ভোটের আচরণবিধি দেখতে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগে জনপ্রশাসনকে চিঠি ইসির
২১ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ এএম

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল সোমবার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, ৩০০টি নির্বাচনী এলাকায় ২৮ নভেম্বর থেকে আগামী ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ইসির দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা প্রয়োজন।
দ্বাদশ নির্বাচনে ন্যূনতম তিনটি ইউনিয়নের জন্য একজন করে, পার্বত্য এলাকাসহ দুর্গম ও দূরবর্তী প্রতি দুটি ইউনিয়নের জন্য একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট; পৌরসভার ক্ষেত্রে প্রতি পৌরসভায় তিনজন করে (বড় পৌরসভার ক্ষেত্রে চারজন) এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রতি চার–পাঁচটি সাধারণ ওয়ার্ডের জন্য একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করতে বলা হয়েছে। তবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় সর্বোচ্চ তিনটি ওয়ার্ডের জন্য একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইসির নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ছাড়া সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা/জোনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে। যেসব উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মরত নেই, সেসব উপজেলায় বিভাগ বা জেলা পর্যায়ে কর্মরত প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে বা অন্য কোনো দপ্তরে কর্মরত প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে নিয়োগ দেওয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেটরা বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপর নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণ: নির্বাচনের সাথে জড়িত সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং নির্বাচনি দায়িত্বে নিয়োজিত আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যগণ নির্বাচন কমিশনের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে থেকে কাজ করবেন। যদি কোন কর্মকর্তা/কর্মচারী বা আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্য পক্ষপাতমূলক কোন আচরণ করেন বা নির্বাচনের ফলাফল প্রভাবান্বিত করার চেষ্টা করে তাহলে নির্বাচন কমিশন তাকে নির্বাচনের দায়িত্ব হতে অব্যাহতি দিতে পারবে এবং তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার লক্ষ্যে নির্বাচন কর্মকর্তাদের শৃঙ্খলা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য ‘নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১’ শীর্ষক আইন রয়েছে। পরিশিষ্ট-ও তে উক্ত আইন উদ্ধৃত করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব: সংবিধানে ১১৯ অনুচ্ছেদের বিধান অনুসারে প্রেসিডেন্ট পদের নির্বাচন অনুষ্ঠান করা, সংসদ-সদস্যদের নির্বাচন অনুষ্ঠান করা, সংসদে নির্বাচনের জন্য নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ করা এবং প্রেসিডেন্টের পদের এবং সংসদের নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা। এছাড়াও সংবিধান বা অন্য কোন আইনের দ্বারা নির্ধারিত হবে, নির্বাচন কমিশন সেইরূপ দায়িত্ব পালন করবেন। বিভাগীয় কমিশনার, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের অবগত করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। নির্বাচন কমিশনের কর্মচারী: সংবিধানে ১২০ অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের জন্য যেরূপ কর্মচারী প্রয়োজন হবে, নির্বাচন কমিশন অনুরোধ করলে প্রেসিডেন্ট সেরূপ কর্মচারী ব্যবস্থা করবেন। নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা অর্পণ: গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৪ অনুচ্ছেদের বিধান অনুসারে কমিশন তার চেয়ারম্যান বা কোন সদস্য বা তার কোন কর্মকর্তাকে যে কোন ক্ষমতা প্রয়োগ বা দায়িত্ব পালনের জন্য দায়িত্ব প্রদান করতে পারবে। তাছাড়া ৫ অনুচ্ছেদের বিধান অনুসারে কমিশন যে কোন ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষকে তার নির্দেশ অনুযায়ী কোন দায়িত্ব পালন বা সহায়তা প্রদান করতে নির্দেশ দিতে পারবে।
নির্বাচন কমিশনকে নির্বাহী কর্তৃপক্ষের সহায়তা: সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদের বিধান অনুসারে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য। নির্বাচন কমিশনের অনুমতি ব্যতীত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বদলী না করা: গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৪৪ই অনুচ্ছেদের বিধান অনুসারে নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার পর হতে নির্বাচনি ফলাফল ঘোষণার পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে নিম্নোক্ত কর্মকর্তাবৃন্দকে স্ব স্ব কর্মস্থল হতে বদলী না করার বিধান রয়েছে। বিভাগ, জেলায় বা মেট্রোপলিটন এলাকায় কর্মরত তাঁদের অধীনস্থ কর্মকর্তারা। কতিপয় ক্ষেত্রে কমিশনের নির্বাচনি কার্যক্রম বন্ধ করার ক্ষমতা: গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৯১ এর বিধান অনুসারে কমিশনের নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে, নির্বাচনে বল প্রয়োগ, ভীতি-প্রদর্শন এবং চাপ সৃষ্টিসহ বিভিন্ন বিরাজমান অপকর্মের কারণে ন্যায়ানুগ ও নিরপেক্ষভাবে এবং আইন অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনা নিশ্চিত করতে সক্ষম হওয়া যাবে না সেক্ষেত্রে যে কোন ভোট কেন্দ্র বা ক্ষেত্রমত সম্পূর্ণ নির্বাচনি এলাকায় যে কোন পর্যায়ে ভোটগ্রহণ বন্ধ করতে পারবেন। তাছাড়া, কোন ব্যালট পেপার নাকচ বা গ্রহণসহ, এই অধ্যাদেশ বা বিধিমালার অধীন কোন কর্মকর্তা কর্তৃক প্রদত্ত কোন আদেশ পুনর্বিবেচনা করতে পারবেন, এবং নির্বাচন নিরপেক্ষ, ন্যায়ানুগ ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা নিশ্চিতকরণের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান ও ক্ষমতা প্রয়োগসহ প্রাসঙ্গিক অন্যান্য আদেশ প্রদান করতে পারবেন।
প্রার্থিতা বাতিলের কমিশনের ক্ষমতা: গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৯১ই এর বিধান অনুসারে যদি কোন উৎস হতে প্রাপ্ত রেকর্ড বা মৌখিক কিংবা লিখিত রিপোর্ট হতে কমিশনের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, প্রতিদ্বন্দ্বী কোন প্রার্থী বা তার নির্বাচনি এজেন্ট বা তার নির্দেশে বা তার পক্ষে তার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্মতিতে অন্য কোন ব্যক্তি গুরুতর বেআইনী কার্যে লিপ্ত হয়েছেন বা লিপ্ত হবার চেষ্টা করছেন বা এ আদেশ বা এর অধীন প্রণীত বিধিমালা বা আচরণ বিধিমালার কোন বিধান লংঘন করেছেন বা লংঘনের চেষ্টা করছেন এবং অনুরূপ বেআইনী কার্যে লিপ্ত হওয়া বা লিপ্ত হবার চেষ্টা বা লংঘন বা লংঘনের চেষ্টার জন্য তিনি সদস্য নির্বাচিত হবার বা থাকার অযোগ্য হতে পারেন, সেক্ষেত্রে কমিশন, সংশ্লিষ্ট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে শুনানির যুক্তিসংগত সুযোগ প্রদান করে, বিষয়টি তদন্তের আদেশ দেবেন। তদন্ত রিপোর্ট প্রাপ্তির পর কমিশন যদি এ মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার নির্বাচনি এজেন্ট বা তার নির্দেশে বা তার পক্ষে তার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্মতিতে অন্য কোন ব্যক্তি গুরুতর বেআইনী কার্যে লিপ্ত হয়েছেন বা লিপ্ত হওয়ার চেষ্টা করছেন বা আদেশ বা বিধিমালা বা আচরণ বিধিমালার কোন বিধান লংঘন করেছেন বা লংঘনের চেষ্টা করছেন এবং অনুরূপ বেআইনী কার্য করার বা চেষ্টা বা ক্ষেত্রমতে লংঘন বা লংঘনের চেষ্টার জন্য তিনি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার বা থাকার অযোগ্য হতে পারেন, তা হলে কমিশন, তাৎক্ষণিকভাবে লিখিত আদেশ দ্বারা, অনুরূপ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর প্রার্থীপদ বাতিল করতে পারবেন এবং সংশ্লিষ্ট পদের নির্বাচন, তাকে বাদ দিয়ে, অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীগণের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।
এদিকে ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে আগামী ৭ জানুয়ারি। নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

বৃষ্টির মধ্যেই শাহবাগে বাসে আগুন

রুশপন্থী সাবেক ইউক্রেনীয় এমপিকে গুলি করে হত্যা করল ইউক্রেন

উচ্ছিষ্টভোগীদের দিয়ে একতরফা নির্বাচন করাচ্ছে সিইসি : সমমনা জোট

হলফনামা বিশ্লেষন: রাজশাহীর মন্ত্রী এমপিরা এখন সম্পদের পাহাড়ে

অবরোধের সমর্থনে শাহবাগে ছাত্রদল নেতা রাকিবের নেতৃত্বে মিছিল

বাংলাদেশে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে থাকবে রাশিয়া : রুশ রাষ্ট্রদূত

পশ্চিম তীরের ইসরাইলিদের বিরুদ্ধে এবার বেলজিয়ামের ভিসা নিষেধাজ্ঞা

প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা শুক্রবারই

উখিয়ার ক্যাম্প থেকে পালাতে গিয়ে ২৯ রোহিঙ্গা আটক
বৃষ্টিতে ভেসে গেল মিরপুর টেস্টের দ্বিতীয় দিন

২০০০ বছরের পুরোনো ভাস্কর্য লিবিয়াকে ফিরিয়ে দিল সুইজারল্যান্ড

স্বৈরশাসককে বিদায় করতে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার বিকল্প নেই: এলডিপি

নৌকা গুম-খুনের প্রতীক! জনগণ ভোট দেবে না : ১২ দলীয় জোট
পেলে-নেইমারদের ক্লাব নেমে গেল দ্বিতীয় বিভাগে

সিরাজদিখানে ইট ভাটায় ডাকাতি

জিয়া সৈনিকরা কখনো সন্ত্রাসী হতে পারেনা -মিনু

শাহজাহান ওমরের সম্পদ কমেছে স্ত্রীর সম্পদ বেশী, এলাকার নেতারাও বিব্রত

হামাস নেতার বাড়ি ঘিরে ফেলেছে ইসরাইলের সেনা

যুক্তরাষ্ট্র একতরফা সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না : কাদের

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে পৃথক দুর্ঘটনায় নিহত ৩, আহত দুই