যুক্তরাষ্ট্র থেকে কমেছে আমদানি-রফতানি
২৩ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০১ এএম | আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০১ এএম
ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি এবং বাংলাদেশ থেকে রফতানি কমেছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স সংগ্রহও কমে শীর্ষ থেকে চতুর্থ অবস্থানে নেমেছে। কমে গেছে বৈদেশিক অনুদান আসার প্রবণতাও। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগও কমেছে। সামগ্রিকভাবে কমেছে দেশটি থেকে বাংলাদেশের ঋণ পাওয়ার প্রবণতাও। এর মধ্যেও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ কমছে, সামান্য বেড়েছে স্বল্পমেয়াদি ঋণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তৈরি বিভিন্ন প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্য হ্রাস পাওয়ার কয়েকটি কারণ রয়েছে। একক দেশ হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের উৎস। দেশ থেকে সবচেয়ে বেশি পণ্য রফতানি হয় যুক্তরাষ্ট্রে। রেমিট্যান্স আহরণের শীর্ষ দেশ ছিল এক সময়। এছাড়া বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগে দেশটির অবস্থান শীর্ষ কাতারে রয়েছে। পাশাপাশি অনুদান থেকেও বৈদেশিক মুদ্রা আসে। বৈদেশিক ঋণের অন্যতম উৎস যুক্তরাষ্ট্র। এসব খাতে দেশটি থেকে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ কমে গেলে বাংলাদেশে ডলারের প্রবাহে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। হঠাৎ করে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের বিকল্প উৎস খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। তখন ডলার সঙ্কট আরও প্রকট হবে। দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে এর ভয়ানক নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন অর্থনীতিবিদরা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৫১ কোটি ১৭ লাখ ডলার। যা মোট রেমিট্যান্সের ১০ দশমিক ৪১ শতাংশ এবং মোট রেমিট্যান্স আসার মধ্যে অবস্থান চতুর্থ। গত অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স আহরণে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ছিল শীর্ষে। আলোচ্য সময়ে শীর্ষ অবস্থান থেকে নেমে গেছে চতুর্থ অবস্থানে। গত অর্থবছরের একই সময়ে দেশটি থেকে রেমিট্যান্স এসেছিল ৯৯ কোটি ৯৮ লাখ ডলার। ওই সময়ে যা মোট রেমিট্যান্সের ১৭ দশমিক ২ শতাংশ ছিল। ওই সময়ের ব্যবধানে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স আসা কমেছে ৪৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ। গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স এসেছিল ৯৯ কোটি ৯৮ লাখ ডলার, অক্টোবর-ডিসেম্বরে এসেছে ৯৬ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। চলতি বছরের মার্চ-এপ্রিলে ৮৩ কোটি ৪৫ লাখ ডলার, এপ্রিল-জুনে ৭২ কোটি ৮ লাখ ডলার ও জুলাই-সেপ্টেম্বরে এসেছে ৫১ কোটি ১৭ লাখ ডলার। প্রাফত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত বছরের জুলাই- সেপ্টেম্বর থেকে পরবর্তী প্রতি প্রান্তিকেই রেমিট্যান্স প্রবাহ কমছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশটি থেকে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৬৯ কোটি ডলার, যা মোট রেমিট্যান্সের ১৩ দশমিক ২৩ শতাংশ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আসে ১২০ কোটি ডলার, যা মোট রেমিট্যান্সের ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আসে ১৮৪ কোটি ডলার, যা মোট রেমিট্যান্সের ১১ দশমিক ২২ শতাংশ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে এসেছিল ২৪০ কোটি ডলার, যা মোট রেমিট্যান্সের ১৩ দশমিক ২০ শতাংশ। ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩৪৬ কোটি ডলার, যা মোট রেমিট্যান্সের ১৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে এসেছে ৩৪৪ কোটি ডলার, যা মোট রেমিট্যান্সের ১৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এসেছে ৩৫২ কোটি ডলার, যা মোট রেমিট্যান্সের ১৬ দশমিক ৩০ শতাংশ। অর্থাৎ গত ৬ বছরে দেশটি থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। এখন সেখান থেকে কমছে।
চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবরে দেশটিতে রফতানি হয়েছে ২৮৭ কোটি ডলার। এর মধ্যে জুনে ৮৭ কোটি ডলার, জুলাইয়ে ৮১ কোটি ডলার, আগস্টে ৮০ কোটি ডলার, সেপ্টেম্বরে ৬৮ কোটি ও অক্টোবরে ৫৮ কোটি ডলার রফতানি আয় এসেছে। তথ্যে দেখা যাচ্ছে প্রতি মাসেই আয় কমছে। গত অবছরের জুলাই-অক্টোবরে রফতানি আয় এসেছিল ৩০৮ কোটি ডলার। ওই সময়ে দেশটি থেকে রফতানি আয় কমেছে প্রায় ৭ শতাংশ। গত অর্থবছর দেশটিতে রফতানি হয়েছিল ৯৭০ কোটি ডলার। যা মোট রফতানি আয়ের সাড়ে ১৭ শতাংশ। এককভাবে সবচেয়ে বেশি রফতানি হয় যুক্তরাষ্ট্রে। এখন রফতানি আয় কমছে। ফলে সার্বিকভাবে রফতানি আয় কমছে।
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোক্তাদের সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের (এফডিআই) স্থিতিও কমছে। জুন পর্যন্ত তাদের বিনিয়োগের নিট স্থিতি ছিল ৩৯৫ কোটি ডলার। এর আগে গত ডিসেম্বরে ছিল ৪১০ কোটি ৩৪ লাখ ডলার। আলোচ্য সময়ে বিনিয়োগের স্থিতি কমেছে ৪ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশিদের সামান্য বিনিয়োগ রয়েছে। এর স্থিতিও কমেছে। গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশিদের বিনিয়োগ স্থিতি ছিল ১২ লাখ ৪০ হাজার ডলার। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ছিল ২১ লাখ ডলার। ওই সময়ে বিনিয়োগ কমেছে ৪১ শতাংশ।
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. মইনুল ইসলাম বলেন, একতরফা নির্বাচন বিদেশিরা মেনে নেবে না। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হলে শুধু অর্থনৈতিক বিষয়ই নয়, অন্যান্য ক্ষেত্রে নানা ধরনের বাধা আসতে পারে। বড় কোনো দেশ থেকে এ ধরনের বাধা এলে অর্থনীতির ক্ষতি হবে। দেশের ইমেজ নষ্ট হবে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
লক্ষ্মীপুর থেকে সাড়ে ৪ কোটি টাকার কষ্টিপাথর প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরে হস্তান্তর
অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দলে শর্ট ও হার্ডি, কামিন্সকে নিয়ে শঙ্কা
'ব্লু অরিজিন' রকেট উৎক্ষেপণের প্রস্তুতি সম্পন্ন,শুভকামনা জানালেন ইলন মাস্ক
কমলনগরে ট্রাক্টরট্রলির চাপায় চটপটি বিক্রেতার মৃত্যু
রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া মহাসড়কে বাস চলাচল শুরু
ঝিনাইদহে ২৬ টি দোকান দুঃসাহসিক চুরি টাকা ও মালামাল নিয়ে চম্পট
আর্থিক প্রতিষ্ঠানে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগে প্যানেল
বগুড়ায় মটরসাইকেল - ভটভটি সংঘর্ষে ব্যাংক কর্মকর্তা নিহত
‘জমজমের’ নামে ট্যাপের পানি বিক্রি করছিলেন এক প্রতারক , আয় ৩০ কোটি !
মাদকব্যবসা নিয়ে দু-পক্ষের সংঘর্ষ-বোমা হামলা-ভাঙচুর, আহত ২০
জুলাই-আগস্ট গণহত্যা : হাসিনাসহ জড়িতদের গুরুত্বপূর্ণ কল রেকর্ড প্রসিকিউশনের হাতে
কুষ্টিয়ায় পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে স্কুল ছাত্র খুন
ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দীদের মুক্তির জন্য উ.কোরিয়ার সৈন্য বিনিময়ে প্রস্তুত জেলেনস্কি
তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে ঈশ্বরগঞ্জে ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন
কিয়ার স্টারমার ‘ভালো বন্ধু’ টিউলিপকে কি বরখাস্ত করতে পারবেন ?
রেহানার কাছ থেকে রেহাই মিলত না কোনো ব্যাংকের
টিউলিপ সিদ্দিকের বিতর্কিত সেই ফ্ল্যাট কীভাবে কেনা হয়েছিল?যে তথ্য জানা গেল
লস অ্যাঞ্জেলসের দাবানলে হলিউড তারকার মৃত্যু
কুবিতে ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি শেষে পুলিশে দিল শিক্ষার্থীরা
সাতক্ষীরা সীমান্তে চাষে বাধা দিয়েছে বিএসএফ