থমকে আছে তদন্ত জড়িতরা অধরা
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০২ এএম | আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:৩৫ এএম
থমকে গেছে দুবাইভিত্তিক অ্যাপস ‘এমটিএফই’র প্রতারণার তদন্ত। দশ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনার পর দেশব্যাপি ব্যাপক আলোচনা শুরু হলে জড়িতদের সম্পর্কে তদন্ত নামে সিআইডিসহ একাধিক সংস্থা। কিন্তু তদন্ত এখন পুরোপুরি অন্ধকারে। সামান্য বিনিয়োগে পলকে কোটিপতি হওয়ার লোভ দেখিয়ে লক্ষাধিক মানুষকে সর্বস্বান্ত করা দুবাইভিত্তিক অ্যাপস ‘এমটিএফই’র পেছনে দেশের কারা রয়েছেন- তা শনাক্ত হয়নি। যদিও সিআইডিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আরও কয়েকটি ইউনিটও তদন্ত শুরু করেছে। তবে গতকাল শনিবার পর্যন্ত কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ বা গ্রেফতার করতে পারেনি কোন তদন্ত সংস্থা। এমটিএফই সংশ্লিষ্টদের সম্পর্কে তথ্য চেয়ে অনলাইনে বিনিয়োগ করে প্রতারণার শিকার গ্রাহকদের সুরক্ষা প্রদানকারী একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার শরণাপন্ন হয়েছে সিআইডি।
সূত্র জানিয়েছে, অর্থপাচার নিয়ে কাজ করা বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট এ বিষয়ক একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে। ওই প্রতিবেদনে এমটিএফই কত টাকা লেনদেন করেছে মোবাইল ব্যাকিং বা অন্য মাধ্যমে- তার চিত্র উঠে এসেছে। এ প্রতিবেদন সিআইডির কাছে পাঠানো হয়েছে বলে বিএফআইইউর একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান বলেন, সিআইডির যে ইউনিট এমটিএফই বিষয়ে কাজ করছে-তারা বিএফআইইউর কোনো প্রতিবেদন পেয়েছে কিনা জানা নেই। তবে দোষীদের গ্রেফতার বা কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বিএফআইইউ’র তথ্যের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে সিআইডিকে। কেননা, অর্থপাচার বা লেনদেনের তথ্য বিএফআইইউ সংরক্ষণ করে থাকে। কোনো অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পেলে তা সিআইডিকে জানানো হয়। এরপর সিআইডি ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। এছাড়া এখনও এমটিএফই প্রতারণার বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কোনো গ্রাহক লিখিত অভিযোগ বা মামলা না করায় স্বপ্রণোদিত হয়ে ছায়া তদন্তে নেমেছে সিআইডি।
সিআইডি সূত্র জানিয়েছে, কারা এই প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতে জড়িত তা নিশ্চিত হতে অনলাইনে ভার্চুয়াল মুদ্রা আদানপ্রদান ও গ্রাহকদের সুরক্ষায় কাজ করা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব সিকিউরিটিজ কমিশন (আইওসিসি) ও অন্তারিও সিকিউরিটিজ কমিশনের (ওআরসি) কাছে ‘মেটাভার্স ফরেন এক্সচেঞ্জ বা এমটিএফই’র বিষয়ে তথ্য চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। তবে ওআরসির ওয়েবসাইটে দেখা গেছে, এমটিএফই তাদের রেজিস্ট্রেশনভুক্ত নয়।
সিআইডির একজন দায়িত্ব কর্মকর্তা গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, এমটিএফইসহ অনলাইন প্রতারণার বিষয়ে তথ্য চেয়ে সিআইডি বিশেষ হটলাইন চালু করেছে। সেখান থেকেও এ বিষয়ক তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অনলাইনে ভার্চুয়াল মুদ্রা লেনদেনকারী বা বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা দিতে কাজ করে থাকে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব সিকিউরিটিজ কমিশন (আইওসিসি), অন্তারিও সিকিউরিটিজ কমিশনসহ (ওআরসি) কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম সম্পর্কে তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে বলা আছে, ‘পদ্ধতিগত ঝুঁকি হ্রাস করে অন্যায্য, অনুপযুক্ত বা প্রতারণামূলক লেনদেন থেকে বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা প্রদান করা, ন্যায্য, দক্ষ এবং প্রতিযোগিতামূলক পুঁজিবাজার এবং পুঁজিবাজারে আস্থা তৈরি করা, পুঁজি গঠনকে উৎসাহিত করা এবং আর্থিক ব্যবস্থার স্থিতিশীলতায় অবদান রাখা আমাদের লক্ষ্য।’
বাংলাদেশে বিটকয়েনসহ ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন নিষিদ্ধ হলেও মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) পদ্ধতিতে ব্যবসা করছিল ‘এমটিএফই’ নাকে অ্যাপস। এতে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে লেনদেন চলত। বাংলাদেশের প্রায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষ প্রতিষ্ঠানটিতে কমপক্ষে এক লাখ টাকা করে বিনিয়োগ করেছে। এক পর্যায়ে দুই সপ্তাহ আগে অ্যাপসটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এরপর প্রকাশ হয় এমটিএফই অ্যাপসের অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা।
সিআইডি ও গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, কেউ স্বর্ণ বিক্রি করে, কেউ জমি বন্ধক রেখে, কেউ গরু-ছাগল বিক্রি করে; এভাবেই টাকা সংগ্রহ করেছে অনেকে। এখন তাদের অ্যাকাউন্ট শূন্য। তারা প্রতারিত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এমটিএফই দেশ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়েছে। বিষয়টি অনুসন্ধান করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ভুক্তভোগীদের বেশিরভাগেরই বয়স ১৮ থেকে ৪০ এর মধ্যে। তারা বলছেন, গত কয়েক মাসে ব্যাপক প্রসার হয় ‘এমটিএফই’ নামের অ্যাপটির। এতে অ্যাকাউন্ট আছে এমন কারও রেফারেন্সের মাধ্যমে নতুন বিনিয়োগকারী অন্তর্ভুক্ত করা হয়। হিসাব খুলতে প্রয়োজন হয় ন্যূনতম চার হাজার টাকা। বাইন্যান্সের মতো আন্তর্জাতিক এক্সচেঞ্জ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিনিয়োগের টাকা রূপান্তরিত হয় ভার্চুয়াল ডলার বা ক্রিপ্টোকারেন্সিতে। সেই ডলার স্থানান্তর করা হতো এমটিএফই’র অ্যাকাউন্টে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
আ.লীগের নিবন্ধন বাতিলসহ ৩ দফা দাবিতে ৭ দিনের আল্টিমেটাম ইনকিলাব মঞ্চের
ঢাকা ফাইট নাইট ৪.০-এ জয়ী মোহাম্মদ ‘রয়্যাল বেঙ্গল’ ফাহাদ
শহীদ আবু সাঈদকে কটূক্তি, ক্ষমা চাইলেন কিশোরগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিছ আলী ভূঁইয়া
মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের বার্ষিক কমিটি গঠন
টাঙ্গাইলে কাকুয়ায় সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর পক্ষ থেকে সুবিধা বঞ্চিত গরীব অসহায়দের শীতবস্ত্র বিতরণ
নোয়াখালীকে বিভাগ ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন
রাজশাহীর আদালতে আ:লীগের সাবেক এমপি আসাদের রিমান্ড মঞ্জুর
রাজশাহীর আদালতে আ:লীগের সাবেক এমপি আসাদের রিমান্ড মঞ্জুর
বগুড়ায় পুলিশের উদাসীনতায় রাতের আঁধারে জবর দখল করে ছাদ ঢালাই
লাকসামে সরকারি খাল পাড়ের মাটি বিক্রি হচ্ছে ইটভাটায়
কালিহাতীতে মারামারির সন্ধিগ্ধ মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ইংল্যান্ড দলে নেই স্টোকস, ফিরলেন রুট
ঝিকরগাছায় মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে চলছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
কেবল সেবন নয় মাদক ব্যবসায়ও জড়িত তারকারা, ডিসেম্বরের পরে দেখে নেবে কে?
গাবতলীতে আরাফাত রহমান কোকো ফুটবল টুর্নামেন্ট ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সাবেক এমপি লালু
যমুনার ভাঙনের মুখে আলোকদিয়াবাসীর বসতবাড়ি ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা
নোবিপ্রবির সঙ্গে নেদারল্যান্ডের ইউট্রিচ বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তি স্বাক্ষর
৯ দফা দাবীতে নওগাঁয় পুলিশ সুপারের কার্যালরে সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান
এলজিইডির এক প্রকল্পে ৪০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক
আবাসিক হোটেলের নামে মাদকের আড্ডা