ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ | ২ মাঘ ১৪৩১
মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদ

শিশুদের মেধা-শিক্ষা ও নৈতিকতা ধ্বংসকারী শিক্ষা কারিকুলাম বাতিল করুন

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০২ এএম | আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০২ এএম

পাঠ্য বইয়ে কোমলমতি শিশুদের মেধা, শিক্ষা ও নৈতিকতা ধ্বংসকারী শিক্ষা কারিকুলাম অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানিয়েছে ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদ। গতকাল মঙ্গলবার গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদ সভাপতি শহিদুল ইসলাম কবির এ দাবি জানান।
ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদ সভাপতি বলেন, নতুন কারিকুলামে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর পাঠ্য বইয়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও বিজ্ঞান শিক্ষার নামে যা শেখানো হচ্ছে, তা স্পষ্ট যৌন শিক্ষা›। এই যৌন শিক্ষা পাঠ সভ্য সমাজের পাঠ্য বই হতে পারে না তাই এ বই অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। বিশেষ করে, ৬ষ্ঠ শ্রেণীর এ শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বইয়ের ৪৭ থেকে ৪৯ পৃষ্ঠায় বয়ঃসন্ধিকালে নারী-পুরুষের দেহের পরিবর্তন, নারী-পুরুষের শরীর থেকে কি নির্গত হয়, কোন অঙ্গের আকার কেমন হয়, বিপরীত লিঙ্গের প্রতি কেমন আকর্ষণ হয় ইত্যাদি শেখানো হচ্ছে। এছাড়া বিজ্ঞান অনুসন্ধানী পাঠ বইয়ের ১১তম অধ্যায়ের ‹মানব শরীর› শিরোনামে ১১৯ থেকে ১২২ পৃষ্ঠায়- পেনিস, পেনিস দৃঢ়তা, যোনী, লোম গজানো, স্তন, নিতম্ব, উরু, বগল, স্রাব, মাসিক, সেক্স হরমোন, ইত্যাদি রগরগে বর্ণনাসহকারে কোমলমতি শিশুদের পড়ানো হচ্ছে, যা খুবই উদ্বেগের বিষয়।
বিবৃতিতে শহিদুল ইসলাম কবির বলেন, ৬ষ্ঠ শ্রেণির একটি সন্তানের বয়স কত হয়? ১১ থেকে ১৩ বছর হয়। এই বয়সে সব শিশু বয়ঃসন্ধিতে পৌছায় না। কিন্তু সেই বয়সেই এ ধরনের শিক্ষা সন্তানের মনে ভয়ঙ্কর কু-প্রভাব ফেলতে পারে। সবচেয়ে জটিল বিষয় হচ্ছে, ক্লাসে পাঠ্য এই বিষয়গুলো নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের গ্রুপ ডিসকাশন করতে হয়, গ্রুপ অ্যাসাইনমেন্ট করতে হয়, সামষ্টিক মূল্যায়নের মাধ্যমে ত্রিভুজ পেতে হয়। কিন্তু এ বিষয়গুলো প্রকাশ্যে আলোচনার মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে যে লজ্জার বাঁধন থাকে, সেটা উঠে যায়। বিশেষ করে, এই শিক্ষা নিয়ে ক্লাস রুমে ছাত্র-ছাত্রীরা যখন গ্রুপ ডিসকাশন করবে, তখন তারা যে অনৈতিক কোন কথা বা কাজ করে বসবে না তার নিশ্চয়তা কি? তাছাড়া, বাংলাদেশের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক দ্বারা ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এসব পড়ানোর নাম করে শিক্ষকরা যে, শিক্ষার্থী থেকে কোন অনৈতিক সুযোগ নিতে চাইবে না, তার নিশ্চয়তা অভিভাবকরা পাবে কোথায়?
তিনি আরো বলেন, মানুষ মাত্রই বড় হবে, বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছাবে এটাই যুগ-যুগান্তরে স্বাভাবিক নিয়ম। আজকে যারা মা-বাবা, দাদা-দাদী, নানা-নানীরা, খালা-মামারাও এক সময় এই বয়সে ছিলো। তারা এক সময় প্রয়োজনের সমাধানও পেয়েছেন। কিন্তু তারা ঢাক-ঢোল পিটিয়ে বয়ঃসন্ধির শিক্ষা নেননি, তাই বলে তাদের বিরাট ক্ষতি হয়ে গেছে এমনটা নয়। বরং আজকের যুগে অভিভাবকরা আরো ভয়ের মধ্যে থাকে, না জানি তার সন্তান কি ভুল করে বসে। তার মধ্যে এই শিক্ষা অনেকটা নতুন প্রজন্মকে আরো উস্কে দেয়ার নামান্তর। বিশেষ করে, বয়ঃসন্ধীকালীন শিক্ষাটা নারী-পুরুষের জন্য পৃথক। সে জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের একজন অন্যজনেরটা জানার কোন প্রয়োজন নেই। কিন্তু পাঠ্যবই ও ক্লাসে এক সাথে ছেলে-মেয়েদের তা শেখানো হচ্ছে। যা সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয় ও উত্তেজনা সৃষ্টিকারী।
বিবৃতিতে ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদ সভাপতি বলেন, একটি শিশুর যখন দাঁত জন্মায়, তখন সে কামড় বসিয়ে তার ব্যবহার করতে চায়। একটি শিশু যখন হাঁটার শক্তি পায়, তখন বার বার হেঁটে তার ব্যবহার করতে চায়। ঠিক তেমনি একটি শিশু বয়ঃসন্ধিকালে যে নতুন ক্ষমতা পায়, তারও যথেচ্ছ ব্যবহার সে করতে চাইতে পারে। এজন্য বয়ঃসন্ধিকাল একটি সেনসিটিভ সময়। এর নিয়ন্ত্রণও সেনসিটিভলি করা উচিত। বর্তমান পাঠ্য বইয়ে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে যে যৌন শিক্ষা দেয়া হচ্ছে, তাতে শিশুটি ভুল বুঝে যৌনতায় বেপরোয়াও হয়ে যেতে পারে, যা খুব ভয়ঙ্কর বিষয়।
তিনি বলেন, স্বাধীন স্বার্বভৌম বাংলাদেশে কোমলমতি শিশুদের মেধা, শিক্ষা ও নৈতিকতা ধ্বংসকারী শিক্ষা কারিকুলাম দেশের মানুষ কোনভাবেই মেনে নিবে না। বিতর্কিত এই শিক্ষা কারিকুলাম বাতিল করা জরুরী। অন্যথায় দেশের সাধারণ মানুষ কোমলমতি শিশুদের মেধা, শিক্ষা ও নৈতিকতা রক্ষায় আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা
রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী
দেশের সাংবিধানিক নাম ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ করার সুপারিশ
সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা
দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম
আরও

আরও পড়ুন

বগুড়ায় কলেজ শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৪

বগুড়ায় কলেজ শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৪

মতিঝিলে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫

মতিঝিলে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫

সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই

সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই

ডাকসু নিয়ে ৩৭৭ সংস্কার প্রস্তাব ঢাবি ছাত্রদলের

ডাকসু নিয়ে ৩৭৭ সংস্কার প্রস্তাব ঢাবি ছাত্রদলের

গাজীপুরে থানায় ব্যবসায়ীকে আটক করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিলো ওসি

গাজীপুরে থানায় ব্যবসায়ীকে আটক করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিলো ওসি

রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিস অবরোধের ঘোষণা চাকরি বঞ্চিতদের

রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিস অবরোধের ঘোষণা চাকরি বঞ্চিতদের

শামীম ওসমান-নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুই মামলা

শামীম ওসমান-নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুই মামলা

বায়ু দূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা

বায়ু দূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা

এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা

এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা

দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম

দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম

বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের

বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের

ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?

ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?

আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু

আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু

বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ

বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ

রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী

রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী

ধূমপানকে না বলুন

ধূমপানকে না বলুন

জালিমের পরিণতি ভালো হয় না

জালিমের পরিণতি ভালো হয় না

অখণ্ড ভারতের নীলনকশা এবং মুখোশপরা গণশত্রুদের দাস্যবৃত্তি

অখণ্ড ভারতের নীলনকশা এবং মুখোশপরা গণশত্রুদের দাস্যবৃত্তি

মাজারে হামলা ও উগ্রপন্থা কাম্য নয়

মাজারে হামলা ও উগ্রপন্থা কাম্য নয়

১২ কোটি জনসংখ্যার ৭ কোটি আক্রান্ত

১২ কোটি জনসংখ্যার ৭ কোটি আক্রান্ত