রাশেদা সুলতানা

দেশকে সংকটে ফেলে এমন নির্বাচন আমরা চাই না

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০১ এএম | আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০১ এএম

নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছেন, তারা এমন কোনো নির্বাচন করতে চান না। যেটা নতুন করে দেশকে একটা সংকটের মধ্যে ফেলবে। তারা মনে করেন, ভালো নির্বাচন করা তাঁদের নৈতিক দায়িত্ব। গতকাল বুধবার নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাশেদা সুলতানা এসব কথা বলেন।
১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে রাশেদা সুলতানা বলেন, সে সময় নানা রকম আন্দোলনের মধ্য দিয়ে একটি নির্বাচন হয়েছিল। সে নির্বাচন (সরকার) দীর্ঘদিন স্থায়ী হয়নি। নির্বাচনটি গ্রহণযোগ্য হয়নি বলে অল্প দিনের মধ্যে আবারও নির্বাচন হয়েছে।

এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমরা এ রকম কোনো ইলেকশন করতে চাই না, যেটা নতুন করে দেশকে একটা সংকটের মধ্যে ফেলে। আমরা চাই, একটা ইলেকশন হবে, সরকার যে ফর্ম (গঠন) করবে, সেই সরকার স্থায়ী রূপ নেবে। যখনই সরকার অস্থায়ী অবস্থায় চলে যায়, দেশ তখন বিপর্যয়ের মধ্যে চলে যায়। এই সেন্স থেকে হয়তো আমাদের মাথায় এসেছে, আমরা একটা ফেয়ার ইলেকশন করব। আন্তর্জাতিক চাপ আমাদের অন্য কিছু না বা অন্য বিষয়ই না। কোনো দিক থেকে কোনো চাপ না।

রাশেদা সুলতানা বলেন, যেখানেই অনিয়ম হবে, সেখানেই নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নেবে, প্রয়োজনে সেই কেন্দ্রের ভোট বাতিল করে দেওয়া হবে। ভোটের মাঠ এখন ইসির নিয়ন্ত্রণে। ভোটের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। সুন্দর, সুষ্ঠুভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হবে বলে তাঁরা আশা করছেন। এদেশের জনগণসহ আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করাই আমাদের লক্ষ্য। ভালো নির্বাচন করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর দেখেও আমার মনে হচ্ছে সরকারও চাইছে একটা ফ্রি ফেয়ার ইলেকশন হোক।

ভোটের পরিবেশ কেমন হবে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ভোট এখন যেটা হচ্ছে সেটা উৎসবমুখর ও সুন্দর হবে, এটা আমি বলতে পারি। দলীয় সরকারের অধীনে ভোট সুষ্ঠু হবে কিনা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, সেটা বলার সময় এখনো আসেনি। তবে এর আগেও দলীয় সরকারের অধীনে আমরা জাতীয় নির্বাচন করেছি। আগে দেখেন কী হয়। তখন বলা যাবে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে কিনা। তবে আমরা স্বাধীনভাবে কাজ করছি। আমাদের কোন বাধা নেই। আমরা নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।

একটি বড় দলের নির্বাচনে না আসার বিষয়টাকে কীভাবে দেখছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দলগুলোর জন্য ভোটে আসা না আসা তাদের স্বাধীন ইচ্ছা কিন্তু সেজন্য তো ভোট থেমে থাকবে না। আর ভোটকে কোনোভাবে প্রতিহত করা যাবে না এবং কোনো নাশকতামূলক কাজ করা যাবে না। এগুলো যদি তারা করে, তাহলে আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছি যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।

রাশেদা সুলতানা আরও বলেন, তবে সব দল নির্বাচনে এলে একটা স্বস্তির বিষয় হতো। উৎসবমুখর হতো। পূর্ণতা পেত। এখন সেটা অতোটা নেই সেটা তো আর অস্বীকার করার কিছু নেই। যেটুকু পরিস্থিতি ঘোলা হয়েছে সেটা রাজনৈতিক বিভাজনের মাধ্যমে হয়েছে। আমাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। বিএনপি নেতাদের জেলে রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, এটি পলিটিক্যাল বিষয়। কেউ নির্বাচনে না আসলে তাদের ব্যাপার। তবে ভোটকে প্রতিহত করা অসাংবিধানিক কাজ।

রাশেদা সুলতানা বলেন, নির্বাচন চলাকালীন যে কোনো অনিয়ম দেখা হলেই অ্যাকশনে যাওয়া হবে। কোনো অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা কোনো অনিয়ম মানি নাই, সামনে মানবো না। অনিয়ম দেখা দিলেই আমরা অ্যাকশনে যাবো। প্রার্থিতা বাতিল করার মতো অবস্থা হলে প্রার্থিতা বাতিল হবে। এমনকি ভোটের দিনও যদি কোনো অনিয়ম হয় প্রয়োজনে সেই কেন্দ্রে ভোট বাতিল করে দেওয়া হবে। আপনারা দেখেছেন আমরা গাইবান্ধায় ভোট বাতিল করেছি।

তিনি বলেন, আমাদের যতগুলো আয়োজন সব আয়োজনের মূল্য উদ্দেশ্য শান্তি-শৃঙ্খলার সঙ্গে ভোট পরিচালনা করা। পরিবেশ সুন্দর করার জন্য ও সবাই যাতে অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারে সেজন্যই সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে। আমরা যতটুকু বাইরের পরিবেশ দেখেছি তাতে মনে হয়েছে ভোটের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

সেনাবাহিনী মোতায়েন প্রসঙ্গে ইসি রাশেদা বলেন, জনগণের চাওয়া সেনাবাহিনী নামুক। সুষ্ঠুভাবে ভোট সম্পন্ন করার জন্য তাদের নামানো হয়েছে। ভোট উৎসবমুখর হবে। ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কেমন হবে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে রাশেদা সুলতানা বলেন, আমরা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনার বিষয়টি। সেজন্য বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা প্রচার করে যাচ্ছি। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রের প্রাণ, ভোটাররা না থাকলে নির্বাচন নিষ্প্রাণ হয়ে যাবে। তবে আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে যেসব তথ্য পাচ্ছি তাতে আমরা আশাবাদী ভোটকেন্দ্রে অনেক ভোটার আসবে।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

শিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পেলেন যারা
যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দেওয়া জরুরি: আমান
মেডিকেলের ফল পুনঃপ্রকাশের দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের
ঢাকার বাতাস ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ নিঃশ্বাসে ঢুকছে বিষ
মিত্রদের জড়ো করুন, শত্রুদের চিহ্নিত করুন : মাহফুজ আলম
আরও

আরও পড়ুন

শিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পেলেন যারা

শিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পেলেন যারা

চীনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় জেডি ভ্যান্সের বৈঠক

চীনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় জেডি ভ্যান্সের বৈঠক

চকরিয়ায় সেনা কর্মকর্তা লেঃ তানজিম হত্যায় ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র

চকরিয়ায় সেনা কর্মকর্তা লেঃ তানজিম হত্যায় ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র

তনির বিয়ে নিয়ে যা বললেন নেটিজেনরা

তনির বিয়ে নিয়ে যা বললেন নেটিজেনরা

ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতিতে টিকটক সেবা আবার চালু

ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতিতে টিকটক সেবা আবার চালু

বিশেষ ক্ষমতা আইন ও শহীদ সবুজ হত্যা মামলায় নকলায় দুই সাংবাদিক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেফতার

বিশেষ ক্ষমতা আইন ও শহীদ সবুজ হত্যা মামলায় নকলায় দুই সাংবাদিক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেফতার

যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দেওয়া জরুরি: আমান

যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দেওয়া জরুরি: আমান

আজ শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

আজ শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

বিলুপ্তির পথে দেশের সিনেমা হল

বিলুপ্তির পথে দেশের সিনেমা হল

যেভাবে শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

যেভাবে শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

গাজায় স্বাস্থ্যব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করা জটিল এবং চ্যালেঞ্জিং ,সতর্কবার্তা  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার

গাজায় স্বাস্থ্যব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করা জটিল এবং চ্যালেঞ্জিং ,সতর্কবার্তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার

পঞ্চগড় হাসপাতালে বেড়েছে শীতজনিত রোগী

পঞ্চগড় হাসপাতালে বেড়েছে শীতজনিত রোগী

মেডিকেলের ফল পুনঃপ্রকাশের দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের

মেডিকেলের ফল পুনঃপ্রকাশের দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের

প্রথম দিনেই একগুচ্ছ নির্বাহী আদেশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প

প্রথম দিনেই একগুচ্ছ নির্বাহী আদেশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প

ড. ইউনূস সরকারের সমালোচনা করা রিপোর্ট প্রত্যাহার ব্রিটিশ এমপিদের

ড. ইউনূস সরকারের সমালোচনা করা রিপোর্ট প্রত্যাহার ব্রিটিশ এমপিদের

প্যারিসে জুলাই জার্নাল অব ডিক্টেটরশিপ প্রদর্শনী, যা সবার আয়োজন করা উচিত

প্যারিসে জুলাই জার্নাল অব ডিক্টেটরশিপ প্রদর্শনী, যা সবার আয়োজন করা উচিত

বিরতির প্রথম দিন :  গাজায় ঢুকলো সাড়ে ৫ শতাধিক ত্রাণবাহী  ট্রাক

বিরতির প্রথম দিন : গাজায় ঢুকলো সাড়ে ৫ শতাধিক ত্রাণবাহী ট্রাক

ব্রাহ্মণপাড়ায় অগ্নিদগ্ধে গৃহবধূর মৃত্যু

ব্রাহ্মণপাড়ায় অগ্নিদগ্ধে গৃহবধূর মৃত্যু

আল-কাসসাম মুখপাত্র গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিলেন

আল-কাসসাম মুখপাত্র গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিলেন

ঢাকার বাতাস ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ নিঃশ্বাসে ঢুকছে বিষ

ঢাকার বাতাস ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ নিঃশ্বাসে ঢুকছে বিষ