ভাঙ্গা থেকে পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকা আসবে নতুন ট্রেন
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ এএম
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আজ রাজবাড়ী থেকে ট্রায়াল স্পেশাল ট্রেন রাজবাড়ী থেকে ছেড়ে এসে ফরিদপুর স্টেশন (প্রস্তাবিত জংশন) ধরে ভাঙ্গা স্টেশন থেকে সরাসরি পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা কমলাপুর স্টেশন পৌঁছাবে।
পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ঢাকা-ভাঙ্গা ৮২ কিলোমিটার রেললাইনে আনুষ্ঠানিক ট্রায়াল রান হবে এদিন। ট্রায়াল রানের উদ্দেশ্যে আসা স্পেশাল ট্রেন বর্তমানে রাজবাড়ী স্টেশনে অবস্থান করছে। আজ সুবিধাজনক সময়ে কমলাপুর স্টেশনের উদ্দেশ্যে রাজবাড়ী ছেড়ে যাবে।
২০ আগস্ট সকাল সাড়ে ৫টার সময় ভাঙ্গা থেকে পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকা যায় নতুন ট্রেন আন্তঃনগর। আবার দুপুরে ফিরে আসা ঢাকা থেকে ভাঙ্গায়। নতুন ট্রেন চলাচল করতে দেখে সাধারণ মানুষের মধ্যে বইছে উৎসবের আমেজ। সংশ্লিষ্টদের থেকে জানা গেছে, ১ সেপ্টেম্বর এই এসিযুক্ত নতুন ট্রেন দিয়ে উদ্বোধন করা হয়।
পাকশি-রাজবাড়ি রেল সূত্র থেকে জানা যায়, আগামী ১০ দিন পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন লাইনটির পূর্ণাঙ্গ উদ্বোধন করবেন। এজন্য রেল কর্মকর্তারা বারবার ট্রায়াল দিয়ে রাজবাড়ী-ফরিদপুর-ভাঙ্গা থেকে পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকা পর্যন্ত যাচ্ছেন। আবার ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত আসছেন।
এ বিষয়ে ভাঙ্গা ট্রেন স্টেশন মাস্টার মো. শাজাহান ইনকিলাবকে জানান, ১৯ আগস্ট রাত ১১টার দিকে ঈশ্বরদী থেকে ৬টি বগিবিশিষ্ট নতুন ১টি ট্রেন আনা হয়েছে। ২০ আগস্ট সকাল ৫টা ২৫ মিনিটে ভাঙ্গা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। এরপর সকাল সাড়ে ৮টার সময় ঢাকা থেকে ভাঙ্গার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। দুপুর সাড়ে ১২টার সময় ঐ ট্রেনটি ভাঙ্গায় আসে। সেটি ফের বেলা সাড়ে ৩টার সময় ভাঙ্গা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। তবে পথে পথে বিভিন্ন স্থানে থামিয়ে অবস্থান করে। যেখানে সমস্যা মনে করে, তারা সেখানে তারা ট্রেনটি দাঁড় করিয়ে রেখে কাজ সম্পন্ন করে। ট্রেনলাইনে শতশত শ্রমিক কাজ করছে, পাথর দিচ্ছে, সমস্যা মনে করলে সমাধান করছে। ট্রায়াল রান পরিদর্শন করেন সিআরইসিসহ রেলের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা। পরে তারা সিআরইসি অফিস ও রেললাইন ওয়ার্কশপসহ কাজের অগ্রগতির পরির্দশন করেন।
তিনি আরো জানান, আগামী মাসের এক তারিখে বা প্রথম সপ্তাহের যে কোনো দিন ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত চলাচল করবে ট্রেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করবেন।
একটি বিশ্বস্ত সূত্র আরো জানান, ফরিদপুরের ভাঙ্গার বামনকান্দায় নির্মিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের রেলস্টেশন এবং বামনকান্দা হবে যশোর জংশন। এখানে কর্মকা- পুরোদমে এগিয়ে চলছে। আগামী ২০২৪ সালের জুন মাসে ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত ৮৭ কি. মি. সেপ্টেম্বর ট্রায়াল রান করাতে পারবে।
স্থানীয় বাসিন্দা রাকিব হাসান ইনকিলাবকে বলেন, ভাঙ্গায় ট্রেন চলাচল দেখে খুবই ভালো লাগছে। আমাদের এলাকা ব্যাপক উন্নয়ন হবে। আমাদের এলাকার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন ঘটবে। ট্রেন চলাচল শুরু হলে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন ঘটবে শতভাগ।
নতুন ট্রেনে করে গেলেন, পদ্মা রেল প্রকল্প, চায়না ইঞ্জিনিয়ার, সেনাবাহিনী ও রেলওয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ ট্র্যায়েল রান পরির্দশন করার সময় উপস্থিত ছিলেন।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা স্টেশন থেকে পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকার গেন্ডারিয়া স্টেশন পর্যন্ত পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানোর উদ্দেশ্যে ৫টি চাইনিজ কোচের ট্রায়াল ট্রেন ভাঙ্গা থেকে যাত্রা শুরু করেছে আগে থেকেই। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে নয় পরীক্ষামূলক।
আজ গেন্ডারিয়া থেকেও ভাঙ্গা পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ট্রায়াল হবে। মোটকথা সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আজ ঢাকা-ভাঙ্গা রুটে পদ্মা সেতু হয়ে অফিসিয়াল ট্রায়াল হতে যাচ্ছে এবং নতুন রেল চলবে। রেল চলাচলের নতুন আমদানি করা চাইনিজ কোচের ৭/১৪ লোডের একটি রেক আমেরিকান ৬৬ সিরিজের লোকোমোটিভ নিয়ে ট্রায়াল অনুষ্ঠিত হবে।
এরআগে দুইবার ট্রায়াল হলেও, এটা অফিসিয়াল ট্রায়াল হতে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, সফল ট্রায়াল শেষে খুব দ্রুতই স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে রেল চলাচল নিয়মিতভাবে শুরু হবে।
পদ্মা সেতুতে আগামী ১০ অক্টোবর থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। তিনি বলেন, ১০ অক্টোবর পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার রেলপথের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত রোববার সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য জানান তিনি নিশ্চিত করেন বলে ফরিদপুর ও ভাঙ্গার স্টেশন মাস্টারদ্বয় বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করার সপ্তাহখানেক পর থেকে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল শুরু হবে। এরমধ্যে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৯টি স্টেশন ধরা হবে। তবে শুরুতে তিনটি স্টেশন (মাওয়া, জাজিরা ও শিবচর) ট্রেন থামতে পারে। শুরুতে পদ্মা সেতুতে প্রতিদিন একটি ট্রেন চলতে পারে। ভাঙ্গা-রাজশাহী রুটের ‘মধুমতি এক্সপ্রেস’ পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা পর্যন্ত চলতে পারে।
উল্লেখ্য, পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকার কমলাপুর থেকে যশোর পর্যন্ত মোট ১৭২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০২৪ সালের জুন মাসের মধ্যে যশোর পর্যন্ত ট্রেন চলবে বলেও আশা করা যায়।
গত আগস্ট মাস পর্যন্ত প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৮২ শতাংশ। ৩৪ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা ব্যয় ধরে প্রকল্পটি ২০১৬ সালের ৩ মে অনুমোদন করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ২২ মে সংশোধনী প্রস্তাবে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। জিটুজি (সরকারের সঙ্গে সরকারের) ভিত্তিতে প্রকল্পের কাজ করছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ (সিআরইসি)। নতুন ট্রেন চলাচলের বিষয় নিয়ে ফরিদপুরের অঞ্চলের মানুষের মধ্যে ঈদ আনন্দ বইছে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
রোমাঞ্চকর ম্যাচে বার্সাকে হারিয়ে শীর্ষে আতলেটিকো
জেসুসের জোড়া গোলের রাতে আর্সেনালের বড় জয়
বিলুপ্তির পথে মাটির ঘর
চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
প্রতিবন্ধী স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ
কেরু চিনিকলে আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন
বিহারিরা কেমন আছে
লক্ষ্মীপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি
আসাদ সরকারের পতন : নতুন সিরিয়ায় ইসরাইলি আগ্রাসন
মেটলাইফ বাংলাদেশের গ্রাহকরা ডিসকাউন্ট পাবেন ওশান প্যারাডাইস হোটেলস ও রিসোর্টে
১৫ নারী ও শিশুকে হস্তান্তর
আবাসন ও গার্মেন্ট খাতের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে
মেহেরপুরে বেড়েছে গরম কাপড় বিক্রি
কাশিয়ানীর হাট-বাজার নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব
অ্যানুয়াল বিজনেস কন্টিনিউয়িটি প্ল্যান ড্রিল ২০২৪ আয়োজন করলো ব্র্যাক ব্যাংক
সমস্যায় জর্জরিত আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
সবুজ গালিচায় হলুদের সমারোহ
আখাউড়ায় ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মেধা বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
নিউ ইয়র্কের আদালতে অভিযুক্ত লুইজি
কিউবায় সমাবেশ