শেখ হাসিনা চায় জনগণ স্বেচ্ছাদাসত্ব করুক : রিজভী
২১ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ এএম

রাষ্ট্র এখন ব্যক্তির স্বাধীনতা হরণ করে একনায়কের প্রভুত্ব কায়েম করেছে অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, রাষ্ট্র, সরকার ও দল এখন একাকার। মানুষ এখন স্ব-ইচ্ছায় চলতে পারে না, পছন্দমত ব্যক্তিকে ভোট দিতে পারে না। মানুষ কোন দাস নয়, কিন্তু শেখ হাসিনা চায়, তার কাছে মানুষ স্বেচ্ছাদাসত্ব করুক। মানুষ নিজের স্বাধীনতা সমর্পণ করুক তার কাছে। শেখ হাসিনা স্বাধীনতা বলতে বোঝেন অপরের উপর অধীনতা চাপিয়ে দেওয়া। এজন্যই তিনি সর্বমহলের দাবি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনে বিশ্বাসী নয়। দেশের জনগণের ও আন্তর্জাতিক চাপকে পাত্তা দিচ্ছেন না তিনি। গতকাল সোমবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা ১৫ বছরে নিষ্ঠুরভাবে গড়ে তুলেছেন দুঃশাসনের বাতাবরণ। তাঁর দেশ শাসনের কোন বৈধ অধিকার নেই। কারণ এই সরকার নির্বাচিত নয়। দেশে জনগণকে এরা ভোটাধিকার বঞ্চেত করেছে। আবারো নির্বাচনের নামে ইয়ার্কি করা শুরু করেছে আওয়ামী ‘ডমেস্টিকেটেড’ নির্বাচন কমিশন। জনগণের ধন-সম্পদ, টাকা-পয়সা লুটের আকাক্সক্ষা থেকেই আবারো একতরফা নির্বাচনের বন্দোবস্ত চলছে।
নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন যে সরকারের পথরেখা অনুসারে চলবে তার প্রমাণ নিজেরাই দিচ্ছে। সরকারের সাজানো প্রশাসনের কোন রদবদল করবে না বলে জানিয়েছে, এটাই স্বাভাবিক। কারণ প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কমিশনারদের রক্ত পরীক্ষা করে কমিশনে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সুতরাং এটিই হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন একদলীয় বাকশালী নির্বাচন। এই নির্বাচনে অংশগ্রহণের অর্থই হলো-নির্বাচনী আত্মহত্যা। একতরফা নির্বাচনের জন্য আবারও শুরু হয়েছে অদৃশ্য করা, খুন, জখমের উপুর্যপুরী নানামুখী রাষ্ট্রীয় সহিংসতার ছোবল। খুলনা ফুলতলা বিএনপির সভাপতিকে নিরুদ্দেশ করা হয়েছে। এখনো তার হদিস দেওয়া হয়নি। ইতোমধ্যে বেশকয়েকজন যুবনেতা ও ছাত্রনেতাকে গুম করে রাখার পর আদালতে হাজির করা হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই নেতাকর্মীদের আটক করে কয়েকদিন গুম করে রাখা হচ্ছে। এই গুমের সময় তাদের ওপর চলে পাশবিক নিপীড়ন-নির্যাতন।
কারাগারে বিরোধী নেতাদের ডিভিশন প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অভিযোগ করে রিজভী বলেন, পাঁচবারের সাবেক এমপি মো. শাহজাহান ও সাবেক এমপি লিংকনকে এখনো কারাগারে ডিভিশন দেওয়া হয়নি। তাদেরকে অমানবিক পরিবেশে মেঝেতে থাকতে দেওয়া হয়েছে। এই শীতে মেঝের ঠাণ্ডায় তারা চরম শ্বাসকষ্টসহ নানাবিধ রোগে ভুগছে। আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কারাকর্তৃপক্ষ এখনো তাদেরকে ডিভিশন দিচ্ছে না।
তিনি বলেন, আমাদেরকে তো প্রায়ই এ সরকারের আমলে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা জানি, চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের ডিভিশন দেয়া হয়েছে, শুধুমাত্র ক্ষমতাসীন দলের কানেকশনের কারণে।
জামায়াতের নিবন্ধন প্রসঙ্গে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ২০১৩ সালে হাইকোর্টে সংখ্যাগরিষ্ঠের রায়ে বাতিল করার বিরুদ্ধে সুপ্রীম কোর্টে যে আপীল করা হয়েছিল গত রোববার তা ‘ডিসমিস ফর ডিফল্ট’ করা হয়েছে। আপীলকারী দল রায়টিকে ‘ন্যায় ভ্রষ্ট’ বলে উল্লেখ করে তাদেরকে সুবিচার থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ করেছে। সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ন্যায়ভ্রষ্ট রায় প্রদানের মাধ্যমে তাদের সুবিচার থেকে বঞ্চিত করার দৃষ্টান্ত নতুন নয় বলেই দেশবাসী এই রায়ে বিস্মিত না হলেও সুবিচার লাভে শেষ আশ্রয়স্থল বিচার বিভাগে যুক্ত ব্যক্তিগণের রাজনৈতিক পক্ষপাতমূলক বক্তব্য এবং ক্ষমতাসীন সরকারের ইচ্ছা পূরণে সহায়তা করবে ঘটনায় হতাশ হয়ে পড়ছে। যে রাজনৈতিক দলের বিস্তৃতি সারাদেশে দৃশ্যমান, জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকারের প্রায় সকল স্তরে প্রতিনিধিত্বশীল থাকার প্রমাণিত দৃষ্টান্তের অধিকারী, তবে নিবন্ধন বাতিল হওয়ার পাশাপাশি নাম গোত্রহীন অপরিচিত দলকে নিবন্ধন দেয়ার নির্দেশ দেয়ার দৃষ্টান্ত সুবিচারের প্রমাণ বহন করে না। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ক্ষমতাসীন সরকারের বিরোধীতা করা যেকোন রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং সেই অধিকারের সুরক্ষা বিচার বিভাগের কাছেই প্রাপ্য। এর ব্যাতিক্রম গণতন্ত্র ও ন্যায় বিচারের পরিপন্থি এবং অগ্রহণযোগ্য।
নির্বাচনের মাঠ খালি করতে কেন্দ্রীয় নেতাদের সাজা দেয়া হচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, দলের যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপুসহ ১৪ জন নেতা এবং রংপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আনিসুর রহমান লাকু, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মাহফুজ উন নবী ডন, জেলা যুব দলের সহসভাপতি তারেক হাসান সোহাগ, মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব জহির আলম নয়নকে মিথ্যা মামলায় ফরমায়েসী রায়ে সাজা প্রদান করা হচ্ছে। এসব ফরমায়েসী রায় সুপরিকল্পিত। নির্বাচনের আগে মাঠ ফাঁকা করার জন্য বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের শুধু মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারই নয়, পুরনো মামলায় সাজা দেয়ার হিড়িক শুরু হয়েছে। সজীব তরুন এসব নেতাদের যদি সাজা দিয়ে আটকিয়ে রাখা যায় তাহলে শেখ হাসিনার অবৈধ মসনদ টিকে থাকবে বহুদিন, এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এসব নেতৃবৃন্দকে সাজা দেয়া হয়েছে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

গাজায় যুদ্ধ বন্ধে নিজের সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করলেন জাতিসংঘ মহাসচিব

মেরামত কাজ না হওয়ায় বিশ্বনাথে-রামপাশা-লামাকাজি সড়ক এখন মরন ফাঁদ

সড়ক দুর্ঘটনায় ইউনিক গ্রুপের এমডির মেয়ের মৃত্যু

দৌলতখানে গভীর রাতে মাইক্রোবাসে আগুন

এবার ১১০ ইউএনও বদলির প্রস্তাব অনুমোদন ইসির

বাগেরহাটে হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেফতার

বৃষ্টির মধ্যেই শাহবাগে বাসে আগুন

রুশপন্থী সাবেক ইউক্রেনীয় এমপিকে গুলি করে হত্যা করল ইউক্রেন

উচ্ছিষ্টভোগীদের দিয়ে একতরফা নির্বাচন করাচ্ছে সিইসি : সমমনা জোট

হলফনামা বিশ্লেষন: রাজশাহীর মন্ত্রী এমপিরা এখন সম্পদের পাহাড়ে

অবরোধের সমর্থনে শাহবাগে ছাত্রদল নেতা রাকিবের নেতৃত্বে মিছিল

বাংলাদেশে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে থাকবে রাশিয়া : রুশ রাষ্ট্রদূত

পশ্চিম তীরের ইসরাইলিদের বিরুদ্ধে এবার বেলজিয়ামের ভিসা নিষেধাজ্ঞা

প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা শুক্রবারই

উখিয়ার ক্যাম্প থেকে পালাতে গিয়ে ২৯ রোহিঙ্গা আটক
বৃষ্টিতে ভেসে গেল মিরপুর টেস্টের দ্বিতীয় দিন

২০০০ বছরের পুরোনো ভাস্কর্য লিবিয়াকে ফিরিয়ে দিল সুইজারল্যান্ড

স্বৈরশাসককে বিদায় করতে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার বিকল্প নেই: এলডিপি

নৌকা গুম-খুনের প্রতীক! জনগণ ভোট দেবে না : ১২ দলীয় জোট
পেলে-নেইমারদের ক্লাব নেমে গেল দ্বিতীয় বিভাগে