মন্ত্রীদের বিতর্কিত বক্তব্যে বিব্রত সরকার
২৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৪ এএম
ক্যালেন্ডারের পাতা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে একটি বছর ২০২৩। বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভায় সিনিয়র ও জুনিয়র মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের বিভিন্ন বক্তব্য প্রশাসনে এবং রাজনৈতিক মাঠে ছিলো বছরজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা। নানান ঘটনায় বর্ণিল ঘটনা ছিল এ ২০২৩ সালে। বছরের বিভিন্ন সময়ে বিতর্কিত বক্তব্যে দিয়ে মন্ত্রিসভা সদস্যরা ছিলেন আলোচিত-সমালোচিত। আবার কোনো কোনো মন্ত্রীর বক্তব্যের কারণে বিব্রত পড়তে হয়েছে সরকারকে। বিএনপির ২০ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার না করলে বাংলাদেশে আজকে হরতালের দিন গাড়ি চলতো না। এছাড়া আমাদের অন্য কোনো গত্যন্তর ছিল না, বিকল্পও ছিল না। যেটা করেছি আমরা চিন্তা-ভাবনা করেই করেছি। তাদের জেলে না রাখলে দেশ অচল হয়ে যেতো। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের দেওয়া বক্তব্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। খেলা হবে,তলে তলে বক্তব্যের জন্য বছরজুড়েই আলোচনায় ছিলো সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, খেলা হবে ভোট চুরির বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে। এছাড়া চাঁদপুরের ‘নদীখেকো’ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সেলিম খান। যিনি দীপু মনির ঘনিষ্ঠ বলে সব মহলেই প্রচার আছে। ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে তিনি ‘চাঁদপুরের এক নারী মন্ত্রী নদী দখলে সহায়তা করেন’ বলে অভিযোগ করেন। অর্থাৎ নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিকে স্পষ্ট ইঙ্গিত করে অভিযোগ তুলেছেন। এরপরেই নতুন করে আলোচনায় চাঁদপুরের ‘নদীখেকো’ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সেলিম খান। যিনি দীপু মনির ঘনিষ্ঠ বলে বছর জুড়ে আলোচনায় তার নাম বয়েছিল। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি নিশ্চুপ। বালুখেকো সেলিম খানকে তিনি আশ্রয়-প্রশ্রয় দেন। স্পষ্ট-ইঙ্গিতে এই অভিযোগ খোদ নদী রক্ষা কমিশন চেয়ারম্যানের। তবে এখনো কোনো কথা বলেননি দীপু মনি। তবে বক্তব্য পাওয়া যায়নি মন্ত্রীর। এমনকি অন্য গণমাধ্যমকেও তিনি এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেননি। দীপু মনিকে নিয়ে আলোচনার শুরু জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরীর এক বক্তব্য ঘিরে বছর জুড়ে ছিলো আলোচনা। র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রাজনৈতিক বিষয় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারকে একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া উল্লেখ করে বক্তব্য দেয়ায় কূটনৈতিকদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা ছিলো
খেলা হবে,তলে তলে বক্তব্যে আলোচনায় ওবায়দুল কাদের॥
চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি এক অনুষ্ঠানে নেতাকর্মীদের প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, খেলা হবে ভোট চুরির বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে। আগামী জানুয়ারিতে ফাইনাল খেলা হবে। গত ৩ অক্টোবর আমিনবাজারে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সমাবেশে তিনি বলেন,বিএনপি নেতারা এখন পথ হারিয়ে দিশেহারা। দুই সেলফিতেই বাজিমাত। এক সেলফি দিল্লিতে, আরেক সেলফি নিউ ইয়র্কে। শেখ হাসিনা দিল্লিতে, তারপরে গিয়ে নিউ ইয়র্কে বাজিমাত। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, কোথায় স্যাংশনস, কোথায় ভিসানীতি! তলে তলে আপস হয়ে গেছে, আপস হয়ে গেছে। দিল্লি আছে, আমেরিকারও দিল্লিকে দরকার। আমরা আছি, দিল্লিও আছে। দিল্লি আছে, আমরাও আছি। শত্রুতা কারও সঙ্গে নয়, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে তলে তলে আপস হওয়ার বিষয়ে তোলপাড় করা বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে গত ৫ অক্টোবর সচিবালয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সেই বক্তব্যে তিনি ‘ভুল কিছু বলেননি। তলে তলে আপস মানে দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়ন বা আমাদের সম্পর্ক ভালো আছে, আমি সেটা বোঝাতে চেয়েছি। তিনি বলেন, তলে তলে’যে বলি, সেটা পাবলিক খায়। সেজন্যই তো বলি- খেলা হবে।
বিএনপির নেতাকর্মীকে গ্রেফতার না করে উপায় ছিলো না কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্যের বিব্রত॥
বিএনপি’নির্বাচনে আসলে সবাইকে জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে।এ নিয়ে গত ১৭ ডিসেম্বর একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচারিত সাক্ষাৎকারে কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিএনপির ২০ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার না করলে কি বাংলাদেশে আজ যে গাড়ি চলতেছে এই হরতালের দিন, আপনারা এই গাড়ি দেখতেন?.এছাড়া আমাদের জন্য কোনো গত্যন্তর ছিল না। কোনো অল্টারনেটিভ ছিল না। যেটা করেছি আমরা চিন্তাভাবনা করে করেছি। আরেক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য বলেন, বারবার বলা হয়েছে নির্বাচন কমিশন থেকে, তারা (বিএনপি) যদি নির্বাচনে আসে তাহলে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হবে। (শুধু) পিছিয়ে দেওয়া নয়, বলাও হয়েছিল যে সবাইকে জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে। তাদের জেলে না রাখলে দেশ অচল হয়ে যাবে। কৃষিমন্ত্রীর এ বক্তব্যেও শোরগোল পড়ে যায়। বিব্রত হন খোদ আওয়ামী লীগের নেতারা। আব্দুর রাজ্জাকের এ বক্তব্য সঠিক নয়’ দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, এ বক্তব্য আওয়ামী লীগ কিংবা সরকারের নয়, এটি তার নিজস্ব বক্তব্য। এরপর বেকায়দায়’ পড়ে ১৮ ডিসেম্বর আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের কাছে তার বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে লিখিত বিবৃতিতে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, ওই বেসরকারি চ্যানেল কৃষিমন্ত্রীর পুরো বক্তব্য সঠিকভাবে উপস্থাপন করেনি। মন্ত্রীর খোলামেলা বক্তব্যকে কোনো কোনো মহল বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কৃষিমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন যে, তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং সত্য আপন জ্যোতিতেই উদ্ভাসিত থাকবে।
মহিলারা তিনবার করে লিপস্টিক লাগান বেকায়দায় পড়েন বাণিজ্যমন্ত্রী॥
গত ৮ নভেম্বর সচিবালয়ে ন্যাশনাল ট্যারিফ পলিসি মনিটরিং ও রিভিউ কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। এর প্রভাব কাটানো সম্ভব হবে কি না’ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এ প্রভাব অবশ্যই কাটানো সম্ভব হবে, আপনারা যদি পজিটিভ হন। সংবাদ মাধ্যমের প্রচার যদি পজিটিভ হয় যে, বৈশ্বিক পরিস্থিতিসহ সার্বিক কারণে এটি হয়েছে। অতএব এটাকে বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচনে প্রভাব ফেলা ঠিক হবে না। নির্ভর করে আপনারা কতটুকু ইতিবাচক হবেন। বিএনপি নেতারা এখন পথ হারিয়ে দিশেহারা। দুই সেলফিতেই বাজিমাত। এক সেলফি দিল্লিতে, আরেক সেলফি নিউ ইয়র্কে। শেখ হাসিনা দিল্লিতে, তারপরে গিয়ে নিউ ইয়র্কে বাজিমাত। আপনাদের তো এলাকায় গিয়ে ভোট চাইতে হবে, সাধারণ মানুষ দ্রব্যমূল্য নিয়ে অস্বস্তিতে আছে এ প্রসঙ্গে টিপু মুনশি বলেন, ধরেন, আমার এলাকা, আমার এলাকার মানুষের কষ্ট নেই। কারণ তারা আলুর দাম পাচ্ছে। আমার তো কৃষিনির্ভর এলাকা। একেকটা এলাকা একেক রকম। ঢাকা শহরে যে নির্বাচন করবে, তার অনেক সমস্যা। আজ থেকে ২০ বছর আগে আমার এলাকায় ১০টা মোটরসাইকেল ছিল, ২০০১ সালে আমি প্রথম ভোট করি। আজ হাজার হাজার মোটরসাইকেল। তারা প্রত্যেকে অ্যাফোর্ড করছে। আলু বেইজ তো আমার, কৃষি বেইজ তো! তাদের কোনো কষ্ট নেই। মহিলারা তিনবার করে লিপস্টিক লাগাচ্ছে দিনে। চারবার করে স্যান্ডেল বদলাচ্ছে। অতএব আমার ভোট, আমি খুব ভালো জানি— আমার কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু সারাদেশের অবস্থাটা ভিন্ন। এটা আমি বুঝি, বিশেষ করে শহরের যারা দিনমজুর, নিম্নআয়ের মানুষ- তাদের কষ্ট হচ্ছে। লিপস্টিক লাগানো ও স্যান্ডেল বদলানোর এ বক্তব্য মুহূর্তে ভাইরাল হয়। সৃষ্টি করে ব্যাপক সমালোচনার। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে পিষ্ট মানুষ মন্ত্রীর এ বক্তব্য খুবই নেতিবাচকভাবে নেয়।
র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রাজনৈতিক বিষয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য॥
র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রাজনৈতিক বিষয় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নুর প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারকে একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। শুরু থেকেই এর সমাধানের জন্য জোরালোভাবে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, ‹নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও ভবিষ্যতে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা যাতে না আসে, সে ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের অন্যান্য সংস্থা একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশ দূতাবাস যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় র্যাব, আইনি সহায়তা প্রদানকারী সংস্থা, আইন মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ মিশনের মধ্যে নিয়মিতভাবে সমন্বয় সাধন করছে। র্যাবের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‹নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর পরই আমি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলি। সে সময় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে কাজ করবে, সে ব্যাপারে খোলামেলা আলোচনা হয়। পরবর্তীতে তারই আমন্ত্রণে ওয়াশিংটন সফর করে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করি। বৈঠকে র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়ন নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরি। তিনি বলেন, ‹ওই সফরে সিনেটর, কংগ্রেসম্যানসহ বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক হয়। এতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে তাদের সমর্থনের অনুরোধ করি। কংগ্রেসনাল বাংলাদেশ ককাস গঠনের ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করি।› সরকার দলের আবুল কালাম আজাদের প্রায় একই ধরনের এক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, ‹হ্যাঁ, বাংলাদেশে কর্মরত কতিপয় বিদেশি রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিডিয়ায় বক্তব্য রাখেন। তাদের এই ধরনের শিষ্টাচার বহির্ভূত বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত রাখার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। গণমাধ্যমে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করা কূটনীতিকদের কাছে তাদের বক্তব্যের বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।
জান্নাত-জাহান্নাম বিভ্রাট, সমালোচিত গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী
কুড়িগ্রামের রাজীবপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকীতে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত কর্মসূচিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের বক্তব্যের একটি অংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা কায়মনে দোয়া করবো বঙ্গবন্ধুকে যেন আল্লাহ জাহান্নামের ভালো জায়গায় স্থান করে দেয়’। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাকর্মী ও সাংবাদিকরা ফেসবুকে অনুষ্ঠানটি লাইভ ও ভিডিও ধারণ করেছিলেন। ফলে মুহূর্তে এ বক্তব্য ভাইরাল হয়ে যায়। পরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভুলবশত তিনি ‘জান্নাত’ শব্দটি না বলে ‘জাহান্নাম’ শব্দ উচ্চারণ করেছেন। এটি ‘স্লিপ অব টাং (মুখ ফসকে বের হয়ে গেছে)’। জাহান্নাম শব্দটি বলার সঙ্গে সঙ্গে আমি সংশোধন করে জান্নাত শব্দটি ব্যবহার করি। পরবর্তী সময়ে কয়েকবার জান্নাত শব্দ উচ্চারণ করি। পরে এ বিষয়ে ওই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ১৫ জন এক হয়ে কেন্দ্রীয় পার্লামেন্টারি বোর্ড ও দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। এতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনকে দলীয় মনোনয়ন না দিতে অনুরোধ জানান তারা। কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য জাকির হোসেন শেষমেশ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি।
বোমা ফাটান’ শিল্প প্রতিমন্ত্রী
গত ১১ মে ইআরএফ আয়োজিত কর্মশালায় বক্তব্যে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেছিলেন, আমি অনেককে দেখেছি বাজার করতে গিয়ে কাঁদছেন। কারণ বাজারের যে অবস্থা তার পকেটে সে টাকা নেই। এটার একমাত্র কারণ সিন্ডিকেট। তিনি বলেন, ‘অর্থনীতি ও বাজার দুই জায়গায়ই সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। যার কারণে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা ঝরে পড়ছেন এবং পণ্যের মূল্য বেড়ে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। মহিলারা তিনবার করে লিপস্টিক লাগাচ্ছে দিনে। চারবার করে স্যান্ডেল বদলাচ্ছে। অতএব আমার ভোট, আমি খুব ভালো জানি— আমার কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু সারাদেশের অবস্থাটা ভিন্ন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশ এগিয়ে চলেছে, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। কিন্তু তারপরও দেশে আজ যে অরাজকতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে, ব্যবসার নামে আজ যে লুটপাট হচ্ছে, মানুষের পকেট কাটা হচ্ছে- এগুলো সাংবাদিকদের আরও জোরালোভাবে তুলে ধরতে হবে। আমরা যখন বাজারে যাই তখন দেখি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, কেন ঊর্ধ্বগতি? আমাদের কিন্তু কোনো কিছুর অভাব নেই। আমরা প্রতিটা ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তারপরও সিন্ডিকেটের কারণে দেশের এ অবস্থা বিরাজ করছে।’ তার এ বক্তব্য আলোচনার জন্ম দেয়। পরে ১৬ মে একটি দৈনিকে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারের সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। ওই সাক্ষাৎকারও আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। প্রতিমন্ত্রী হিসেবে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না জানিয়ে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সচিবের কাছ থেকে মন্ত্রীর কাছে ফাইল চলে যায়। আমার কাছে ফাইল আসে না, কারণ কয়েকটি ফাইলে আমি উল্টো নোট দিয়েছি। আমি নেত্রীকে (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) সব জানিয়েছি।’ আপনি বলেছেন অর্থনীতি ও বাজার- দুই জায়গায়ই সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। এ সিন্ডিকেট কারা তৈরি করেছে, সিন্ডিকেট তৈরির সুযোগ দিয়েছে কারা? জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘খামোখা নামটাম জিজ্ঞাসা করে আমাকে ভেজালে ফেলবেন। শেয়ার কেলেঙ্কারিতে কারা ছিল? তাদের অনেকেই এখন মন্ত্রী। মন্ত্রীদের ভেতর একটা সিন্ডিকেট আছে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
নাইজেরিয়ায় পেট্রোল ট্যাংকার বিস্ফোরণে নিহত ৭০
লাল সন্ত্রাসের ঘোষণা : মেঘমল্লার বসুর শাস্তির দাবিতে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ
চুয়াডাঙ্গার কুমারী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাহাবুল হককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম
বিএনপিতে কোন সন্ত্রাসীর ঠাঁই হবে না কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু
মধ্যরাতে জাবির ছাত্রী হলের রুম থেকে লালন ভক্ত যুবক আটক
মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে : তারেক রহমান
ঋণখেলাপিরা যাতে মনোনয়ন না পায় চেষ্টা করবো : মির্জা ফখরুল
অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর না হলে রাজনৈতিক সংস্কার টেকসই হবে না : বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি
টিসিবি’র এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারীর মধ্যে ৩৭ লাখই ভুয়া: বাণিজ্য উপদেষ্টা
ভোজ্যতেলের সরবরাহ নিশ্চিতে কারখানা পরিদর্শন ভোক্তা অধিকারের
গণপরিবহনে শৃঙ্খলায় কাউন্টার স্থাপনের পরিকল্পনা
রাজধানীর তিন পার্কে ভেন্ডারের চুক্তি : শর্ত ভঙ্গের তদন্তে ডিএনসিসি
বাবা-মায়ের পুরোনো বাড়িতে যাই : শফিকুল আলম
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসায় ১৫০ কোটি টাকা অনুদান
২০২৪ সালে ৩১০ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
ভারতীয় ৭২ গণমাধ্যমে বাংলাদেশ নিয়ে অপতথ্য প্রচার
লেবানন থেকে দেশে ফিরলেন আরো ৪৭
প্লাটফর্ম বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত
শক্তিশালী অর্থনীতি ও গর্বিত জাতি গড়তে শহীদ জিয়ার দর্শন ধারণ করতে হবে : আমির খসরু
কী আছে তৌফিকার লকারে?