মার্কেট কমিটিও একটি তদন্ত কমিটি করুক
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ এএম
রাজধানী মোহাম্মদপুরের পুড়ে যাওয়া কৃষি মার্কেট পরিদর্শন করেছেন ওই এলাকার সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। এ সময় তিনি ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের খোঁজখবর নেন। গতকাল রোববার সকালে পুড়ে যাওয়া কৃষি মার্কেট পরিদর্শন শেষে মার্কেট কমিটিকে একটি তদন্ত কমিটি করার পরামর্শ দেন ঢাকা-১৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।
গত বুধবার রাত পৌনে চারটার দিকে মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে। এতে দীর্ঘ সময় আগুন নেভাতে কাজ করে ফায়ার সার্ভিস সেনাসহ অন্যান্য বাহিনীগুলো। প্রায় ৫ ঘন্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ভয়াবহ আগুনে পুড়ে যায় ওই মার্কেটের দুই শতাধিক দোকান। এ ছাড়াও মার্কেটের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) জানিয়েছে, মার্কেটটিতে ৩১৭টি দোকান বরাদ্দ ছিল।
গতকাল পরির্দশনে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের সমবেদনা জানান নানক। তিনি আগুন কিভাবে লেগেছে তা খতিয়ে দেখতে জন্য মার্কেট কমিটিকে একটি তদন্ত কমিটি করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, সরকারের তদন্ত কমিটির পাশাপাশি আপনারা একটি ছোট তদন্ত কমিটি করবেন। কিভাবে আগুন লেগেছে সেটি বের করবে। কি দুর্বলতা ছিল? কি দুর্বল দিকগুলো ছিল?
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যার যেখানে দোকান ছিল সেখানেই তাকে বরাদ্দ দিতে হবে। এখানে আমরা আকাশ কুসুম কল্পনা করতে চাই না। ছয় তলা, নয় তলা, ১৪ তলা মার্কেট কবে হবে। এই ভরসার জোরে মানুষগুলো অনিশ্চয়তায় থাকতে পারে না। দোকান মালিক, দোকানদাররা যা চাইবেন তাই হবে এর বাইরে কিছু হবে না। আমরা এর বাইরে কিছু করতে দেব না। মার্কেটটা হলো নি¤œ মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও নি¤œ আয়ের মানুষের মার্কেট। সেই প্রাণের মার্কেটটি পুড়ে গিয়েছে, আমাদের হৃদয় পুড়ে গিয়েছে।
দোকান বরাদ্দের প্রসঙ্গে নানক বলেন, এখানে কেউ বঞ্চিত হবে না। অসাধু চিন্তা বাস্তবায়নের কোন সুযোগ নেই। আমি মেয়রের সাথে আলাপ করব। সরকারের তরফ থেকে সকলকে বিষয়ে তদারকি করা হবে। প্রধানমন্ত্রী আজ নিউইয়র্কে গেছেন। তিনি দেশে ফিরলে তার সাথে আমি এ বিষয়ে কথা বলব।
এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর এই সদস্য বলেন, নির্বাচন ছাড়া বিএনপির রক্ষা পাওয়া বা নিজেকে রক্ষা করার আর কোনো উপায় নেই। নানক বলেন, আওয়ামী লীগ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে। সেই গণতন্ত্র বিশ্বাস করে বিদায় যে কোন মার্চ তারা (বিএনপি) করতে পারে। আমি দোয়া করি যেন এ রোডমার্চ শান্তিপূর্ণ থাকে। এই রোডমার্চ করতে করতে যেন বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচন করে ফেলে। তাদের যা যা করণীয় শান্তিপূর্ণভাবে করুক। বিএনপি তাদের ভুল পথচারীদের নির্বাচনের পথে আসলে অভিনন্দন জানাবো। নির্বাচন ছাড়া বিএনপির রক্ষা পাওয়ার, নিজেকে রক্ষা করার আর কোনো উপায় নেই।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩২ নং স্থানীয় কাউন্সিলর সৈয়দ হাসান নূর ইসলাম রাষ্ট্রন, ৩৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ সরকার, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজ মাহমুদসহ মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও কৃষি মাকের্টের বাজার কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকা-ের পর ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা হাহাকার করছেন। তাদের পণ্য সামগ্রী লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। আগুনে দোকান ও মালামাল পুড়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে তাদের।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগুনে সব পুড়ে যাওয়ায় বেঁচে থাকার অবলম্বন হারিয়ে তারা এখন কী করবেন বুঝতে পারছেন না। ঘুরে দাঁড়াতে কর্তৃপক্ষের সহায়তা চান ব্যবসায়ীরা। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, আগুন নেভার পরে অনেকেই সহযোগিতার নামে লুট করেছে। আবার অনেকে দোকান থেকে বের করে রাখা মালামাল নিয়ে গেছে। আলী স্টোরের মালিক আবু তাহের বলেন, আগুন নেভার পরে দেখি দোকানের বেশির ভাগ মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে। আগুন ও পানিতে নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর যা পেয়েছি, রাতে সেগুলো গুছিয়ে রেখে গেছি। সকালে এসে দেখি বেশিরভাগই চুরি হয়ে গেছে।
চাঁদপুর স্টোরের মালিক শারমিন আক্তার বলেন, তিন বোন মিলে দোকান চালাতাম। আগুনে সব পুড়ে গেছে। এরপর ছাইয়ের নিচে যা পেয়েছি সেগুলো গুছিয়ে এক পাশে রেখেছি। শাটার লাগানো ছিল। কিন্তু সকালে এসে দেখি কিছুই নেই। শাটার খুলে সব নিয়ে গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করতে অনেকেই এসেছেন। তারাও ভালো ভালো মালামাল বের করে নিয়ে গেছেন। উদ্ধার করার নামে এসব নিয়ে গেছেন। আবার বের করে দোকানের বাইরে রাখা মালামালও নিয়ে গেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, নারী-পুরুষ ও ছোট বড় ছেলেমেয়ে বিভিন্ন দোকানের ছাই সরিয়ে মালামাল নিয়ে যাচ্ছে। কেউ লোহার অ্যাঙ্গেল, পাইপ নিয়ে যাচ্ছে। মুদি দোকানগুলোয় সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে। এতে বিরক্ত ব্যবসায়ীরা।
মালামাল লুটের বিষয়ে জানতে চাইলে তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আজিজুল হক বলেন, আমরা মার্কেটের নিরাপত্তায় কাজ করছি। সব গেটে আমাদের পুলিশ সদস্যরা আছে। কেউ কোনো অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা নেব। এ দিকে ভুক্তভোগীরা বলেছেন, এখনো পর্যন্ত সরকারি কিংবা বেসরকারি পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাড়ায়নি কেউ।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
এনার্জিপ্যাকের বার্ষিক সাধারণ সভায় ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ
আমার খাবার কি ফর্টিফায়েড?
হাসিনা পরিবারের নামে ১৩ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসি তাকিয়ে আছে সরকারের দিকে
ব্র্যাক ব্যাংকের রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন
দিনাজপুর জেলা শিক্ষা অফিসারের বিদায়ী সংবর্ধনা
নরসিংদীর শিবপুরে প্লাস্টিক কারখানা আগুনে পুড়ে ছাই
ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স শূন্য যে ১০ ব্যাংকে
বিএনপি নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় আসতে চায় না: আব্দুস সালাম
সরকারের আশ্বাসে শাহবাগ থেকে সরে গেলেন বিএসএমএমইউ ট্রেইনি চিকিৎসকরা
সাকাকে হারিয়ে চিন্তিত আর্সেনাল কোচ
৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাব জমা হবে : বদিউল আলম মজুমদার
সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বদলী
মানিকগঞ্জের ঘিওরে ছাত্রদল নেতা লাভলু হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন
বঙ্গবাজার পুড়ে যাওয়া মামলায় একজন গ্রেফতার
জনগণের প্রত্যাশা পূরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ধীর গতিতে চলছে: আমিনুল হক
জমকালো আয়োজনে পালিত হলো বান্দরবান সেনাবাহিনীর ৬৯ ব্রিগেডের ৪৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী
সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ
বিহারীরা কেমন আছে
ব্রাহ্মণপাড়ায় ধর্ষণের শিকার হতদরিদ্র প্রতিবন্ধী যুবতীর সন্তান প্রসব! আতংকে ভুক্তভোগী পরিবার
মোরেলগঞ্জে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতির ১৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত