বিএনপি ভোটে এলে বিবেচনা করবে ইসি
২১ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০২ এএম | আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০২ এএম

নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা বলেছেন, বিএনপিসহ অন্য বিরোধী দলগুলো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এলে পুনঃ তফসিল দেওয়ার কথা বিবেচনা করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ ক্ষেত্রে বিএনপিকে ফরমালি (আনুষ্ঠানিকভাবে) ভোটে আসার কথা জানাতে হবে।
গতকাল সোমবার নির্বাচন ভবনের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা। সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি এবং তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর ৪৮ ঘণ্টার হরতাল চলছে। গতকালও হরতাল শেষে অবরোধের ঘোষণা দিয়েছেন। ভোটের বাইরে থাকা বিএনপিসহ অন্যান্য দল যদি ভোটে ফিরতে চায়, সে ক্ষেত্রে এ তফসিলে কি ফেরা সম্ভব বা নাকি বিএনপির জন্য কোনো বিবেচনা থাকবে এমন প্রশ্নে রাশেদা সুলতানা বলেন, দেখেন যদি ফিরতে চান, আমার জানামতে পূর্বেও ওনারা একটু পরেই এসেছিলেন এবং সুযোগটা পেয়েছিলেন। ওনারা যদি ফিরতে চান, কীভাবে কী করা যাবে, নিশ্চয়ই আমরা আলোচনা করব। সিদ্ধান্ত নেব। ওনারা সিদ্ধান্ত নিলে, আসতে চাইলে অবশ্যই আমরা ওয়েলকাম (স্বাগত) করব। কখনোই চাইব না যে ওনারা আসতে চেয়েছেন, আমরা ফিরিয়ে দেব, এটা হবে না।
রাশেদা সুলতানা বলেন, বিস্তারিত এখন কিছুই বলব না। ওনারা যদি আসেন, আমরা কমিশনাররা বসব। আইনকানুন দেখব। তারপর যেটা সিদ্ধান্ত হয়। অগ্রিম কিছু বলতে পারব না। তার মানে আপনারা বিবেচনা করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে রাশেদা সুলতানা বলেন, এলে তো বিবেচনা করবই। অবশ্যই করব। আমরা তো চাই সব দল এসে একটা সুন্দর নির্বাচন হোক।এই বিবেচনার মধ্যে কী পন্থা আছে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, কী পন্থা আছে,এই মুহূর্তে আমি বিস্তারিত বলতে পারব না। আপনারা দেখেন ২০১৮ সালের নির্বাচনে আমার জানামতে,ওনারা আসছিলেন। ওই নির্বাচনে কিন্তু ওনাদের জন্য একটু স্পেস (জায়গা) তৈরি করা হয়েছিল। আমরা যেভাবে আইনে আছে, সেভাবেই করব। আমি ডিটেইল (বিস্তারিত) আর কিছু বলব না। জাতীয় পার্টি (জাপা) তফসিল পেছানোর জন্য প্রেসিডেন্টের কাছে আবেদন জানিয়েছে, তো তফসিল একটু পেছানো যায় কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে রাশেদা সুলতানা বলেন, এই বিষয়ে আমরা কিছুই বলব না। অগ্রিম বলার সময় এখনো আসেনি। যখন আসবে, যেটা হবে, সেটাই বলব। পরিস্থিতি যখন আসবে, পরিস্থিতি দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। অগ্রিম এ বিষয়ে কোনো কথাই বলব না। বলা উচিতও নয়। ওনারা এলে আমরা ওয়েলকাম করব। এটার জন্য আইন অনুযায়ী যেভাবে পথ সৃষ্টি করতে হবে, সেভাবে করব। কিন্তু আগেই বলব না। তিনি বলেন, সংকট সৃষ্টি হওয়ার আগেই যদি ওনারা আসেন, কাজেই এখনই কিছু বলব না। অতীতে যেভাবে হয়েছে, আমরা দেখব। যদি বাড়ানো প্রয়োজন হয়, বাড়াব। যদি বাড়ানোর মধ্যে না হয়ে এমনিই হয়, তাহলে হবে। কোনো অসুবিধা নেই। যদি এই তফসিলের মধ্যেই আসেন, তাহলে তো তফসিলে হাত দেওয়ার দরকার নেই। আরেক প্রশ্নের জবাবে রাশেদা সুলাতানা আরও বলেন, নিশ্চয়ই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের এখনো স্পেস (জায়গা) আছে। মাঠের রাজনীতিতে যখন বিভাজন তৈরি হয়েছে, তখন শান্ত নাকি অশান্ত, তা আমার বলতে হবে না। আপনারাই দেখতে পাচ্ছেন। জনগণও দেখতে পাচ্ছে। কিন্তু অশান্ত আছে, তাই বলে শান্ত হবে না এমন কোনো কথা নয়। যেকোনো মুহূর্তে শান্ত হতে পারে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কত সংখ্যক সদস্য দায়িত্ব পালন করবে, তা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাত লাখ ৪৭ হাজার ৩২২ জন সদস্য মাঠে দায়িত্ব পালন করবেন। অবশ্য এ সংখ্যার সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনী যুক্ত নেই। নির্বাচনে স্বশস্ত্র বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে কিনা ইসি সে বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে স্বশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে আলোচনা হয়েছে বলে ইসি সূত্রে জানা গেছে।
গতকাল সোমবার বিকালে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও কোস্টগার্ডের প্রতিনিধিরা বৈঠক করে। এই বৈঠকে মূলত এসব বাহিনীর বাজেট নিয়ে আলোচনায় বলা হয়েছে। বাহিনীগুলোর পক্ষ থেকে ইসির কাছে পৃথক চাহিদা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তারা কিছু অর্থ আগামও চেয়েছে। তবে চাহিদার বিষয়ে ইসির তরফ থেকে কিছুই জানানো হয়নি।
বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ সাংবাদিকদের বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে নিয়মিত বৈঠকের অংশ হিসেবে যারা নির্বাচনকালে দায়িত্ব পালন করবে, তাদের অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্ভাব্য বাজেট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাদের জনবলের ভিত্তিকে একটি চাহিদা দিয়েছে। তবে এটি চূড়ান্ত নয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত হার হিসেবে কত সংখ্যক সদস্য নিয়োগ হবে, সেই অনুযায়ী অর্থ প্রদান করা হবে। তিনি জানান, তারা কিছু অগ্রিম বরাদ্দ চেয়েছে। বরাদ্দপ্রাপ্তি সাপেক্ষে তার কতটুকু আমরা দিতে পারবো, সেটা নিয়ে আলোচনা করেছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কত টাকা বরাদ্দ চেয়েছে এমন প্রশ্নের অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, বিষয়টি যেহেতু চূড়ান্ত নয়, কাজেই এটা বলতে চাচ্ছি না। তবে কত সংখ্যক সদস্য দায়িত্ব পালন করবে, সেটা জানাতে পারি। ভোটের মাঠে আনসার ৫ লাখ ১৬ হাজার, পুলিশ ও র্যাব এক লাখ ৮২ হাজার ৯১ জন, কোস্টগার্ড দুই হাজার ৩৫৫ জন ও বিজিবি ৪৬ হাজার ৮৭৬ জন থাকবেন।
জানা গেছে, পদ মর্যাদা অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ভাতা পেয়ে থাকেন। একজন পুলিশের সর্বনিম্ন ভাতা ৫৩৬ টাকা, সর্বোচ্চ ১২০০ টাকা। র্যাবও একই পরিমাণ ভাতা পেয়ে থাকেন। বিজিবি সর্বনিম্ন ৪০০ টাকা, সর্বোচ্চ ১২২৫ টাকা ভাতা পাবে। কোস্টগার্ড সর্বনিম্ন ৬৩৭ টাকা, সর্বোচ্চ ১৮০০ টাকা, আনসার সদস্যরা সর্বনিম্ন এক হাজার, সর্বোচ্চ এক হাজার ৫০ টাকা ভাতা পান। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আগেই ইসির কাছে একটি খসড়া চাহিদা দিয়েছে। এর মধ্যে পুলিশ ৪৩০ কোটি ২৫ লাখ টাকা, আনসার ও ভিডিপি চেয়েছে ৩৬৬ কোটি ১২ লাখ টাকা, র্যাব ৫০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা এবং কোস্টগার্ড ৭৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা বরাদ্দ চেয়েছে।
##
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে ধানম-িতে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল

চকরিয়ায় বেপরোয়া শ্যামলী বাসে পৃষ্ঠ হয়ে প্রাণ হারালো দুই সহোদর

রাজবাড়ীতে অরক্ষিত রেল ক্রসিংয়ে এক বছরে ট্রেনে কাটা পড়ে ১২ জনের মৃত্যু

অবরোধের সমর্থনে তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল ও পিকেটিং

পূর্ব শত্রুতার জের ডাসারে ঘেরে বিষ দিয়ে মাছ নিধনের অভিযোগ

প্রেসিডেন্টের কাছে চার দেশের রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশ
আইসিসির মাসসেরার দৌড়ে নাহিদা ও ফারজানা

এবার ইসির অনুমোদন পেলো ১১০ ইউএনও বদলির প্রস্তাব

রায়গঞ্জে নবাগত ইউএনওর যোগদান

যোগ্যদের ছাড় দেবে আওয়ামী লীগ : তথ্যমন্ত্রী

রাজবাড়ীতে অরক্ষিত রেল ক্রসিংয়ে এক বছরে ট্রেনে কাটা পড়ে ১২ জনের মৃত্যু

নির্বাচনী হলফনামায় দুদকের কঠোর নজরদারি

গাজায় যুদ্ধ বন্ধে নিজের সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করলেন জাতিসংঘ মহাসচিব

মেরামত কাজ না হওয়ায় বিশ্বনাথে-রামপাশা-লামাকাজি সড়ক এখন মরন ফাঁদ

সড়ক দুর্ঘটনায় ইউনিক গ্রুপের এমডির মেয়ের মৃত্যু

দৌলতখানে গভীর রাতে মাইক্রোবাসে আগুন

এবার ১১০ ইউএনও বদলির প্রস্তাব অনুমোদন ইসির

বাগেরহাটে হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেফতার

বৃষ্টির মধ্যেই শাহবাগে বাসে আগুন

রুশপন্থী সাবেক ইউক্রেনীয় এমপিকে গুলি করে হত্যা করল ইউক্রেন