‘আমি ডামি মামীর ভোটের ভার জনগণ কেন বইবে’?
০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম | আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
চট্টগ্রাম নগরীর লালখান বাজার মোড়। গতকাল ছয় জানুয়ারি, সকাল ১১টা। রিকশাচালক আমীর হোসেন, ফুটপাতের হকার মো. সোলাইমান, পথচারী মিজানুর রহমানের সাথে কথা হচ্ছিল। তারা যা বললেন, পরিবারের সদস্যদের জন্য খাবার ও সন্তানের পড়াশোনার টাকা জোগাড় করতে গিয়ে কষ্টের সীমা নেই। বাজারে জিনিসপত্রের দামে আগুন। সামান্য আয় দিয়ে খরচ কুলায় না। এই শীতের মধ্যে কুয়াশা খেয়ে ভোট দিতে গেলে কী পেট ভরবে? আর, এই ভোট তো ‘তোমার আমার মার্কা কি- নৌকা ছাড়া আর কী’। যাদের অন্য মার্কা তারাও তো নৌকার লোক। ভোটকেন্দ্রে গিয়ে কী হবে? আমীর হোসেন রংপুরে দেশের বাড়িতে ভোট দিতে যাননি বললেন।
ইলেকট্রিক মেকানিক মো. পারভেজ জানান, তার ছেলের স্কুলে পুনঃভর্তি ফিসের টাকা এখনও জোগাড় হয়নি। ভোটের চিন্তা তার মাথায় নেই। আমীর কিংবা সোলাইমান শুধুই নন; চট্টগ্রামের এখানে-সেখানে দলমত শ্রেণি-পেশা নির্বিশেষ সাধারণ জনগণের মাঝে আলাপে-আড্ডায় উচ্চারিত কথাগুলো হচ্ছে, এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটদান নিয়ে তাদের অনাগ্রহ, অনীহা, নির্লিপ্ত ভাব। অনেকেরই মুখে হতাশা ফুটে উঠেছে। গ্রামের ভোটারদের ভোটদানের তাগিদে শহর-নগর ছেড়ে যাওয়ার তোড়জোড় চোখে পড়েনি। নেই ঘরমুখো মানুষের ভিড় কিংবা যানবাহনের জট। সন্ধ্যা হতে না হতেই অনেক জায়গায় রাস্তাঘাট সড়ক প্রায় ফাঁকা। লোকজনের আলাপচারিতায় অজানা ভয়ভীতি, শঙ্কার বহিঃপ্রকাশ লক্ষ্য করা গেছে। হাটবাজারে জনসমাগম অন্যদিনের তুলনায় ছিল কম। যানবাহন বলতে রিকশার ভিড় প্রচুর।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও কলামিস্ট প্রফেসর ড. ইয়াহইয়া আখতার গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আমি, ডামি মামী, মিলিয়ে ওরা-ওরাই করছে এ নির্বাচন। সবাই তো নৌকা তথা আওয়ামী লীগের লোক। এহেন ভোটের ভার জনগণকে কেন বইতে হবে? দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এমনিতেই সাধারণ জনগণ অতিষ্ঠ। সরকার সিন্ডিকেট ভাঙতে ভয় পায়, কেননা তাদের ব্যবসায়ীদের শাস্তি দিতে হবে।
ড. ইয়াহইয়া বলেন, এই নির্বাচন অগণতান্ত্রিক, অগ্রহণযোগ্য, বিতর্কিত। এটি দেশ-বিদেশের আকাক্সক্ষা, দাবি ও চাপ অনুসারে অংশগ্রহণমূলক (ইনক্লুসিভ) নির্বাচন নয়। তাই এটা বিশ্বে গ্রহণযোগ্য হবে না। এটা টেকসই ভোট হবে না। বিশ্ব সমাজ অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে তাদের আগের অবস্থানে অনড়। কেননা বিএনপিসহ ৬০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। তারা আন্দোলনে আছে। জনগণকে ভোট বর্জনের জন্য প্রচারণা, গণসংযোগ এবং হরতাল পালন করছে। এ অবস্থায় ২০১৪ ও ২০১৮ সালের পর এটি নিকৃষ্ট নির্বাচনের হ্যাটট্রিক হতে যাচ্ছে। কোথাও উৎসবের লেশমাত্র নেই। বরং আছে ভীতি, আগুন, জনগণের মাঝে অনীহা। কারসাজি না করলে ১৪ ও ১৮ সালের চেয়ে ভোট কাস্টিং কম হবে। উৎসবমুখর নির্বাচন আমরা কবে পাবো সেটা সময়ের অপেক্ষা এবং সংশ্লিষ্টদের ওপর নির্ভর করছে।
একুশে পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি, কলামিস্ট প্রফেসর ড. মইনুল ইসলাম গতকাল ইনকিলাবকে অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, এই নির্বাচনের মাধ্যমে সঙ্কট কাটবে না। গণতন্ত্রের যে ট্রেন আগে লাইনচ্যুত হয়েছিল, সেটি আবার লাইনে ফিরবে না। নির্বাচন ঘিরে পরিস্থিতি সংঘাতের দিকে গেলে অর্থনীতিতে বিপর্যয় হবে। এর ফলে ভুগবে দেশের সাধারণ জনগণ।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
মুজিবনগরে তারুণ্যের উৎসব উৎযাপনে আন্ত: ইউনিয়ন ফুটবল টূর্নামেন্টে অনুষ্ঠিত
ফ্যাসিস্ট হাসিনা হটানোর আন্দোলনের একটাই লক্ষ্য ছিল জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা : হযরত আলী মিঞা
থানার ওসিদের অলিগলিতে পদচারণা থাকতে হবে : ডিএমপি কমিশনার
পাত্র বিদেশে থাকাবস্থায় দেশে তার জন্য পাত্রী ঠিক করে রাখা প্রসঙ্গে।
মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের পাম্প হাউজে পানি সেচ উদ্বোধনের ১০ মিনিটেই বন্ধ
রামগড়ে নবাগত জেলা প্রশাসকের পরিচিতি ও মতবিনিময় সভা
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের আন্ত ইউনিট কাবাডি প্রতিযোগিতার ফাইনাল
সরিষাবাড়ী ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে কম্বল বিতরণ
চীনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এলডিপি মহাসচিবের বৈঠক
এবার মেডিকেলে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় উত্তীর্ণদের ফল স্থগিত
সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুদের মাঝে ছাত্রদল নেতার শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ
প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন, সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ অনির্দিষ্টকাল হতে পারে না: ড. মোশাররফ
টিকটক ও ক্যাপকাটকে টক্কর দিতে মোক্ষম চাল মেটার!
৩৩ বছরের পুরনো পত্রিকা ‘ভোরের কাগজ’ বন্ধের ঘোষণা
ফেরার সময় তিন ইসরাইলি বন্দীকে কী উপহার দিল হামাস?
মানুষকে স্বস্তি দিতে অন্তবর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ হচ্ছে : আমিনুল হক
পিঠার নাম হৃদয়হরণ, মুখচাহনি
শেরপুরে জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শীতার্তদের মাঝে যুবদলের কম্বল বিতরণ
গুরুদাসপুরে চিরকুট লিখে চুরি হচ্ছে বাণিজ্যিক মিটার