ইইউ’র সিদ্ধান্তে প্রমাণিত আ.লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:৩০ পিএম | আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০৬ এএম
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সিদ্ধান্তে আবারও প্রমাণিত হচ্ছে দেশে আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এই অবৈধ সরকার পদত্যাগ না করলে দেশ সংঘাতের দিকে যাবে। এখনো তো সংঘাত শুরু হয়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপার্সন অফিসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা দক্ষিণের মেয়রের বক্তব্য প্রসঙ্গে বলেন, এরা দেশটাকে তাদের তালুক মনে করেন।
গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। গত মঙ্গলবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো জানাতে বিএনপি মহাসচিব এই সংবাদ সম্মেলনে আসেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পর্যবেক্ষক দল পাঠাচ্ছে না বলে জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। আর এই ঘটনায় আবারও প্রমাণিত হচ্ছে, দেশে আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচন সম্ভব নয়। আর এই বিষয়টি পরীক্ষিত। তাদের অধীনে যে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না এবং জনগণ যে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে না এতে কোনো সন্দেহ নেই। তারপরও সরকার যখন বিদেশিদের কাছে গিয়ে বলেছে এদেশে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হবে কোনো ধরনের সমস্যা নেই। তখন বিদেশিরা প্রাক পর্যবেক্ষক টিম পাঠিয়েছে। তারা সমস্ত কিছু সার্ভে করেছেন এবং সকল ধরনের স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা এখন স্পষ্ট করে বলেছেন, এ দেশের টিম পাঠানোর কোনো পরিবেশ নেই। তিনি বলেন, এত প্রহসন ও গ্রেপ্তার, মামলা এবং বাধার মুখেও আমরা একেবারে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছি। আমরা এর শেষ পর্যন্ত যাব। তবে শেষ পরিণতি কী হবে এটা নির্ভর করে সরকারের আচরণের ওপর।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ যেভাবে পাতানো নির্বাচনের পথে এগুচ্ছে তাতে তো জনগণ রুখে দাঁড়াবে- পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে এটা। জনগণই তাদের অধিকার আদায় করবে, জনগণ তো লড়াই করে, যুদ্ধ করেই তো স্বাধীনতা এনেছে। ১৯৯০ সালে এরশাদের সময়ে জনগণ তো লড়াই করে, সংগ্রাম করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে। এখনো জনগণ লড়াই করছে, সংগ্রাম করছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক, দেশকে রক্ষার জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য গণতন্ত্রকে রক্ষার জন্য, মানুষের অধিকারকে রক্ষা করার জন্য আপনারা পদত্যাগ করেন। পদত্যাগের দাবি তো আমরা সেজন্যই জানিয়েছি। প্লিজ এই জায়গা থেকে সরে আসেন। এসে পদত্যাগ করেন, যাতে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ ভোট দিয়ে তাদের একটা সরকার নির্বাচিত করতে পারে, তাদের একটা জনগণের পার্লামেন্ট গঠন করতে পারে- তার ব্যবস্থা করেন।
মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’-এর সম্পাদক আদিলুর রহমার খান ও পরিচালক এ এম এম নাসির উদ্দিনের সাজা প্রদানের বিষয়ে জুডিশিয়াল ক্যাডার সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতি প্রদানের নিন্দা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এহেন বিবৃতি প্রদান নজিরবিহীন ঘটনা। এটা নিঃসন্দেহে নিরপেক্ষ আচরণের অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভা মনে করে, বিচারব্যবস্থার সব পর্যায়ের বিচারকদের বিতর্কিত রাজনৈতিক কর্মকা- হতে বিরত থাকা বাঞ্ছনীয়। তিনি আরো বলেন, আমি বারবরই বলে আসছি আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচনই সম্ভব না। এটা পরীক্ষিত। আমরা পরপর দুটি নির্বাচন অতীতে দেখেছি তাদের অধীনে যে কখনো কোনো সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে ন্,া জনগণ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে না- এ ব্যাপারে সন্দেহ কারোই থাকার কথা নয়।
শেখ হাসিনা বিদেশীদের কাছে ধরনা দিচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভিনদেশে গিয়ে বিদেশিদের কাছে কথা দেন যে, খুব সুন্দর অবাধ নির্বাচন হবে, কোনো চিন্তার কারণ নাই। তখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন টপ অবজারভেটারি টিম পাঠিয়েছিল। এই টিমটা খুব এক্সনেটসিভলি তারা ঘুরেছেন-সব দলের স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে তারা কথা বলেছেন। কথা বলে যেটা তারা পরিষ্কার করে বলেছেন, অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ নাই। এখানে অবজারভার টিম পাঠানোর পরিবেশ নেই। এটা প্রমাণিত হয়ে গেল, ইউরোপীয় ইউনিয়নের যে টিম এসেছিল সেই টিমের কথা। এ জিনিসটা নতুন করে বলে, বারবার করে বলে তো লাভ হচ্ছে না। কারণ ওনারা তো কানে দিয়েছেন তুল। তিনি বলেন, ওদের (মন্ত্রী এমপিও আ.লীগ নেতাদের) বক্তৃতা শুনলে দেখবেন একটাই জিনিস জোর দিচ্ছে তারা যে, শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী রাখতেই হবে- এট দ্য কস্ট অব দ্য কান্ট্রি, এট দ্য কস্ট অব দ্য নেশন, কস্ট অব ডেমোক্রেসি। এই যে বিষয়টা এটা কী একটা জাতি- যারা দেশের জন্য যুদ্ধ করেছে, যারা লড়াই করেছে, ত্যাগ স্বীকার করেছে- সেই জাতি কিভাবে মেনে নেবে? তিনি বলেন, আমরা শত প্ররোচনার মুখেও আমরা একেবারে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। এত গ্রেপ্তার, মামলা, অত্যাচার নির্যাতনের পরেও। আমরা শেষ পর্যন্ত যাব। এটা শেষ পরিণতি কী হবে তা নির্ভর করবে সরকারের ওপর, সরকারের আচরণ কী হচ্ছে- তার ওপরে নির্ভর করবে।
দক্ষিণের সিটি মেয়রের বক্তব্যে প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, মানসিকতাটা তার (শেখ ফজলে নূর তাপস) কথার মধ্যে পাবেন। এটা তাদের- আমি বারবার একটা কথা বলি, তাদের ক্যারেকটার, তাদের কথাবার্তা বলা সব কিছুর মধ্যে একটা প্রচ- সন্ত্রাসী ব্যাপার আছে। তারপর একটা জমিদারি ভাব আছে। এটা হচ্ছে তাদের জমিদারি। এ জন্য কাকে ঢুকতে দেবে কী দেবে না- এ রকম কথা বলে। আমি এসব গুরুত্ব দেই না। এগুলো আমরা বহু ফেইস করেছি অতীতে। সেজন্য চিন্তাও করি না। কে কী বললো না বলল এটা বাংলাদেশের জনগণের যায় আসে না। বাংলাদেশের জনগণের লক্ষ্য একটাই- তারা বাংলাদেশে একটা অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। দ্যাট ইজ দ্য পয়েন্ট।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
মামলা রেকর্ড করতে ঘুষ গ্রহণ, কুষ্টিয়ায় ওসি ও এসআই ক্লোজ
কুমিল্লায় বীর মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় জামায়াতের ২ কর্মী বহিষ্কার
পতিত আওয়ামী স্বৈরাচারের গত ১৭ বছরের নির্যাতন ভুলে যাবার সুযোগ নেই: আমিনুল হক
পাবনা ব্যাপ্টিস্ট চার্চে প্রাক বড়দিন উৎসব অনুষ্ঠিত
পূর্বধলায় শীতার্ত মানুষের মাঝে ইসলামী যুব আন্দোলনের কম্বল বিতরণ
ধর্ম-বর্ণ নয়, সমান মর্যাদায় হোক নাগরিক পরিচয়: জোনায়েদ সাকি
এসবিএসি ব্যাংকের শরিয়াহ্ সুপারভাইজরি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত
আ.লীগের হাতেও নির্যাতিত হয়েছিলেন সেই মুক্তিযোদ্ধা, কিন্তু তুলে ধরেনি গণমাধ্যম!
ভারত বাংলাদেশ থেকে বস্তা বস্তা টাকা লুট করেছে : দুদু
আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে সিটিজেন’স চার্টার অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত
মতিঝিলে বিশ্বমানের ডায়াগনস্টিক সেবা প্রদান শুরু আইসিডিডিআর,বি’র
স্বামীর অগোচরে স্ত্রী অন্য কারও সাথে কথা বলা প্রসঙ্গে?
চাঁদপুর মেঘনায় মালবাহী জাহাজে ৭ জনকে কুপিয়ে হত্যা, গুরুতর আহত ১
পতিত স্বৈরাচার হাসিনাকে ফেরাতে ভারতকে চিঠি
যাকাত বোর্ডের ১১ কোটি টাকা বিতরণের প্রস্তাব অনুমোদিত
১৬ বছরে নির্বাচন ব্যবস্থা নির্বাসনে চলে গিয়েছিল : সংস্কার কমিশন প্রধান
জিনিসের দাম একবার বাড়লে কমানো কঠিন: পরিকল্পনা উপদেষ্টা
স্বৈরাচারের দোসর শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী-সন্তানসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
মুজিবল্যান্ড বানিয়ে হিন্দুস্তানে থাকুক আ.লীগ : রাশেদ প্রধান
মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে সম্মানহানী