আইন শৃঙ্খলা বাহিনী পক্ষপাতমূলক আচরণ করলে ব্যবস্থা
১৯ নভেম্বর ২০২৩, ১২:১৩ এএম | আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৩, ১২:১৩ এএম
দ্বাদশ সংসদের তফসিল ঘোষণা ও মনোনয়ন পত্র বিক্রি শুরু করেছে সরকার দল এবং তাদের শরিক দল গুলো। তবে এ নির্বাচনে বিএনপিসহ তাদের শরিদ রাজনৈতিক দল গুলো যাচ্ছে না। নির্বাচনের যদি কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী বা আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্য পক্ষপাতমূলক কোন আচরণ করেন বা নির্বাচনের ফলাফল প্রভাবান্বিত করার চেষ্টা করে তাহলে নির্বাচন কমিশন তাকে নির্বাচনের দায়িত্ব হতে অব্যাহতি দিতে পারবে এবং তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার লক্ষ্যে নির্বাচন কর্মকর্তাদের শৃঙ্খলা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য ‘নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১› শীর্ষক আইন রয়েছে। এ আইনে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ নিতে পারবে ইসি। নির্বাচনের সাথে জড়িত সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং নির্বাচনি দায়িত্বে নিয়োজিত আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যগণ নির্বাচন কমিশনের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে থেকে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে।
এদিকে ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে আগামী ৭ জানুয়ারি। নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর।
নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব: সংবিধানে ১১৯ অনুচ্ছেদের বিধান অনুসারে প্রেসিডেন্ট পদের নির্বাচন অনুষ্ঠান করা, সংসদ-সদস্যদের নির্বাচন অনুষ্ঠান করা, সংসদে নির্বাচনের জন্য নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ করা এবং প্রেসিডেন্টের পদের এবং সংসদের নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা। এছাড়াও সংবিধান বা অন্য কোন আইনের দ্বারা নির্ধারিত হবে, নির্বাচন কমিশন সেইরূপ দায়িত্ব পালন করবেন। বিভাগীয় কমিশনার, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের অবগত করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
নির্বাচন কমিশনের কর্মচারী: সংবিধানে ১২০ অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের জন্য যেরূপ কর্মচারী প্রয়োজন হবে, নির্বাচন কমিশন অনুরোধ করলে প্রেসিডেন্ট সেরূপ কর্মচারী ব্যবস্থা করবেন।
নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা অর্পণ: গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৪ অনুচ্ছেদের বিধান অনুসারে কমিশন তার চেয়ারম্যান বা কোন সদস্য বা তার কোন কর্মকর্তাকে যে কোন ক্ষমতা প্রয়োগ বা দায়িত্ব পালনের জন্য দায়িত্ব প্রদান করতে পারবে। তাছাড়া ৫ অনুচ্ছেদের বিধান অনুসারে কমিশন যে কোন ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষকে তার নির্দেশ অনুযায়ী কোন দায়িত্ব পালন বা সহায়তা প্রদান করতে নির্দেশ দিতে পারবে।
নির্বাচন কমিশনকে নির্বাহী কর্তৃপক্ষের সহায়তা: সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদের বিধান অনুসারে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য।
নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপর নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণ: নির্বাচনের সাথে জড়িত সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং নির্বাচনি দায়িত্বে নিয়োজিত আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যগণ নির্বাচন কমিশনের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে থেকে কাজ করবেন। যদি কোন কর্মকর্তা/কর্মচারী বা আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্য পক্ষপাতমূলক কোন আচরণ করেন বা নির্বাচনের ফলাফল প্রভাবান্বিত করার চেষ্টা করে তাহলে নির্বাচন কমিশন তাকে নির্বাচনের দায়িত্ব হতে অব্যাহতি দিতে পারবে এবং তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার লক্ষ্যে নির্বাচন কর্মকর্তাদের শৃঙ্খলা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য ‘নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১› শীর্ষক আইন রয়েছে। পরিশিষ্ট-ও তে উক্ত আইন উদ্ধৃত করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের অনুমতি ব্যতীত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বদলী না করা: গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৪৪ই অনুচ্ছেদের বিধান অনুসারে নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার পর হতে নির্বাচনি ফলাফল ঘোষণার পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে নিম্নোক্ত কর্মকর্তাবৃন্দকে স্ব স্ব কর্মস্থল হতে বদলী না করার বিধান রয়েছে। বিভাগ, জেলায় বা মেট্রোপলিটন এলাকায় কর্মরত তাঁদের অধীনস্থ কর্মকর্তারা।
কতিপয় ক্ষেত্রে কমিশনের নির্বাচনি কার্যক্রম বন্ধ করার ক্ষমতা: গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৯১ এর বিধান অনুসারে কমিশনের নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে, নির্বাচনে বল প্রয়োগ, ভীতি-প্রদর্শন এবং চাপ সৃষ্টিসহ বিভিন্ন বিরাজমান অপকর্মের কারণে ন্যায়ানুগ ও নিরপেক্ষভাবে এবং আইন অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনা নিশ্চিত করতে সক্ষম হওয়া যাবে না সেক্ষেত্রে যে কোন ভোট কেন্দ্র বা ক্ষেত্রমত সম্পূর্ণ নির্বাচনি এলাকায় যে কোন পর্যায়ে ভোটগ্রহণ বন্ধ করতে পারবেন। তাছাড়া, কোন ব্যালট পেপার নাকচ বা গ্রহণসহ, এই অধ্যাদেশ বা বিধিমালার অধীন কোন কর্মকর্তা কর্তৃক প্রদত্ত কোন আদেশ পুনর্বিবেচনা করতে পারবেন, এবং নির্বাচন নিরপেক্ষ, ন্যায়ানুগ ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা নিশ্চিতকরণের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান ও ক্ষমতা প্রয়োগসহ প্রাসঙ্গিক অন্যান্য আদেশ প্রদান করতে পারবেন।
প্রার্থিতা বাতিলের কমিশনের ক্ষমতা: গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৯১ই এর বিধান অনুসারে যদি কোন উৎস হতে প্রাপ্ত রেকর্ড বা মৌখিক কিংবা লিখিত রিপোর্ট হতে কমিশনের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, প্রতিদ্বন্দ্বী কোন প্রার্থী বা তার নির্বাচনি এজেন্ট বা তার নির্দেশে বা তার পক্ষে তার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্মতিতে অন্য কোন ব্যক্তি গুরুতর বেআইনী কার্যে লিপ্ত হয়েছেন বা লিপ্ত হবার চেষ্টা করছেন বা এ আদেশ বা এর অধীন প্রণীত বিধিমালা বা আচরণ বিধিমালার কোন বিধান লংঘন করেছেন বা লংঘনের চেষ্টা করছেন এবং অনুরূপ বেআইনী কার্যে লিপ্ত হওয়া বা লিপ্ত হবার চেষ্টা বা লংঘন বা লংঘনের চেষ্টার জন্য তিনি সদস্য নির্বাচিত হবার বা থাকার অযোগ্য হতে পারেন, সেক্ষেত্রে কমিশন, সংশ্লিষ্ট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে শুনানির যুক্তিসংগত সুযোগ প্রদান করে, বিষয়টি তদন্তের আদেশ দেবেন। তদন্ত রিপোর্ট প্রাপ্তির পর কমিশন যদি এ মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার নির্বাচনি এজেন্ট বা তার নির্দেশে বা তার পক্ষে তার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্মতিতে অন্য কোন ব্যক্তি গুরুতর বেআইনী কার্যে লিপ্ত হয়েছেন বা লিপ্ত হওয়ার চেষ্টা করছেন বা আদেশ বা বিধিমালা বা আচরণ বিধিমালার কোন বিধান লংঘন করেছেন বা লংঘনের চেষ্টা করছেন এবং অনুরূপ বেআইনী কার্য করার বা চেষ্টা বা ক্ষেত্রমতে লংঘন বা লংঘনের চেষ্টার জন্য তিনি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার বা থাকার অযোগ্য হতে পারেন, তা হলে কমিশন, তাৎক্ষণিকভাবে লিখিত আদেশ দ্বারা, অনুরূপ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর প্রার্থীপদ বাতিল করতে পারবেন এবং সংশ্লিষ্ট পদের নির্বাচন, তাকে বাদ দিয়ে, অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীগণের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। যেক্ষেত্রে কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা হতে বিরত রাখার ফলে শুধুমাত্র একজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী অবশিষ্ট থাকেন সেক্ষেত্রে উক্ত নির্বাচনি আসনে ১৭ অনুচ্ছেদের অধীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এখানে উল্লেখ্য যে, উক্ত আদেশ সংশ্লিষ্ট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার নির্বাচনি এজেন্টকে হাতে-হাতে বা ফ্যাক্স, ই-মেইল বা কুরিয়ার সার্ভিস এর মাধ্যমে বা অন্য কোন পন্থায় দ্রুত জানিয়ে দেয়া হবে। প্রদত্ত আদেশ অবিলম্বে রিটার্নিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার এবং অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এবং অনুরূপ প্রার্থীকে মনোনয়নদানকারী রাজনৈতিক দলকে অবহি অন্যান্য এবং গেজেটে ও কমিশন কর্তৃক উপযুক্ত বিবেচিত অন্য কোন প্রকারেও প্রজ্ঞাপন আকারে জারী করবেন। এ ছাড়া প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা এককভাবে নির্বাচন কমিশনের রয়েছে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
৯ দফা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ কতদূর?
মর্গের দুই লাশের দাবিদার দুই পরিবার,
আইনজীবীকে হত্যার হত্যাচেষ্টা: শেখ হাসিনা-জয়সহ ৯৩ জনের মামলা এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ
তথ্য থাকলেও সন্দেহজনক লেনদেনে দেরিতে ব্যবস্থা নিচ্ছে বিএফআইইউ!
সাবেক এমপি হেনরীর ৫৬ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দের নির্দেশ,
গ্যাসের দাম বাড়ানোর উদ্যোগে উৎকণ্ঠায় নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীরা
দেশে এইচএমপি ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত
শাহজালাল বিমানবন্দরে বিমান বাহিনীর সদস্যদের অপসারণে আইনি নোটিশ
চকরিয়ায় পুলিশ-সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলি: বসতবাতিতে আগুন, ওয়ার্ড মেম্বারসহ আহত ২
স্বাধীন সামরিক বাহিনী সংস্কার কমিশন গঠনের প্রস্তাব
শেখ হাসিনার চোখ ছিল শুধু ঢাকা থেকে টুঙ্গীপাড়া পর্যন্ত : সারজিস
শেখ হাসিনা ভারতের সাথে বৈষম্যমৃলক চূক্তি করেছিলেন-মৌলভীবাজারে সারজিস আলম
ব্র্যাক ব্যাংকের টপ টেন রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড জয় ২০২৪ সালে ১.৬ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স সংগ্রহ
ওসি মুহিবুল্লাহকে বাঁচাতে স্বজনদের মানববন্ধন
পাটগ্রাম সীমান্তে বাংলাদেশিকে লক্ষ্য করে বিএসএফের গুলি, আহত ১
ওয়ান টাইম প্লাস্টিক বন্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ৬ হাজার প্রতিষ্ঠান: বিপিজিএমইএ
চলমান সংস্কার গতিশীল করতে হবে, যাতে কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে : মান্না
ফরিদপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় তিন দিনে মোট ১১ জন নিহত, আহত ৩৫
বিধ্বংসী শতকে লিটনের জবাব, ঝড়ো সেঞ্চুরি তানজিদেরও, বিপিএলে রেকর্ড
ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোন ষড়যন্ত্রকারী বিএনপির ক্ষতি করতে পারবে না : আমিনুল হক