আমেরিকা স্যাংশন দেয়ার দেশ : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
২০ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৩, ১২:১০ এএম
ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়া ব্যাক্তিদের মুখে তালা দেয়া সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি আমেরিকাকে স্যাংশনের দেশ উল্লেখ করে বলেছেন, ওরা স্যাংশন দেয়ার দেশ। বিশ্বের অনেক দেশে তা দিয়েছে। আমরা তো একদিনে আমেরিকা হতে পারব না। আমাদের ইচ্ছে ওনাদের মতো ভালো হতে। কিন্তু আমরা একদিনে হতে পারব না। গতকাল রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, কারো মুখ তো আঠা দিয়ে বন্ধ করে দিতে পারি না। তবে হ্যাঁ, কেউ যদি গর্হিত কাজ করে, তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেব, অ্যাকশন নিচ্ছিও। আবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে নৌকা প্রতীকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর তিনি বলেছেন, বিদেশিরা নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলতে পারবে না। আপনারা (গণমাধ্যম) তাদের (বিদেশিদের) যত সুযোগ দেবেন তারা তত লাফালাফির সুযোগ পাবে। আপনারা (গণমাধ্যম) বিদেশিদের যদি কম পাত্তা দেন তাহলে তাদের লাফালাফি কমে যাবে। আমরা এসব নিয়ে মোটেই চিন্তিত নই।
বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের অধিকার ও তাদের মান উন্নয়ন নিয়ে সম্প্রতি একটি নতুন স্মারকপত্র স্বাক্ষর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। স্মারকপত্র প্রকাশের পর দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন তার বক্তব্যে কল্পনা আক্তার নামে বাংলাদেশের এক গার্মেন্টস শ্রমিক ও নেত্রীর কথা উল্লেখ করে হুঁশিয়ারি দেন। এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাংবাদিকরা।জবাবে ড. মোমেন বলেন, ওরা স্যাংশনের দেশ। ওরা দিতে পারে। ওরা বড় লোক। কিন্তু আমরা আমাদের মতো কাজ করব। বাস্তবতার নিরিখে আমরা কাজ করব। আমরা তো একদিনে আমেরিকা হতে পারব না। ওনারা (যুক্তরাষ্ট্র) যাদের টাকাটুকা দিয়ে রাখে তারা মনে করে একদিনে বাংলাদেশ আমেরিকা হয়ে যাবে। হঠাৎ করে ওনারা বড় লোকের কথা বললে তাজ্জবের বিষয় মনে হয়।
আমেরিকার শ্রমিক ইতিহাস টেনে ড. মোমেন বলেন, আমেরিকার এ অবস্থায় আসতে আড়াইশ বছরের মতো সময় লেগেছে। আমেরিকাতে এক সময় শ্রমিকরা ক্রীতদাস ছিল। আব্রাহাম লিংকনের সময় এটা বাদ পড়ে। এটা বাদ পড়ায় আমেরিকায় গৃহযুদ্ধ হয়। ১৯০০ শতকের শুরুতে আমেরিকায় প্রতিটি শ্রমিক ১৮ ঘণ্টা কাজ করত। ২০ সেন্ট মাত্র মজুরি পেত। সেই ইতিহাস তো আমরা ভুলিনি।
আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের তুলনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমেরিকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্পর্কে আমরা জানি। সে দিক থেকে আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন পদক্ষেপে শ্রমিকরা আমেরিকার তুলনায় অনেক ভালো। এখন তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) জনপ্রতি আয় ৬৫ হাজার ডলার। আর আমার ২ হাজার ৮০০ ডলার। সেই তুলনায় আমার শ্রমিকরা অনেক ভালো। তাদের আমাদের প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানা উচিত।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে নতুন করে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আসবে কি না জানতে চাইলে মোমেন বলেন, আমি জানি না। এটা অন্য দেশের বিষয়।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকির প্রেক্ষিতে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেটা আমার বলা উচিত না, আপনি যদি রাজনীতিবিদ হোন, তাহলে এক দল না এক দল আপনার সম্পর্কে বক্তব্য দেবে। আমরা যারা পাবলিক লাইফে, আমাদের সম্পর্কে পাবলিক বক্তব্য দেবে। আর যদি আপনি রাজনীতি থেকে সরে থাকেন, তাহলে কেউ আপনাকে এসব নিয়ে তিরস্কার করবে না। আর কে কী কোথায় বলল, এভিডেন্স তো আমাদের দেন নাই। আমাদের আগে এভিডেন্স প্রয়োজন।
এদিকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে নৌকা প্রতীকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিদেশিরা নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলতে পারবে না। আপনারা (গণমাধ্যম) তাদের (বিদেশিদের) যত সুযোগ দেবেন তারা তত লাফালাফির সুযোগ পাবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কেউ যদি সদুপদেশ দেয় অবশ্যই আমরা সেটি গ্রহণ করব। আগেও যখনই কেউ ভালো প্রস্তাব দিয়েছে তখনই আমরা সেটি গ্রহণ করেছি। আর অবান্তর-অবাস্তব প্রস্তাব দিলে আমরা সেটা গ্রহণ করি না। বাংলাদেশের জনগণের পরিপক্কতা আছে, বিচার করার ক্ষমতা আছে। আমাদের দেশের মঙ্গলের জন্য জনগণের মঙ্গলের জন্য কাজ করি। বিদেশিদের জন্য কাজ করি না।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, এখনো সময় আছে আপনারা মানুষের জান-মাল নষ্ট না করে অগ্নি-সন্ত্রাস বন্ধ করে দেশবাসীর কাছে মাফ চেয়ে নির্বাচনে আসুন। আপনাদের কতটুকু গ্রহণযোগ্যতা নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণ করুন। তার আগে জাতীয় সম্পদ ও বাস পোড়ানো, মানুষ হত্যার অপরাধে জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। আপনাদের কতটুকু জনসমর্থন আছে সেটা প্রমাণ করুার জন্য নির্বাচনে আসুন। আমার অপজিশন লিডারশিপ (বিরোধী দলীয় নেতাদেরকে) বলব, যারা সন্ত্রাসী কাজ করছে, সাংবাদিক মেরেছে, বিচারকের বাড়িতে আগুন দিয়েছে, পুলিশ হাসপাতাল ধ্বংস করেছে তারা যদি বিএনপির লোক হয় তাহলে দল থেকে তাদের বহিষ্কার করুন। আর যদি বহিষ্কার না করেন আমরা ভাবব বিএনপি সন্ত্রাসীদের দল। আর সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না।
তফসিল ঘোষণার পর দেশে নির্বাচনী আমেজ তৈরি হয়েছে দাবি করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা আজ নমিনেশন পেপার সাবমিট করতে এসেছি। শত শত লোক এখানে আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে এসেছে। মানুষ এটা বিশ্বাস করে যে আওয়ামী লীগ নির্বাচনমুখী দল। কেননা এদেশে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করেছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ সব নির্বাচনে জয়লাভ করেই সরকার গঠন করেছে। কোনোদিন চোরাই পথে সরকারে আসেনি, আসবেও না।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
৯ দফা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ কতদূর?
মর্গের দুই লাশের দাবিদার দুই পরিবার,
আইনজীবীকে হত্যার হত্যাচেষ্টা: শেখ হাসিনা-জয়সহ ৯৩ জনের মামলা এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ
তথ্য থাকলেও সন্দেহজনক লেনদেনে দেরিতে ব্যবস্থা নিচ্ছে বিএফআইইউ!
সাবেক এমপি হেনরীর ৫৬ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দের নির্দেশ,
গ্যাসের দাম বাড়ানোর উদ্যোগে উৎকণ্ঠায় নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীরা
দেশে এইচএমপি ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত
শাহজালাল বিমানবন্দরে বিমান বাহিনীর সদস্যদের অপসারণে আইনি নোটিশ
চকরিয়ায় পুলিশ-সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলি: বসতবাতিতে আগুন, ওয়ার্ড মেম্বারসহ আহত ২
স্বাধীন সামরিক বাহিনী সংস্কার কমিশন গঠনের প্রস্তাব
শেখ হাসিনার চোখ ছিল শুধু ঢাকা থেকে টুঙ্গীপাড়া পর্যন্ত : সারজিস
শেখ হাসিনা ভারতের সাথে বৈষম্যমৃলক চূক্তি করেছিলেন-মৌলভীবাজারে সারজিস আলম
ব্র্যাক ব্যাংকের টপ টেন রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড জয় ২০২৪ সালে ১.৬ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স সংগ্রহ
ওসি মুহিবুল্লাহকে বাঁচাতে স্বজনদের মানববন্ধন
পাটগ্রাম সীমান্তে বাংলাদেশিকে লক্ষ্য করে বিএসএফের গুলি, আহত ১
ওয়ান টাইম প্লাস্টিক বন্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ৬ হাজার প্রতিষ্ঠান: বিপিজিএমইএ
চলমান সংস্কার গতিশীল করতে হবে, যাতে কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে : মান্না
ফরিদপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় তিন দিনে মোট ১১ জন নিহত, আহত ৩৫
বিধ্বংসী শতকে লিটনের জবাব, ঝড়ো সেঞ্চুরি তানজিদেরও, বিপিএলে রেকর্ড
ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোন ষড়যন্ত্রকারী বিএনপির ক্ষতি করতে পারবে না : আমিনুল হক