দুর্বার আন্দোলনে আ.লীগ ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হবে
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:১৫ এএম | আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:১৫ এএম
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, বর্তমান অবস্থা থেকে দেশ ও জাতিকে মুক্ত করতে হবে। আমরা এমন দুর্বার আন্দোলন করবো, সারাদেশে এমন অবস্থা সৃষ্টি করবো সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হবে। এসময় গ্রামগঞ্জের মা-বোনসহ সবাইকে আন্দোলনে অংশ নিতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে কেরানীগঞ্জের জিনজিরায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে সরকার পতনের একদফার দাবিতে ঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকার জবরদস্তি করে দেশে রাজত্ব কায়েম করেছে। এই রাজত্ব চলতে দেয়া যায় না। দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম করতে হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। আমানউল্লাহ আমানকে মুক্ত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের দলের নেতাকর্মীদের কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। কিন্তু কেন। আজকে চোর-ডাকাতদের বিচার হচ্ছে না। শুধু বিএনপির নেতাদের বিচার হচ্ছে। শুধু স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে মির্জা আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বলতে কিছু নেই। নিজেদের ইচ্ছামতো জোর করে ক্ষমতায় থাকার জন্য তারা এটা বলছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী ছেড়ে দিয়ে কোথায় থাকবো। আমি বলতে চাই- প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে কোথায় ছিলেন? আপনি সেখানে থাকবেন। আপনি ক্ষমতা ছাড়েন, বাংলাদেশের মানুষকে অত্যাচার থেকে রেহাই দেন। তিনি বলেন, বিশ্বের কোনো স্বৈরাচার সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে নাই। এই সরকারও টিকতে পারবে না। সরকারের পদত্যাগ বা অপসারণ সময়ের ব্যাপার।
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা মাঝে মাঝে বলেন, সংবিধানিক ধারা নষ্ট করা যাবে না। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। আমিও বলি- সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। তবে কোন সংবিধান। ৯৬ সালে যে সংবিধান দিয়ে নির্বাচন হয়েছিল সেই সংবিধান। সেসময় নির্বাচন করেছিলেন, তখন তো সমস্যা হয়নি।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে একরাতে সব শেষ করে দেবে। আমি আপনাদের বলতে চাই- আমরা আপনাদের কোনো ক্ষতি করবো না। আগে ক্ষমতা ছাড়েন। তবে অন্যায় করবেন পাপ করবেন, ডিসি-এসপি লেলিয়ে দিয়ে গুম করাবেন, রাতের ঘুম হারাম করবেন, আর আপনাদের মানুষ ছেড়ে দেবে- এটা ভাববেন না।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম ডিসি-এসপিদের উদ্দেশে বলেন, এই দেশ আওয়ামী লীগের জমিদারি নয়। দেশের মালিক জনগণ। তাই শেখ হাসিনার নির্দেশে আপনারা দিনের ভোট রাতে করবেন, আবার বুক ফুলিয়ে বলবেন, আমরাই তো আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনেছি, ভাববেন না এভাবে দিন যাবে। আপনাদেরও বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। কোনো ছাড় নেই। যারা আওয়ামী লীগের দালালি করবেন, তাদেরও আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিদায় নিতে হবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির এই আহ্বায়ক আরো বলেন, আন্দোলন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। এখনো সময় আছে। দুটি পথ শেখ হাসিনার সামনে খোলা। একটি হলো, ওবায়দুল কাদের যেটি বলেছে, যদি আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাদের ক্ষমতা যায়, বিএনপি ক্ষমতায় আসে, এক রাতের মধ্যেই নাকি আওয়ামী লীগ শেষ। আপনি যা বলেছেন, সত্যিই বলেছেন। আরেকটি পথ হলো বেগম খালেদা জিয়ার কাছে গিয়ে হাত-পা ধরে মাফ চান। খালেদা জিয়াকে ছাড়ুন, তারেক রহমানের মামলা উঠিয়ে নিন। খালেদা জিয়াকে বলুন, আপনি ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে নির্বাচন দেবেন, নির্বাচনের আগে যাতে আপনাকে জেলে না দেয়। তিনি বলেন, সাজানো মামলায় খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টে নিয়ে ১০ বছর সাজা দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে শত শত মামলা, শত শত বছর তাকে জেলে থাকতে হবে। জেলের রাস্তা তো আপনিই (শেখ হাসিনা) দেখিয়েছেন। যেই রাস্তায় খালেদা জিয়াকে জেলে নিয়েছেন, সেই রাস্তায় আপনাকেও জেলে যেতে হবে।
বিএনপি নেতা বলেন, গত ১৫ বছর ধরে শেখ হাসিনা জোর করে ক্ষমতায় আছেন। আবার শখ হয়েছে, তিনি (শেখ হাসিনা) জোর করে ক্ষমতায় থাকবেন। যদি জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চান, এই দেশের জনগণ জোর করে আপনাকে ক্ষমতা থেকে নামাবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য এই আওয়ামী লীগ, এই জামায়াত ১৭৩ দিন হরতাল করেছে। হোটেল শেরাটনের সামনে বাসের মধ্যে গানপাউডার দিয়ে আগুন দিয়ে মানুষ জ্বালিয়ে দিয়েছে। সচিবালয় থেকে কর্মকর্তা বের হওয়ার পর উলঙ্গ করে দিয়েছে। তারা নাকি কিছু করেনি। যদি ক্ষমতা না ছাড়েন, তাহলে আন্দোলনের নামে আপনারা যা যা করেছেন, আমরাও তাই তাই করব রাজপথে। আমরা সেদিকে যেতে চাই না। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার পাশে চোর, বাটপার, ব্যাংক লুটেরা, শেয়ার মার্কেট লুটেরা ছাড়া আর কেউ নেই। এই লুটেরাদের হাত থেকে বাঁচতে হলে এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামাতে হবে। শেখ হাসিনা জোর করে নির্বাচনে জিততে চান। জোর করে আর বাংলাদেশে নির্বাচন হবে না। সংগ্রাম ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরীর সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির পরিবার ও কল্যাণ বিষয়ক সহ-সম্পাদক দেওয়ান মো. সালাউদ্দিন বাবু, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ প্রমুখ। ##
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
গ্রেপ্তারের ভয়ে পোল্যান্ড সফর বাতিল করলেন নেতানিয়াহু
নাটোরে ৬ ট্রাকের সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২, আহত ৭
রাখাইনের অস্থিরতায় টেকনাফ স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি কমেছে ৯০ ভাগ
ক্রিসমাস মার্কেট হামলা, জার্মান কর্তৃপক্ষের কাছে গত বছরেই এসেছিল সতর্কবার্তা
উপদেষ্টা হাসান আরিফকে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন
ডলার বাজারে অস্থিরতা, দাম বেড়ে ১২৯ টাকা
উত্তরার বিপ্লবী জনতাকে যে কঠিন মূল্য দিতে হয়েছিল
পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার হুমকি ট্রাম্পের
বাংলাদেশ থেকে আরও দক্ষকর্মী নিতে আগ্রহী লিবিয়া
৯১ শিশু খেলোয়াড়সহ ৬৪৪ ক্রীড়াবিদকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
ইইউভুক্ত দেশে গ্যাস সরবরাহ বন্ধের হুমকি কাতারের
দক্ষিণ কোরিয়ার সৌন্দর্যের পেছনে ছুটে বিপদের ফাঁদে পর্যটকরা
ঢাকার বাতাস আজ ‘ঝুঁকিপূর্ণ’
২৮ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদ
হিরো নয় কারিনার ছেলের চরিত্রে অভিনয় করতে পারি
রাওয়ার নেতৃত্বে আবদুল হক ও ইরশাদ সাঈদ
স্লোভাক প্রধানমন্ত্রীর মস্কোতে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক
কুমিল্লায় মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ৩ কিশোর নিহত
গাজীপুরে কারখানা থেকে দগ্ধ আরও এক লাশ উদ্ধার
সিরিয়ার আকাশে নিষিদ্ধ হলো ইরানের বিমান