ধাপ্পাবাজির নির্বাচন করে সরকার টিকতে পারবে না
০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০১ এএম | আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০১ এএম
ভূয়া-ধাপ্পাবাজীর নির্বাচন করে সরকার টিকে থাকতে পারবে না বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান। তিনি বলেন, আমাকে প্রশ্ন করা হয়, ৭ জানুয়ারির ভোটের পর আপনারা কি করবেন? আমি স্পষ্টভাষায় বলে দিতে চাই, এই সরকারকে বুঝতে হবে, ২০২৪ সাল, ২০১৪ সাল নয়। সরকার যদি মনে থাকে একটি ভূয়া-ধাপ্পাবাজীর ভোট করে তারা আবার ৫ বছরের জন্য নিশ্চিত করে নেবে, এটা কোনো দিন হবে না। গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কৃষক দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে ভোট বর্জনের লিফলেট বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় আবদুল মঈন খান পথচারি, যানবাহনে থাকা সাধারণ যাত্রী ও ফুটপাতের হকারদের হাতে ৭ জানুয়ারির ভোট বর্জনের লিফলেট তুলে দেন।
ড. মঈন খান বলেন, বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনতার ও গণতন্ত্রের জন্য বুকের রক্ত দিয়েছে। আমরা রাজপথে থাকব, বুলেট মোকাবিলা করব, গ্রেনেড মোকাবেলা করব কিন্তুশান্তিভঙ্গ করব না। তবে এই সরকারকে হটিয়ে ১৮ কোটি মানুষের জন্য ইনশাল্লাহ গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব।
বহির্বিশ্বের চাপের পরও নির্বাচন হয়ে যাচ্ছে এরকম প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন হয়ে যাচ্ছে নয়, নির্বাচন হয়ে গিয়েছে। যেদিন ওরা মনোনয়ন দাখিল করেছে, সেদিনই একতরফা নির্বাচন হয়ে গিয়েছে। সরকার ইতোমধ্যে ঠিক করে নিয়েছে কোন সিটে কোন এমপি। ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে দ্বাদশ সংসদের কোনো গুরুত্ব বহন করে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আমি বলছি বিশ্বের শুধু গণতন্ত্রকামী সরকারগুলো নয়, আমেরিকা, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া শুধু নয়, বিদেশে যে মানবাধিকার সংস্থাগুলো আছে যেমন- অ্যামিনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ প্রত্যেকে ইতোমধ্যে একটি কথা বলেছে ২৮ অক্টোবর বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ সমাবেশের ওপরে সরকার ক্র্যাকডাউন করে এদেশের গণতন্ত্রকে তারা হত্যা করেছে।
নির্বাচনের নামে প্রহসন হচ্ছে মন্তব্য করে আবদুল মঈন খান বলেন, এই সরকারের উদ্দেশ্য কিভাবে দিনের ভোট রাতে করবে, অথবা ভূয়া ভোট, সাজানো একটি নির্বাচন করবে এবং সেই নির্বাচনের মাধ্যমে তারা একটি ভূয়া ফলাফল বানিয়ে ইচ্ছামতো ভোট ভাগাভাগি করে সংসদ সাজিয়ে নেবে। সেই সাজানো সংসদ দিয়ে তারা একটি একদলীয় বাকশালী সরকার গঠন করতে বদ্ধপরিকর। সেই উদ্দেশ্যেই আজকে তারা এই নির্বাচনের নাটক, প্রহসন করছে। এটা আমাদের বা আপনাদের কথা নয়, এটা সারা বিশ্বের যত নামি-দামি মিডিয়া আছে তারা প্রত্যেকে একবাক্যে বলে দিয়েছে যে, বাংলাদেশে যে নির্বাচন হচ্ছে সেটা নির্বাচন নয়, সেটা নির্বাচনের নামে একটি প্রহসন। সেই প্রহসনের নির্বাচনে এই সরকার তাদের ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে চায়।
আওয়ামী লীগ সরকার কেনো ক্ষমতা ধরে রাখতে চায় তার ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, তারা ক্ষমতার মাধ্যমে দুর্নীতি করে, মেগা দুর্নীতি করে অবৈধ সম্পদ-অর্থ-বিত্ত-বৈভব সংগ্রহ করছে যার প্রমাণ ইতোমধ্যে দেশে-বিদেশে সকল পত্র-পত্রিকায় লিপিবদ্ধ হয়েছে। বিগত ১৫ বছরে এই সরকার আমাদের জাতীয় যে দেনা বিদেশের, সেটা ৫ বিলিয়ন ডলার থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করেছে। প্রশ্ন হচ্ছে এই যে, ২০ গুণ এই জাতির দেনা বৃদ্ধি পেয়েছে সেই দায়-দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের খেটে খাওয়া মানুষের ট্যাক্সের ওপরে এবং সেটা তারা বিদেশে পাচার করেছে, লোপাট করেছে, সেই টাকা দিয়ে তারা কানাডায় বেগমপাড়া তৈরি করেছে, দুবাইতে থার্ড গুলশান তৈরি করেছে, তারা এই টাকা দিয়ে মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম করেছে।
মঈন খান বলেন, আওয়ামী বাকশালী সরকার দেশে একটি অলিগার্কি সৃষ্টি করেছে যার মাধ্যমে তারা আজকে ২২ পরিবারের পরিবর্তে তাদের আর্শিবাদপুষ্ট আত্বীয়স্বজন সবাই মিলে ২২০টি পরিবার তৈরি করে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের সম্পদ লুটে নিচ্ছে। আজকে তার প্রতিবাদে বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে।
এ সময়ে বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, কৃষক দলের সহ-সভাপতি জামাল উদ্দিন খান মিলন, ভিপি ইব্রাহিম, কেন্দ্রীয় নেতা ফেরদৌস পাটোয়ারি, মিজানুর রহমান লিটু, ওবায়দুর রহমান টিপু, শাহ আবদুল্লাহ আল বাকি, শাহ মনিরুর রহমান, শফিকুল ইসলাম শফিক, জাহাঙ্গীর আলম, হারুনার রশীদসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সকালে মতিঝিলের এজিবি কলোনি বাজারে দোকানদার ও ক্রেতাদের হাতে ভোট বর্জন সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এরপর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, এই নির্বাচন জনগণের নির্বাচন নয়, এই নির্বাচন লীগের নির্বাচন, এই নির্বাচন অবৈধ ক্ষমতাকে আখড়ে রাখার নির্বাচন। তিনি বলেন, এই একতরফা ডামি নির্বাচনকে ‘না’ বলুন। ৭ জানুয়ারি ভোট কেন্দ্রে কেউ যাবেন না। ওদেরকে ধিক্কার জানান, ঘৃণা করেন যে, ওরা আপনারাদের ভোটের অধিকার হরণ করেছে।
রিজভী বলেন, এই শেখ হাসিনার অবৈধ সরকার আরও বেশি বেশি লুট করতেই তারা জনগনকে বাদ দিয়ে একতরফা করছে। মানুষকে ধোঁকা দিতে তারা নিজেরা নিজেরা ডামি প্রার্থী দাঁড় করিয়েছে। এসব করে তারা জনগণের সাথে প্রতারণা করছে। এ সময়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, পারভেজ রেজা কাকন, আকরামুল হাসান প্রমূখ নেতারা ছিলেন। এছাড়া রাজধানীসহ সারাদেশে বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল, মৎসজীবীদলের নেতাকর্মীরা সাধারণ মানুষের মাঝে লিফলেট বিতরণ করেন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
চকরিয়ায় সেনা কর্মকর্তা লেঃ তানজিম হত্যায় ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র
তনির বিয়ে নিয়ে যা বললেন নেটিজেনরা
ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতিতে টিকটক সেবা আবার চালু
বিশেষ ক্ষমতা আইন ও শহীদ সবুজ হত্যা মামলায় নকলায় দুই সাংবাদিক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেফতার
যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দেওয়া জরুরি: আমান
আজ শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
বিলুপ্তির পথে দেশের সিনেমা হল
যেভাবে শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
গাজায় স্বাস্থ্যব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করা জটিল এবং চ্যালেঞ্জিং ,সতর্কবার্তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
পঞ্চগড় হাসপাতালে বেড়েছে শীতজনিত রোগী
মেডিকেলের ফল পুনঃপ্রকাশের দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের
প্রথম দিনেই একগুচ্ছ নির্বাহী আদেশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প
ড. ইউনূস সরকারের সমালোচনা করা রিপোর্ট প্রত্যাহার ব্রিটিশ এমপিদের
প্যারিসে জুলাই জার্নাল অব ডিক্টেটরশিপ প্রদর্শনী, যা সবার আয়োজন করা উচিত
বিরতির প্রথম দিন : গাজায় ঢুকলো সাড়ে ৫ শতাধিক ত্রাণবাহী ট্রাক
ব্রাহ্মণপাড়ায় অগ্নিদগ্ধে গৃহবধূর মৃত্যু
আল-কাসসাম মুখপাত্র গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিলেন
ঢাকার বাতাস ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ নিঃশ্বাসে ঢুকছে বিষ
মিরপুরে বাটা শো-রুমে লাগা আগুন নিভেছে
মিত্রদের জড়ো করুন, শত্রুদের চিহ্নিত করুন : মাহফুজ আলম