পেঁয়াজের দামে নৈরাজ্য
১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:১৫ এএম | আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:১৫ এএম
দেশে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন ও আমদানি পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকার পরও অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে পেঁয়াজের বাজার হঠাৎ অস্থির হয়ে উঠেছে। পেঁয়াজের দাম নিয়ে রীতিমতো নৈরাজ্য চলছে। ভারত রফতানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পরই দেশের বাজারে হু হু করে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। অসাধু ব্যবসায়ীরা ইচ্ছে মতো দাম বাড়াচ্ছে। এক রাতের মধ্যেই পেঁয়াজের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। ভোক্তা অধিকার বলছে রাতারাতি পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণের বেশি বেড়ে যাওয়ার ঘটনাকে ডাকাতি বললেও কম বলা হবে। বাজারে সব নিত্যপণ্যের দাম এমনিতেই সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষের জীবনযাপন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় পেঁয়াজের এমন মূল্যবৃদ্ধি যেন গোদের ওপর বিষ ফোঁড়া। পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে ভোক্তা অধিকারের ভ্রাম্যমান আদালত বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েছে। ভোক্তা অধিদফতরের ৫৭টি টিম সারাদেশে বাজার অভিযানের মাধ্যমে ১৩৩টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। অধিদফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয় গতকাল ঢাকা মহানগরীতে চারটি টিম বাজার অভিযান পরিচালনা করে। তবে ক্রেতারা বলছেন, এ অভিযান বাজার নিয়ন্ত্রণে খুবই অপ্রতুল।
গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২২০-২৩০ টাকা দরে। এছাড়া আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২০০-২১০ টাকা। সারাদেশেই পেঁয়াজের দামের এমন ঊর্ধ্বগতি। কোথাও কোথাও ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরেও পেঁয়াজ বিক্রির খবর পাওয়া গেছে। রাজধানীতে গত শুক্রবারেও প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১২০-১৩০ টাকায়। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১১০-১২০ টাকায়।
দেশে হাঠাৎ করে পেঁয়াজের এমন দাম বাড়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ভোক্তারা। বাজারে এসে অনেকে পেঁয়াজ না কিনেই ফিরে যাচ্ছেন। আবার অনেকে বাধ্য হয়েই গলাকাটা দামেই পেঁয়াজ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রফতানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে প্রতিবেশী ভারত। ৮ ডিসেম্বর এ আদেশ জারি করে দেশটির সরকার। এদিন বিকেলে বাংলাদেশের বাজারে এ খবর ছড়িয়ে পড়ে। এরপর রাতেই দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে ১৮০-১৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিল। আর ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ১৪০-১৫০ টাকা কেজিতে। তবে রাত পোহাতেই দাম আরও এক দফায় বেড়েছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করলেও বর্তমানে দেশের বাজারে প্রভাব পড়ার কোনো কারণ নেই। কারণ দেশে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন ও আমদানি পর্যাপ্ত পরিমাণে হয়েছে। পাশাপাশি নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে উঠতে শুরু করেছে। ফলে এখন দাম বাড়া অযৌক্তিক। তাই তদারকির মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তা না হলে অসাধু মহল আবার পেঁয়াজের দাম নিয়ে ভোক্তাকে নাজেহাল করে ফেলবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২৫ লাখ টন। কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, এ বছর দেশে প্রায় ৩৪ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। কিন্তু মজুত সুবিধার অভাবে দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের প্রায় ২৫ শতাংশ নষ্ট হয়েছে। ফলে প্রায় সাড়ে ৬ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়েছে। তাই এই মুহূর্তে দেশে পেঁয়াজের সরবরাহ পর্যাপ্ত রয়েছে।
সারাদেশে পেঁয়াজের দামের এই নৈরাজ্য নিয়ে আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো রিপোর্ট নিচে তুলো ধরা হলোÑ
রাজশাহী থেকে রেজাউল করিম রাজু জানান, হঠাৎ করে পেয়াজের ঝাঁজ বেড়েছে। ভারত পেয়াজ রফতানি বন্ধ করার খবরের সাথে সাথে রাজশাহীতে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ ছাড়িয়েছে। দু’দিন আগে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে একশ’ কুড়ি টাকা দরে। আর ভারতীয় পেঁয়াজ ছিল নব্বই টাকা। আগাম লাগানো পেঁয়াজ বাজারে বিক্রি হচ্ছিল নব্বই টাকা কেজি দরে। কিন্তু গতকাল সকালে বাজারে গিয়ে ক্রেতারা হতবাক হয়ে পড়েন। দেশি পেঁয়াজ নেই। গোপনে পাওয়া গেলেও ডবল সেঞ্চুরি করে দুশ’ টাকায় উঠেছে। ভারতীয় পেঁয়াজ এক’শ আশি আর দেশি মুড়ি পেঁয়াজ একশ’ ষাট টাকা। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, আড়তে আমদানি করা প্রচুর পেঁয়াজ রয়েছে। রাজশাহীতে পাঁচ জন মশল্লার বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। এরাই রাতারাতি সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছে। সকালে তারা পেঁয়াজ কিনতে গিয়ে দেখেন পেঁয়াজ হাওয়া। আর যা আছে তার দামে অনেক ঝাঁজ। তাই তারা বাধ্য হয়ে বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করছেন। সকালে বাজার তদারকিতে এসেছিল সরকারি দফতরের লোকজন। যত হম্বিতম্বি খুচরা ব্যবসায়ীদের ওপর। নগরীর মাস্টারপাড়া এসবের পাাইকারি বাজার। সেখানে খোঁজ-খবর নিলে তারা বলেন ভারত রফতানি বন্ধ করায় পেঁয়াজ সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার ছুটির দিন সাধারণত সপ্তাহের বাজার করেন চাকুরিজীবীরা। তারা বাজারে এসে পেঁয়াজের ডবল দামে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন যত মরণ সব সাধারণ মানুষের। কেউ কেউ রসিকতা করে বলেন, এবার ভারতও পেয়াজের ওপর স্যাংশন দিলো।
চট্টগ্রাম থেকে রফিকুল ইসলাম সেলিম জানান, চট্টগ্রামে একদিনের ব্যবধানে কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। গতকাল পাইকারি বাজারে ২২০ টাকা এবং খুচরা বাজারে ২৪০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। আগামী মার্চ পর্যন্ত ভারতীয় পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের খবরে চট্টগ্রামে হু হু করে বাড়তে থাকে পেঁয়াজের দাম। শুক্রবার সকালে যে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে কেজি ১১০ থেকে ১২০ টাকায় তা গতকাল একলাফে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হয়। নিত্য প্রয়োজনীয় এ পণ্যের দামে হঠাৎ আগুন ক্রেতাদের বিক্ষুব্ধ করে তুলেছে। মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি হঠাৎ করে উধাও হয়ে যায় পেঁয়াজ। দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, আছদগঞ্জের আড়তে গতকাল পেঁয়াজ পাওয়া যায়নি। একদিন আগেও যেসব আড়ৎ, গুদাম ছিল বস্তাভর্তি পেঁয়াজে ঠাসা গতকাল সেসব আড়ৎ গুদাম খাঁ খাঁ করছিল। ভোক্তার অধিকার অভিযান চালিয়ে দ্বিগুণ থেকে আড়াইগুণ দামে পেঁয়াজ বিক্রি এবং আড়ৎ, গুদাম থেকে পেঁয়াজ সরিয়ে নেওয়ার প্রমাণ পায়। এ অপরাধে বেশ কয়েকটি দোকান ও আড়তকে জরিমানাও করা হয়। তবে ভোক্তারা বলছেন, এটি আইওয়াশ, এ ধরনের অভিযানে বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে না।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃষ্টির কারণে দেশে পেঁয়াজ আবাদ ব্যাহত হয়েছে। ফলে বাজারে দেশি পেঁয়াজ আসতে সময় লাগবে। বিকল্প হিসেবে মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আনতে গেলেও কমপক্ষে ১৫ দিন সময় লাগবে। ফলে আগামী দিনে বাজারে পেঁয়াজের সঙ্কট এবং সেই সাথে দাম আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পেঁয়াজের মূল্য নিয়ে নৈরাজ্যের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে ক্যাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ করার মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের পকেট থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এটিকে ডাকাতি বললেও কম বলা হবে। এ অশুভ প্রবণতাকে কোনোভাবেই ব্যবসা বলা যায় না। তিনি এ নৈরাজ্য বন্ধে কঠোর হওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান। সেই সাথে বিকল্প দেশ থেকে দ্রুত পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান।
ভোলা থেকে মো. জহিরুল হক জানান, জেলায় এক রাতের ব্যবধনে পেঁয়াজের দাম বেড়ে প্রতি কেজি ২৪০ টাকা। ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ ঘোষণা করার পর দিনই ভোলায় দ্বিগুণ দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। পেঁয়াজের দাম বাড়ানোয় অসহায় হয়ে পড়া ক্রেতারা বাজার মনিটর জোরদার করাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। গতকাল ভোলা জেলার বিভিন্ন বাজারে খোঁজ খবর নিয়ে এমন চিত্র জানা গেছে। এক রাতের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হওয়াতে ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। অনেকেই মন্তব্য করছেন দেশটা মগেরমুলুক হয়ে পড়েছে, অনেকে বলছে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে দেশটা। আবার অনেকে বলছে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সাধারণ জনগণের পকেট কাটছে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী যার সাথে রাজনৈতিক প্রশ্রয় থাকতে পারে। তবে পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ জানাতে পারেননি ব্যবসায়ীরা।
গাজীপুর থেকে মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ ঘোষণা করার পরদিনই গাজীপুরের বিভিন্ন বাজারে দ্বিগুণ দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। পেঁয়াজের দাম বাড়ানোয় অসহায় হয়ে পড়া ক্রেতারা বাজার মনিটর জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন। গতকাল গাজীপুরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, গতকাল দুপুর ১২ টায় বাজারে দেশি পেঁয়াজ ছোট-বড় সাইজ ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি ও ভারতীয় পেঁয়াজ ২২০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে পাশাপাশি দোকানেও পেঁয়াজের ভিন্ন দাম হাঁকাচ্ছেন খুচরা ক্রেতারা। এক রাতের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হওয়াতে ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তবে পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ জানাতে পারেননি ব্যবসায়ীরা।
মাগুরা থেকে সাইদুর রহমান জানান, মাগুরার বাজারে ৯০ টাকার পেঁয়াজ একলাফে এক রাতে ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত শুক্রবার যে পেঁয়াজ ৯০ টাকা প্রতিকেজি বিক্রি হয়েছে তা গতকাল বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ১৮০ টাকা। মূল্য বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে মাগুরা কাঁচা বাজার আড়তের ব্যবসায়ীরা জানান, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানী বন্ধ থাকবে এ সংবাদ প্রচার হওয়ায় এ মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে। পেঁয়াজের এ মূল্যবৃদ্ধি পেলেও কোনো ব্যবস্থা দেখা যাচ্ছে না। অথচ সাধারণ ক্রেতারা পড়েছে মহা বিপদে।
পঞ্চগড় ও হিলি সংবাদদাতা জানান, ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করার খবর ছড়িয়ে পড়তেই সক্রিয় হয়ে উঠেছে সিন্ডিকেট। পঞ্চগড়ে পেঁয়াজের কেজি ২২০ থেকে ২৩০। যা একদিনের ব্যবধানে কেজিতে দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। শনিবার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ভারতীয় পেঁয়াজ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ২১০ থেকে ২২০ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ২২০ থেকে ২৩০। পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে কোনো পেঁয়াজ নেই। তারা বলছেন, প্রয়োজনের তুলনায় বেশি করে ক্রয় করার ফলে চাহিদা বেড়ে দামবৃদ্ধি পেয়েছে। এ বিষয়ে হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ হারুন জানান, ভারত সরকারের এমন হটকারী সিদ্ধান্তে দেশের পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এতে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম ব্যাপক হারে বাড়বে। আমি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করব ভারত সরকারের সাথে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করেন।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী থেকে মো. হায়দার আলী জানান, রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে কোনো কারণ ছাড়াই খুচরা ব্যবসায়ীরা নিজেদের খেয়াল খুশিমতো বৃদ্ধি করেছেন পেঁয়াজের দাম। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জনগণকে সরকারের বিপক্ষে দাঁড় করানোর জন্য সিন্ডকেট তৈরি করে প্রকাশ্যে ইচ্ছামতো দোকানদারগণ পেঁয়াজের দামবৃদ্ধি করেছেন। বিষয়টি গোদাগাড়ী টক অফ দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে। ক্রেতা সাধারণ বলছেন, ভোক্তা অধিকারের লোকজন কোথায়? তারা কেন অভিযান পরিচালনা করছেন না। সাপ্তহিক ছুটির দিনের সুযোগে মহিশালবাড়ী, রেলওয়ে বাজার, হাটপাড়া, গোদাগাড়ী, বিদিরপুর, রাজাবাড়ী বাজারের ব্যবসায়ীগণ এ অবৈধ কারবারটি করে এক দিনে লাখ লাখ টাকা ক্রেতা সাধারণের নিকট হতে হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আতিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পেঁয়াজের বাজার অস্থির করার চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোনোভাবে ছাড় দেয়া হবে না।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ থেকে মো. কামাল হোসেন জানান, ভারত রফতানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পরই চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ক্ষণে ক্ষণে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। একদিনের ব্যবধানে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৯০ টাকা। খুচরা বাজারে এখন এ পেঁয়াজের কেজি ১৭০-২০০ টাকা। আর কেজিতে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা। কেউ কেউ ২০০ টাকাও দাম হাঁকছেন। গতকাল বিকেলে শিবগঞ্জ বাজারে ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এ বাজারগুলোতে বিক্রি হচ্ছে সবই ভারতীয় পেঁয়াজ। তবে কয়েকটি দোকান ছাড়া কোথাও দেশি পেঁয়াজের দেখা মেলেনি। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, প্রতি ক্ষণে ক্ষণে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। এজন্য পাইকাররা দেশি পেঁয়াজ ছাড়ছেই না। এ বিষয়ে সোনা মসজিদ স্থলবন্দর আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি সাহাবুদ্দিন জানান, ভারতের দিল্লি থেকে একটি চিঠি এসেছে তাদের কাছে। এতে উল্লেখ্য আছে, আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত ভারত থেকে পেঁয়াজ রফতানি স্থগিত করা হয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় গেল বৃহস্পতিবার হঠাৎ করে ভারত থেকে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ ঘোষণা করায় পেঁয়াজের দাম নিয়ে তুলকামাল শুরু হয়েছে। এদিকে বাজার নিয়ন্ত্রণে শিবগঞ্জে এখনো কোনো প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি অভিযোগ ভোক্তাদের।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
নওগাঁয় জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কাউন্সিল অধিবেশন
পেকুয়ায় আন্তর্জাতিক সেবা সংগঠন এপেক্স ক্লাবের সার্টিফিকেট অনুষ্ঠান সম্পন্ন
সোনারগাঁওয়ে ডিগবার ফুটবল খেলার পুরস্কার বিতরণ
লেবানন থেকে দেশে ফিরলেন আরও ৫৭ জন
বাতিল হলো জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন ২০২৩
ব্লু পেপার চালু রাখার দাবিতে সাতক্ষীরার নির্বাহী আদালতে আইনজীবীদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি
জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণা
ইসলামপুর দরবার শরীফের ৮১তম মাহ্ফিল
ঐক্যের মাঝে এ সরকারের জন্ম, একতাই শক্তি: প্রধান উপদেষ্টা
বরগুনায় জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে শাপলাকুঁড়ি ট্রফি'র শুভ উদ্বোধন
বিদেশ থেকে বাড়িতে এসেই দেখলে স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ
বগুড়া ইতিহাস চর্চা পরিষদের উদ্যোগে ডা. সি এম ইদরিসের ৯৬তম জন্মদিন উদযাপন
নরসিংদীতে ভ্রাম্যমান আদালতকে লক্ষ্য করে অবৈধ বালু দস্যুদের গুলি বর্ষণ
‘সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করাই বর্তমান নির্বাচন কমিশনের প্রধান লক্ষ্য’
মির্জাপুরে নদী তীর থেকে মাটিকাটার অপরাধে দুই মাটি ব্যবসায়ীর লাখ টাকা জরিমানা
আ.লীগকে পুনর্বাসন করতে হলে আমাদের রক্তের ওপর দিয়ে করতে হবে: হাসনাত আব্দুল্লাহ
নোয়াখালীতে বিমানবন্দরের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি
চাঁদপুর মেঘনায় বিশেষ কম্বিং অভিযানে ১৫ বেহুন্দি জাল জব্দ
ভ্যাট বৃদ্ধির প্রতিবাদে চাঁদপুরে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মানববন্ধন
দোয়ারাবাজার হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি হেলালী, সম্পাদক আশিস