ্টির মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে পুরো রাষ্ট্রকে তার অস্তিত্বের দিক থেকে হুমকির মধ্যে ফেলেছে। সরকারের পতন ও এদেশকে রক্ষা করার ‘এক বিষয়’ পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে সরকার হটিয়ে রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কার করতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
গনসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারীর সভাপতিত্বে সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য জুলহাসনাইন বাবু‘র সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, জাসদের নাজমুল হক প্রধান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, ভাসানী অনুসারি পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলে ফয়জুল হাকিম লালা, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গণসংহতি আন্দোলনের আবুল হাসান রুবেল প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।###
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
রোমাঞ্চকর ম্যাচে বার্সাকে হারিয়ে শীর্ষে আতলেটিকো
জেসুসের জোড়া গোলের রাতে আর্সেনালের বড় জয়
বিলুপ্তির পথে মাটির ঘর
চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
প্রতিবন্ধী স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ
কেরু চিনিকলে আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন
বিহারিরা কেমন আছে
লক্ষ্মীপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি
আসাদ সরকারের পতন : নতুন সিরিয়ায় ইসরাইলি আগ্রাসন
মেটলাইফ বাংলাদেশের গ্রাহকরা ডিসকাউন্ট পাবেন ওশান প্যারাডাইস হোটেলস ও রিসোর্টে
১৫ নারী ও শিশুকে হস্তান্তর
আবাসন ও গার্মেন্ট খাতের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে
মেহেরপুরে বেড়েছে গরম কাপড় বিক্রি
কাশিয়ানীর হাট-বাজার নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব
অ্যানুয়াল বিজনেস কন্টিনিউয়িটি প্ল্যান ড্রিল ২০২৪ আয়োজন করলো ব্র্যাক ব্যাংক
সমস্যায় জর্জরিত আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
সবুজ গালিচায় হলুদের সমারোহ
আখাউড়ায় ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মেধা বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
নিউ ইয়র্কের আদালতে অভিযুক্ত লুইজি
কিউবায় সমাবেশ