মানবপাচার প্রতিরোধে ফরিদপুর অঞ্চলের প্রশাসনের উদ্যোগী হওয়া জরুরি
২১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০১ এএম | আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০১ এএম
মানব পাচার প্রতিরোধে ফরিদপুর অঞ্চলের প্রশাসনের উদ্যোগ নেয়াটা খুবই জরুরি হয়ে পড়ছে। অন্যথায় পাচারকারী চক্রের অসাধু ব্যবসায়ীদের হাত আরো লম্বা হয়ে উঠবে সচেতন মহল মনে করেন।
সারা দেশের ন্যায় প্রতি বছর ফরিদপুর অঞ্চলে ও এই দিবসটি যথাযথভাবে পালিত হয় এবং স্ব স্ব জেলা প্রশাসকের সেমিনার কক্ষে অথবা হলরুমে একটি বিশাল প্রতিরোধ প্রোগ্রাম করা হয়। মানব পাচার প্রতিরোধের নামে সভা মিটিং সেমিনারে আর কোনো উপকার না হলেও সরকারের ফান্ড থেকে বেশকিছু অর্থ খরচ হয় দেশব্যাপী। এরকম অভিযোগ ও কম নয়। সুশীল সমাজের বক্তব্য আসলে কাজের কাজ কিছুই হয় না। এমনই এক অভিযোগ তুললেন ফরিদপুর জেলা সদরের সাবেক মুক্তিযোদ্ধা থানা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আমীনুর রহমান মুসা।
তবে আদমবেপারিদের বিরুদ্ধে এবং মানব পাচার প্রতিরোধের বিষয়ে রামানন্দন পাল (ফরিদপুর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফরিদপুর কালেক্টরেটের) সাথে কথা বললে তিনি ইনকিলাবকে জানান, আপনারা ইনকিলাব পত্রিকায় ২১/২২ পর্বে সংবাদ পরিবেশন করছেন আমি জানতে পেরেছি। তিনি ইনকিলাবকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, আমরাও মানব পাচার প্রতিরোধে ফরিদপুর জেলা থেকে বহু কাজ করতে চাই। আপনারও পাশে থাকবেন সঠিক সংবাদ পরিবেশন করবেন, সঠিক তথ্য পেলে এই বিষয় আরো ব্যাপক কাজ করা সম্ভব।
তিনি আরো বলেন, আমরা চিন্তা করেছি, জেলা মানব পাচার প্রতিরোধে কমিটিতে আপনারাসহ যারা এর উপর কাজ করেন বা পাচারকারীদের উপর যারা সংবাদ পরিবেশন করছেন, তাদের আরো তথ্য-উপাত্ত নিয়ে আরো অগ্রগামী ভূমিকা পালন করতে হবে বলে তিনি আশা করেন। ইনকিলাবে পরিবেশন হওয়া সংবাদ এবং সঠিক কিছু তথ্য-উপাত্তের বিষয়ে সময় করে কথা বলতে আজ (২১ ডিসেম্বর) তার অফিস যাওয়ার জন্য জানান। উল্লেখিত বিষয় আরো ব্যাপক আলোচনা করবেন বলেও তিনি ইনকিলাবের প্রতিবেদকে জানান।
তবে খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, প্রতি বছর মানব পাচার প্রতিরোধে এর ব্যানারে সভা ও আলোচনা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকে। এ নিয়ে ব্যাপক কার্যকরি ভূমিকা পালন করা না হলেও ইনকিলাবের ধারাবাহিক সংবাদ পরিবেশনের পর, মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনের সহায়তাদানে জোর দাবি উঠছে।
এই বিষয় ইনকিলাবের সাথে কথা হয় ফরিদপুর আভা এনজিওর পরিচালক প্রশাসন ও বিশিষ্ট এনজিবিদ মো. আশরাফ আলীর সাথে তিনি ইনকিলাবকে বলেন, প্রতি বছর তো ফরিদপুর জেলা প্রশাসক মহোদয়ের দফতরের হল রুমে মানব পাচার প্রতিরোধে সেমিনার আলোচনা সভা হয়। আমি অথবা আমাদের প্রতিনিধি, অন্যান্য এনজিওদের প্রতিনিধিরাও থাকেন। অনেক আলোচনা হয়। উপস্থিত বক্তব্যরা ব্যাপক দাবি দাওয়া তুলে ধরেন। প্রশ্ন করা হলো মানব পাচার প্রতিরোধে বা আদম ব্যবসায়ী বা আদম বেপারীদের উপর জেলা প্রশাসক ফরিদপুর কোনো কার্যকরি পদক্ষেপ নিচ্ছেন বা কেউ কোনো অভিযোগ দিয়েছেন এবং ভুক্তভোগীর অভিযোগের আলোকে জেলা প্রশাসক বা পুলিশ প্রশাসন কোনো ভূমিকা পালনের দায়িত্ব নিয়েছেন, এরকম কোনো তথ্য আপনার কাছে জানা আছে কিনা? তিনি বললেন, আমার জানা নাই। সত্যি কারোই জানা নাই। কারণ মানব পাচার প্রতিরোধে, তেমন কোনো জনসচেতনতামূলক প্রচার করা চোখে পড়েনি। শুধুমাত্র জেলা সদের গুটি কয়েক এনজিও প্রধান বা কর্মী অথবা প্রতিনিধিরা আলোচনা সভায় এসে তাদের কিছু মুখস্থ কথা বলে জেলা প্রশাসকের আপ্যায়ন নিয়ে চলে যান। কিন্তু এ পর্যন্ত জেলায় যারা মানব পাচার প্রতিরোধে কাজ করেন বলে জোর গলায় দাবি তুলেন, তাদের কাউকেই, ফরিদপুর জেলা প্রশাসক অথবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো লোকের কাছে মানবিক দায়িত্ববোদ থেকে অথবা জনস্বার্থে একটি লোককে বা কোনো ভুক্তভোগীকে নিয়ে সহযোগিতা চাইতে এগিয়ে আসেননি এমন অভিযোগ বিস্তর। অথবা আসছেন এরকমটাও শোনা যায়নি। অথচ এই খাতে প্রতি বছর সরকারের রাজস্ব খরচ হয়েই চলছে।
এই বিষয় কথা হয় ফরিদপুর নগরকান্দা উপজেলার তালমা ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের চামেলি বেগম এবং মাফুজা বেগমের সাথে তারা দু’জনই ইনকিলাবকে বলেন, বিগত এক বছর হয় আমাদের দুটি ছেলে লিবিয়া যাওয়ার পথে ট্রলার ডুবিতে মারা গেছে বলে দালালরা জানিয়েছেন। আমাদের দুই ছেলের সাথে আরো ২৯ জন এখনও নিখোঁজ আছে। কোথায় আছে কিভাবে আছে, আদৌও বাঁচা আছে কিনা? এই বিষয় জানার জন্য বহু জায়গায় ঘুরছি কেউ কোনো পরামর্শ দিলো না। পাশেও দাঁড়ালো না। শুরু থেকে ইনকিলাবকে পাইলাম। আপনারা এখনও আছেন। তালমার কৃষ্ণনগর গ্রামের দালাল মুরাদ, পলাশ ও গিয়াস বেপারী নামে নগরকান্দা থানায় আমরা ২টা মামলা করছি। মামলা ২টি এখন জেলার পিবিআই তদন্ত করেছেন। ৪/৫ জন আদম বেপারির নামে মামলা করে আমরা নিজেরাই বিপদে। আমরা এখন বাড়িতেও থাকতে পারি না। মামলা তুলে নিতে প্রতিনিয়ত দিচ্ছে জীবননাশের হুমকি। বিষয়টি নগরকান্দা থানার ওসি সাহেবকে জানাইলে তিনি আমি (চামেলি বেগম) এবং মাফুজের-মা, মাফুজার দুটি জিডি নেন। জিডি করে আরেক বিপদে। জিডি করলাম কেন? সব মিলিয়ে এখন নিজের বাড়ি- নিজেরাই পরবাসী।
মানব পাচার প্রতিরোধে বা বন্ধে বিগত ৫ বছর কি ভূমিকা পালন করছেন ফরিদপুর জেলা প্রশাসক এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকেরা। বিগত ৫ বছরের জেলায় কতটা মামলা হয়েছে। আটক হয়েছে কতজন। চার্জসিট হয়েছে কয়টার। সাজা বা শাস্তির আওতায় আসছেন কতজন। বিস্তারিত বলবেন আজ (২১ ডিসেম্বর) ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রামানন্দ পাল। তার মুখ থেকে জেনে সকলকে জানাবো আগামীকাল ২৩ পর্বে। (চলবে)
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি: দোয়া চাইলেন তারেক রহমান
মাঘের শুরুতে আবার আসছে শৈত্যপ্রবাহ
আজহারীর মাহফিলের আগের রাতেই মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ
আজ ঢাকার বাতাস ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’, শীর্ষে করাচিতে
পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাইকালে বিদেশি অস্ত্রসহ ছাত্রলীগ নেতা আটক
ফ্যাসিস্টের দোসর সোহানা সাবা পেল ভারতে বড় দায়িত্ব
সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে অসন্তোষ বিএনপির
মাগুরার শ্রীপুরে কৃষক দলের বিশাল কৃষক সমাবেশ
ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড কানাডার পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী?
টানা তৃতীয় বছরের মতো চীনের জনসংখ্যা কমল
নদীতে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করায় ড্রেজারসহ ৬ জন গ্রেফতার
টিউলিপের পতন, এক রাজনৈতিক অধ্যায়ের অবসান
অভিষেকের আগে শি জিনপিংকে ট্রাম্পের ফোন
সিরিয়ায় আটক নাগরিকদের দেশে বিচার করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ফ্রান্স
বিশ্ব ইজতেমার ৭০ ভাগ প্রস্তুতি সম্পন্ন : ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার
আখাউড়া কালন্দি খালে বইবে জলধারা
টঙ্গীতে ছাত্রদল নেতাসহ গ্রেফতার ১৩
৩৩ জিম্মির বিনিময়ে ১ হাজার ৯৭৭ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল
যোগ্য প্রার্থীকে বাদ দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পদ বাগিয়ে নেন পুতুল
আল-শারা ও শেখ মোহাম্মদের ঐতিহাসিক টেলি-আলোচনা