আন্তর্জাতিকভাবে ও দেশে সম্মুখ যুদ্ধে ঘটনাবহুল দিন ৫ ডিসেম্বর
০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০২ এএম | আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০২ এএম
১৯৭১ সালের ৫ ডিসেম্বর ছিল অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও ঘটনাবহুল দিন। এ দিন আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক ঘটনা ঘটেছে। ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিল। অপর দিকে সম্মুখ যুদ্ধে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর প্রতিরোধ যুদ্ধে না টিকতে পেরে একের এর এক ঘাঁটি থেকে পালিয়ে যেতে থাকে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। এই দিনে (৫ ডিসেম্বর) দিল্লিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ভারতের প্রতিরক্ষা সচিব কে বি লাল জানান, ভারত খুব শিগগির বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেবে। এই দিনে (৫ ডিসেম্বর) জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বাংলাদেশ বিষয়ক প্রশ্নে যুদ্ধ বিরতি এবং যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া ভারত ও পাকিস্তানের সেনা অপসারণ সংক্রান্ত প্রস্তাব বাতিল হয়ে যায়। এই প্রস্তাবে নিরাপত্তা পরিষদের প্রভাবশালী সদস্য সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেটো দেয়। ভেটো দেয় পোল্যান্ডও। অন্যদিকে নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় ১১টি দেশ। তবে ভোটে অংশ নেয়নি চীন। ভোট দেয়নি বিট্রেন ও ফ্রান্স।
এই দিনে (৫ ডিসেম্বর) ঢাকায় ভারতের বিমানবাহিনী বিমান থেকে ১২ ঘণ্টাব্যাপী বোমা হামলা চালায়। এ সময়ের মধ্যে তারা তেজগাঁও ও কুর্মিটোলায় ৫০ টনের মত বোমা ফেলে। এতে হানাদারদের ৯০টি অস্ত্রবাহী ট্রাক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঢাকার বাইরেও বেশ কয়েকটি শহরে ভারতীয় বিমানবাহিনীর ক্রমাগত বোমা হামলায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী একেবারে চ্যাপ্টা হয়ে যায়। এক পর্যায়ে হানাদারদের সব বিমানঘাঁটির কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বাংলাদেশের আকাশ ভারতীয় বিমানবাহিনীর দখলে থাকে।
এই দিনে (৫ ডিসেম্বর) ভারতীয় মিত্রবাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট স্থলপথে এগিয়ে আসে। এদিন মিত্রবাহিনী বিভিন্ন সেক্টরের প্রধান প্রধান সড়কে অবরোধ সৃষ্টি করে ঢাকার সঙ্গে কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, সিলেট, নাটোর, রংপুর, যশোর ও রাজশাহীর সড়কপথের যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। জায়গায় জায়গায় অবস্থান নেয় তারা।
এই দিনে (৫ ডিসেম্বর) ব্রাক্ষণবাড়িয়ার আখাউড়াতে মুক্তিবাহিনী ও ভারতের ৫৭ মাউন্টেন ডিভিশনের মিত্রবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে টিকতে না পেরে আত্মসমর্পণ করে হানাদার বাহিনী। পরে হানাদার বাহিনীর কিছু সেনা ব্রাক্ষণবাড়িয়ার দিকে পালিয়ে যায়। এ দিন আখাউড়া দখলের পর মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনী ব্রাক্ষণবাড়িয়ার দিকে এগিয়ে যায়। এই দিনে মুক্তিবাহিনী সিলেটের করিমগঞ্জ দখল করে মুুন্সীনগরের দিকে এগিয়ে যায়। এদিন মুন্সীনগরও দখল করে মুক্তিবাহিনী। তারপর মৌলভীবাজারের দিকে এগিয়ে যায়।
এই দিনে (৫ ডিসেম্বর) ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে যশোর-কুষ্টিয়া রেলওয়ে জংশন দখল করে রেলওয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে মুক্তিবাহিনী। এই দিনে (৫ ডিসেম্বর) যশোরের ঝিকরগাছায় মুক্তিবাহিনীর কাছে হানাদারদের পতন হলে ৩ দলে বিভক্ত হয়ে মুক্তিযোদ্ধারা যশোর আক্রমণ শুরু করেন। উত্তর পাশে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল যশোর-ঝিনাইদহ সড়কে আক্রমণ শুরু করে। আরেকটি দল ধান খেতের মধ্য দিয়ে চিতের বিল অতিক্রম করে। বেনাপোল-যশোর সড়ক দিয়ে আরেকটি দল এগিয়ে যায়।
এই দিনে (৫ ডিসেম্বর) ঝিনাইদহের উত্তর ও পশ্চিমে অবস্থানরত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ওপর আক্রমণ চালায় ভারতীয় চতুর্থ ও নবম ডিভিশন। এক পর্যায়ে ভারতীয় বাহিনীর হামলায় হানাদার বাহিনী বিধ্বস্ত হয়ে যশোর সড়কের পাশে অবস্থান নেয়।
এই দিনে (৫ ডিসেম্বর) কুড়িগ্রামে উইং কমান্ডার এমকে বাশারের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনীর ৬ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধারা ধরলা নদী অতিক্রম করে কুড়িগ্রাম দখল করে। এ সময় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী কুড়িগ্রাম থেকে পালিয়ে লালমনিরহাটের দিকে চলে যায়।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
বগুড়ায় কলেজ শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৪
মতিঝিলে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫
সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই
ডাকসু নিয়ে ৩৭৭ সংস্কার প্রস্তাব ঢাবি ছাত্রদলের
গাজীপুরে থানায় ব্যবসায়ীকে আটক করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিলো ওসি
রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিস অবরোধের ঘোষণা চাকরি বঞ্চিতদের
শামীম ওসমান-নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুই মামলা
বায়ু দূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা
এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা
দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম
বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের
ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?
আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু
বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ
রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী
ধূমপানকে না বলুন
জালিমের পরিণতি ভালো হয় না
অখণ্ড ভারতের নীলনকশা এবং মুখোশপরা গণশত্রুদের দাস্যবৃত্তি
মাজারে হামলা ও উগ্রপন্থা কাম্য নয়
১২ কোটি জনসংখ্যার ৭ কোটি আক্রান্ত