‘নৌকা’র গলার কাঁটা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা
০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ এএম
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘নৌকার’ প্রার্থীদের বিরুদ্ধেই দাঁড়িয়ে গেছে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। দলীয় সূত্র বলছে, যার জন্য এক ধরনের সবুজ সংকেত ছিল দলের। বিষয়টিকে ‘গলার কাঁটা’ বলে মনে করছেন ‘নৌকার’ প্রার্থীরা। তবে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বসিয়ে দেওয়ার কোন আভাস মিলছে না, আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে। বিষয়টিকে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কৌশল বলেই উল্লেখ করছে আওয়ামী লীগ। তবে আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতারা বলছেন, নির্বাচনে মাঠে দলের এই কৌশল দলের জন্য ক্ষতিকারকও হতে পারে। আর রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও বলছেন, দলের এই স্বতন্ত্র প্রার্থী কৌশল দলের মধ্যে দীর্ঘ মেয়াদী দ্বন্দ্ব ও সংঘাত বাড়াতে। আর ভোটার নিশ্চিত করার জন্য দলের এই যে স্বতন্ত্র প্রার্থী কৌশল তা তেমন কাজ করবে না।
গত ২৬ নভেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৮টি আসনে ‘নৌকার’ প্রার্থী দেয় আওয়ামী লীগ। এর আগে একই দিনে দলীয় ৩ হাজার ৩শ ৬২জন মনোনয়ন প্রত্যাশীর সঙ্গে বৈঠক করে বিভিন্ন আসনে ‘ডামি’ প্রার্থী দেওয়ার নির্দেশনা দেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে মতবিনিময়ে শেখ হাসিনা অনেক আসনে ‘ডামি’ প্রার্থীদের দাঁড়ানোর বিষয়ে নির্দেশনা দেন। যাকে ‘সবুজ সংকেত’ মেনে নিয়ে নির্বাচনী মাঠ গরম করতে শুরু করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের ‘স্বতন্ত্র’ প্রার্থীরা। ওই সভায় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, যেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ নির্বাচিত হতে না পারে। সে ক্ষেত্রে একাধিক ডামি প্রার্থী রাখতে মত দেন দলীয় প্রধান।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুসারে, এবার ৭৪৭ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। এর বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের। যাচাই-বাছাইয়ে বাদ পড়েছেন ৪২৩ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী। এরপরও ৩২৪ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত বর্তমান সংসদ সদস্যদেরও অনেকে আছেন।
আওয়ামী লীগ সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক দেখাতে এবং ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করতেই আওয়ামী লীগের এই স্বতন্ত্র প্রার্থী কৌশল। তবে দলের ভেতরেই আওয়ামী লীগের এই স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। দলের মনোনয়ন পাওয়া অনেকেই মনে করেন দলের এই স্বতন্ত্র প্রার্থী কৌশলের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েই যাচ্ছে। দলে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিষয়ে কি ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে সে বিষয়টি এখনও সিদ্ধান্ত নেয় নি আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড।
আওয়ামী লীগ স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিষয়ে শুরু থেকে বলে আসছিল, এভাবে ‘ফ্রি ইন্টাইলে’ স্বতন্ত্র প্রার্থী রাখা হবে না। আগামী ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। কারণ আগামী ১৭ই ডিসেম্বর হলো চলমান নির্বাচনের প্রার্থীরা প্রত্যাহারের শেষ দিন। তবে গত বৃহস্পতিবার দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও তার জেতার অধিকার আছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা যদি জনগণের ভোটে জিতে যায়, সেখানে আমাদের কিছু করার নেই। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, নির্বাচন হবে ফেয়ার প্রতিযোগিতামূলক, এখানে কোনো মারামারি সংঘাত নেই। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বেপরোয়া হয়ে উঠছে বিএনপি। নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা মরণ কামড় দিতে চায়। যারা নির্বাচনমুখী তাদের নিয়ে বিরোধীদের নাশকতা প্রতিহত করা হবে।
আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় জোট সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী কৌশলে ক্ষুদ্ধ হয়েছে ক্ষমতাশীন দলের শরিকরাও। কারণ শরিকদের আসনেও স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড়িয়ে গেছে। ১৪ দলের নেতাদের এর পরই মাথা ব্যাথা শুরু হয়েছে। তাঁরা বিষয়টি ১৪ দলীয় জোটের জোট নেত্রী শেখ হাসিনাকেও জানিয়েছেন বলে জোটের কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন। তবে জোট নেত্রী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচনে থাকার পক্ষেই মত দিয়েছেন বলে ১৪ দলের শকিক কয়েকজন এর আগে জানিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ সূত্র জানিয়েছে, এখনও কোন স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোন ধরনের সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয় নি। এ ধরনের চিন্তাও দলের এখন পর্যন্ত নেই। দলীয় সূত্র জানিয়েছে, দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী সারা দেশেই আছে। তবে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, বরিশাল, পিরোজপুর, ফরিদপুর, সিলেট, সুুনামগঞ্জ, শরীয়তপুর ও মাদারীপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে জটিলতা রয়ে গেছে। দলের কেন্দ্রীয় নেতাদেরও অনেকে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে ভেতরে-ভেতরে উৎসাহ, সহায়তা দিচ্ছেন।
নরসিংদীর মাধবদীতে ‘নৌকার লোকেরা পলাইবার জায়গা পাবে না’ বলে উল্লেখ করে ইমিধ্যেই আলোচনায় এসেছেন মাধবদী থানা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নরসিংদী-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. কামরুজ্জামানের পক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন। ওই আসনে ‘নৌকার প্রার্থী নজরুল ইসলাম। গত বুধবার নরসিংদীর মাধবদী থানা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ ওই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও নরসিংদী পৌরসভার সাবেক মেয়র কামরুজ্জামান কামরুলের পক্ষে আয়োজিত সভায় ওই বক্তব্য দেন।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, মানিকগঞ্জ-২ আসনে নৌকার প্রার্থী মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের ৩ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে। চট্টগ্রাম-১২ আসনের সংসদ সদস্য ও বর্তমান সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী এবারের নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হন নি। তবে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ইতিমধ্যে আচরণবিধি ভেঙেছেন। এই আসনে ‘নৌকার’ প্রার্থী চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী। ফরিদপুরে কাজী জাফর উল্যাহ ও মজিবুর রহমান চৌধুরী (নিক্সন) এবং বরিশাল সদরে দলীয় প্রার্থী প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বরিশালের সাবেক সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর মধ্যে যে দ্বন্দ্বের সঞ্চার হয়েছে তা দলের অভ্যন্তরেই শঙ্কার সৃষ্টি করেছে। ঋণ খেলাপির দায়ে বাতিল ঘোষিত হয়েছে নোয়াখালী-৩ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরণের মনোনয়নপত্র। এই আসনে আওয়ামী লীগের দুজন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে। বরিশাল-৪ আসনে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে দ্বৈত নাগরিকত্বের কারণে। তবে বর্তমান সংসদ সদস্য পংকজ নাথ স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকায় সেখানে দলের মধ্যে ইতিমধ্যে বিভক্তির সৃষ্টি হয়েছ।
দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে গত বুধবার টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবেক জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দল বা নৌকার বাইরে কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। যাঁরা দলের আদর্শ মেনে চলেন, তাঁদের অবশ্যই নৌকার পক্ষে কাজ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের স্বার্থে হয়তো বলেছেন প্রতিযোগিতার জন্য। কিন্তু তিনি বলেননি, নৌকা বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের একজন কর্মীকে অন্য প্রার্থীর জন্য কাজ করতে হবে। নৌকার বাইরে যাঁরা নির্বাচন করছেন, আমার দৃষ্টিতে তাঁরা অবশ্যই বিদ্রোহী প্রার্থী।
রাজনীতি বিশ্লেষকরাও মনে করছেন, আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী কৌশল দলের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। এ ছাড়া সেভাবে নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে এবারের নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার কৌশল নেয়া হয়েছে তা ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করতে তেমন কাজে আসবে না বলেই মনে করছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা। কারণ এখন যদি ‘নৌকা’ প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন আসনে সংঘাত স্থায়ী হয়ে যায় তখন ভোটার ভোটদানে আরো অনাগ্রহী হতে পারে বলেই মত ওই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
আওয়ামী লীগের ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী কৌশল নিয়ে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. শামছুল আলম সেলিম ইনকিলাবকে বলেন, এই যে আওয়ামী লীগের কৌলণ এটা তাদের নিজেদের জন্যই বুমেরাং হয়ে দেখা দিচ্ছে। আগামী ১৭ ডিসেম্বর আসার আগেই হয়তো আওয়ামী লীগের নিজেদের মধ্যে সংঘাত আরো বেড়ে যেতে পারে। যেতেহু বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন প্রার্থীর পাশাপাশি শরিকদলের নেতাদেরও প্রার্থী আছে। এর ফলে একটা হ-য-ব-র-ল এর মত অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী কৌশল ভোটার উপস্থিতি বাড়াবে কীনা জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর এই কৌশল খারাপ পরিস্থিতি ঘনিভূত করতে পারে। আর জোটের মধ্যেও আনাস্থার সৃষ্টি করতে পারে। আর যদি নৌকার প্রার্থীদের সঙ্গে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সংঘাত নির্বাচনের আগেই বৃদ্ধি পায় তাহলে ভোটাদের আগ্রহও কমে যেতে পারে।
আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ ক্ষতি কি হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়া হয়েছে, সে জন্য ইতিমধ্যে নৌকার প্রার্থীদের সঙ্গে তাদের কথাকাটি শুরু হয়ে গেছে। বিভিন্ন জায়গায় গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অনেক ধনী হয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সবুজ সংকেত দিয়ে আওয়ামী লীগ তাদের একটি সুযোগ করে দিয়েছে। এ সুযোগ সেই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অনেকেই ছাড়তে চাইবে না। এ ফলে আওয়ামী লীগ দল হিসেবেও অভ্যন্তরে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
সারা দেশে গত ৩০ নভেম্বর থেকেই নৌকার প্রার্থী ও দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে স্থানীয় পর্যায়ের সংঘর্ষ প্রকাশ্যে আসে। সে দিন মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনে ছিল। সে দিনই শরীয়তপুরের নড়িয়ায় নৌকার প্রার্থী এনামুল হক শামীমের সমর্থকদের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী যুবলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও প্রয়াত ডেপুটি স্পিকার কর্ণেল স্পিকার শওকত আলীর ছেলে ডা. খালেদ শওকত আলীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এ ছাড়া গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রয়াত ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মেয়ে ফারজানা রাব্বি বুবলির গাড়ি বহরে হামলার অভিযোগ উঠে। চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ মোতালেব স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় দল থেকে তাকে বহিষ্কারের দাবিতে ঝাড়ু মিছিল করে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ। পাশাপাশি তার ছবিও পোড়ানো হয়েছে। ঝাড়ু মিছিল ও ছবিতে আগুন দেওয়ার ঘটনার পেছনে সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভীর অনুসারীরা রয়েছেন বলে দাবি করেছেন এম এ মোতালেব। তিনি বলেন, নদভীর লোকজন নির্বাচনের শুরুতেই অন্যায় করছেন। তারা ঝাড়ু মিছিল ও ছবিতে আগুন দেওয়ার মতো জঘন্য কাজ করেছেন। তাছাড়া, উপজেলার দেওদীঘি এলাকায় আমার সঙ্গে দেখা করতে আসার সময় কিছু লোককেও আটকে রেখেছিলেন তারা।
এ দিকে ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী এ কে আজাদ নৌকার প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন করেছেন। নৌকার প্রার্থী শামীম হক নেদারল্যান্ডসের নাগরিক এমন অভিযোগ এনে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) প্রার্থিতা বাতিলের জন্য আবেদন করেছেন স্বতন্ত্রপ্রার্থী এ কে আজাদ। গত শুক্রবার এ কে আজাদের পক্ষে তার আইনজীবী মো. গোলাম কিবরিয়া আপিল আবেদন জমা দেন। এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শামীম হক নেদারল্যান্ডসের নাগরিক। স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদের মনোনয়ন বাছাইয়ের সময় তথ্য উপাত্তসহ লিখিত অভিযোগ করা সত্ত্বেও রিটার্নং কর্মকর্তা শামীম হকের মনোনয়নপত্র বাতিল না করে বৈধ ঘোষণা করেন। রিটার্নিং কর্মকর্তার এ আদেশের বিরুদ্ধে আজ আপিল দায়ের করা হয়েছে। আইনজীবী গোলাম কিবরিয়া বলেন, শামীম হকের নেদারল্যান্ডসের পূর্ববর্তী পাসপোর্ট নম্বর- ইঊঝঐঈ৮৭৫১, জন্ম তারিখ ২১ অক্টোবর ১৯৬০ লেখা আছে। শামীম হক সম্প্রতি তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট ইস্যু করার জন্য ফরিদপুর পাসপোর্ট কার্যালয়ে এক দরখাস্ত দাখিল করেন। সেই দরখাস্তের ২৫নং কলামে দ্বৈত নাগরিকত্বের ঘরে তিনি টিক মার্ক দিয়েছেন। ২৬ নং কলামে অন্য দেশের নাগরিক থাকলে সেই দেশের নামের জায়গায় নেদারল্যান্ডস উল্লেখ আছে। ২৭ নং কলামে তার বর্তমান নেদারল্যান্ডসের পাসপোর্ট নম্বর ইণ৬০ঋ০ঔ৭৪ উল্লেখ করা আছে। অপর দিকে কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এবার আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী দেয়। তবে এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নাসিরুল ইসলাম খানের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। তবে জাতীয় পার্টির প্রার্থী চুন্নু মনোনয়নপত্র বাতিল চেয়ে আপিল করেছেন নৌকার প্রার্থী নাসিরুল ইসলাম খান। গতকাল শুক্রবার নির্বাচন ভবনে এসে তিনি এই আপিল আবেদন করেন।
নাসিরুল ইসলাম খান অভিযোগ করেন, ‘রুপালী ব্যাংক পুরনো পল্টন, কর্পোরেট শাখা থেকে ৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা ঋণের বিপরীতে গ্যারান্টার মো. মজিবুল হক দীর্ঘদিন ঋণ খেলাপী হিসাবে আছেন। অতএব তিনি কীভাবে এমপি মনোয়নের জন্য আবেদন করতে পারেন। তার মনোয়ন আইন মোতাবেক বাতিল যোগ্য। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্ট গোপন করে মনোনয়নের জন্য কাগজপত্র দাখিল করেছে। জরুরি ভিত্তিতে এর তদন্ত হওয়া দরকার বলেও উল্লেখ করেন নাসিরুল ইসলাম।’
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
দাদা বাড়ি বেড়াতে এসে খুন হলো শিশু সাফওয়ান, আটক ২
সর্বদলীয় বৈঠক যোগ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
হিরণ ও তার ড্রাইভারের লাশ ৫ মাস পর উত্তোলন
সর্বদলীয় বৈঠকে যোগ দিয়েছে বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা
শুধু এইচএমপিভি নয়, সানজিদার মাল্টিঅর্গান ফেইল করেছিল
ফরিদপুরের আলোচিত ওবায়দুর হত্যা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্থায়ী শান্তির আশা তুরস্কের: এরদোগান
আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতা হত্যা মামলার ৪ আসামি গ্রেফতার
সকলে মিলেমিশে স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই: ডা. শফিকুর রহমান
মুগ্ধ হত্যা: ট্রাইব্যুনালে স্নিগ্ধের অভিযোগ
জাবেদ পাটোয়ারী ও বনজ কুমারের পাসপোর্ট বাতিল
কেন এসেছেন, কি করার আছে আপনাদের
ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে ভারত কোনোভাবেই স্থির হতে পারছে না: রিজভী
লক্ষ্মীপুরে ট্রাফিক পুলিশের উপর হামলায় ঘটনায় ৯০ জনের নামে মামলা, গ্রেপ্তার ১১
‘আল্লাহ সম্পদ দিয়েছে মানুষের মাঝে বন্টনের জন্য, লুটপাটের জন্য নয়’
আমার মতো চুটিয়ে প্রেম বোধহয় কেউ করেনি—পরীমণি
কলাপাড়ায় ছয় ব্যবসায়ীর জরিমানা
বাগমারায় প্রাথমিকের অবসরপ্রাপ্ত ২৬ প্রধান শিক্ষকের বিদায় সংবর্ধনা
দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় জামায়াতে ইসলামীর কোনো বিকল্প নেই : জামায়াত আমির
৩০ যুদ্ধবন্দির বিনিময়ে ২৪৬৬ সেনা ফেরত পেল রাশিয়া