ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৪ আশ্বিন ১৪৩১
জি২০ ও ভারতে মুসলিম নিপীড়ন -শেষ পর্ব

ভারত বিশৃঙ্খলা ও গৃহযুদ্ধে ধাবিত হলে এর বাজার আর থাকবে না

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক :

১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০২ এএম | আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৪ এএম

অরুন্ধতি রায় বলেন, ‘আমাদের এখন এমন একটি পরিস্থিতি চলছে, যেখানে সংবিধানকে কমবেশি একপাশে সরিয়ে রাখা হয়েছে। যদি তারা পরের বছর নির্বাচনে জয়লাভ করে, ২০২৬-এ, সেখানে আমরা যাকে সীমাহীনতা বলি, সেটা হতে চলেছে, যা এক ধরনের ঘৃণ্যতা যেখানে আসন সংখ্যা ও নির্বাচনী এলাকার ভূগোল পরিবর্তন করা হবে এবং হিন্দিভাষী বেল্ট যেখানে বিজেপি সবচেয়ে শক্তিশালী, বেশি আসন পাবে, যা মূলত ক্ষমতার ভারসাম্যকে পরিবর্তন করে দেবে। দক্ষিণ অবশ্যই এটি নিয়ে খুব, খুব অস্বস্তিতে পড়বে এবং এটিরও বলকানীকরণের ক্ষমতা বা সম্ভাবনা রয়েছে।

আমাদের এমন একটা পরিস্থিতি রয়েছে, যেখানে আমরা এক জাতি, এক ভাষা, এক নির্বাচনের কথা বলছি। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, আমরা এমন একটি পরিস্থিতিতে আছি, যেখানে আমাদের রয়েছে একজন স্বৈরশাসক, একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। আমাদের একজন ব্যবসায় প্রধান আছেন, যিনি গুজরাট গণহত্যার সময় থেকে মোদির পুরনো বন্ধু, যাকে এখন শুধু হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ নামে একটি শর্ট সেলিং কোম্পানিই নয়, এখন সাংবাদিকদের একটি সম্পূর্ণ জোট যারা সংবদ্ধ অপরাধের প্রতিবেদন করে, তার সম্পর্কে কথা বলে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় কর্পোরেট ধরণের কেলেঙ্কারি তুলে ধরেছে।

কিন্তু, কিছুই করা হবে না। সুতরাং আমরা এমন একটি পরিস্থিতিতে আছি, যেখানে বিশ্বকেও মূল্যায়ন করতে হবে যে, নিয়মগুলি কিছু লোকের ওপর প্রয়োগ করা না হলে এবং অন্য লোকদের ক্ষেত্রে ভিন্নভাবে প্রয়োগ করা হলে কী ঘটে। সমস্ত নিয়ম।’

সংক্ষেপে বর্তমান ভারতের অবস্থা কী, আল জাজিরার এমন প্রশ্নের জবাবে অরুন্ধতি বলেন, ‘ভারত রাষ্ট্র খুবই অনিশ্চিত, খুব প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। আমাদের এমন একটি পরিস্থিতি রয়েছে, যেখানে সংবিধানকে কার্যকরভাবে শিকেয় তুলে রাখা হয়েছে। আমাদের এমন একটি পরিস্থিতি রয়েছে, যেখানে বিজেপি এখন বিশ্বের অন্যতম ধনী রাজনৈতিক দল।

আর সব নির্বাচনী কলকব্জাতেই কমবেশি আপোষ করা হয়ে গিয়েছে। এবং তা শুধু সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার কারণেই নয়, যা অবশ্যই এক ধরনের সংখ্যাগরিষ্ঠতাবাদের কারণ হয় এবং তাদের নির্বাচনে হারাতে নাও পারে, পাশাপাশি, বেকারত্বের কারণে এবং আমরা বিশ্বের সবচেয়ে অসম সমাজের মধ্যে বাস করি বলে, আমাদের একটি বিরোধি দল তৈরি হচ্ছে বলে। এই সরকার এটিকে চূর্ণ করে দিতে চাইছে, কারণ এটি বিশ্বাস করে না যে কোনও বিরোধী দল থাকা উচিত।
আপনি জানেন, আমাদের আইনের শাসন আছে। আমাদের একটি অত্যন্ত পরিশীলিত আইনশাস্ত্র আছে। কিন্তু, এটি কীভাবে প্রয়োগ করা হবে, তা নির্ভর করে আপনার ধর্ম কী, আপনার বর্ণ কী, আপনার লিঙ্গ কী, আপনার শ্রেণি কী, তার ওপর। আমরা একটি খুব, খুব বিপজ্জনক জায়গায় আছি। আমি মনে করি না যে, ভারতের বাইরে কেউ উঠে দাঁড়াবে এবং নজর দেবে কারণ তাদের সবার চোখে ডলারের চিহ্ন সাঁটা রয়েছে এবং তারা ১শ’ কোটি মানুষের এই বিশাল বাজারের দিকে তাকিয়ে আছে।

কিন্তু, তারা যা বুঝতে পারছে না তা হ’ল, এই দেশটি যখন বিশৃঙ্খলা ও যুদ্ধের দিকে ধাবিত হবে, তখন বাজারটির অস্তিত্ব আর থাকবে না, যেমনটি ইতিমধ্যে মণিপুরের মতো জায়গায় ঘটেছে। ভারতের সৌন্দর্য ও মহিমাকে ক্ষুদ্র ও শৃঙ্খলিত ও নগণ্য বিষয় করে ফেলা হচ্ছে। এবং যখন এর বিস্ফোরণ ঘটবে, আমি মনে করি সেটির মতো কিছুই হবে না।’ সূত্র : আল জাজিরা। (সমাপ্ত)


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ইত্তিহাদেই সিটিকে রুখে দিল ইন্টার

ইত্তিহাদেই সিটিকে রুখে দিল ইন্টার

রোনালদোদের নতুন কোচ পিওলি

রোনালদোদের নতুন কোচ পিওলি

দক্ষিণ আফ্রিকাকে গুড়িয়ে আফগানদের ঐতিহাসিক জয়

দক্ষিণ আফ্রিকাকে গুড়িয়ে আফগানদের ঐতিহাসিক জয়

যেই গৌরব কেবল শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের

যেই গৌরব কেবল শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের

রিট করে ‘খেলাপি ঋণ স্থগিত’ বন্ধ চান ব্যাংক-মালিকরা

রিট করে ‘খেলাপি ঋণ স্থগিত’ বন্ধ চান ব্যাংক-মালিকরা

বিদেশি ঋণ ফের ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে

বিদেশি ঋণ ফের ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে

টাকা উদ্ধারের নামে ‘ঘুষ’ চাওয়ার অভিযোগ জিএম শাহজাহান চৌধুরীর’র বিরুদ্ধে

টাকা উদ্ধারের নামে ‘ঘুষ’ চাওয়ার অভিযোগ জিএম শাহজাহান চৌধুরীর’র বিরুদ্ধে

জাতীয় ঐক্য বিনষ্টকারী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে হবে

জাতীয় ঐক্য বিনষ্টকারী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে হবে

৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার কিনবে সরকার, ব্যয় ২৩৬ কোটি টাকা

৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার কিনবে সরকার, ব্যয় ২৩৬ কোটি টাকা

আইকনিক লিডার তারেক রহমান ও বাংলাদেশের রাজনীতি

আইকনিক লিডার তারেক রহমান ও বাংলাদেশের রাজনীতি

পতিত স্বৈরাচার ও ভারতের চক্রান্ত চলছেই

পতিত স্বৈরাচার ও ভারতের চক্রান্ত চলছেই

তারেক রহমানের রাষ্ট্রনায়কোচিত বক্তব্য ও দিকনির্দেশনা

তারেক রহমানের রাষ্ট্রনায়কোচিত বক্তব্য ও দিকনির্দেশনা

ইসরাইলের দখলদারিত্ব বন্ধের প্রস্তাব বিবেচনা জাতিসংঘের

ইসরাইলের দখলদারিত্ব বন্ধের প্রস্তাব বিবেচনা জাতিসংঘের

উত্তপ্ত মণিপুরে অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে নতুন করে গোলাগুলি

উত্তপ্ত মণিপুরে অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে নতুন করে গোলাগুলি

২৭ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়্যান্ট

২৭ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়্যান্ট

২০০ হাতি নিধনের সিদ্ধান্ত জিম্বাবুয়ের

২০০ হাতি নিধনের সিদ্ধান্ত জিম্বাবুয়ের

কলেরাসহ মারাত্মক রোগের ঝুঁকিতে সুদানের ৩৪ লাখ শিশু

কলেরাসহ মারাত্মক রোগের ঝুঁকিতে সুদানের ৩৪ লাখ শিশু

১১ হাজার ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর প্রাণ গেছে

১১ হাজার ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর প্রাণ গেছে

বেলারুশে হামলা হলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে : লুকাশেঙ্কো

বেলারুশে হামলা হলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে : লুকাশেঙ্কো

তাইওয়ান প্রণালীতে চীনের যুদ্ধবিমান

তাইওয়ান প্রণালীতে চীনের যুদ্ধবিমান